নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
মানব সভত্যার ইতিহাসে অনেক উদ্ভাবন, অনেক উন্নতি এবং অনেক ভালো কাজের পাশাপাশি সভ্যতাকে ধ্বংশ করার মত যে সকল কর্মকান্ড ঘটেছে তার মধ্যে গণহত্যা অন্যতম। ব্যক্তিস্বার্থ, লোভ, ক্ষমতার বহি:প্রকাশ এবং মানসিক বিকৃতিও এর অন্যতম কারণ। মানসিক ভাবে বিকৃত মানুষগুলো অন্য দেশেরই নয় নিজের দেশের, নিজের সম্প্রদায়ের লোকগুলোকেও হত্যা করেছে নির্মম ভাবে। এই হত্যাকান্ড যতটা না, কোনো যৌক্তিক কারণে তার চেয়ে বেশী ক্ষমতা দখল এবং লোভের কারণে। কখনো জাতীয়তার, কখনো সম্প্রদায়ের অথবা কখনো ধর্মের দোহায় দিয়ে সংগঠিত হয়েছে একটার পর একটা হত্যাকান্ড। বিভিন্ন সময়ের, বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন একনায়ক বা স্বৈরশাসক হচ্ছেন এই মৃত্যু মিছিলের মূল পরিকল্পনাকারী! কখনো কখনো তারা সজ্ঞানে ঘটিয়েছেন এসব হত্যাকাণ্ড। আবার কখনো ক্ষমতার মোহে অন্ধ হয়ে, ন্যাক্কারজনক ঘটনার জন্ম দিয়ে ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম লিখিয়েছেন। স্বৈরশাসক হিসেবে তারা যে দেশের জন্য ভাল কিছুই করেননি এমনটাও নয়। ইতিহাস সবই মনে রাখে। কিন্তু যে নজিরবিহীন নৃশংসতার জন্ম তারা দিয়েছেন, তার কাছে সবকিছু ছাপিয়ে যায়, তুচ্ছ হয়ে যায়। আজ আমরা জানবো বিশ্বের কয়েকটি নির্মম, নৃশংস ও বর্বরোচিত গণহত্যার কথা।
১। আর্মেনীয় গণহত্যা (১৯১৫-১৯২৩)
(১৮৯৫ সালের হত্যাকাণ্ডের পর পড়ে আছে আর্মেনীয়দের কঙ্কাল)
তুরস্কের অটোম্যান শাসনামলে (১৮২১ থেকে ১৯২২) অটোমান সাম্রাজ্যের তুর্কি শাসকদের হাতে লক্ষ লক্ষ আর্মেনীয়র নৃশংস হত্যাযজ্ঞ ইতিহাসে পরিচিত আর্মেনীয় গণহত্যা। ১৯১৫ সালে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন, তুর্কি সরকারের নেতারা আর্মেনীয়দের বিতাড়িত ও নিশ্চিহ্ন করে ফেলার পরিকল্পনা করে। ১৯১৫ সালের ২৪ এপ্রিল শুরু হয় আর্মেনীয় গণহত্যা। প্রথম আঘাত আসে বুদ্ধিজীবীদের উপর। সেদিনটিতেই তুর্কি সরকার কয়েকশো আর্মেনীয় বুদ্ধিজীবীকে গ্রেফতার ও হত্যা করে। এরপর সাধারণ আর্মেনীয়দেরকে তাদের বাড়িঘর থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করা হয়। তাদেরকে নিজেদের এলাকা থেকে বের করে দিয়ে বিভিন্ন স্থানে পাঠানো ও হত্যা করা হতে থাকে। কোনোরকম খাবার কিংবা পানি ছাড়া মেসোপটেমিয়ার মরুভূমিতে এক নির্মম মৃত্যুর মিছিলে পাঠানো হয় তাদেরকে। প্রায়ই মরুভূমির মধ্য দিয়ে হেঁটে যাওয়া আর্মেনীয়দেরকে বিবস্ত্র করে জ্বলন্ত সূর্যের নিচে পথ চলতে বাধ্য করা করা হতো, যতক্ষণ না তারা মরে পড়ে যেত। আর যারা থেমে যেতে চাইত, সাথে সাথে গুলি করে ফেলে দেওয়া হতো তাদের লাশ। ১৯২০ এর দশকের সূচনালগ্নে সমাপ্তি ঘটে এই গণহত্যা ও গণ স্থানান্তরকরণের, ততদিনে ৬ থেকে ১৫ লক্ষ আর্মেনীয় লাশে পরিণত হন। এর মাঝে অগণিত আর্মেনীয়কে জোর করে বের করে দেওয়া হয় দেশ থেকে। আজকের দিনে এসে অধিকাংশ ইতিহাসবিদ একে গণহত্যা বলেই অভিহিত করেন। এই হত্যাযজ্ঞটি ছিল পৃথিবীর ইতিহাস থেকে একটি আস্ত জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলার জন্য একটি পরিকল্পিত অভিযান। তবে তুর্কি সরকার এখন পর্যন্ত এসব ঘটনার ব্যাপকতা, এমনকি এর সত্যতাও স্বীকার করে না।
২। সোভিয়েত রাশিয়ার স্ট্যালিন যুগঃ কাতিন গণহত্যা(১৯২৯-১৯৫৩)
কাতিন গণহত্যা বা কাতিন জঙ্গল গণহত্যা ১৯৪০ সালের এপ্রিল এবং মে মাসে সোভিয়েত ইন্টানন্যাল সিকিউরিটি সার্ভিস বা এনকেভিডির (সোভিয়েত গুপ্ত পুলিশ)দ্বারা চালিত গণহত্যা।পিপলস কমিশার ফর ইন্টারনাল অ্যাফেয়ার্স ও ফার্স্ট র্যাংক কমিশার অব স্টেট সিকিউরিটি ল্যাভরেনিটি বেরিয়া ১৯৪০ সালের ৫ মার্চ স্টালিনসগ সোভিয়েত পলিটব্যুরোর সব সদস্যের কাছে একটি নোট পাঠায়। তাতে যুদ্ধবন্দীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ ছিল। পলিটব্যুরো তাতে সম্মতি দেয়। নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক সোভিয়েত স্বৈরশাসক জোসেফ স্তালিন। প্রায় ২২ হাজার সেনাকে হত্যা করা হয়েছিল। মোট তিনটি স্থানে মারা হয়। যেমন কাতিন জঙ্গল এবং কালিনিন ও কার্কিভে গুপ্ত পুলিশের বন্দীশালায়। ১৯৩৯ সালে সোভিয়েত রেড আর্মির দখলের সময় প্রায় ৮০০০ অফিসারকে জেলে নেয়া হয় এবং বন্দীদের তালিকায় সেনা সদস্য ছাড়াও ছিল শিক্ষক, ডাক্তার, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ। স্ত্যালীন ১৯৩৭ সালে তাঁর কুখ্যাত `০০৪৪৭’ অধ্যাদেশ দ্বারা অসংখ্য মানুষকে হত্যা করেছিলেন সামাজিক ভাবে ক্ষতিকর মানুষ আখ্যা দিয়ে। এছাড়াও তিনি রাশিয়ান আর্মির সেনা সদস্য এবং বুদ্ধিজীবিদের পাঠিয়েছিলেন নির্বাসনে এবং হত্যা করেছিলেন নির্বিচারে। স্ত্যালীন এর কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষ মৃত্যু বরণ করেছিলেন এবং কোটি কোটি মানুষ দুর্ভোগ পোহান। অবশেষে ১৯৫৩ সালে স্ত্যালীনের মৃত্যুতে রাশিয়ার ভাগ্য পরিবর্তন হয়। অবসান হয় চলমান গণহত্যার।
৩। ইহুদি গণহত্যাঃ দ্য হলোকস্ট (১৯৩৯-১৯৪৫)
ইহুদি গণহত্যা (ইংরেজি: The Holocaust) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের উপর চালানো গণহত্যা। হিটলারের নেতৃত্বে নাৎসি পার্টির পরিচালনায় জার্মান নাৎসি সামরিক বাহিনী ইউরোপের তদানীন্তন ইহুদি জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের বেশি অংশকে এবং আরও কিছু সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে বন্দী শিবির ও শ্রম শিবিরে নির্বিচারে হত্যা করে। আনুমানিক ষাট লক্ষ ইহুদি এবং আরও অনেক সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর মানুষ প্রাণ দেয়। হিটলারের বাহিনী পন্চাশ লক্ষ ইহুদি ছাড়াও সোভিয়েত যুদ্ধবন্দী, সাম্যবাদী, রোমানী ভাষাগোষ্ঠীর (যাযাবর) জনগণ, অন্যান্য স্লাভীয় ভাষাভাষী জনগণ, প্রতিবন্ধী, সমকামী পুরুষ এবং ভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মতাদর্শের মানুষদের ওপর এই অমানবিক গণহত্যা পরিচালনা করে। নাৎসিরা এর নাম দিয়েছিল "ইহুদি প্রশ্নের চরম উপসংহার"। নাৎসি অত্যাচারের সকল ঘটনা আমলে নিলে সর্বমোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে নব্বই লক্ষ থেকে এক কোটি দশ লক্ষের মত। অত্যাচার ও গণহত্যার এসব ঘটনা বিভিন্ন পর্যায়ে সংঘটিত হয়েছে। নাৎসি জার্মানি তখন পূর্ব ইউরোপের কিছু এলাকা দখল করেছে। তারা সেখানে বিরুদ্ধাচরণকারী ও ইহুদিদের গণহারে গুলি করে হত্যা করে। ইহুদি এবং রোমানি ভাষাগোষ্ঠীর লোকদের তারা ধরে নিয়ে গ্যাটোতে রাখে। গেটো একধরনের বস্তি এলাকা যেখানে গাদাগাদি করে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার মধ্যে এসব মানুষদেরকে মানবেতর জীবনযাপন করতে হত। তারপর গেটো থেকে তাদেরকে মালবাহী ট্রেনে করে শত শত মাইল দূরের বধ্যশিবিরগুলোতে নিয়ে যেত। মালবাহী ট্রেনের পরিবহনেই অধিকাংশ মারা পড়ত। যারা বেঁচে থাকত তাদেরকে গ্যাস কক্ষে পুড়িয়ে হত্যা করা হত। তখনকার জার্মানির আমলাতন্ত্রের সকল শাখা সর্বাত্মকভাবে গণহত্যায় জড়িত ছিল। একজন ইহুদি গণহত্যা বিশেষজ্ঞ বলেছেন তারা জার্মানিকে একটি 'নরঘাতক রাষ্ট্রে' পরিণত করেছিল। এই গণহত্যা এখনো সবচেয়ে নিন্দিত এবং খুবই সতর্কতার সাথে এই গণহত্যার তথ্য লেখা হয়েছে। হিটলারের নাজি বাহিনী কর্তৃক ইহুদিদের ইউরোপ মহাদেশে অবাঞ্চিত ঘোষণার প্রেক্ষিতে প্রায় ১১ মিলিয়ন মৃত্য সংগঠিত হয়েছিল যার অর্ধেকই ছিল ইহুদি। এই সংখ্যা হিটলার যখন বার্লিনে নিজের বাংকারে নিজেকে গুলিবিদ্ধ করেন সেই সময়কার। এই গণহত্যা বিভিন্ন উপায়ে সম্পন্ন করা হয়, যার মধ্যে সরাসরি হত্যা, কারাগারে বন্দী অবস্থায় হত্যা, অনাহারে হত্যা, অতিরিক্ত কষ্টসাধ্য কাজের বোঝা চাপিয়ে হত্যা এবং হিটলারের কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পে নিয়ে হত্যা। আশ্চর্যজনক সত্য হলো জার্মানির ইতিহাসে এইরকম জঘন্য নিষ্ঠুরতা কখনোই ছিল না। হিটলারের হাতে জার্মানির পতনের পূর্বে সত্যিকার অর্থে জার্মানিকে বিবেচনা করা হত সবচেয়ে শিক্ষিত ও সংস্কৃতিবান সমাজ হিসাবে।
৪। হিরোশিমা ও নাগাসাকি গণহত্যা (১৯৪৫)
বোমা বিস্ফোরণের পরে হিরোশিমায় ধ্বংসের সামান্য নমুনা
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪৫ সালের ৬ এবং ৯ আগস্ট পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে দুঃখজনক দুটি দিন।যুক্তরাষ্ট্রের পারমানবিক আক্রমনে যখন জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকি শহর দুটি সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। অনুমান করা হয় যে ১৯৪৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বোমা বিস্ফোরণের ফলে হিরোশিমাতে প্রায় ১৪০,০০০ লোক মারা যান। নাগাসাকিতে প্রায় ৭৪,০০০ লোক মারা যান এবং পরবর্তীতে এই দুই শহরে বোমার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আরও ২১৪,০০০ জন। জাপানের আসাহি শিমবুন-এর করা হিসাব অনুযায়ী বোমার প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট রোগসমূহের ওপর হাসপাতাল থেকে পাওয়া তথ্য গণনায় ধরে হিরোশিমায় ২৩৭,০০০ এবং নাগাসাকিতে ১৩৫,০০০ লোকের মৃত্যু ঘটে। দুই শহরেই মৃত্যুবরণকারীদের অধিকাংশই ছিলেন বেসামরিক সাধারণ ব্যক্তিবর্গ। হিরোশিমা-নাগাসাকিতে আমেরিকার আণবিক বোমা নিক্ষেপ ছিল ইতিহাসের অতীব নিকৃষ্ট একটি ঘটনা। ইতিহাসের এই ঘটনা ভুলে থাকাটা হবে মহাপাপ। মনে রাখতে হবে ইতিহাসকে ভুলে গেলে ইতিহাস তার প্রতিশোধ নিতে ভুল করে না। হিরোশিমা-নাগাসাকিতে আণবিক বোমার হামলায় নিমিষে করুণ মৃত্যু হয়েছিল লক্ষাধিক মানুষের। সভ্যতার ইতিহাসে এটিই ছিল সময়ের এককের হিসেবে সবচেয়ে বড় গণহত্যা। এক বন্ধু ফেইসবুকে লিখেছেন, 'টেন টু দি পাওয়ার ফাইভ,— এ শুধু অংকের একটি সংখ্যা মাত্র নয়। এ হলো হিরোশিমা-নাগাসাকিতে জ্বলে যাওয়া মানুষের প্রাণের হিসাব।' ১৯৪৫ সালের ৬ এবং ৯ আগস্ট পৃথিবীর ইতিহাসে সবচে দুঃখজনক দুটি দিন যখন জাপানের হিরোশিমা এবং নাগাসাকি শহর দুটি সম্পূর্ণ রূপে ধংশ প্রাপ্ত হয়। বিংশ শতাব্দিতে প্রচলিত ও গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে গণহত্যার মত জঘন্য অপরাধ যেন অতি সাধারণ ঘটনায় রূপ নিয়েছে। ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে হিরোশিমা শহরে ফেলা হয় প্রথম আনবিক বোমা। এই বিস্ফোরণ কেড়ে নেয় প্রায় দুই লক্ষ প্রান এবং অনেকের কোনো হদিসই পাওয়া যায়নি। প্রথম বিস্ফোরণের ঠিক দুই দিন পরেই অর্থাৎ ৯ আগস্ট সকাল ১০ টা ৫৮ মিনিটে নাগাসাকির একটি শিপইয়ার্ড এর উপর ফেলা হয় ২০ কিলোটন ক্ষমতা সম্পন্ন বোমা যেদিন প্রায় ৭০ হাজার বেসামরিক মানুষ নিহত হয়। ভৌগলিক কারণে দ্বিতীয় আনবিক বোমাটি হিরোশিমার চাইতে নাগাসাকিতে কম ক্ষতি সাধন করে।
৫। ভারতের হায়দারাবাদ গণহত্যা (১৯৪৮)
এই গল্পের সবচেয়ে আকর্ষনীয় বিষয় হচ্ছে কোনো রাজনৈতিক কারণ ব্যতিত শুধুমাত্র স্বপ্রণোদিত ভাবে ধর্মীয় বিভেদের কারণে এই ঘটনাটি ঘটেছিল। ব্রিটিশ রাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ কলোনি থেকে ভারত ভাগের পদক্ষেপের ফলে এই গণহত্যা সংগঠিত হয়। ভারত ভাগ হয়ে ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুটি রাষ্ট্রের জন্মের সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় ৫ লাখ মানুষ নিহত হয়েছিল। এদের অধিকাংশই নিহত হয়েছিল ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায়। কিন্তু এর এক বছর পর ১৯৪৮ সালে মধ্য ভারতে আর একটি নির্বিচার গণহত্যার ঘটনা ঘটেছিল বলে সম্প্রতি খুঁজে পাওয়া এক গোপন তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জানিয়েছে বিবিসি অনলাইন।
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনতা থেকে ভারত স্বাধীন হয় ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট। এর কিছুদিনের মধ্যেই ১৯৪৮ সালের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে মধ্য ভারতে হাজার হাজার মানুষকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। এই ঘটনাটি ঘটে ওই সময়ের হায়দারাবাদ স্টেটে। এই প্রতিবেদনে প্রকাশ পায় অভিযানের সময় ভারতীয় বাহিনী নির্বিচার হত্যা, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক ধর্ষণের মতো যুদ্ধাপরাধ করেছে। অভিযানকালে বেসামরিক নাগরিকদের তেমন মৃত্যু হয়নি বলা হলেও প্রতিবেদনে ২৭ হাজার থেকে ৪০ হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়। এদের অনেককেই লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে গুলি করে মারে ভারতীয় সেনারা।
৬। চীনের গ্রেট লিপ ফরওয়ার্ড গণহত্যা (১৯৪৯-১৯৭৬)
চিনে কমিউনিস্টরা ক্ষমতায় আসে ১৯৪৯ সালে এবং তারপর পরবর্তী দশক গুলোতে কমিউনিস্ট চায়নাতে প্রায় ৪৫ থেকে ৭০ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়। বিভিন্ন ঘটনায় এই মৃত্যু সংগঠিত হয়েছিল। একটি ঘটনা ছিল, যখন কমিউনিস্ট ফোর্স, চ্যাং কি-শেক এর ন্যাশনাল আর্মিকে পরাস্ত করে। বস্তুত বেশির ভাগ হত্যাকান্ড সংগঠিত হয় দুটি ধারায়: একটি হচ্ছে মাও সে তুং এর গ্রেট লীপ ফরওয়ার্ড কর্মকান্ড আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে ১৯৬৬ থেকে ১৯৬৭ পর্যন্ত সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সময়। দ্য গ্রেট লীপ ফরওয়ার্ড ছিল প্রথম ধাক্কা যখন চীনের তত্কালীন নেতা মাও সে তুং কৃষির আধুনিকায়ন এবং সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাজ শুরু করেন। যার ফলে ১৯৫৮ থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত্য দুর্ভিক্ষ্য দেখা দেয়। অনেক কৃষক এবং ভূমি মালিক অনাহারে মৃত্যু বরণ করেন যা কিনা পরবর্তিতে গণহত্যার আকার ধারণ করে, কারণ মাও সে তুং এই প্রক্রিয়াকে সচল রাখেন এত বড় সর্বনাশ সত্বেও। অপরদিকে সাংস্কৃতিক বিপ্লব সরকার বিরোধী কর্মকান্ডকে তরান্বিত করতে বিশেষ ভুমিকা রাখে যা কিনা লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু ডেকে আনে আর অসংখ্য মানুষ বন্দিত্ব গ্রহণ করে।
৭। নানচিং গণহত্যা (১৯৩৭-১৯৩৮)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে চীনে নানচিং গণহত্যার একটি দৃশ্য
নানচিং গণহত্যা ইতিহাসে নানচিং ধর্ষণ নামে ব্যাপকভাবে পরিচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে চীন-জাপান যুদ্ধের সময় রাজকীয় জাপানি সেনাবাহিনী তৎকালীন চীনের রাজধানী নানচিংয়ের অধিবাসীদের ওপর ওই নির্দয় গণহত্যা চালায়। ৬ সপ্তাহব্যাপী এই গণহত্যা শুরু হয় ১৯৩৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর। এ সময়ে জাপানের রাজকীয় সেনাবাহিনী চার লাখ নিরীহ চীনাকে হত্যা এবং ব্যাপক লুটপাট ও ধর্ষণ করে। ১৯৩৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর প্রায় দেড় লাখ জাপানি সৈন্য চীনা শহর নানচিং দখল করে নেয়। দখলের আগে জাপানিরা চীনা রাজধানী অবরোধ করে রাখে দীর্ঘদিন ধরে। তারপর ছয় সপ্তাহ ধরে শহরটিতে অবিশ্বাস্য গণহত্যা সংঘটিত হয়। জাপানি সৈন্যরা কখনো পরিকল্পিতভাবে চালিয়েছে নির্দয় হত্যাকা-। কখনো কেবল আনন্দের উদ্দেশ্যে শহরটির লোকদের হত্যা ও ধর্ষণ করে। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর এই গণহত্যার সঙ্গে জড়িত বেশির ভাগ সামরিক নেতার কোনো বিচার বা শাস্তি হয়নি। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বেশ কয়েকজনকে এই যুদ্ধাপরাধের জন্য সাজা দেওয়া হলেও মূল পরিকল্পনাকরী প্রিন্স আসাকাকে শাস্তি দেওয়া যায়নি। জাপানি সম্রাট হিরোহিতোকে কোনো শাস্তি পেতে হয়নি। আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে জাপানি সৈন্যদের বর্বর আচরণের যে তথ্য ফাঁস হয়েছে তা কোনো সুস্থ মানুষের পক্ষে কল্পনা করাও কঠিন। জাপানি সৈন্যরা নানচিংয়ে কমপক্ষে ২০ হাজার নারীকে ধর্ষণ করে। বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে নারী ও মেয়ে শিশুদের ধরে এনে ধর্ষণ করেছে জাপানি সৈন্যরা। অনেককে ধর্ষণের পরপরই হত্যা করা হয়। অনেক চীনা নারীকে যৌনাঙ্গে বেয়োনেট খুঁচিয়ে অথবা পায়ুপথে বাঁশ ঢুকিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মেয়ে শিশুদের যোনিপথ কেটে বড় করে তারপর ধর্ষণ করেছে বর্বর জাপানি সৈন্যরা।
৮। বাংলাদেশ বা তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তান গণহত্যা (মার্চ – ডিসেম্বর ১৯৭১)
মুক্তিযুদ্ধের সময় নৃশংস হত্যাকান্ডে ঢাকার মিরপুরে লাশের স্তুপ।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে গণহত্যা কার্যক্রম অপারেশন সার্চলাইটের অধীনে মার্চ, ১৯৭১ থেকে পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত হয়েছিল। তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের বাঙালীদের স্বাধীকারের দাবীকে চিরতরে নির্মূল করতে পশ্চিম পাকিস্তানের সেনাবাহিনী এ কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘ নয়মাসের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও তাদের সহায়তাকারী দলগুলো আনুমানিক ত্রিশ লক্ষ ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল। এছাড়াও, দুই লক্ষ থেকে চার লক্ষ বাংলাদেশী মহিলাকে পরিকল্পিতভাবে ধর্ষণ করে। এছাড়াও, বাঙালী ও উর্দুভাষী বিহারীরা জাতিগত সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ে। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সংঘটিত ঘটনাসমূহ গণহত্যা হিসেবে পরিচিতি পায়।
যুদ্ধকালীন পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও স্থানীয় দোসররূপে পরিচিত জামাত-ই-ইসলামী শীর্ষস্থানীয় বাঙ্গালী বুদ্ধিজীবীদেরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠে। যুদ্ধ শুরু হবার কয়েকদিনের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল অধ্যাপককে হত্যা করা হয়। তবে, যুদ্ধ শেষ হবার অল্প কয়েকদিন পূর্বে সর্বাধিক সংখ্যক সুনির্দিষ্ট বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনা পরিচালিত হয়েছিল। অধ্যাপক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, শিল্পী, প্রকৌশলী ও লেখককে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে পাকবাহিনী ও রাজাকারেরা ঢাকায় নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল। দীর্ঘ নয়মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পাকবাহিনী ও তার স্থানীয় সহযোগীরা সুপরিকল্পিতভাবে ৯৯১জন শিক্ষক, ১৩জন সাংবাদিক, ৪৯জন চিকিৎসক, ৪২জন আইনজীবী ও ১৬জন লেখক-প্রকৌশলীকে হত্যা করে। এমনকি ১৬ই ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ শেষ হয়ে যাবার পরও অস্ত্রসজ্জিত পাকবাহিনী কিংবা তাদের দোসর কর্তৃক হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
৯। কম্বোডিয়ার কিলিং ফিল্ডস গণহত্যা(১৯৭৫-১৯৭৮)
১৯৭৫ সালের ১৭ এপ্রিল থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত কম্বোডিয়া জুড়ে চলে এক অদ্ভুত রকমের গণহত্যা। খেমার-রুজ (লাল খেমার) বাহিনীর নেতৃত্বে চলা এই গণহত্যার অন্যরকম কিছু বৈশিষ্ট্য ছিল। এই গণহত্যায় একটি নির্দিষ্ট জাতি অন্য আরেকটি জাতিকে হত্যা করেছিল ব্যাপারটা ঠিক তেমন নয়, বরং "নিজ জাতির মানুষেরা পশ্চিমা সংস্কৃতির প্রভাবে আর শহরের আমুদেপনায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে" তাই “এই নষ্ট জাতিকে শুদ্ধ করতে হবে” এই ধারনা থেকেই এই গণহত্যার সূত্রপাত। শুদ্ধ করার জন্য এগিয়ে আসে পুঙ্গেবর কমিউনিস্ট খেমার-রুজ পার্টি। ১৯৭৫ সালে খেমার রুজ বাহিনী কম্বোডিয়ার সরকার উত্খাতের মাধ্যমে কমিনিস্ট শাসন প্রতিষ্ঠা করে। খেমার রুজদের প্রথম কাজ ছিল সাবেক শাসন ব্যবস্থার সাথে যারা যুক্ত ছিল তাদের দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়ে হত্যা করা। এই তালিকায় সাবেক সরকারের সদস্য, সেনা সদস্য, সাংবাদিক, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী এমন কি সাধারণ মানুষ যারা এদের ক্ষমতা দখলকে ভালো চোখে দেখত না তারা সবাই ছিলেন। ধারণা করা হয়, স্বল্পস্থায়ী এই গণহত্যায় হতাহতের সংখ্যা দুই মিলিয়নের কম ছিলনা, যা কম্বোডিয়ার জনসংখ্যার কুড়ি ভাগ। সৌভাগ্যক্রমে ১৯৭৯ সালে আরেকটি কমিউনিস্ট গোষ্ঠী খেমার রুজদের পতন ঘটিয়ে তাদেরকে আত্নগোপন যেতে বাধ্য করে।এই খেমার জনগোষ্ঠীর ভেতরের লাল গ্রুপটি অর্থাৎ বিপ্লবী গ্রুপটিই স্বীয় জাতিগোষ্ঠীর ওপর চালিয়েছিল শতাব্দীর নির্মম এক গণহত্যা।
১০। সার্ব কর্তৃক বসনিয়ান গণহত্যা (১৯৯২-১৯৯৫)
১৯৯২ সালের এপ্রিল মাসে যুগোস্লাভিয়া প্রজাতন্ত্রের বসনিয়া হার্জেগোভিনা সরকার যুগোস্লাভিয়া থেকে তাদের স্বাধীনতা ঘোষণা করে। বসনিয়ায় মুসলমানরা একক বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করত, সেটা ১৯৭১ সাল নাগাদ। পরবর্তী দুই দশকে, অসংখ্য সার্ব আর ক্রোয়াট বসনিয়ায় অভিবাসিত হন। এর ফলে ১৯৯১ এর এক আদমশুমারিতে দেখা যায়, বসনিয়ার ৪০ লাখ বাসিন্দার ৪৪ শতাংশ বসনিয়াক, ৩১ শতাংশ সার্ব, আর ১৭ শতাংশ ক্রোয়াট। স্বাধীনতা ঘোষণার পরবর্তী কয়েক বছর বসনিয়ার সার্ব বাহিনী যুগোস্লাভিয়ার সার্ব অধ্যুষিত সেনাবাহিনীর সহায়তায় বসনিয়ার বেসামরিক বসনিয়াক মুসলিম এবং ক্রোয়েশীয় নাগরিকদের লক্ষ্য করে বর্বর হত্যাযজ্ঞ পরিচালিত করে। ১৯৯৫ এর ১১ জুলাই, বসনীয় সার্ব সেনাবাহিনী স্রেব্রেনিচার দিকে আগুয়ান হতে লাগল। সেখানে অবস্থানরত ডাচ শান্তিরক্ষী বাহিনীগুলোর একটি ব্যাটেলিয়নের চোখের সামনে বসনিয়াক বেসামরিক ব্যক্তিদেরকে আলাদা করে ফেললো তারা। তারপর নারী ও কন্যা শিশুদেরকে বাসে তুলে বসনীয়-নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় পাঠিয়ে দিল। এই নারীদের কেউ কেউ ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়ণের শিকার হন। পেছনে রয়ে গিয়েছিল যে পুরুষ ও ছেলে শিশুরা, তাদেরকে তাৎক্ষণিকভাবে মেরে ফেলা হয়, বা বাসে করে বধ্যভূমির দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। স্রেব্রেনিচাস্থ সার্ব বাহিনীগুলোর হাতে সেদিন ৭,০০০-৮,০০০ পুরুষ ও ছেলেশিশু খুন হয়। সার্বিয়ানরা শুধু হত্যা করেই খান্ত হয়নি, তাদের দ্বারা ধর্ষিত হয় অসংখ্য নারী এবং শিশু। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে নাজি বাহিনী কর্তৃক ইহুদি এবং ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক বাঙ্গালী নিধনের পর এই সার্বিয়ান হত্যাযজ্ঞ ছিল সবচেয়ে জঘন্যতম অপরাধ।
১১। রুয়ান্ডা গণহত্যা (১৯৯৪)
২৬ বছর আগে ১৯৯৪ সালে মাত্র ১০০ দিনের মধ্যে রুয়ান্ডার গণহত্যায় হুতু চরমপন্থিরা হত্যা করেছিলো ৮ লাখ ,মানুষকে যাদের মধ্যে ছিলো সংখ্যালঘু টু্টসি সম্প্রদায়ের মানুষ যারা তাদের প্রতিপক্ষ। রুয়ান্ডার গণহত্যা কোনো রাজনৈতিক কারণে হয়নি। বরং বৃদ্ধি পেতে থাকা উপজাতীয় বিভেদের ফলে সংগঠিত হয় এই জঘন্য গণহত্যা। এই গণহত্যার ফলশ্রুতিতে মৃত্যু বরণ করে পাঁচ লাখ থেকে এক মিলিয়ন মানুষ। সংখ্যালঘু তুসি সম্প্রদায় শতাব্দী ধরে তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে আরেকটি উপজাতি সম্প্রদায় হুতু জাতি গোষ্ঠিকে দমিয়ে রেখে দখল করে রেখেছিল দেশটির শাসনভার। ১৯৬২ সালের কথা, তখন হুতু সম্প্রদায় বিদ্রোহ শুরু করে ক্ষমতাশীল তুসি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে। চরম উত্তেজনা এবং বিদ্রোহ যুদ্ধে রুপান্তরিত হয়, যখন হুতু প্রেসিডেন্ট রহস্যজনক ভাবে ১৯৯৪ সালের এপ্রিল মাসে একটি বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন। এটা ছিল হুতু সম্প্রদায় কর্তৃক একটি রক্তাক্ত প্রতিশোধ তুসিদের বিরুদ্ধে। যেহেতু হুতু নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে এই গণহত্যা সম্পাদিত হয়েছিল তাই গণহত্যার সঠিক সংখ্যা নিরুপন করা সম্ভব হয়নি। গবেষকদের মতে, হুতু প্রেসিডেন্টের হত্যার প্রতিশোধ নিতে এই গণহত্যা সরাসরি রুয়ান্ডার সেনাবাহিনীর উত্সাহে এবং সরকারের পূর্ণ সমর্থনে হুতু মিলিশিয়া দ্বারা পরিচালিত হয় যা তাদেরকে এই নিন্দনীয় হত্যাকান্ডের জন্য সরাসরি দোষী সfব্যস্ত করে
১২। সুদানের দারফুর গণহত্যা
একুশ শতকের নৃশংসতম গণহত্যা হিসেবেই ধরা হয় দারফুর গণহত্যাকে। এই গণহত্যা শুরু হয় ২০০৪ সালে, যখন সুদানের কিছু সংগঠন সুদান সরকারের বিরুদ্ধে অনারব সুদানিদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ এনে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। সুদানের একনায়ক ওমর আল বশির সরকার এ ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে গেলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিক মোড় নেয়। ওমর আল বশিরের নেতৃত্বাধীন সুদান সরকারের সহায়তায় গঠিত আধা সামরিক জানজায়িদ বাহিনী অনারব এই বিদ্রোহীদের দমনের নামে অনারব জনগোষ্ঠীর ওপর শুরু করে নৃশংস এক গণহত্যা। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুসারে এখন পর্যন্ত সুদানে গণহত্যার শিকার হয়ে মারা গেছে দুই লক্ষাধিক মানুষ, ধর্ষণের শিকার হয়েছে অগুনতি নারী আর বাস্তুহারা হয়েছে বিশ লক্ষাধিক মানুষ।
১৩। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা গণহত্যা।
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ প্রমাণিত বলে রায় ঘোষণা করেছে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় নেদারল্যান্ডসের হেগে স্থাপিত আইসিজেতে এ রায় ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন চারটি আদেশও দিয়েছে আইসিজে। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে গম্বিয়ার করা মামলার রায় ঘোষণা করেন আইসিজে প্রেসিডেন্ট আব্দুল কাওয়াই আহমেদ ইউসুফ। রোহিঙ্গারা ১৯৭৮, ১৯৯১-১৯৯২, ২০১২, ২০১৫ ও ২০১৬-২০১৭ সালে সামরিক নির্যাতন এবং দমনের সম্মুখীন হয়েছে। ২০১৬-১৭ মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের পূর্বে অনুমানিক ১ মিলিয়ন রোহিঙ্গা মায়ানমারে বসবাস করত। অধিকাংশ রোহিঙ্গা ইসলাম ধর্মের অনুসারি যদিও কিছু সংখ্যক হিন্দু ধর্মের অনুসারিও রয়েছে। ২০১৩ সালে জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের বিশ্বের অন্যতম নিগৃহীত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী হিসেবে উল্লেখ করেছে। ১৯৮২ সালের বার্মিজ নাগরিকত্ব আইন অনুসারে তাদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করা হয়েছে। তিনি রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দেয়ার আদেশ দিয়ে বলেন, রোহিঙ্গা গণহত্যার দায় কোনোভাবেই মিয়ানমার এড়াতে পারে না।
রোহিঙ্গা গণহত্যার রায়ে যে চারটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেয়া হয়েছে সেগুলো হচ্ছে-
১. গণহত্যার দায় নিতে হবে মিয়ানমারকে: রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ প্রমাণিত বলে রায় দিয়েছে আইসিজে। তাদের দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ পাবে না মিয়ানমার।
২. রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা দিতে হবে: অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এখন থেকে রোহিঙ্গাদের আর কোনো ধরনের নির্যাতন করা যাবে না। তাদের সুরক্ষা দিতে হবে।
৩. রোহিঙ্গা নির্যাতনের তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে: রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর যে পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা চালানো হয়েছে তার সমস্ত নথিপত্র প্রমণাদি সংরক্ষণ করতে হবে মিয়ানমারকে। কোনো ভাবে সেগুলো সরানো বা নষ্ট করা যাবে না।
৪. চারমাসের মধ্যে নিধনযজ্ঞ বন্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে: আগামী চার মাসের মধ্যে রোহিঙ্গা নিষধযজ্ঞ বা নির্যাতন বন্ধ করতে হতে। রাখাইনে হত্যাকাণ্ড, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগে জড়িত মিয়ানমার সেনাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। সেই সঙ্গে মামলার বাদী গাম্বিয়ার সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখতে হবে মিয়ানমারকে।
উপসংহারঃ সবাইকে নিজ নিজ কর্মফল ভোগ করতে হয়।
রুয়ান্ডা গণহত্যার অন্যতম সন্দেহভাজন ফেলিসিয়ে কাবুগা ২৬ বছর পালিয়ে থাকার পর ফ্রান্সে আটক হয়েছেন। শনিবার (১৬ মে ২০২০) গ্রেফতার হওয়ার পর তাকে সেখানেই অন্তরীণ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির বিচার মন্ত্রণালয়। রুয়ান্ডার ৮৪ বছর বয়সী এই সাবেক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ১০০ দিনে আট লাখ মানুষ হত্যায় সশস্ত্র গোষ্ঠীকে অর্থ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
১৯৯৪ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ১০০ দিনের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছিল রুয়ান্ডার প্রায় আট লাখ নাগরিক। ২৫ বছর আগে শুরু গণহত্যার শিকার অধিকাংশই সংখ্যালঘু তুতসি সম্প্রদায়ের মানুষ ছিল। গণহত্যা পরিচালনাকারীরা ছিল হুতু সম্প্রদায়ের। যদিও রুয়ান্ডাতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার, কিন্তু তারপরও এত অল্প সময়ে বিশালসংখ্যক মানুষকে হত্যা করার কথা চিন্তা করাও ছিল কল্পনাতীত।
ফ্রান্সের বিচার বিভাগের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, নিজের পরিচয় লুকিয়ে কাবুগা প্যারিসের একটি আবাসিক ফ্লাটে বসবাস করে আসছিলো। কাবুগার বিরুদ্ধে ১৯৯৪ সালে রুয়ান্ডায় গণহত্যা চালানো ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ রয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে। আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডার মোস্ট ওয়ান্টেড এই ব্যক্তির মাথার মূল্য ৫০ লাখ ডলার ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র।
রুয়ান্ডার দুটি মূল নৃতাত্বিক জনগোষ্ঠী হুতু ও তুতসি। ঐতিহাসিকভাবে দুটি গোষ্ঠী পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বি। ১৯৯০ এর দশকে জনগোষ্ঠী দুটি গৃহযুদ্ধে জড়ায়। হুতু ব্যবসায়ী ফেলিসিয়েন কাবুগার বিরুদ্ধে ১৯৯৪ সালে একশো দিনের মধ্যে আট লাখ তুতসিকে হত্যায় সশস্ত্র গোষ্ঠীকে অর্থ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। জাতিসংঘের গঠিত একটি আদালত কাবুগাকে ১৯৯৭ সালে সাত ধরনের অভিযোগে অভিযুক্ত করে। তবে তার আগেই সে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়।
১৬ মে ২০২০ ফ্রান্সের বিচার মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, রুয়ান্ডা গণহত্যার অর্থদাতা হিসেবে পরিচিত ফেলিসিয়েন কাবুগা ১৯৯৪ সাল থেকে জার্মানি, বেলজিয়াম, কঙ্গো-কিনশাসা, কেনিয়া কিংবা সুইজারল্যান্ডে পালিয়ে বিচার এড়িয়ে গেছে। ওই বিবৃতিতে জানানো হয় গ্রেফতারের পর এই পলাতক ব্যক্তিতে প্যারিসের আপিল আদালতে তোলা হবে আর পরে তাকে হেগের আন্তর্জাতিক আদালতের কাছে তুলে দেওয়া হবে।
জাতিসংঘের এক ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, গণহত্যায় ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ তলোয়ার, নিড়ানি এবং অন্যান্য কৃষিযন্ত্রপাতি কেনার জন্য দায়ী ফেলিসিয়েন কাবুগা। এসব যন্ত্রপাতি গণহত্যার অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হয়েছে। রুয়ান্ডা গণহত্যায় আরও দুই সন্দেহভাজন এখনও পলাতক রয়েছে। তারা হলো অগাস্টিন বিজিমানা ও প্রোতাইস এমপিরিয়ানিয়া।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক
[email protected]
১৪ ই মে, ২০২০ রাত ৯:৩২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
যা নাই গাওয়ালে
তাই বায়না ধরে ছাওয়ালে !!
২| ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ৯:৩৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
মানবতাকে ম্লান হয়ে গেছে কিছু দৈত্যের উদ্ভবের ফলে।
১৪ ই মে, ২০২০ রাত ৯:৫৭
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
যথার্থ বলেছেন গাজীসাব।
এদের পতনও কিন্তু গ্লানিকর
ভাবেই হয়ে থাকে। এরা
নিক্ষিপ্ত হয় ইতিহাসের
আস্তাকুড়ে !
৩| ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ১০:১১
নতুন বলেছেন: রাজা মহারাজা গন এক রকমের খুনি মাত্র। মানুষকে হত্যা করতে পারে সেটাই তার ক্ষমতা। মানুষ তাদের ভয় পেয়ে মেনে নিতো। তাদের মাঝে কিছু একটু মানবিক ছিলো।
সুলতান সোলাইমানের বাবা কি আমেনিয়ানদের হত্যার হুকুম দাতা?
আরেকটা হত্যা চলছে, ইয়ামেনে এবং সেটা হচ্ছে সৌদি সরকারের টাকায়, আমেরিকার মদদে।
https://en.wikipedia.org/wiki/Yemeni_Civil_War_(2015–present)
112,000+ killed overall in Yemen (12,600+ civilians)[146]
500+ killed overall in Saudi Arabia[147]
49,960 wounded overall in Yemen[148] (10,768 civilians)[149]
3,154,572 people displaced[150]
84,701 children died from starvation (per Save the Children)[151] and 2,556 people died due to a cholera outbreak (April 2017–October 2018)[152]
১৫ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:১৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কোন দেশে কোন কারনে মানবতা বিবর্জিত
গণহত্যা কাম্য নয়। সবাই মানবিক হোক।
সুন্দর পৃথিবী গড়ি আগামীর জন্য।
৪| ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ১০:৩০
শের শায়রী বলেছেন: আমার কেন যেন মনে হয় ষ্ট্যালিনের মত নৃশংসতা এত দীর্ঘ সময় অন্যকেউ দেখাতে পারে নি। কেন যেন প্রচন্ড ঘৃনা করি এই মানুষটাকে।
১৫ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:২১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সব গণহত্যার নায়করাই্
মানসিকতার দিক থেকে
এক ও অভিন্ন। সবার জন্য
একরাশ ঘৃনা।
৫| ১৫ ই মে, ২০২০ রাত ১২:৫৮
গেছো দাদা বলেছেন: শিউরে উঠি এসব জেনে । পূথিবীর সব থেকে বর্বর পশুর নাম মানুষ। লজ্জা হয় নিজের মানুষ পরিচয় নিয়ে। লেখক কে এই তথ্যসমৃদ্ধ পোষ্টের জন্য ধন্যবাদ জানাই।
১৫ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:২৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
মানুষই সৃষ্টির সেরা জীব
আবার তাদের কর্যকলাপে
তারাই রুপান্তরিত হয় নিকৃষ্ট মানুষে।
কোথায় স্বর্গ কোথায় নরক কে বলে তা বহুদূর
মানুষের মাঝেই স্বার্গ নরক মানুষেতেই সর অসুর।
দাদা তোমাকে পেয়ে দারুন খুশি হলাম।
৬| ১৫ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:৩১
নতুন বলেছেন: স্টালিন মানুষিক রোগী ছিলেন না হলে কারুর পক্ষে এমন কাজ করা সম্ভবনা।
তার স্ত্রী আত্ন হত্যা করেছিলেন, তার ছেলে আমেরিকার হাত বন্ধি ছিলেন এবং পরে আত্নহত্যা করে কিন্তু তিনি ছেলেকে ছাড়াতে কোন সতে` রাজী হননি।
১৫ ই মে, ২০২০ রাত ৮:০৭
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
মানবিক গুনাবলী থাকলে কি আর
তার পক্ষে গণহত্যা পরিচালনা করা
সম্ভব হতো। মানসিক বিকারগ্রস্থ
হলে তার পক্ষে মানবতা বিবর্জিত
কাজ করা সম্ভব।
৭| ১৫ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:২৯
জাফরুল মবীন বলেছেন: বীভৎস্য বাস্তবতা!
১৫ ই মে, ২০২০ রাত ৮:০৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
নিষ্ঠুর ও নির্মম বাস্তবতা
৮| ১৫ ই মে, ২০২০ বিকাল ৫:৫৯
রাজীব নুর বলেছেন: যা নাই নাই তাই তো পেতে ইচ্ছা করে।
১৫ ই মে, ২০২০ রাত ৮:০৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
যা আছে তাও যখন আর একটা পেতে চান
যা নাই তার জন্যেতে আদা জল খয়ে নামবেনই!!!
৯| ১৫ ই মে, ২০২০ রাত ৯:০৯
অনল চৌধুরী বলেছেন: ১৫ কোটি আদিবাসী সহ পৃথিবীর দেশে দেশে ইউরোপীয়-এ্যামেরিকান সন্ত্রাসীদের করা গণহত্যার নাম নাই কেনো?
দক্ষিণ এ্যামেরিকায় স্পেনীয়দের গণহত্যার ইতিহাস কই?
ভারত,অষ্ট্রেলিয়া,ক্যানাডা,নিউজিল্যান্ডে বৃটিশদের গলহত্যার তথ্য কই?
আফ্রিকার দেশে দেশে ফরাসী,বেলজিয়ান,ডাচদের গণহত্যার কথা জানেন?
৯৫৩ সালে স্ত্যালীনের মৃত্যুতে রাশিয়ার ভাগ্য পরিবর্তন হয়। অবসান হয় চলমান গণহত্যার- কোনো তথ্য-প্রমাণ আছে ষ্ট্যালিন গণহত্যা চালিয়েছিলেন? তিনি গণহত্যাকারী হলে অঅনাক্রমণ চুক্তি ভঙ্গ করে সোভিয়েত উইনিয়ন আক্রমণ করে ২ কোটি মানুষ হত্যা করা জার্মান জাতিকে তিনি পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিন্হ করে দিতেন।তার সেই ক্ষমতা ছিলো।
কিন্ত দয়া করে করেননি।
ইতিহাস তথ্যভিত্তিতক হওয়া উচিত।
১০| ১৫ ই মে, ২০২০ রাত ১১:৩৮
ইব্রাহীম আই কে বলেছেন: সভ্যতার আদলে মোড়ানো এক বর্বর শতাব্দী ছিলো বিংশ শতাব্দী!
১১| ২৭ শে আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৪০
মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
ভয়ঙ্কর গনহত্যা।
©somewhere in net ltd.
১| ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ৯:২৪
রাজীব নুর বলেছেন: জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যা কান্ড খুব বেশি মর্মান্তিক লেগেছে আমার কাছে।