নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
বিখ্যাত রুশ ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার ও প্রবন্ধকার নিকলাই ভাসিলিয়েভিচ গোগল। সাহিত্যের ইতিহাসে প্রথমদিকের ছোটগল্প মাস্টারদের মধ্যে তিনি অন্যতম। ইউক্রেনীয় হলেও গোগল সাহিত্য রচনা করেছেন রুশ ভাষায়। তার অনেক লেখাতেই ইউক্রেনীয় সংস্কৃতির প্রভাব পড়েছে এবং তার সাহিত্যে ওঠে এসেছে ইউক্রেনের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও জীবনধারা। তাকে আলেকজান্ডার পুশকিন, প্রসপার মেরিমে, ই টি এ হফম্যান, এডগার এলান পো ও নাথানিয়েল হার্থানের পাশাপাশি রাখা হয়। গোগল সম্পর্কে বিখ্যাত রুশ সাহিত্যিক ফিওদোর দস্তয়েভ্স্কি বলেছেন, "আমরা সবাই গোগলের ওভারকোট থেকেই বের হয়ে এসেছি।" বিখ্যাত এই লেখক ১৮৫২ সালের সালের আজকের দিনে রুশ সম্রাজ্যের মস্কোতে মৃত্যুবরণ করেন। আজ গোগলের ১৬৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। রুশ লেখক ভাসিলিয়েভিচ গোগলের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
নিকলাই ভাসিলিয়েভিচ গোগল ১৮০৯ সালের ১ এপ্রিল ইউক্রেনের কসাক গ্রামে জম্মগ্রহণ করেন। ১৮২০ সাল থেকে ১৮২৮ সাল পর্যন্ত নিজাইনের স্কুল অব হায়ার আর্টে পড়েন। সেখানেই তার লেখালেখির শুরু। ১৮২৮ সালে তিনি সেন্ট পিটার্সবুর্গে চলে আসেন। এখানে ১৮২৯ মালে ভি এলোভ ছদ্মনামে জার্মান প্রভাবিত রোমান্টিক কবিতার বই হ্যান্স কুচেলগার্টেন প্রকাশিত হয়। তবে তিনি এর সবগুলো কপি নষ্ট করে ফেলেন। প্রতিজ্ঞা করেন আর কবিতা লিখবেন না। এরপর সাহিত্যের সেরাদের সংস্পর্শে আসেন। ১৯৩১ সলে আন্তন ডেলভিগের ‘নর্থান ফ্লাওয়ার্স’ এ গল্প ছাপা হওয়ার পর পুশকিনের সঙ্গে পরিচিত হন। ওই বছর তিনি ইউক্রেনীয় গল্প সংকলনের প্রথম খণ্ড ‘ইভিনিং অন আ ফার্ম নেয়ার ডিকাঙ্কা’ প্রকাশ করেন। বইটি ব্যাপক সফলতা পায়। পরের বছর এর দ্বিতীয় খণ্ড প্রকাশ করেন। ১৮৩৫ সালে প্রকাশ করেন দুই খণ্ডের মির্গারড। তার লেখাগুলোর মাধ্যমে প্রকাশিত হয় রাশিয়ান ও ইউক্রেনীয় জীবনের ভিন্নতা এবং ইউক্রেনের স্বাতন্ত্র্য জীবন পদ্ধতি ও চরিত্র। যা নামজাদা সাহিত্য সমালোচকদের নজর কাড়ে। এ সময়ে ইউক্রেনের ইতিহাসের প্রতি তার আগ্রহ জন্মে। চেষ্টা করেন কিয়েভ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে যোগদানের। পুশকিন ও সার্গেই ইউভারভের চেষ্টা সত্ত্বেও আমলাতান্ত্রিক বাধায় সফল হননি। ওই বছর তারাস বুলবা নামে ইউক্রেনিয়ার ইতিহাসনির্ভর বিখ্যাত গল্পটি লিখেন। যেখানে স্থান পেয়েছে কসাক তরুণের জীবন কাহিনী। এ সময় তার আজীবনের বন্ধু মিখাইলো মাকসামভোচের সঙ্গে দেখা হয়। ১৮৩৪ সালে সেন্ট পিটার্সবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে মধ্যযুগের অধ্যাপক পদে যোগ দেন। অবশ্য পরের বছরই তিনি পদত্যাগ করেন।
১৮৩২ সালে ১৮৩৬ সালের মধ্যে তিনি সেরা কিছু কাজ করেন। ১৮৩৬ সালে প্রকাশিত হয় রাশিয়ার প্রদেশগুলোতে চলমান আমলাতান্ত্রিক জটিলতা নির্ভর কমেডি নাটক দ্য গভর্নমেন্ট ইন্সপেক্টর। ১৮৩৬ থেকে ১৮৪৮ সাল পর্যন্ত তিনি জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও সুইজারল্যান্ডে কাটান। এ সময়ে সে সব দেশের বিখ্যাত অনেক ব্যক্তিদের কাছাকাছি আসেন। ১৮৩৭ সালে পুশকিনের মৃত্যু তার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এরপর লিখেন বিখ্যাত বিদ্রুপাত্মক উপন্যাস ডেথ সোলস (১৮৪২), দ্বিতীয় কমেডি ম্যারেজ (১৮৩৫) এবং বিখ্যাত ছোটগল্প দ্য ওভারকোট (১৮৪২)। গোগলের সবচেয়ে নামকরা রচনা হল মৃত আত্মা ( Dead Souls), যাকে আধুনিক রুশ উপন্যাসের পথিকৃৎ বলে গণ্য করা হয়। ডেথ সোলস’ ছিল দান্তের বিখ্যাত ‘দ্য ডিভাইন কমেডি’র কাউন্টারপার্ট। তার ইচ্ছা ছিল এটি তিনখণ্ডে শেষ করবেন। এই উপন্যাসের দ্বিতীয় খণ্ডটিও লেখা হয়েছিল, যা গোগল নিজ হাতে পুড়িয়ে ফেলেন। `তার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে- গদ্য : উইম্যান (১৮৩০) ও সিলেক্টেড প্যাসেজেস ফ্রম করসপন্ডেন্স উইথ ফ্রেন্ডস (১৮৪৭), ফিকশন : আরাবিস্কু (১৮৩৫), দ্য পোট্রেট (১৮৩৫), দ্য নোজ (১৮৩৫-৩৬) ও দ্য ক্যারিজ (১৮৩৬) এবং পদ্য : ওড টু ইতালি (১৮২৯)। গোগলের কিছু বই বাংলায় অনূদিত হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃঅরুন সোমের ‘দ্য ওভারকোট’, শহিদুল আলম অনূদিত ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’ও ননী ভৌমিকের করা ‘তারাস বুলবা’। এ ছাড়া সোভিয়েত আমলে তার অনেকগুলো বই বাংলায় অনূদিত হয়েছে।
১৮৪৮ সালের এপ্রিলে জেরুজালেমে তীর্থযাত্রা শেষে তিনি রাশিয়া ফিরেন। ফিরে এসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল ভ্রমণ করেন। ওই সময় কাল্পনিক গল্প লেখার জন্য নিজেকে পাপী ভাবতে থাকেন। ১৮৫২ সালে ২৪ ফেব্রুয়ারি তিনি কিছু পাণ্ডুলিপি পুড়িয়ে ফেলেন। যেখানে ছিল ডেথ সোলসের দ্বিতীয় খণ্ড। পরে তিনি বলেন, এটা ভুল ছিল। শয়তানের অনুপ্রেরণায় এই কাজ করেছেন। ১৮৫২ সালের প্রথম দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন গোগল। অসুস্থ হবার প্রায় তিন মাস পরে ১৮৫২ সালের ৪ মার্চ রুশ সম্রাজ্যের মস্কোতে মৃত্যুবরণ করেন গোগল। আজ গোগলের ১৬৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। রুশ লেখক ভাসিলিয়েভিচ গোগলের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক লিংক
[email protected]
০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমি আপনার মতো প্রতিভাবান না
তাই আমাকে দিয়ে ওসব হবে না।
যাদের নিয়ে আছি তাদের নিয়ে
থাকতে দিন। আমাকে আমার মতো থাকতে দাও
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:১৭
রাজীব নুর বলেছেন: নিকলাই ভাসিলিয়েভিচ শ্রদ্ধা জানাই।
নিজ থেকে গল্প কবিতা বা প্রবন্ধ কিছু লিখুন।