নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
ভারতীয় গণতন্ত্রের প্রাক্তন এবং ১৪ তম প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং। ডঃ মনমোহন সিং’কে সঠিকভাবেই চিন্তানায়ক ও পণ্ডিত ব্যক্তি বলা হয়। ইনিই প্রথম শিখ ধর্মাবলম্বী প্রধানমন্ত্রী। ডঃ মনমোহন সিং ১৯৮২ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত ভারতীয় রিসার্ভ ব্যাঙ্কের প্রশাসক, ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ভারতের যোজনা কমিশনের সহ অধ্যক্ষ এবং ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ভারতের অর্থ মন্ত্রী ছিলেন। তিনি বর্তমানে চতুর্থ বারের জন্য অসম থেকে একজন রাজ্য সভা সদস্য হিসাবেও মনোনীত হন। তাঁর পরিশ্রম এবং কাজের প্রতি জ্ঞানীর দৃষ্টিভঙ্গীর জন্য তিনি বিশেষভাবে শ্রদ্ধাভাজন হয়েছেন। এছাড়া, তাঁর সাহচর্য ও সাধাসিধে ধরণের মানুষ হওয়ার প্রবণতা ডঃ সিং – এর পরিচিতি অনেকাংশে বাড়িয়ে দিয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এবং বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংগঠনে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ডঃ মনমোহন সিং । ১৯৯০ এর দশকের গোড়ায় প্রধানমন্ত্রী নরসিমা রাও এর অধীনে মনমোহন সিং অর্থমন্ত্রী হিসেবে ভারতের ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। ১৯৯৩ সালে সাইপ্রাসে তিনি কমনওয়েলথ রাষ্ট্র প্রধানদের বৈঠকে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। এছাড়াও, ঐ বছরেই ভিয়েনায় মানবাধিকার বিষয়ে বিশ্ব সম্মেলনেও তিনি ছিলেন ভারতীয় প্রতিনিধিদলের প্রধান। আজ ডঃ মনমোহন সিং এর ৮৮তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৩২ সালের আজকের দিনে তিনি ভারতে জন্মগ্রহণ করেন। ভারতের চতুর্দশ প্রধানমন্ত্রী ও অর্থনীতিবিদ ডঃ মনমোহন সিং এর জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।
মনমোহন সিং ১৯৩২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর অবিভক্ত ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের এক গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৮ সালে ডঃ সিং পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। তাঁর শিক্ষাজীবন তাঁকে পাঞ্জাব থেকে ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যায়। ১৯৫৭ সালে তিনি সেখান থেকে অর্থনীতিতে প্রথম শ্রেণীর সাম্মানিক স্নাতক হন। এর পরেই, ১৯৬২ সালে ডঃ সিং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নাফিল্ড কলেজ থেকে অর্থনীতিতে ডি. ফিল পান। তাঁর বই ‘ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট ট্রেন্ডস্ অ্যান্ড প্রসপেক্টক্স ফর সেল্ফ সাসটেন্ড গ্রোথ’ (ক্ল্যারেনডন প্রেস, অক্সফোর্ড থেকে ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত) ছিল ভারতের অন্তর্মুখী বাণিজ্য নীতির প্রাথমিক পর্বের এক ধরণের সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ। শিক্ষা জগতে ডঃ সিং – এর পরিচিতি আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে তার অধ্যাপনার বছরগুলিতে এবং বিখ্যাত দিল্লি স্কুল অফ ইকোনোমিক্সে তাঁর কাজের সুবাদে এই সময়েই রাষ্ট্রসঙ্ঘের বণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা ‘আংটাড’ – এর সচিবালয়ের কাজে কিছুটা সংক্ষিপ্ত সময় অতিবাহিত করেন। ১৯৮৭ , ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ডঃ সিং এই সংস্থার সাউথ কমিশনের মহাসচিব পদে বৃত হন। ১৯৭১ সালে ডঃ সিং ভারত সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রকের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসাবে যোগ দেন। এর অব্যবহিত পরেই ১৯৯২ সালে তিনি কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পদে নিযুক্ত হন। এরপর , সরকারের যে সব গুরুত্বপূর্ণ পদ তিনি অলংকৃত করেছেন সেগুলি হল – অর্থ মন্ত্রকের সচিব, যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান, ভারতের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান। স্বাধীন ভারতের অর্থনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয় ১৯৯১ – ১৯৯৬ সালে তাঁর ভারতের অর্থমন্ত্রী হিসাবে পাঁচ বছরের কার্যকালের মেয়াদে। ভারতে অর্থনৈতিক সংস্কারের এক সামগ্রিক নীতির প্রচলনে তাঁর অবদান বর্তমানে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি অর্জন করেছে। সাধারণ মানুষের ধারণায় ভারতের সেই বছরগুলি ডঃ সিং – এর ব্যক্তিত্বের সঙ্গে একাকার হয়ে আছে।
কর্মজীবনে ডঃ সিং বহু পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ১৯৮৭ সালে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘পদ্মভূষণ’ প্রাপ্তি। এছাড়া, ১৯৯৫ সালে তিনি ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের জওহরলাল নেহরু জন্ম শতবার্ষিকী পুরস্কার পান। ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে তিনি পান অর্থমন্ত্রীদের জন্য ‘এশিয়া মানি’ পুরস্কার। ১৯৯৩ সালেই তিনি বছরের সেরা অর্থমন্ত্রী হিসাবে পান ‘ইউরো মানি’ পুরস্কার। ১৯৫৬ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডঃ সিং পান অ্যাডাম স্মীথ পুরস্কার’। ১৯৫৫ সালে পান কেমব্রিজ – এর সেন্ট জনস কলেজের রাইট্স পুরস্কার অর্থনীতিতে তাঁর অসাধারণ কাজের স্বীকৃতিতে। অন্যান্য বেশ কয়েকটি সংগঠন ও সংস্থার কাছ থেকেও ডঃ সিং সম্মান পেয়েছেন। এর মধ্যে জাপানের নিহন কেইজাই শিম্বুন সংস্থা থেকে তাঁকে সম্মান দেওয়া হয়। কেমব্রিজ এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বহু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাঁকে সম্মানসূচক ডিগ্রি দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক জীবনে ডঃ সিং ১৯৯১ সাল থেকে সংসদের উচ্চ কক্ষ (রাজ্যসভার) – এর সদস্য ছিলেন। ১৯৯৮ – ২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা ছিলেন। ২০০৪ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর ২২ মে ডঃ মনমোহন সিং প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন এবং ২০০৯ সালের ২২ মে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দ্বিতীয়বারের জন্য তিনি শপথ গ্রহণ করেন। মনমোহান সিং ভালো বক্তা নন তবে তিনি আন্তরিক, ভদ্র- যা ভারতের রাজনীতির জন্য কোন পূর্ব-শর্ত নয় ৷ তিনি আস্তে ধীরে কথা বলেন তবে দায়িত্ব সচেতনশীল এক রাজনীতিবিদ৷ সিং জানেন কিভাবে সমস্যার সমাধান করতে হয়৷ আর তাই তিনি তাঁর কার্যকালে বহু সংকটের সমাধানে সক্ষম হয়েছেন৷ ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র ছয় মাস পরেই দুই হাজার চার সালের ডিসেম্বরে সুনামির আঘাতে ভারতে আনুমানিক পনেরো হাজার মানুষের প্রাণহানী ঘটে৷ তাঁর সরকার সেই দুর্যোগ একক প্রচেষ্টায় মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়৷ দুই হাজার আট সালে তিনি বিতর্কিত ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষর করেন প্রবল প্রতিবাদ সত্বেও ৷ একই বছরের নভেম্বরে মুম্বাই শহরে তিনদিনের রক্তাক্ত পণবন্দী নাটকে মারা যায় ১৬০ জনেরও বেশি মানুষ ৷
ব্যক্তিগত জীবনে ১৯৫৮ সালে মনমোহন সিং গুর্শরণ কৌর কে বিবাহ করেন এবং তাঁদের তিনটি কন্যা সন্তান আছে। তাঁর জ্যেষ্ঠ কন্ন্যা , উপিন্দর সিং দিল্লির সেন্ট স্টিফেনস কলেজের|সেন্ট স্টিফেনস কলেজে ইতিহাসের অধ্যাপক এবং ছটি পুস্তকের রচয়িতা যার মধ্যে "এন্সেন্ট দিল্লি"(১৯৯৯) এবং "এ হিস্ট্রি অফ এন্সেন্ট এন্ড আর্লি মেদিঅভাল ইন্ডিয়া" (২০০৮) তাঁর দ্বিতীয়া কন্যা দমন সিং সেন্ট স্টিফেনস কলেজ, নতুন দিল্লির একজন স্নাতক ও ইনিস্টিটিউট অফ রুরাল ম্যানেজমেন্ট}, আনন্দ, গুজরাট এবং "দ্য লাস্ট ফ্রন্টিয়ার": পিপল এন্ড ফরেস্তস ইন মিজোরাম" এর রচয়িতা ও "নাইন বাই নাইন" নামে একটি নভেলেরও রচয়িতা। তার কনিষ্ঠা কন্যা অমৃত সিং আমেরিকান সিভিল লিবারেতিস ইউনিয়ন এর একজন কর্মরত আইনজীবী এবং বার্টন বীবের স্ত্রী , যিনি একজন বুদ্ধিগত সম্পত্তি বিষয়ের বিশেষজ্ঞ সহ অধ্যাপক। মনমোহন সিং হৃদযন্ত্র ঘটিত অসুস্থতায় অসুস্থ এবং তাঁর ১৯৯০ সালে করনারী বাইপাস অস্ত্রপ্রচার ও 2004 সালে অন্জিযপ্লাস্তি অস্ত্রপ্রচার হয়। ২০০৯ সারের ২৪ জানুয়ারি তে ইন্ডিয়ান ইন্স্তীতুত অফ মেডিকাল সাইন্সেস (AIIMS)- এ তাঁর দ্বিতীয় বারের জন্য বাইপাস অস্ত্রপ্রচার করা হয় এবং তখন ডাক্তারা তাঁর হৃদযন্ত্রের পূর্বেকার কয়েকটি জোরের রদবদল করেন.AIIMS এর ডাক্তারদের সহায়তায় শল্য চিকিত্সক রমাকান্ত পান্ডা পুনর্বার তাঁর বাইপাস অস্ত্রপ্রচার করেন।২০০৯ সালের ৪ মার্চ তাঁর কাজে পুররায় যোগদান করেন। আজ ডঃ মনমোহন সিং এর ৮৮তম জন্মবার্ষিকী। ভারতের চতুর্দশ প্রধানমন্ত্রী ও অর্থনীতিবিদ ডঃ মনমোহন সিং এর জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক
[email protected]
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৪২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
এটা কিবা এমন দোষ !!
অনেকেই এ কাজ করেছেন
শুধু তাকে দুষলে হবে !!
২| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:০৬
রাজীব নুর বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম। তবে উনি মোদির চেয়ে ভালো।
২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:৪৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
শ্রদ্ধা আর শুভেচ্ছার বাইরে আজ
আপনার ব্যতিক্রমী মন্তব্য।
আমারও ধারণা তিনি
মোদির চেয়ে বেশী
ধাড়িবাজ নন
©somewhere in net ltd.
১| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১২:১৬
অনল চৌধুরী বলেছেন: একটা ধড়িবাজ, যে ক্ষমতায় থাকার জন্য টাকা দিয়ে সংসদ সদস্যদের আস্থা ভোট কিনেছিলো।