নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
বাংলা উপন্যাসে জনপ্রিয়তার শীর্ষবিন্দু স্পর্শকারীদের অন্যতম ঔপন্যাসিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বঙ্কিম-রবীন্দ্রনাথ-শরৎচন্দ্রের পর বিশ শতকের তিনের দশক শুরুর প্রাকলগ্নে বাংলা উপন্যাসের প্রবহমান ধারায় তিনি যুক্ত হন। তিনি মূলত উপন্যাস ও ছোটগল্প লিখে খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯২৯ সালে পথের পাঁচালী নিয়ে উপন্যাসের ভুবনে তার প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটে।পথের পাঁচালী ও অপরাজিত তাঁর সবচেয়ে বেশি পরিচিত উপন্যাস। এরপর তাকে আর ফিরে ডাকাতে হয়নি। উপন্যাসের পাশাপাশি বিভূতিভূষণ প্রায় ২০টি গল্পগ্রন্থ, কয়েকটি কিশোরপাঠ্য উপন্যাস ও কয়েকটি ভ্রমণকাহিনি এবং দিনলিপিও রচনা করেন। বিভূতিভূষণের পথের পাঁচালী উপন্যাস অবলম্বনে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত চলচ্চিত্রটি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন। ১৯৫১ সালে ইছামতী উপন্যাসের জন্য বিভূতিভূষণ পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ সাহিত্য পুরস্কার রবীন্দ্র পুরস্কার (মরণোত্তর) লাভ করেন। ১৯৫০ সালের আজকের দিনে তিনি বিহারে (বর্তমানে ঝাড়খন্ড) মৃত্যুবরণ করেন। আজ তাঁর ৬৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। জনপ্রিয় এই কথাসাহিত্যিকের মৃত্যু দিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
বিভূতিভূষণ ১৮৯৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার কাঁচরাপাড়ার নিকটবর্তী ঘোষপাড়া-সুরারিপুর গ্রামের মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বারাকপুর গ্রামে। তার পিতা মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মাতা মৃণালিনী দেবী। পিতা মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন প্রখ্যাত সংস্কৃত পণ্ডিত। পাণ্ডিত্য এবং কথকতার জন্য তিনি শাস্ত্রী উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন। বিভূতিভূষণের পড়ালেখার পাঠ শুরু হয় পিতার কাছে। ছোটবেলা থেকেই তিনি মেধাবী ছিলেন। নিজ গ্রাম ও অন্য গ্রামের কয়েকটি পাঠশালায় পড়াশোনার পর বনগ্রাম উচ্চ ইংরাজী বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে তিনি অবৈতনিক শিক্ষার্থী হিসেবে পড়ালেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় পিতা মারা যান। এর পর ১৯১৪ সালে প্রথম বিভাগে এনট্রান্স এবং ১৯১৬ সালে কলকাতার রিপন কলেজ (বর্তমানে সুরেন্দ্রনাথ কলেজ) থেকে প্রথম বিভাগে আইএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯১৮ সালে একই কলেজ থেকে বিএ পরীক্ষায়ও ডিস্টিইংশনসহ পাশ করেন। এরপর তিনি এমএ ও আইন বিষয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। কিন্তু পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে হুগলী জেলার জাঙ্গীপাড়ার দ্বারকানাথ হাইস্কুলের তৃতীয় শ্রেণীতে পাঠ্যরত বসিরহাটের মোক্তার কালীভূষণ মুখোপাখ্যায়ের কন্যা গৌরী দেবীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন্তু বিয়ের এক বছর পরই গৌরী দেবী মারা যান। স্ত্রীর শোকে তিনি কিছুদিন প্রায় সন্ন্যাসীর মতো জীবনযাপন করেন। পরে ১৩৪৭ সালের ১৭ অগ্রহায়ন (ইংরেজি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৪০) তারিখে ফরিদপুর জেলার ছয়গাঁও নিবাসী ষোড়শীকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে রমা দেবীকে বিয়ে করেন।
শিক্ষকতার মাধ্যমে পেশাগত জীবনে প্রবেশ করেন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এসময় কিছুদিন গোরক্ষিণী সভার প্রচারক হিসেবে বাংলা, ত্রিপুরা ও আরাকানের বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করেন। পরে খেলাৎচন্দ্র ঘোষের বাড়িতে সেক্রেটারি, গৃহশিক্ষক এবং তাঁর এস্টেটের ভাগলপুর সার্কেলের সহকারী ম্যানেজারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিছুদিন আবার ধর্মতলার খেলাৎচন্দ্র মেমোরিয়াল স্কুলে শিক্ষকতা করেন। এরপর যোগ দেন গোপালনগর স্কুলে। এই স্কুলেই তিনি আমৃত্যু কর্মরত ছিলেন। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে (১৩২৮ বঙ্গাব্দ) প্রবাসী পত্রিকার মাঘ সংখ্যায় উপেক্ষিতা নামক গল্প প্রকাশের মধ্য দিয়ে তার সাহিত্যিক জীবনের সূত্রপাত ঘটে। ভাগলপুরে কাজ করার সময় ১৯২৫ সালে তিনি পথের পাঁচালী রচনা শুরু করেন। এই বই লেখার কাজ শেষ হয় ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে। এটিই বিভূতিভূষণের প্রথম এবং শ্রেষ্ঠ রচনা। তার মোট উপন্যাসের সংখ্যা ১৪টি। এগুলো হলোঃ ১। পথের পাচালি ২। অপরাজিত (প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড, ৩। দৃষ্টিপ্রদী, ৪। আরণ্যক, ৫। আদর্শ হিন্দু হোটেল ৬। বিপিনের সংসার ৭। দুই বাড়ি, ৮। অনুবর্তন, ৯। দেবযান, ১০। কেদার রাজা, ১১। অথৈ জল, ১২। ইছামতী, ১৩। দম্পতি ও ১৪। শনি সঙ্কেত। বিভূতিভূষণ গ্রামজীবনের রূপকার এবং আপাদমস্তক একজন প্রকৃতিপ্রেমিক। তিনি অরণ্য-জঙ্গল-ঝোপঝাড়ের গাছ-গাছালির মধুর সৌন্দর্য শুধু নিজেই বিমুগ্ধ হয়ে উপভোগ করেননি, পাঠকদের কাছেও সেই সুন্দর মনোহর রূপটি তুলে ধরেছেন। পথের পাঁচালী থেকে শুরু করে অশনি সঙ্কেত পর্যন্ত তার সাহিত্য পরিক্রমায় এ পরিচয় চিহ্নিত ও প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে। গ্রামীণ মানুষ ও সমাজের সরল, অবিকল উপস্থাপন, প্রকৃতির কোলে লালিত ও পরিশীলিত মনন আর সুন্দর রুচির কারণে তার উপন্যাসগুলো হয়ে উঠেছে অনবদ্য। এগুলোর আবেদন পাঠক হৃদয়কে ছুঁয়ে যায়, যাবে আরো বহুদিন।
এই মহান কথাসাহিত্যিক ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দের ১লা নভেম্বর তারিখে বিহারের (বর্তমানে ঝাড়খন্ড) ঘাটশিলায় মৃত্যুবরণ করেন। আজ তাঁর ৬৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। জনপ্রিয় এই কথাসাহিত্যিকের মৃত্যু দিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
উনবিংশ শতাব্দীর বাংলা নাটকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ রূপকার দীনবন্ধু মিত্রের ১২২তম মৃত্যুবার্ষিকীও আজ প্রখ্যাত নাট্যকার দীনবন্ধু মিত্রের মৃত্যুবার্ষিকীতেও আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:০২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ গ্রীণ জোন
শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য
২| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৫৭
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি , হে বিভূতিভূষণ ।
০২ রা নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:০৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: লিটন ভাই শুভেচ্ছা জানবেন।
ধন্যবাদ জনপ্রিয় এই কথাসাহিত্যিক
বিভূতিভূষণের মৃত্যু দিনে
শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
৩| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৭
প্রামানিক বলেছেন: মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি
০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:৪০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই
জাতীয় ৪ নেতার মৃত্যুবার্ষিকীতে
শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৪৭
গ্রিন জোন বলেছেন: শ্রদ্ধাঞ্জলি ও সালাম