নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
আজ ২৪ অক্টোবর, জাতিসংঘ দিবস। ৭০ বছর পূর্ণ করে ৭১ বছরে পা রাখছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক সংগঠন জাতিসংঘ। লিগ অব নেশনস বিলুপ্ত হয়ে গেলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই বিশ্বের সর্বোচ্চ ক্ষমতার এই আন্ত:রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি গঠন করা হয়। ১৯৪৫ সালের এই দিনে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিশ্ব সংস্থাটি আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে। এ বছরের ফেব্রুয়ারীতে, সোভিয়েট ইউনিয়ন, ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র ইয়াল্টায় অনুষ্ঠিত অধিবেশনে নিরাপত্তা পরিষদের ৫টি দেশের একমতো ভিত্তিতে চুক্তিতে পৌঁছে এবং জাতিসংঘ সনদের সাংবিধানিক সম্মেলন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়। ১৯৫৬ সালের ১০ জানুয়ারি বিশ্বের ৫১টি দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টারের সেন্টার হলে জাতিসংঘের প্রথম সাধারণ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে মিত্র পক্ষের দেশগুলো অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, ফ্রান্স ও সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা আলোচনার মাধ্যমে জাতিসঙ্ঘ প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক কাজ সম্পন্ন করেন। এরপর বিশ্বের ৫০টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশ গ্রহণে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে জাতিসঙ্ঘ প্রতিষ্ঠা ও এর নীতিমালা অনুমোদন করা হয়। বিশ্বের শীর্ষ ক্ষমতাধর দেশগুলোর প্রায় চার বছরের চেষ্টা ও ধারাবাহিক আলোচনার প্রেক্ষাপটে আজকের এই দিনে এসে প্রাথমিকভাবে ৪৬টি সদস্য-দেশ জাতিসংঘ সনদকে অনুসমর্থন দেয়। পরবর্তীকালে ১৯৪৭ সালের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ২৪ অক্টোবরকে জাতিসংঘ দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়। দিবসটি জাতিসংঘ সপ্তাহ যা ২০ থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত চলমান, তার একটি অংশ। জাতিসংঘের উদ্যোগে ১৯৭২ সাল থেকে প্রতি বছরের ২৪ অক্টোবর এ দিনটি বৈশ্বিকভাবে পালিত হয়। জাতিসঙ্ঘ নিউইয়র্কে অবস্থিত এবং নিরাপত্তা পরিষদ, সাধারণ পরিষদ, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিষদসহ এর ছয়টি বিভাগ রয়েছে । বিশ্বে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা, জাতিগুলোর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন, সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিস্তারের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা এবং সেইসাথে রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও মানাবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে সবাইকে উৎসাহিত করাই ছিল জাতিসঙ্ঘ প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য। কসোভোয় জাতিসংঘ দিবস উপলক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রশাসন সরকারীভাবে ছুটি ঘোষণা করে। জাতিসংঘ দিবসের পাশাপাশি একই দিনে বিশ্ব উন্নয়ন তথ্য দিবস পালন করা হয়।
জাতিসংঘ বিশ্বের জাতিগুলোর একটি সংগঠন যার লক্ষ্য হলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইন, নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়নে, সামাজিক অগ্রগতি এবং মানবাধিকার বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করা। বেশ কিছু ক্ষেত্রে জাতিসঙ্ঘ সফল হলেও নিরাপত্তা পরিষদে পাঁচটি বৃহৎ শক্তির ভেটো ক্ষমতা থাকার কারণে এই পরিষদ তাদেরই ইচ্ছা বা নীতি বাস্তবায়নে মাধ্যমে পরিণত হয়েছে । বৈষম্যের কারণে এই সংস্থার কার্যকারীতা অনেক হ্রাস পেয়েছে যা বিশ্বের বহু দেশের সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে। সময়ের প্রয়োজনে জাতিসংঘের প্রশাসনিক কাঠামোয় অনেক পরিবর্তন এসেছে। অঙ্গ সংস্থা বেড়েছে এবং এসব সংস্থার কার্যক্রম এখন বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত। বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ১৯৩টি। বাংলাদেশ জাতিসংঘের ১৩৬তম সদস্য। বাংলাদেশে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে ১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর। তবে যুদ্ধপরবর্তী ১৯৭২ সাল থেকেই বাংলাদেশী উদ্বাস্তুদেও সাহায্যকল্পে জাতিসংঘ মানবিক তৎপরতা শুরু করে। এ যাবৎকাল জাতিসংঘের বিভিন্ন মিশন বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকান্ডে নিযোজিত আছে। সদস্যপদ লাভেরপর থেকেই এর সনদ, আদর্শ-উদ্দেশ্য এবংকার্যাবলীর প্রতি শ্রদ্ধাশীল বাংলাদেশ। ১৯৭৯-৮০ সালে বাংলাদেশ জাতিসংঘের নিরাপত্ত পরিষদের দায়িত্ব গুরুত্বের সাথে পালন করে আসছে। জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর সুবিধাভোগী বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ। সেবাখাতে অনন্য অবদান রেখে চলেছে বহু সংস্থার প্রাণকেন্দ্র জাতিসংঘ। তবে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে বিশ্বের বৃহৎ এ সংস্থাটিকে যুগোপযোগী করার দাবি তুলেছে অনেক সদস্য দেশ। সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে মানবাধিকার উন্নয়ন ও সংরক্ষণে তার সরকারের অঙ্গীকার এবং সক্রিয় অবদানের সাক্ষ্য দেয়। জাতিসংঘ মহাসচিবের ভাষায় বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল বিশ্বের রোল মডেল।
এ কথা অনস্বীকার্য যে জাতিসংঘের অস্তিত্ব সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ক্ষমতশীন রাষ্ট্রের কাছে জাতি সংঘকে নতিস্বীকার করছে । দুর্বল রাষ্ট্রগুলো জাতি সংঘের সকল বিধিবিধান মেনে চললেও শক্তিশালী পরাশক্তির কাছে নতিস্বিকার জাতি সংঘের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না। এভাবে চলতে থাকলে এ পৃথিবীজুড়ে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হতে বাধ্য। দেশে দেশে জাতি-দাঙ্গা হয়ে উঠবে রোজকার ঘটনা। এদিকে রাশিয়া ব্লকের সবাই জোট বাঁধছে। চীন এবং বাধ্য হয়ে হয়ত ইরান, পাকিস্তান এতে যোগ দেবে। এ অবস্থায় পৃথিবী যদ্ধাংদেহী মনোভাব নিয়ে দুটো গোষ্ঠীতে বিভক্ত হতে যাচ্ছে, যা বিশ্বযুদ্ধেরই পূর্বাবস্থা। পৃথিবীজুড়ে যা চলছে তাতে মনে হয় আজ আমরা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। পৃথিবী আজ সত্যিই বড় বিপন্ন। সারা বিশ্ব আজ মারণাস্ত্র প্রয়োগের পরীক্ষাগার হয়ে উঠেছে। এ অবস্থা থেকে বিশ্বকে ফিরিয়ে আনতে হলে জাতিসংঘকে শক্ত হতে হাল ধরতে হবে। বিশ্বের নানা অমিমাংসিত সমস্যা সমাধানে এ সংস্থাটিকে নিরপেক্ষ ভূমিকা রেখে কাজ করতে হবে। অথর্বতা পরিহার করে জাতি সংঘ আরো সচল এবং শক্তিশালী হবে শান্তি ফিরে আসবে সারা বিশ্বে , জাতিসংঘ দিবসে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ কাবিল ভাই
জাতিসংঘ দিবসে সুন্দর
প্রত্যাশার জন্য।
২| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫১
ঢাকাবাসী বলেছেন: আমাদের দেশের সালিশ বৈঠকের মতই এটা এখন খালি বড় সায়েবদের কথায় চলে!
২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ঢাকাবাসী সাহসী উচ্চারণে
সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৩৬
কাবিল বলেছেন: ৭১তম জাতিসংঘ দিবসঃ প্রতাশা, শান্তি ফিরে আসবে সারা বিশ্বে, জাতিসংঘ দিবসে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।