নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
ভাষাতাত্ত্বিক ও সাহিত্যবিশারদ ডঃ সুকুমার সেন। ভাষাচার্য ডঃ সুকুমার সেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষক ও বিশেষজ্ঞ হিসেবে সুখ্যাত।বৈদিক ও ধ্রুপদী সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত, বাংলা, আবেস্তা ও প্রাচীন পারসিক ভাষায় তার বিশেষ বুৎপত্তি ছিল। তুলনামূলক ভাষাতত্ত্ব ও পুরাণতত্ত্ব আলোচনাতেও তিনি তার বৈদগ্ধের পরিচয় রেখেছিলেন। ভাষাতত্ত্ব ও পুরাণ ছাড়া রবীন্দ্রসাহিত্যেও তাঁর ছিল বিশেষ প্রজ্ঞা। তাঁর কাছে বাঙালি জাতির ঋণ অনেক। তিনি ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য ব্যাখ্যাতা ও রসজ্ঞ। সুকুমার সেন মিথ-আশ্রিত ভাষাতত্ত্ব বা পুরাণচর্চার পরিবর্তে আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিটি অবলম্বন করতেন। জয়দেবের গীতগোবিন্দ কাব্যের প্রাচীন পুঁথিটি তাঁরই আবিষ্কার। সেকশুভোদয়া পুঁথিটিও তিনি সম্পাদনা করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হলো : 'ভাষার ইতিবৃত্ত', 'বাংলা স্থাননাম', 'রামকথার প্রাক-ইতিহাস', ' ভারত-কথার গ্রন্থিমোচন', 'বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস', 'বঙ্গভূমিকা' Women's Dialect in Bengali ও A History of Brajabuli Literature. ইত্যাদি। ১৯৬৪ সালে ভারতীয় সাহিত্যের ইতিহাস গ্রন্থের জন্য রবীন্দ্র পুরস্কার পান। এশিয়াটিক সোসাইটি তাঁকে 'যদুনাথ সরকার পদক' দিয়ে সম্মানিত করে। রবীন্দ্রচর্চা কেন্দ্র থেকে পান 'ররীন্দ্র তত্ত্বাচার্য উপাধি। আজ ভাষাতাত্ত্বিক ও সাহিত্যবিশারদ ডঃ সুকুমার সেনের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯২ সালের আজকের দিনে তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। সাহিত্যবিশারদ ডঃ সুকুমার সেনের মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
সুকুমার সেন ১৯০১ সালের ৬ জানুয়ারি কলকাতায় মাতুতালয়ে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতা হরেন্দ্রনাথ মিত্র ও মা নলিনী দেবী। বর্ধমান জেলার গোতান গ্রামে ছিল তাঁদের পৈতৃক নিবাস। এখানেই সুকুমার সেনের পড়াশোনার শুরু। ১৯১৭ সালে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুল থেকে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষা এবং ১৯১৯ সালে বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে বাংলা, সংস্কৃত, লজিক ও অঙ্কে লেটার সহ প্রথম বিভাগে আই.এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯২১ সালে কলকাতার সংস্কৃত কলেজ থেকে সংস্কৃতে সাম্মানিক সহ প্রথম বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে বি.এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯২৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এম.এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯২৫ সালে "সিনট্যাক্স অফ বৈদিক প্রোজ" নামে একটি থিসিস লিখে প্রেমচাঁদ-রায়চাঁদ বৃত্তি লাভ করেন। ১৯২৬ সালে তার প্রথম গবেষণা প্রবন্ধ "নোটস অফ দি ইউজ অফ কেসেস ইন দ্য কথক সংহিতা" প্রকাশিত হয় এশিয়াটিক সোসাইটি জার্নালে। এরপর মধ্য ও আধুনিক (বাংলা) আর্যভাষার ঐতিহাসিক পদবিচারের উপর গবেষণা করে তিনি পি.এইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
সুকুমার সেন ১৯৭১ সালে দু খন্ডে ২০,০০০ বাংলা শব্দের অভিধান রচনা করেন। এই অভিধানে তিনি প্রতিটি বাংলা শব্দের উৎস এবং বিবর্তন দেখিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি সম্পূর্ণরূপে ঐতিহাসিক এবং বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় রেখেছেন। তিনি অনুরূপ চিন্তাভাবনার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন "বাংলার স্থান নাম" গ্রন্থটিতে। এখানে তিনি দেখিয়েছেন কোন শব্দ থেকে বাংলায় ব্যবহৃত কোন নামের উৎপত্তি হয়েছে এবং সেই সঙ্গে দেখিয়েছেন ঐতিহাসিক বিবর্তনের ধারায় কি ভাবে শব্দগুলো বর্তমান রূপ নিয়েছে। তিনি তাঁর অন্য গ্রন্থটিতে প্রাচীন ভারতীয় আর্য, বৈদিক ও সংস্কৃত ভাষার জন্মবৃত্তান্ত অলোচনা করেছেন। "বাঙ্গালীর ভাষা" গ্রন্থটিতে সুকুমার সেন ও সুভদ্র সেন খুব সহজ সরল ভাষায় বাংলা ভাষার ইতিহাস তুলে ধরেছেন। জয়দেবের গীতগোবিন্দ কাব্যের প্রাচীন পুঁথিটি তাঁরই আবিষ্কার। সেকশুভোদয়া পুঁথিটিও তিনি সম্পাদনা করেছেন। ১৯৬৪ সালে ভারতীয় সাহিত্যের ইতিহাস গ্রন্থের জন্য রবীন্দ্র পুরস্কার পান। এশিয়াটিক সোসাইটি তাঁকে যদুনাথ সরকার পদক দিয়ে সম্মানিত করে। রবীন্দ্রচর্চা কেন্দ্র থেকে পান ররীন্দ্র তত্ত্বাচার্য উপাধি। বাংলা শব্দের উৎস নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সুকুমার সেন সংস্কৃত বা বৈদিক ভাষার অনুসন্ধান করে বাংলা ভাষা চর্চার বিষয়ে তিনি মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিয়েছেন। ভাষাবিজ্ঞানের চর্চাকে সমৃদ্ধ করার জন্য তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন। আজ ভাষাতাত্ত্বিক ও সাহিত্যবিশারদ ডঃ সুকুমার সেনের ২৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৯২ সালের ৩রা মার্চ তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। সাহিত্যবিশারদ ডঃ সুকুমার সেনের মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল ফেসবুক লিংক
[email protected]
০৪ ঠা মার্চ, ২০২০ রাত ১:১০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে জানাই ধন্য্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ রাত ১১:৪১
রাজীব নুর বলেছেন: শ্রদ্ধা জানাই।