নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
২০ মার্চ আন্তর্জাতিক সুখ দিবস বা বিশ্ব সুখী দিবস। সুখের সংজ্ঞা কি! কোন মনস্তাত্ত্বিক গবেষণা করেও সুখের প্রকৃত সংজ্ঞা দিতে পারেননি। বলেছেন সুখ খুঁজে নিতে হয়-সুখ লুকিয়ে আছে নিজের মধ্যে, নিজের কর্মের মধ্যে। এমন একটি মনস্তাত্ত্বিক জটিল বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে জাতিসংঘ ২০১২ সালের ২৮ জুন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক অধিবেশনে আন্তর্জাতিক সুখ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর বিশেষ অধিবেশনে তৎকালীন মহাসচিব বান কি মুন প্রতিবছর ২০ মার্চকে ‘ইন্টারন্যাশনাল ডে অব হ্যাপিনেস’ ঘোষণা করেন। জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য দেশ এতে সম্মতি দেয়। পরবর্তী বছর (২০১৩) দিবসটি প্রথম পালিত হয়। এই দিনে দক্ষিণ আফ্রিকায় নেতা নেলসন মেন্ডেলার নাতি এনডাবা মেন্ডেলা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের কন্যা চেলসী বিশ্বের সব মানুষের সুখের জন্য প্রার্থনা করেন। তারা বিশ্বকে সুখী রাখার উপায় বা ইস্যু নিয়ে প্রতিটি দেশকে কাজ করার আহ্বান জানান। এরপর থেকে প্রতিবছর বিশ্বের একাধিক দেশ দিবসটি নানা আয়োজনে পালন করে। দিবসটির প্রতিষ্ঠাতা অর্থনীতিবিদ জেম এলিয়েন। যাকে ভূমিষ্ঠের পর তাকে ফেলে দেয়া হয় কলকাতার পথের ধারে। তিনি দৃষ্টিতে আসেন মাদার তেরেসার। কোলে তুলে নেন তাকে। এক পর্যায়ে দত্তক নেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিঙ্গল মাদার এ্যানা বিলি ইলিয়েন। নাম দেন জায়ামী ইলিয়েন। উচ্চ শিক্ষা লাভ করে মানব প্রেমিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। নিজেকে দিয়ে বুঝতে পারেন জীবনে সুখের প্রয়োজন কতটা। বিষয়টি জাতিসংঘে সুখী দিবস করার প্রস্তাব করার সঙ্গেই কণ্ঠ ভোটে অনুমোদিত হয়। প্রসঙ্গত জায়ামী ইলিয়েন জাতিসংঘের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও জাতিসংঘের পরামর্শদাতা এবং শান্তি ও নিরাপত্তা অর্থনীতিবিদদের প্রতিনিধি এবং জাতিসংঘ অনুমোদিত এনজিও ইসিওএসসি বিশেষ পরামর্শদাতার দায়িত্ব পালন করেন। জাতিসংঘ ঘোষিত অনেক দিবস ঘটা করে আসে অনেক দিবস আড়ালেই চলে যায়। এবারের বিশ্ব সুখী দিবস পালনে জাতিসংঘই বিপাকে পড়েছে। করোনাভাইরাসের থাবায় বিশ্বের সাধারণ মানুষের ‘সুখী’ হওয়ার আবেগ অনুভূতি উধাও হয়ে গেছে। জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) করোনাভাইরাসের কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে পৃথিবীর মানুষকে বাঁচাতে ৭/২৪ (সপ্তাহের ৭ দিনই ২৪ ঘণ্টা) একীভূত করে ফেলেছে। এ্যান্টি ভাইরাস বানাতে বিজ্ঞানীদের গবেষণা কাজে বিশ্রাম উড়ে গেছে। উন্নত দেশ, উন্নয়নশীল দেশ, মধ্য আয়ের দেশ, গরিব দেশ সবই এক কাতারে। করোনার ছোবলে সব দেশের মানুষের মনে ‘অ-সুখের’ আগমনে সুখ দূরীভূত। দিনটি পালন সংক্রান্ত বিষয়ে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের প্রস্তাবে বলা হয় মানুষের জীবনের মূল উদ্দেশ্য সুখে থাকা। ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণসহ পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের সুখ-সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য দিবসটি পালন করা হবে। এ বছর জতিসংঘ কি করে বলবে সুখী দিবস পালন করতে?
সে যাই হোক, বিশ্ব সুখী দিবসে জাতিসংঘ তাদের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর ওপর পূর্ণ এক বছর জরিপ পরিচালনা করে এ দিবসের সুখী দেশের তালিকা প্রকাশ করে। এই তালিকা তৈরি করতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে একটি দেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি), গড় আয়ু, সামাজিক সুরক্ষা, বিশ্বাস, জীবনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা এবং অনুদান দেওয়ার উদারতাকে। এই তালিকা অনুযায়ী এবারের বিশ্বের সবচেয়ে সুখী দেশ ডেনমার্ক। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সুইজারল্যান্ড। এই তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ভুটান। ভুটানের অবস্থান ৮৪ এবং তারপরেই আছে পাকিস্তান। পাকিস্তান ৯২তম সুখী দেশ। এরপর আছে নেপাল। নেপালের অবস্থান ১০৭ নম্বরে। তবে বাংলাদেশ পেছনে ফেলেছে শ্রীলঙ্কা এবং ভারতকে। তালিকায় শ্রীলঙ্কার অবস্থান ১১৭তম এবং ভারত ১১৮তম অবস্থানে আছে। সুখী দেশের তালিকায় ১৩তম অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের অবস্থান ২৩।
প্রতিবছর দিনটি নিভৃতে এসে নীরবেই চলে যায়। রেখে যায় জীবনের হাসি কান্না সুখ দুঃখের মধ্যেও কিছুটা আনন্দ। কিছুটা সুখানুভূতি। বর্তমানে মানুষ যে নিত্য নতুন প্রযুক্তি তৈরী করছে তা কিন্তু আরো একটু আয়েশে থাকা আরো একটু সুখে থাকার আশায়। তবে ''সুখী হওয়াটা এমন একটা ব্যাপার নয় যে, এটা এমনি এমনি ঘটে গেল। আপনাকে এজন্য অভ্যাস করে করে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে'' বলছেন, লুরি স্যান্তোস, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদ্যার একজন অধ্যাপক। স্যান্তোস বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন যে, কীভাবে খারাপ লাগা বা দুঃখের বিষয়গুলোকে ভুলে যেতে হবে। ''বিজ্ঞান প্রমাণ করে দিয়েছে যে, সুখী হতে হলে অব্যাহতভাবে চেষ্টা করে যেতে হবে। এটা সহজ কাজ নয়, সেজন্য সময় দরকার। তবে এটা করা সম্ভব,'' বলছেন স্যান্তোস। অধ্যাপক স্যান্তোসের সুখী হওয়ার সেরা পাঁচটি পরামর্শ তুলে ধরা হলোঃ
১. প্রাপ্তির একটি তালিকা করুন। যেগুলোকে আপরি নিজেদের জীবনে প্রাপ্তি বলে মনে করেন। এই তালিকা তৈরির কাজটি প্রতিদিন রাতে একবার হতে পারে বা অন্তত সপ্তাহে একবার করতে হবে।
২. বেশি ঘুমান আর ভালো থাকুন। প্রতি রাতে অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমানো, এবং সেটা হতে হবে সপ্তাহের সাতটি রাতেই। "বেশি ঘুমানোর ফলে বিষণ্ণতায় ভোগার সম্ভাবনা হ্রাস পায় এবং আপনার ভেতর ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করে।''
৩. ধ্যান। প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট ধ্যান করুন, সপ্তাহের প্রতিটি দিন। যখন তিনি শিক্ষার্থী ছিলেন, নিয়মিত ধ্যান তার ভেতর ভালো লাগার অনুভূতি তৈরি করতো।
৪। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে আরো বেশি সময় কাটানো। সাম্প্রতিক বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে চমৎকার সময় কাটানো গেলে সেটা মানুষকে প্রফুল্ল বা সুখী করে তোলে। যাদের আমরা পছন্দ করি, তেমন মানুষের সঙ্গে সময় কাটানো- অথবা 'ব্যক্তিগত ভালো সম্পর্ক ও সামাজিক যোগাযোগের' ফলে মানুষের মধ্যে একটা আনন্দ এবং স্বস্তি তৈরি করে, যা আসলে আমাদের ভালো থাকাকে আরো বাড়িয়ে তোলে।
৫. সামাজিক মাধ্যমে কম সময় আর বাস্তব যোগাযোগ বৃদ্ধি। সামাজিক মাধ্যম অনেক সময় আমাদের মিথ্যা সুখের আবহ দিতে পারে, কিন্তু তাতে ভেসে না যাওয়ার মতো সতর্ক থাকতে হবে। ''সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে যে, যেসব মানুষ ইন্সটাগ্রামের মতো সামাজিক মাধ্যমগুলো বেশি ব্যবহার করে, তারা ওইসব মানুষের চেয়ে কম সুখী হয়ে থাকে, যারা ওগুলো বেশি একটা ব্যবহার করে না।
উপসংহারে বলাযায়, সুখী হতে হলে আপনি যদি জীবনে সত্যিই সুখী হতে চান, তাহলে প্রাপ্তির হিসাব দিয়ে শুরু করুন, রাতে চমৎকার একটি ঘুম দিন, মনকে বিক্ষিপ্ত অবস্থা থেকে সরিয়ে মনোযোগী করুন, যেসব মানুষকে পছন্দ করেন, তাদের সঙ্গে বেশি সময় কাটান আর সামাজিক মাধ্যম থেকে কিছুদিন বিরতি নিন।আপন হৃদয়ের সুপ্ত কোণে খুঁজে নেয় সুখের এক নির্মল পরশ। বিশ্বের সব মানুষ সূর্যোদয়ের সঙ্গে প্রার্থনা করে দিনটি যেন সুন্দর শান্তি ও সুখের পরশেই কেটে যায়। সুখী দিবসের মূল প্রতিপাদ্য হলো ‘শেয়ার হ্যাপিনেস’ (সুখকে ভাগাভাগি করে নেয়া)। প্রত্যেক মানুষ সুখ ভাগাভাগি করে নিলে বিশ্ব শান্তিময় হয়ে উঠবে।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক লিংক
[email protected]
২০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১:২১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সুখ একটা আপেক্ষিক ব্যারোমিটার,
কেউ কাচা মরিচ পান্তা ভাতে সুখী
কেউ লক্ষ কোটি টাকা নিয়েও দুঃখী!!
ধন্যবাদ অনল'দা চমৎকার মন্তব্য প্রদানে
প্রীত করার জন্য। মানুষের লোভ, লালসার
পরিণতি ভোগ করছে বাংলাদেশ।
২| ২০ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ১০:৫০
সাগর শরীফ বলেছেন: বিশ্ব সুখী দিবসে মানুষ আজ অসুখের আতংকে!
২০ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:২৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আশা ও বিশ্বাস করি আল্লাহ শিঘ্রই আমাদের
এই গজবে থেকে মুক্তি দান করবেন।
৩| ২০ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: মুরুব্বী আপনি কি সুখী?
২০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১১:০৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আলহামদুলিল্লাহ
আমি এক বউয়েই সুখী !!
তাই আপনার মতো দ্বিতীয়
বউয়ের খায়েশ নাই!!
৪| ২১ শে মার্চ, ২০২০ রাত ২:০৩
অনল চৌধুরী বলেছেন: টাকার মতো বউয়ের পরিমাণ দিয়েও সুখ নির্ধারিকত হয়না্
বেশী বউ থাকলে মহাবিপদ !!!
তারা মারামারি করে জীবন অতিষ্ট করে ফেলে।
এরশাদের অবস্থা চিন্তা করেন!!
এতোবড় একটা লম্পট,অগণিত বউ,কিন্ত শেষ পর্যন্ত নাতনির বয়সী বউ বিদিশার পিটানি খেয়ে শিশুর মতো কান্নাকাটি করেছিলো !!!!!!
আবার ফিরে গিয়েছিলো পতিভক্তা রওশনের ছায়াতলে!!
৫| ২১ শে মার্চ, ২০২০ সকাল ৮:২৪
জাহিদ হাসান বলেছেন: Stay at Home, stay safe.
Stay at Home, stay safe.
Stay at Home, stay safe.
Stay at Home, stay safe.
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১২:৫৬
অনল চৌধুরী বলেছেন: টাকা মানে সুখ-এই পূজিবাদী মানসিকতা দিয়ে কোরোদিনও প্রকৃত সুখী হওয়া যাবে না।
সুখের জন্য বাংলদেশের উপজাতি এং ভূটানের লোকদের দিকে তাকানো উচিত,যারা প্রাচুর্য না থাকার পরও অনেক সুখী।
১৯৯৫ সালে বাংলাদেরে মানুষরা পৃথিবীতে সবচেয়ে সুখী বলে এক গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছিলো,যেখানে থেকে অবস্থা এখন খারাপের দিকে।