নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোমান্স আন্দোলনের অন্যতম নেতা, কবি, ছোট গল্পকার, সম্পাদক, সমালোচক এবং গোয়েন্দা কাহিনীর জনক এডগার এ্যালেন পো। প্রথম জীবনে তিনি প্রচুর কবিতা লিখেছেন। তবে গদ্য সাহিত্যের জন্যই তিনি বেশি খ্যাতি ও গৌরবের অধিকারী। তিনি অনেক রহস্য ও রোমাঞ্চকর গল্প এবং অনেক হরর গল্পও লিখেছেন। তাঁর পূর্বে এমন হরর গল্প আর কেউ খুব একটা লেখেননি। এজন্যে তাঁকে রোমাঞ্চ জাগানো গল্পের জনকও বলা হয়। আজকাল কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে বয়স্ক ব্যক্তিরাও যে গোয়েন্দা কাহিনী পড়ে সে গোয়েন্দা কাহিনীরও জনক এডগার এ্যালেন পো। বৈচিত্র্যময় জীবনের অধিকারী এই প্রতিভাবান সাহিত্যিকের আজ ১৬৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৮৪৯ সালের এই দিনে রহস্যজনক পরিস্থিতিতে মৃত্যুবরন করেন তিনি। মৃত্যুদিনে তাঁর প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা।
এডগার এ্যালেন পো ১৮০৯ সালের ১৯ জানুয়ারী যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বিশ বছর বয়স হবার আগেই তিনি লেখালেখি শুরু করেন এবং তখনই তাঁর কিছু কিছু রচনা প্রকাশিত হয়। এ্যালেন পো এর সারা জীবনই কাটে নানা রকম যন্ত্রণা, আর্থিক দৈন্যদশা ও মানসিক অস্থিরতার মধ্যে। জীবদ্দশায় এক দিকে তিনি অসংযমী জীবন যাপন করেছেন, জুয়ো খেলেছেন, অসুস্থ হয়েছেন, মাদক দ্রব্য সেবন করেছেন। মৃত্যুর এক বছর পূর্বে ঘুমের বড়ি খেয়ে এক বার আত্নহত্যারও চেষ্টা করেন তিনি। এত কিছুর মধ্যেও কয়েকটি গভীর আবেদনময় কবিতা ও ব্যতিক্রমধর্মী ছোটগল্প রচনা করে শুধু মার্কিন সাহিত্যভুবনে নয়, বিশ্বসাহিত্যের অঙ্গনে নিজের জন্য একটি গৌরবমন্ডিত স্থায়ী আসন করে নিয়েছেন। তাঁর বিখ্যাত কবিতাগুলির মধ্যে রয়েছেঃ ১। হেলেনের প্রত ২। স্বপ্ন, ৩। ইস্রাফিল, ৪। দাঁড়কাক, ৫। অ্যানাবেল লী প্রভৃতি।‘দ্য রেভেন’ বা ‘দাঁড়কাক’ কবিতাটি ১৮৪৫ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। কবিতাটি রোম্যান্টিকতা,মোহন সুরেলা ছন্দোময়তা ও তার রহস্যময় পরিমণ্ডলের জন্য বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবিতারূপে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
এডগার এ্যালেন পো অনেক রহস্য ও রোমাঞ্চ গল্প লিখেছেন। পো তাঁর বেশ কয়েকটি ছোটগল্পে উল্লেখযোগ্য নৈপুণ্যের সঙ্গে রহস্যময়, ভুতুড়ে, মৃত্যুর গন্ধমাখা, খুনখারাবি ভরা, আতঙ্কতাড়িত পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন। গোয়েন্দা-গল্পের ক্ষেত্রেও তাঁর অবদান স্মরণীয়। গোয়েন্দা ধারার রচনার মধ্যেঃ ১। আমন্তিলাডোর পিপা, ২। রু মর্গের হত্যাকাণ্ড এবং ৩। চুরি যাওয়া চিঠি তাঁকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দিয়েছে। এছাড়াও তিনি অনেক হরর গল্প লিখে ছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য হরর গল্পগুলো হচ্ছেঃ ১। দি ফল অফ দ্য হাউস অফ আশার, ২। দি পিট এ্যান্ড দি পেন্ডুলাম, ৩। দি ব্লাক ক্যাট ইত্যাদি। এডগার এ্যালেন পো-র উচ্চমানের রচনাশৈলী এবং প্রতীকবাদী দৃষ্টিভঙ্গি পরবর্তী কালের অনেক শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক কর্তৃক উচ্চ প্রশংসিত হয়েছে। এঁদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলেন আইরিশ কবি ডব্লিউ. বি. ইয়েট্স্ ও ফরাসি কথাসাহিত্যিক মোপাসাঁ এবং কবি শার্ল বোদ্ল্যার ও অল ভালেরি। আজও পো-র সাহিত্যকর্ম সাধারণ পাঠক ও বিদগ্ধ সমালোচক সবার কাছে সমাদৃত হচ্ছে। রহস্যকাহিনীর বর্তমান যে ধারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাহিত্যে দেখা যায়, তার পথিকৃত ছিলেন এ্যালেন পো। আর তার জীবনের সঙ্গেই অদ্ভুতভাবে জড়িয়ে আছে 'রহস্যের জনক' শব্দটি।
১৮৪৯ সালের ৭ অক্টোবর এক রহস্যজনক পরিস্থিতিতে মৃত্যুবরন করেন এ্যালেন পো। তার মৃত্যু নিয়ে আছে নানা রহস্য। বেঁচে থাকতেই যিনি পেয়েছেন রহস্যপুরুষের খেতাব তার মৃত্যুও যদি হয় রহস্যজনকভাবে, তাহলে তো কথাই নেই। এডগার এ্যালেন পো তেমনি এক রহস্যপুরুষ। নিজের মৃত্যুকে তিনি করে গেছেন রহস্যময়। তার মৃত্যু নিয়ে আজও আলোচনা হয়, চলে বিতর্ক। মৃতুর আগে পো একা একা বাস করতেন নিউইয়র্কের কাছাকাছি ছোট্ট এক কুটিরে। অনেকেই মনে করেন, সেসময় তিনি ছিলেন অত্যন্ত বিষণ্ন এবং সাধারণ জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন এক আলাদা মানুষ। ১৮৪৯ সালের ৩ অক্টোবর হঠাৎ তাকে পড়ে থাকতে দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরের রাস্তায়। জোসেফ ওয়ালকার নামের এক সহৃদয় ব্যক্তি তাকে ভর্তি করে দেন ওয়াশিংটন কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু বাঁচেননি তিনি। ঠিক কী কারণে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন, তার কারণ আজও জানা যায়নি। কেউ কেউ মনে করেন, মৃত্যুর আগে অ্যালকোহলে আসক্ত ছিলেন তিনি। যার কারণে দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান। আবার অনেকেই মনে করেন, ব্যথানাশক ওষুধ সেবনের ফলেই তার মৃত্যু হয়েছে। তবে বেশিরভাগ লোকেরই ধারণা, সম্পত্তির লোভে তাকে কেউ হত্যা করছেন। কিন্তু এ সম্পর্কে বিশ্বাসযোগ্য কোনো তথ্য আজও পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর পর সঙ্গে সঙ্গেই এ নিয়ে আলোচনাও হয়নি। সংবাদপত্রে তখন বলা হয়েছিল, মস্তিষ্কের মারাত্মক রোগে পো মারা গেছেন। এরপর ছোট্ট আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে তাকে সমাহিত করা হয়। কিন্তু পরবর্তীকালে এ সাহিত্যিকের মৃত্যু নিয়ে আলোচনার ঝড় ওঠে। শুরু হয় গবেষণা। কিন্তু মুশকিল হয়ে পড়ে যে হাসপাতালে পো মারা গেছেন সেখানে তার মৃত্যু ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনো নথি পাওয়া যায়নি। এটাও এক রহস্য। পরবর্তীকালে পোর মৃত্যু নিয়ে অনেকেই গল্প ফাঁদেন। এমনকি আলোচনায় আসার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও ফেঁদেছিলেন বিভিন্ন কাহিনী।
কিন্তু কোনো কাহিনীই কিনারা করতে পারেননি এডগার এ্যালেন পোর মৃত্যুরহস্য। রহস্যকাহিনীর জন্মদাতা এই মহান কবি, সাহিত্যিক, সম্পাদকের মৃত্যুরহস্য হয়তো এভাবেই রহস্যময় থেকে যাবে চিরকাল। আজ সেই রহস্যপুরুষের রহস্যময় মৃত্যুদিন। রহস্যকাহিনীর জনক এডগার এ্যালেন পো-র ১৬৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা।
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১:২৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ হালি,
রহস্যকাহিনীর জনক এডগার এ্যালেন পো-র
মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৩:১৫
কাবিল বলেছেন: গোয়েন্দা কাহিনীর জনক মার্কিন সাহিত্যিক এডগার এ্যালেন পো'র ১৬৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ কাবিল ভাই
রহস্যকাহিনীর জনক এডগার এ্যালেন পো-র
মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। শুভকামনা..........
৩| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১১
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: পো সাহেবের দি ব্লাক ক্যাট পড়েছিলাম ।
তাঁর মৃত্যু দিনে শ্রদ্ধা ।
০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ গিয়াস ভাই
রহস্যমানবের মৃত্যুদিনে
শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
৪| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৮:৩৭
দরবেশমুসাফির বলেছেন: পোর জীবন অনেক দুঃখের ছিল। উনার জীবনী পড়ে মনটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। পোস্ট প্রিয়তে।
৫| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:১২
ক্যান্সারযোদ্ধা বলেছেন: আসলেই মহাবিশ্ব একটা রহস্যের নদ..
৬| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:৩৮
অন্যসময় ঢাবি বলেছেন: দি পিট এ্যান্ড দি পেন্ডুলাম
কারো যদি ঘুম না আসে তাহলে পো এর অরজিনাল বই এর এক পাতা পড়বেন ঘুম আপনাকে মহাসমারোহে তার দেশে তুলে নিয়ে যাবে। আর যদি সুইসাইড করার ইচ্ছা হয় তাহলে পুরা বইটা একরাতে যে কোন উপায়ে ,বাই হুক ওর বাই ক্রুক, শেষ করার টার্গেট নিন- কয়েকটা পেইজ পড়ার পর হতেই আপনার মনে হতে থাকবে এত কষ্ট করে পড়ার চেয়ে মরণ ভাল। যে বইয়ের এক পাতা পড়লেই ঘুম আসে সে বই পুরাটা একটানে পড়ে ফেললে মরে যাওয়া অবান্তর নয়।
পো এর কল্পনা শক্তির প্রশংসা না করে উপায় নেই কিন্তু আসলে ইংরেজি সাহিত্যের ওই সময়কার ভাষা অখাদ্য।
৭| ০৮ ই অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ১১:২৩
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
অদ্ভুত মানব। তার প্রতিটি গ্রন্থে রয়েছে এর স্বাক্ষর।
অনেক ধন্যবাদ নূরু ভা্ই। আপনার পোস্টগুলো না থাকলে এসব মহামানবদের কথা হয়তো ভুলেই যেতাম।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ১২:১৩
হালি্ বলেছেন: উনার মৃত্যুদিনে শ্রদ্ধা