নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
বিংশ শতাব্দীর আধুনিক বাংলার অন্যতম প্রধান কবি জীবানানন্দ দাশ। মর্মগত, সুমিত, নিরাবেগ ও সুস্থির গদ্যরীতির জন্যে তিনি বিশিষ্ট। গ্রামবাংলার ঐতিহ্যময় প্রকৃতি তাঁর কাব্যে রূপময় হয়ে উঠেছে। আধুনিক নাগরিক জীবনের হতাশা, নিঃসঙ্গতা, বিষাদ ও সংশয়ের চিত্র তাঁর কবিতায় দীপ্যমান। স্বচ্ছ, সুন্দর, শান্ত ও স্নিগ্ধ রোমান্টিক কবিতার স্রষ্টা হিসেবে তিনি স্মরণীয় ও বরণীয়। তাঁর নিসর্গ বিষয়ক কবিতা ষাটের দশকে বাঙালির জাতিসত্তা বিকাশের আন্দোলনে ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এদেশের সংগ্রামী জনতাকে তীব্রভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। জীবানানন্দ দাশের বিখ্যাত কবিতা "বনলতা সেন"। ব্যাপক পাঠক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে কবিতাটি। মুখে মুখে ঘুরে ফিরে এই কবিতার পঙক্তি। কবি ১৯৩৩ সালে ‘বনলতা সেন’ কবিতাটি লিখলেও জীবদ্দশায় কবি নিজেও দেখে যেতে পারেননি মুদ্রিত অক্ষরে ছাপা এই কবিতাটি। ১৯৩৫ সালের ডিসেম্বর মাসে কবির মৃত্যুর পর বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত ‘কবিতা’ পত্রিকার পৌষ ১৩৪২ বাংলা সংখ্যায় তা প্রকাশিত হয়। তারপর সবটুকুই কিংবদন্তি। সে সময় থেকে আজঅবধি নিজের প্রেমিকাকে বনলতা ভেবে কতশত আবেগ কাজ করে আসছে। সেই সঙ্গে এই রহস্যময় নামটিকে ঘিরে কত জল্পনা-কল্পনা সৃষ্টি হয়েছে। কবির মানসপটে আঁকা চিত্রিত বনলতা যেন বাঙালি প্রেমিক পুরুষের কাছে এক প্রেমের প্রতিমা। কবি জীবনান্দ দাশের রচিত উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হচ্ছেঃ ‘ঝরা পালক’, ধূসর পান্ডুলিপি, বনলতা সেন, মহাপৃথিবী, সাতটি তারার তিমির, রূপসী বাংলা ও বেলা অবেলা"। কবিতার কথা তাঁর প্রবন্ধগ্রন্থ। কবিতার পাশাপাশি কবি একজন কথা সাহিত্যিকও। মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয় তার উপন্যাস মাল্যবান এবং সতীর্থ। আজ কবির ৬১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৫৪ সালের আজকের দিনে কলকাতায় এক ট্রাম দুর্ঘটনায় মৃত্যুবরন করেন তিনি। অন্ধকার আর নক্ষত্র দেখার আজীবন চলায় জীবনানন্দ থেকে যাবেন আমাদের মননে, চিন্তায়। মৃত্যুদিনে বনলতা সেন এর কবির প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা।
জীবনানন্দ দাশ ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের দক্ষিণ প্রান্তের জেলাশহর বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্বপুরুষেরা ছিলেন ঢাকা জেলার বিক্রমপুর পরগণা নিবাসী। তাঁর পিতামহ সর্বানন্দ দাশগুপ্ত (১৯৩৮-৮৫) বিক্রমপুর থেকে স্থানান্তরক্রমে বরিশালে নিবাস গাড়েন। সর্বানন্দ দাশগুপ্ত জন্মসূত্রে হিন্দু ছিলেন; পরে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা নেন। তিনি বরিশালে ব্রাহ্ম সমাজ আন্দোলনের প্রাথমিক পর্যায়ে অংশগ্রহণ করেন এবং তাঁর মানবহিতৈষী কাজের জন্যে সমাদৃত ছিলেন। জীবনানন্দের পিতা সত্যানন্দ দাশগুপ্ত সর্বানন্দের দ্বিতীয় পুত্র। সত্যানন্দ দাশগুপ্ত ছিলেন বরিশাল ব্রজমোহন স্কুলের শিক্ষক, প্রাবন্ধিক, বরিশাল ব্রাহ্ম সমাজের সম্পাদক এবং ব্রাহ্মসমাজের মুখপত্র ব্রাহ্মবাদী পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক। জীবনানন্দের মাতা কুসুমকুমারী দাশ ছিলেন কবি। তাঁর সুপরিচিত কবিতা আদর্শ ছেলে (আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে/ কথায় না বড় হয়ে কাজে বড়ো হবে) আজও শিশুশ্রেণীর পাঠ্য। জীবনানন্দ ছিলেন পিতামাতার জ্যেষ্ঠ সন্তান; তার ডাকনাম ছিল মিলু। তার ভাই অশোকানন্দ দাশ ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে এবং বোন সুচরিতা দাশ ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা কম বয়সে স্কুলে ভর্তি হওয়ার বিরোধী ছিলেন ব'লে বাড়িতে মায়ের কাছেই মিলুর বাল্যশিক্ষার সূত্রপাত। ভোরে ঘুম থেকে উঠেই পিতার কণ্ঠে উপনিষদ আবৃত্তি ও মায়ের গান শুনতেন। লাজুক স্বভাবের হলেও তার খেলাধুলা, ভ্রমণ ও সাঁতারের অভ্যাস ছিল। ছেলেবেলায় একবার কঠিন অসুখে পড়েন। স্বাস্থ্য উদ্ধারের জন্যে মাতা ও মাতামহ হাসির গানের কবি চন্দ্রনাথের সাথে লক্ষ্মৌ, আগ্রা, দিল্লী প্রভৃতি স্থান ভ্রমণ করেন। ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারিতে আট বছরের মিলুকে ব্রজমোহন স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি করানো হয়। স্কুলে থাকাকালীন সময়েই তার বাংলা ও ইংরেজিতে রচনার সূচনা হয়, এছাড়াও ছবি আঁকার দিকেও তার ঝোঁক ছিল। ১৯১৫ সালে তিনি ব্রজমোহন বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগসহ ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। দু'বছর পর ব্রজমোহন কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় পূর্বের ফলাফলের পুনরাবৃত্তি ঘটান ; অতঃপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার উদ্দেশ্যে বরিশাল ত্যাগ করেন। জীবনানন্দ কলকাতার নামকরা প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি এ কলেজ থেকে ইংরেজিতে অনার্সসহ বি.এ. পাশ করেন। ওই বছরেই ব্রাহ্মবাদী পত্রিকার বৈশাখ সংখ্যায় তার প্রথম কবিতা ছাপা হয়। কবিতাটির নাম ছিল বর্ষ আবাহন। কবিতাটিতে কবির নাম ছাপা হয়নি, কেবল সম্মানসূচক শ্রী কথাটি লেখা ছিল। তবে পত্রিকার বর্ষশেষের নির্ঘণ্ট সূচিতে তার পূর্ণ নাম ছাপা হয়: শ্রী জীবনানন্দ দাশগুপ্ত, বিএ। জীবনানন্দ দাশ ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে দ্বিতীয় বিভাগসহ মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। কিছুকাল তিনি আইনশাস্ত্রেও অধ্যয়ন করেন। সে সময়ে তিনি হ্যারিসন রোডের প্রেসিডেন্সি বোর্ডিংয়ে থাকতেন। তবে পরীক্ষার ঠিক আগেই তিনি ব্যাসিলারি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন, যা তার প্রস্তুতি বাধাগ্রস্ত করে।
১৯২২ খ্রিস্টাব্দে জীবনানন্দ কলকাতা সিটি কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন এবং আইনশাস্ত্র অধ্যয়ন ছেড়ে দেন। জীবনানন্দের সাহিত্যিক জীবন বিকশিত হতে শুরু করে ১৯২৫ সালে। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ ১৯২৫ এর জুনে মৃত্যুবরণ করলে জীবনানন্দ তার স্মরণে 'দেশবন্ধুর প্রয়াণে' নামক একটি কবিতা রচনা করেন, যা বঙ্গবাণী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। কবিতাটি পরবর্তীতে তার প্রথম কাব্য সংকলন ঝরা পালকে স্থান করে নেয়। ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দেই তার প্রথম প্রবন্ধ স্বর্গীয় কালীমোহন দাশের শ্রাদ্ধবাসরে প্রবন্ধটি ব্রাহ্মবাদী পত্রিকার পরপর তিনটি সংখ্যায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। ঐ বছরেই কল্লোল পত্রিকায় 'নীলিমা' কবিতাটি প্রকাশিত হলে তা অনেক তরুণ কাব্যসরিকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ধীরে ধীরে কলকাতা, ঢাকা এবং অন্যান্য জায়গার বিভিন্ন সাহিত্যপত্রিকায় তার লেখা ছাপা হতে থাকে; যার মধ্যে রয়েছে সে সময়কার সুবিখ্যাত পত্রিকা কল্লোল, কালি ও কলম, প্রগতি প্রভৃতি। ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ ঝরা পালক প্রকাশিত হয়। সে সময় থেকেই তিনি তার উপাধি 'দাশগুপ্তের' বদলে কেবল 'দাশ' লিখতে শুরু করেন। ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে তিনি দিল্লির রামযশ কলেজে অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন এবং ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দের ৯ই মে তারিখে তিনি লাবণ্য দেবীর সাথে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ে হয়েছিলো ঢাকায়, ব্রাহ্ম সমাজের রামমোহন লাইব্রেরিতে। বিয়ের পর আর দিল্লিতে ফিরে যাননি তিনি, ফলে সেখানকার চাকরিটি খোয়ান। এ সময় তিনি চরম অর্থনৈতিক দুর্দশায় পড়েছিলেন। জীবনধারণের জন্যে তিনি টিউশানি করতেন এবং সাথে সাথে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরির সন্ধান করছিলেন। এরপর প্রায় বছর পাঁচেক সময় জীবনানন্দ কর্মহীন অবস্থায় ছিলেন। মাঝে কিছু দিন ইনশিওরেন্স কোম্পানির এজেন্ট হিসাবে কাজ করেছেন; ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে অর্থ ধার করে ব্যবসার চেষ্টা করেছেন; কিন্তু কোনটাই স্থায়ী হয়নি। তিনি তার বেকারত্ব, সংগ্রাম ও হতাশার এই সময়কালে বেশ কিছু ছোটগল্প ও উপন্যাস রচনা করেছিলেন;- তবে তার জীবদ্দশায় সেগুলো প্রকাশিত করেন নি।
১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি একগুচ্ছ গীতিকবিতা রচনা করেন যা পরবর্তীতে তার রূপসী বাংলা কাব্যের প্রধান অংশ নির্মাণ করে। ১৯৩৫ সালে জীবনানন্দ তার পুরনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্রজমোহন কলেজে ফিরে যান, যা তখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ছিল। তিনি সেখানকার ইংরেজি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৪৭ সালের দেশবিভাগের কিছু আগে তিনি বি.এম. কলেজ থেকে ছুটি নিয়ে কলকাতায় চলে যান। পরে তিনি আর পূর্ববঙ্গে ফিরে যাননি। কলকাতায় তিনি দৈনিক স্বরাজ পত্রিকার রোববারের সাহিত্য বিভাগের সম্পাদনা করেন কয়েক মাস। ১৯৪৮ খৃস্টাব্দে তিনি দু'টি উপন্যাস লিখেছিলেন - মাল্যবান ও সুতীর্থ, তবে আগেরগুলোর মতো ও দুটিও প্রকাশ করেননি। মাঝে তিনি কিছুকাল খড়গপুর কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৯৫২ খৃস্টাব্দে তাঁর জনপ্রিয় কবিতার বই "বনলতা সেন" সিগনেট প্রেস কর্তৃক পরিবর্ধিত আকারে প্রকাশিত হয়। বইটি পাঠকানুকূল্য লাভ করে এবং নিখিল বঙ্গ রবীন্দ্রসাহিত্য সম্মেলন-কর্তৃক ঘোষিত "রবীন্দ্র-স্মৃতি পুরস্কার" জয় করে। ১৯৫৪ খৃস্টাব্দের মে মাসে প্রকাশিত হয় জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা। বইটি ১৯৫৫ খৃস্টাব্দে ভারত সরকারের সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করে। কবি জীবনানন্দ দাশ বাংলা কাব্যে আধুনিকতার পথিকৃতদের মধ্যে অগ্রগণ্য এবং রবীন্দ্র-পরবর্তীকালে বাংলা ভাষার প্রধান কবি হিসাবে তিনি সর্বসাধারণ্যে স্বীকৃত। জীবদ্দশায় অসাধারণ কবি হিসেবে পরিচিতি থাকলেও তিনি খ্যাতি অর্জন করে উঠতে পারেননি। এর জন্য তার প্রচারবিমুখতাও দায়ী; তিনি ছিলেন বিবরবাসী মানুষ। তিনি যদিও কবি হিসেবেই সমধিক পরিচিত কিন্তু মৃত্যুর পর থেকে ২০০৯ খ্রিস্টাব্দ অবধি তাঁর যে বিপুল পাণ্ডুলিপিরাশি উদ্ঘাটিত হয়েছে তার মধ্যে উপন্যাসের সংখ্যা ১৪ এবং গল্পের সংখ্যা শতাধিক। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে অকাল মৃত্যুর আগে তিনি নিভৃতে ১৪টি উপন্যাস এবং ১০৮টি ছোটগল্প রচনা গ্রন্থ করেছেন যার একটিও তিনি জীবদ্দশায় প্রকাশ করেননি। বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান আধুনিক বাংলা কবি জীবনানন্দ দাশ। নিজ কবিতার অপমূল্যায়ন নিয়ে জীবনানন্দ খুব ভাবিত ছিলেন। কবি নিজেই নিজ রচনার কড়া সমালোচক ছিলেন। তাই সাড়ে আট শত কবিতার বেশী কবিতা লিখলেও তিনি জীবদ্দশায় মাত্র ২৬২টি কবিতা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ও কাব্যসংকলনে প্রকাশ করতে দিয়েছিলেন। এমনকি রূপসী বাংলার সম্পূর্ণ প্রস্তুত পাণ্ডুলিপি তোড়ঙ্গে মজুদ থাকলেও তা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি জীবনানন্দ দাশ। তার মৃত্যুর পর কবিতাগুলো একত্র করে ১৯৫৭ সালে রূপসী বাংলা কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয়।
কবির প্রকাশিত গ্রন্থসমূহঃ
১। ঝরা পালক (১৯২৭), ২। ধূসর পান্ডুলিপি (১৯৩৬), ৩। বনলতা সেন (১৯৪২), ৪। মহাপৃথিবী (১৯৪৪), ৫। সাতটি তারার তিমির (১৯৪৮), ৬। জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা (১৯৫৪), ৭। রূপসী বাংলা (১৯৫৭) ৮। বেলা অবেলা কালবেলা (১৯৬১), ৯। সুদর্শনা (১৯৭৪)
প্রবন্ধগ্রন্থঃ
১। কবিতার কথা (১৯৫৫), ২। জীবনানন্দ দাশের প্রবন্ধ সমগ্র (১৯৯০)
উপন্যাসঃ ১। মাল্যবান (১৯৭৩) ২। সুতীর্থ (১৯৭৭), ৩। চারজন (২০০৪)
গল্পগ্রন্থঃ ১। জীবনানন্দ দাশের গল্প (১৯৭২, সম্পাদনা: সুকুমার ঘোষ ও সুবিনয় মুস্তাফী),
২। জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ গল্প (১৯৮৯, সম্পাদনা: আবদুল মান্নান সৈয়দ)
মৃত্যুর অব্যবহিত পরেই তিনি বাংলা ভাষায় আধুনিক কবিতার পথিকৃতদের একজন হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন। মৃত্যুর পর থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর শেষ ধাপে তিনি জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেন এবং ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে যখন তাঁর জন্মশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছিল ততদিনে তিনি বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয়তম কবিতে পরিণত হয়েছেন। জীবনানন্দ দাশের জীবন এবং কবিতার উপর প্রচুর গ্রন্থ লেখা হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে, বাংলা ভাষায়। এর বাইরে ইংরেজিতে তার ওপর লিখেছেন ক্লিনটন বি সিলি, আ পোয়েট আর্পাট নামের একটি গ্রন্থে। ইংরেজি ছাড়াও ফরাসিসহ কয়েকটি ইউরোপীয় ভাষায় তাঁর কবিতা অনূদিত হয়েছে।
কবিতার সম্রাট হলেও কবির জীবন কেটেছে চরম দারিদ্রের মধ্যে। জাগতিক নিঃসহায়তা কবিকে মানসিকভাবে কাবু করেছিল এবং তাঁর জীবনস্পৃহা শূন্য করে দিয়েছিল। মৃত্যুচিন্তা কবির মাথায় দানা বেঁধেছিল। তিনি প্রায়ই ট্রাম দুর্ঘটনায় মৃত্যুর কথা ভাবতেন। ১৯৫৪ সালের ১৪ই অক্টোবর তারিখে কলকাতার বালিগঞ্জে এক ট্রাম দূর্ঘটনায় তিনি আহত হন। ট্রামের ক্যাচারে আটকে তার শরীর দলিত হয়ে গিয়েছিল। ভেঙ্গে গিয়েছিল কণ্ঠা, ঊরু এবং পাঁজরের হাড়। প্রত্যক্ষদর্শীর মতে এ সময় দুই হাতে দুই থোকা ডাব নিয়ে ট্রাম লাইন পার হচ্ছিলেন কবি। গুরুতরভাবে আহত জীবনানন্দের অবস্থা ক্রমশঃ জটিল হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়েন কবি। চিকিৎসক ও সেবিকাদের সকল প্রচেষ্টা বিফলে দিয়ে ১৯৫৪ সালের ২২শে অক্টোবর তারিখ রাত ১১টা ৩৫ মিনিটে কলকাতার শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। কবির মৃত্যুর পর ১৯৫৫ খৃস্টাব্দের ফেব্রুয়ারী মাসে জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করে। রবীন্দ্রত্তোর যুগের অসামান্য কবি জীবনান্দ দাশের আজ ৬১তম মৃত্যুবার্ষিকী। বনলতা সেনের কবি জীবনানন্দ দাশের মৃত্যুদিনে কবির প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:০২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ ইসলাম ভাই আমাকে অনুসরণ করার জন্য।
রূপসী বাংলার কবির মৃত্যুতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য।
২| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৫৫
প্রামানিক বলেছেন: বনলতা সেনের কবি জীবনানন্দ দাশের মৃত্যুদিনে কবির প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা।
ধন্যবাদ নুরু ভাই।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:১৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই
বনলতা সেনের কবি জীবনানন্দ দাশের
মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
৩| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:১৩
চন্দ্রদ্বীপবাসী বলেছেন: আধুনিক কবিতায় সৃষ্টিশীল কাজ করার পরও তৎকালীন সমালোচকরা চন্দ্রদ্বীপের এই কবিকে তুচ্ছজ্ঞান করেছেন। কিন্তু পরবর্তীতে তারা তাদের ভুল বুঝতে পারলেও তখন অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিল।
ধন্যবাদ সুন্দর লেখাটির জন্য!
২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৪৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ চন্দ্রদ্বীপবাসী
চন্দ্রদ্বীপের অহংকার রূপসী বাংলার
কবি জীবনানন্দ দাশের মৃত্যুৃবার্ষিকীতে
শ্রদ্ধা নিবেদন করার জন্য। ভালো থাকবেন।
৪| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:২২
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: বাংলা ভাষার শুদ্ধতম কবি জীবনানন্দ দাশের মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি ।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:৪৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: লিটন ভাই ধন্যবাদ কবি সম্রাটের মৃত্যুৃবার্ষিকীতে
শ্রদ্ধা নিবেদন করার জন্য। ভালো থাকবেন।
৫| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৫১
কাবিল বলেছেন: কবি জীবানানন্দ দাশের ৬১তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:০০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ কাবিল ভাই
কবিকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
৬| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৭
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: প্রিয় কবির মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলী ।
২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:২৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: প্রিয় কবির মৃত্যুবার্ষিকীতে
শ্রদ্ধা জানানোর জন্য
আপনাকেধন্যবাদ
সেলিম ভাই ।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৪
শামছুল ইসলাম বলেছেন: প্রিয়তে নিলাম।
//এ সময় দুই হাতে দুই থোকা ডাব নিয়ে ট্রাম লাইন পার হচ্ছিলেন কবি।//
--কথা গুলো পড়ে চোখটা ঝাপসা হয়ে এলো।
সারা জীবন সংসারের ঘানি টেনেছেন, সেই ঘানি টানতে টানতেই মৃত্যুকে আলিঙ্গন করলেন।
ভাল থাকুন। সবসময়।