নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
১৬ নভেম্বরঃ আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবস আজ। সহনশীলতা হচ্ছে এক ধরনের ইতিবাচক সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং তা অন্য মানুষের অবাধ ও অধিকারের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। সমাজে নানামুখী চাপের কারণে মানুষ সহনশীল থাকতে পারছেন না। মূল্যবোধের অভাবেও মানুষ অধৈর্য হয়ে নানা ধরনের অন্যায়-অনিয়ম করছে। এর থেকে পরিত্রাণের জন্য বিংশ শতাব্দীর ৯০ দশকের প্রথম দিকে স্নায়ু যুদ্ধ শেষ পর্যায়ে, আন্তর্জাতিক পরিমান্ডলে সহিংসতা বৃদ্ধির আশংকায় ইউনেস্কো 'সহনশীলতা' দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৯৬ সালে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে এক প্রস্তাবে বিভিন্ন দেশের সরকারকে আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচী আয়োজনের আহ্বান জানানো হয়। যাতে শিক্ষা ও প্রচারসহ বিভিন্ন উপায়ে সহনশীলতার দিকটিকে সবার কাছে তুলে ধরা যায়। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৯৬ সালের ১৬ নভেম্বর ইউনেস্কোর ২৮তম অধিবেশনে 'সহনশীলতার মৌলিক নীতি ঘোষণা' গৃহীত এবং প্রতি বছরের ১৬ নভেম্বরকে আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ইউনেস্কো ঘোষিত এই আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবস প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য হচ্ছে বহুমুখী সমাজে সহনশীলতা শিক্ষার মাধ্যমে পৃথিবীর সকল মানুষের সুষম ও শান্তিপূর্ণভাবে জীবন-যাপন নিশ্চিত করা।
সহনশীলতা হচ্ছে এক ধরনের ইতিবাচক সঠিক দৃষ্টিভংগী এবং তা অন্য মানুষের অবাধ ও অধিকারের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত। সহনশীলতার অর্থ ধৈর্য-সহ্য, সহিষ্ণুতা, সহনীয়তা, ক্ষমাশীলতা ইত্যাদি। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, 'হে মোমিনরা! তোমরা ধৈর্য বা সহনশীলতা ও নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।' (সূরা বাকারা : ১৫৩)। অন্যত্র এরশাদ হয়েছে, 'তোমরা ধৈর্য ধারণ করো। নিশ্চয় আল্লাহ মোহসিনিনদের কর্মর্ফল বিনষ্ট করেন না।' (সূরা হুদ : ১৫)। 'যারা সচ্ছলতায় ও অভাবের সময় ব্যয় করে, যারা নিজেদের রাগকে সংবরণ করে আর মানুষের প্রতি ক্ষমা প্রদর্শন করে, বস্তুত আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালোবাসেন।' (সূরা ইমরান : ১৩৪)। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, প্রিয় নবী (সা.) এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ধৈর্য তথা সহনশীল হওয়ার চেষ্টা করবে, আল্লাহ তায়ালা তাকে সেই শক্তি প্রদান করবেন। আর সহনশীলতার চেয়ে অর্থাৎ ধৈর্যের চেয়ে অধিক উত্তম ও ব্যাপক কল্যাণকর বস্তু আর কিছুই কাউকে দান করা হয়নি। (সহিহ বোখারি ও সহিহ মুসলিম)।
'সহনশীলতার মৌলিক নীতি ঘোষণা'-এ বলা হয়েছে যে, প্রয়োজন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে সহনশীলতাকে বাস্তবায়ন করা। কারণ 'সহনশীলতা হচ্ছে শান্তি স্থাপনের পাশাপাশি সবার অর্থনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদাকে উন্নত করার অপরিহার্য নীতি'। আমাদের সমাজে পারিবারিক, সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সহনশীলতার অভাব মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। সমাজে নানামুখী চাপের কারণে মানুষ সহনশীল থাকতে পারছেন না। বাংলাদেশে এই সমস্যাটা দিনে দিনে বাড়ছে। ‘জাতিগতভাবে আমরা পিছিয়ে আছি। তথ্য-প্রযুক্তি যত উন্নত হয়েছে সে অনুযায়ী রপ্ত করতে পারছি না। ফলে দেখা যায় ট্রাফিক সিগন্যাল পড়লেও গাড়ি থামাচ্ছি না। এর কারণ হলো ধৈর্য নেই। মূল্যবোধ কাজ করছে না বলে সহনশীলতার অভাব বাড়ছে। মূল্যবোধ শেখানোর সুযোগও এখন নেই। ফলে সবকিছুতে সহনশীলতা কমে গেছে।’ সব ক্ষেত্রেই মানুষ ধৈর্যহারা হয়ে পড়ছে। মূল্যবোধের অভাবেও মানুষ অধৈর্য হয়ে নানা ধরনের অন্যায়-অনিয়ম করছে। এ থেকে পরিত্রানের জন্য পরিবার থেকেই সহনশীলতার চর্চা শুরু করে সমাজ ও দেশে এর সুফল পৌঁছে দিতে সচেতন এবং বিবেকবান মানুষকে আন্তরিক হতে হবে। সহনশীল ও সত্যনিষ্ঠ সমাজ নির্মাণ মাত্র দিন ও রাতের কাজ নয়। তা সময় ও সমাজের বিভিন্ন পক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। পরিবার থেকেই সহনশীলতার চর্চা শুরু করে সমাজ ও দেশে এর সুফল পৌঁছে দিতে সচেতন এবং বিবেকবান মানুষকে আন্তরিক হতে হবে। এক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীর প্রতি, স্ত্রী স্বামীর প্রতি, মা-বাবা সন্তানের প্রতি, শিক্ষকের ছাত্রদের প্রতি, সমাজপতিদের সমাজের প্রতি এবং রাজনীতিবিদদের তাদের কর্মীদের প্রতি সহনশীল হওয়া উচিত। ইউনেস্কো জোর দিয়ে বলেছে, সহনশীলতা শিক্ষার জন্য শিশুদের থেকে, বাবা,মাসহ সবার উচিত শব্দ ও আচরণগত দিকে নিবিড় মনোযোগ দেয়া। এক্ষেত্রে স্বামী স্ত্রীর প্রতি, স্ত্রী স্বামীর প্রতি, মা-বাবা সন্তানের প্রতি, শিক্ষকের ছাত্রদের প্রতি, সমাজপতিদের সমাজের প্রতি এবং রাজনীতিবিদদের তাদের কর্মীদের প্রতি সহনশীল হওয়া উচিত।
সহনশীল ব্যক্তিকে মহান আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত পছন্দ করেন। যে সহনশীল হয়, আল্লাহ তায়ালা তাঁর সম্মান, মর্যাদা বহুগুণে বাড়িয়ে দেন। আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবসে আসুন আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের প্রতি সহনশীল হই।।
সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মদ নূরু
১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বিরোধী আর সরকার
সহনশীলতা দরকার।
চাইতে দোষ নাই
কি বলেন ময়না ভাই?
২| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:২১
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: আল্লাহ তায়ালা সহনশীল ( সবরকারি ) ব্যক্তির সাথে থাকেন। আন্তর্জাতিক সহনশীলতা দিবসে সকলকে সহনশীল হওয়ার আবেদন জানাই।
ধন্যবাদ নূর মোহাম্মদ ভাই।
১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ
আবুহেনা ভাই, আল্লাহ আমাদেরকে
সহনশীল হবার তৌফিক দান করুন। আমিন
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১১:২০
ময়না বঙ্গাল বলেছেন: