নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
মূখবন্ধঃ ১৯৬২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শিক্ষা সংকোচন নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে প্রাণ দিয়েছিলেন মোস্তফা, বাবুল, ওয়াজিউল্লাহসহ নাম না জানা অসংখ্য ছাত্র। শহীদের রক্তস্নাত ১৭ সেপ্টেম্বর মহান ‘শিক্ষা দিবস’ হিসেবে পালন করছে ছাত্রসমাজ। ৫৩ বছর আগে তৎকালীন পাকিস্তানি সামরিক শাসক আইয়ুব খানের চাপিয়ে দেওয়া ‘শরীফ কমিশনের’ বৈষম্যমূলক শিক্ষানীতি প্রতিহত করতে গড়ে উঠেছিল ব্যাপক ছাত্র আন্দোলন। ১৯৬২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্বাধীন ‘অল পার্টি স্টুডেন্ট অ্যাকশন কমিটি’(সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ) বৈষম্যহীন শিক্ষানীতি প্রতিষ্ঠার দাবিতে দেশব্যাপী হরতাল কর্মসূচির ডাক দেয়। সকাল দশটা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে হাজার লোকের ঢল। সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল। ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে দমাতে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা লেলিয়ে দেয় পুলিশ বাহিনী। বিক্ষোভ মিছিলটি যখন আবদুল গনি রোডে তখন অতর্কিতে পেছন থেকে হামলে পড়ে পুলিশ। লাঠিচার্জ, কাঁদুনে গ্যাস- অবশেষে গুলি। আহতের আর্তনাদে যেন নরকপুরিতে পরিণত হয় রাজপথ। পাকিস্তান সরকারের গণবিরোধী, শিক্ষা সংকোচনমূলক শিক্ষানীতি চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে এবং একটি গণমুখী শিক্ষানীতি প্রবর্তনের দাবিতে ১৯৬২ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ছাত্র-জনতার ব্যাপক গণআন্দোলনের রক্তাক্ত স্মৃতিবিজড়িত দিন "জাতীয় শিক্ষা দিবস।"
পটভূমিঃ ১৭ ই সেপ্টেম্বর একটি তারিখ যা বামপন্থীরা ছাড়া আর কেউ তেমন হিসাব রাখে না, আর কারো রাখার প্রয়োজনও পড়ে না। সময়টা ১৯৬২ সাল। পাকিস্তানি ঔপেনিবেশিক শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে সুপ্ত জাতির কর্ণকূহরে রণদুন্দুভি বাজাচ্ছে বাংলার সংশপ্তক ছাত্রসমাজ। অত্যাচারী শাসক গোষ্ঠীর ভ্রুকূটি উপেক্ষা করে ছাত্রসমাজের পদাতিক পদক্ষেপ ও মিছিলের শ্লোগান মন্দ্রিত হচ্ছে, স্পন্দন জাগাচ্ছে, মুক্তির প্রতীক্ষায় প্রহর গুণতে থাকা সাড়ে সাত কোটি বাঙ্গালির অন্তরে। মুক্তির আকাঙ্খা বন্যা বেগের মত ছুটে চলেছে বিপুল ভবিষ্যতের পানে। জঙ্গিলাট আইয়ুব শাহী মনের অজান্তে বারুদে আগুন দিলেন। এস এম শরীফের নেতৃত্বে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করে প্রণয়ন করলেন চরম বৈষম্যমূলক শিক্ষানীতি। “টাকা যার শিক্ষা তার”; এই মূলমন্ত্রকে ধারণ করে শিক্ষাকে পণ্য পরিণত করাএবং শিক্ষাকে একটি বিশেষ শ্রেণীর হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাবসহ একটি সাম্প্রদায়িক শিক্ষানীতি এদেশের জনগণের কাঁধে চাপিয়ে দিতে চাইলেন। এই চরম বৈষম্যমূলক শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে সদাজাগ্রত ছাত্রসমাজ সেপ্টেম্বরের ১৭ তারিখ হরতাল আহবান করে এবং এর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে পেশাজীবী, শ্রমিক, কৃষিক সহ সর্বস্তরের মানুষ। বাঙ্গালির আড়মোড়া ইতোমধ্যে ভাঙ্গতে আরম্ভ করেছে তাই তারা আঁচ করতে সময় নেয়নি এটা শুধু ছাত্রদের শিক্ষা সম্পর্কিত আন্দোলন নয়, এটা স্বাধিকার আদায় আন্দোলনের একটা মাহেন্দ্রক্ষণও বটে। ১৭ই সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে নয়টায় বের হয় ছাত্র-জনতার বিরাট জঙ্গি মিছিল। মিছিল যখন হাইকোর্ট পার হয়ে আবদুল গণি রোডে প্রবেশ করে তখন পুলিশ গুলিবর্ষণ আরম্ভ করল। রাস্তায় লুটিয়ে পড়ল বাবুল, মোস্তাফা ও ওয়াজিউল্লাহ। পিচঢালা রাজপথ রক্তে সিক্ত হল। জঙ্গিলাট আইয়ুব শাহী পারলেন না তার শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করতে। বাবুল-মোস্তাফাদের রক্ত সেই দিনে রাজপথে শুকিয়ে যায়নি, সঞ্চারিত হয়েছিল জাতির ধমনীর শোণিত প্রবাহে, মস্তিষ্কের শিরা উপশিরায়। ঐ রক্তের স্রোত ধাবিত হয়েছিল আরো এক রক্তগঙ্গার পানে, অবশেষে গিয়ে মেশে স্বাধীনতার মোহনায়।
আন্দোলরে সুত্রপাত যে ভাবেঃ
লৌহমানব হিসেবে খ্যাত স্বৈরশাসক আইয়ুব খান, ক্ষমতা দখলের মাত্র ২ মাস পর ১৯৫৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করে। এই কমিশন ১৯৫৯ সালে আগস্ট মাসের মধ্যে একটি শিক্ষা রিপোর্ট প্রণয়ন করে। ২৭ অধ্যায়ে বিভক্ত এই রিপোর্টে প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চতর স্তর পর্যন্ত সাধারণ, পেশামূলক শিক্ষা, শিক্ষক প্রসঙ্গ, শিক্ষার মাধ্যম, পাঠ্যপুস্তক, হরফ সমস্যা, প্রশাসন, অর্থ বরাদ্দ, শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বিষয়ে বিস্তারিত সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়। এতে আইয়ুব শাহীর ধর্মান্ধ, পুঁজিবাদী, রক্ষণশীল, সাম্রাজ্যবাদী শিক্ষাসংকোচন নীতির পূর্ণ প্রতিফলন ঘটেছিল। আইয়ুব সরকার এই রিপোর্টের সুপারিশ গ্রহণ করে এবং তা ১৯৬২ সাল থেকে বাস্তবায়ন করতে শুরু করে।
শরীফ কমিশনের শিক্ষা সংকোচন নীতি কাঠামোতে শিক্ষাকে তিন স্তরে ভাগ করা হয়- প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চতর। ৫ বছরে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও ৩ বছরে উচ্চতর ডিগ্রী কোর্স এবং ২ বছরের স্নাতকোত্তর কোর্সের ব্যবস্থা থাকবে বলে প্রস্তাব করা হয়। উচ্চশিক্ষা ধনিকশ্রেণীর জন্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এজন্য পাশ নম্বর ধরা হয় শতকরা ৫০, দ্বিতীয় বিভাগ শতকরা ৬০ এবং প্রথম বিভাগ শতকরা ৭০ নম্বর।
এই কমিশন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বায়ত্বশাসনের পরিবর্তে পূর্ণ সরকারী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা, বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, ছাত্র-শিক্ষকদের কার্যকলাপের উপর তীক্ষ্ম নজর রাখার প্রস্তাব করে। শিক্ষকদের কঠোর পরিশ্রম করানোর জন্য ১৫ ঘন্টা কাজের বিধান রাখা হয়েছিল। রিপোর্টের শেষ পর্যায় বর্ণমালা সংস্কার করা এবং বাংলা ও উর্দুর স্থলে রোমান বর্ণমালা প্রয়োগ এবং প্রতিষ্ঠার জন্য কমিটি গঠনের প্রস্তাব করে এই কমিশন।
আইয়ুব খান সরকারের শরীফ কমিশন রিপোর্টে শিক্ষাকে পণ্য হিসেবে বর্ণনা করা হয়।“ শিক্ষা সম্পর্কে জনসাধারণের চিরাচরিত ধারণা অবশ্যই বদলাতে হবে। সস্তায় শিক্ষা লাভ করা যায় বলিয়া তাহাদের যে ভুল ধারণা রয়েছ, তা শীঘ্রই ত্যাগ করিতে হবে। যেমন দাম তেমন জিনিস – এই অর্থনৈতিক সত্যকে অন্যান্য ব্যাপারে যেমন শিক্ষার ব্যাপারেও তেমনি এড়ানো দুষ্কর”। এ রিপোর্টে সাম্প্রদায়িক চেতনা, জাতীয় স্বার্থ বিরোধী, পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থ রক্ষাই শিক্ষার লক্ষ্য তা রিপোর্টের অংশে স্পষ্ট করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল।
ছাত্র ইউনিয়ন আইয়ুবের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১৯৫৯ সালে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনকে নিয়ে একুশ উদযাপনের প্রস্তুতি গ্রহণ করে। ১৯৬০ ও ১৯৬১ সালে এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকে। ১৯৬১ সালে রবীন্দ্রনাথের জন্মবার্ষিকী পালন করার মাধ্যমে সরকারের সাম্প্রদায়িক ও বাঙ্গালীবিরোধী মনোভাবকে অগ্রাহ্য করে।
১৯৬১ সালে কমিউনিস্ট পার্টি ও আওয়ামী লীগের বৈঠকের পর আন্দোলন বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ৩০ ডিসেম্বর এই বৈঠকে ছাত্র ইউনিয়ন সামরিক শাসনের পরিবর্তে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, বিভিন্ন জাতীয় অধিকার প্রতিষ্ঠা, আইয়ুব শিক্ষানীতি বাতিল, রাজবন্দীদের মুক্তি প্রভৃতি বিষয়ে আন্দোলন শুরু করার প্রস্তাব করে- যা ওই মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত আকারে গৃহীত হয়। আরো সিদ্ধান্ত হয় যে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে স্বৈরতন্ত্র বিরোধী জঙ্গি আন্দোলন।
১৯৬২ সালের ৩০ জানুয়ারি সোহরাওয়াদী গ্রেফতার হলে ৩১ জানুয়ারি ৪ টি ছাত্র সংগঠন মধুর ক্যান্টিনে যৌথভাবে বসে। ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগ ছাড়া বাকি দুটি সংগঠন ( ন্যাশনাল স্টুডেন্টস ফেডারেশন ও ছাত্র শক্তি) ছিল সরকারের সমর্থক। এদের মূল উদ্দেশ্য ছিল সরকারবিরোধী আন্দোলনকে ভুল পথে পরিচালিত করা। অবশ্য ছাত্র ইউনিয়ন এ বিষয়ে সতর্ক ছিল।
১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বাত্মক ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়।
২ ফেব্রুয়ারি ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃত্বে রাজপথে জঙ্গি মিছিল সামরিক আইন ভঙ্গ করে।
৪-৫ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে।
৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার ছাত্র প্রতিবাদ সমবেশে উপস্থিত হয়।
৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ছাত্র ইউনিয়নের সুসজ্জিত একটি মিছিল নাজিমুদ্দিন রোড দিয়ে পুরান ঢাকায় প্রবেশ করে। এই মিছিলকে প্রতিহত করার জন্য সরকার পুলিশের সাথে সেনাবাহিনী নিয়োগ করে এবং কার্জন হলের মোড়ে ফিল্ড কামান বসানো হয়। ওই দিন আইয়ুব খানের ছবি পোড়ানো হয়।
৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার পর ছাত্ররা হল ত্যাগ করেছেন না দেখে পুলিশ ও সেনাবাহিনী বিশ্ববিদ্যালয় ঘেরাও করে ছাত্রদের জোর করে বের করে দেয়। প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে পুলিবেষ্টনির মাঝে আটকা পরেছিল আন্দোলনের নেতা কর্মীরা। এদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা আগেই জারি হয়েছিল। যা বহুদিন পর্যন্ত বহাল ছিল। এভাবে সারা দেশে আইয়ুব বিরোধী, শিক্ষানীতি বিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। মার্চে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর কেন্দ্রীয়ভাবে আন্দোলন চাঙ্গা হতে থাকে। কিন্তু রাজনৈতিক নেতৃত্ব যথাযথ ভূমিকা পালন না করায় কয়েক মাস ছাত্র আন্দোলন কিছুটা মন্থর থাকে।
অবশেষে দেশের ৯ জন ১৯৬২ সালের ২৫ জুন এক বিবৃতিতে আইয়ুব ঘোষিত শাসনব্যবস্থা প্রত্যাখান করে নতুন শাসনতন্ত্র প্রণয়নের দাবি জানান। নেতৃবৃন্দ সারাদেশে জনসভা করেন। যাতে জনমনে কিছুটা আশার সঞ্চার হয়। ৬২’র দ্বিতীয়ার্ধে সরকার ঘোষিত শিক্ষানীতির প্রতিবাদে আন্দোলন আবার বেগবান হয়ে ওঠে।
প্রতিক্রিয়াশীল শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ঢাকা কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল স্কুল, ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউটসহ বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্ব-স্ব দাবির ভিত্তিতে জুলাই-আগস্ট মাস জুড়ে আন্দোলন চলতে থাকে। আন্দোলনের দাবিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয়েছিল শিক্ষানীতিতে প্রস্তাবিত তিন বছরের ডিগ্রি কোর্স এবং উচ্চ মাধ্যমিক ইংরেজির অতিরিক্ত বোঝা বাতিল করার বিষয়টি। এই দাবির সমর্থনে দেশের প্রায় অধিকাংশ স্কুল-কলেজের ছাত্ররা স্বত:স্ফূর্তভাবে ক্লাস বর্জন করতে থাকে। এ সকল আন্দোলন কর্মসূচিকে সংগঠিতভাবে রূপ দেয়ার জন্য ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগ পাকিস্তান স্টুডেন্ট ফোরাম নামে সাধারণ ছাত্রদের একটি মোর্চা গঠন করে।
প্রকৃতপক্ষে ছাত্র ইউনিয়নই ছিল আন্দোলনের মূল পরিচালক। স্টুডেন্ট ফোরাম আইয়ুব শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে পুরো আগস্ট মাস জুড়ে জঙ্গি আন্দোলন গড়ে তুলার কাজ চালাতে থাকে। শিক্ষা আন্দোলন প্রস্তুতির সময় ছাত্র ইউনিয়ন নেতারা সারা দেশব্যাপী একথা বোঝাতে সক্ষম হন যে, শিক্ষার অধিকার ও গণতন্ত্রের আন্দোলন একই সূত্রে গাঁথা।
প্রাথমিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার পর ১০ আগস্ট ঢাকা কলেজের ক্যান্টিনে বিভিন্ন কলেজ প্রতিনিধিদের নিয়ে একসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই সভা থেকে ১৫ আগস্ট দেশব্যাপী ছাত্র ধর্মঘট ও ১০ সেপ্টেম্বর সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। অবিরামভাবে চলতে থাকে শিক্ষানীতি বাতিলের দাবিতে মিছিল-সমাবেশ-বিক্ষোভ আইয়ুবের কুশপুত্তলিকা দাহসহ নানা কর্মসূচি। পরবর্তীতে আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য ১০ সেপ্টেম্বর সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচি বাতিল করে ১৭ সেপ্টেম্বর সারা দেশব্যাপী হরতাল কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। এই সময় স্টুডেন্ট ফোরামের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে নিয়ে গঠিত ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ আন্দোলন পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে।
১৭ সেপ্টেম্বর সারা দেশব্যাপী হরতাল পালিত হয়। ছাত্রদের সাথে সাধারণ মানুষও পিকেটিংয়ে অংশগ্রহণ করে। সকাল ১০ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার মানুষ সমাবেশে উপস্থিত হয়। সমাবেশ শেষে মিছিল বের হয়ে যায়। জগন্নাথ কলেজে গুলি হয়েছে এ গুজব শুনে মিছিল দ্রুত নবাবপুরের দিকে ধাবিত হয়। হাইকোর্টে পুলিশের সাথে সংঘাতে না গিয়ে মিছিল আব্দুল গনি রোড ধরে যেতে থাকে। পুলিশ তখন পিছন থেকে মিছিলে হামলা চালায়। লাঠি চার্য, কাঁদুনে গ্যাস ও গুলি চালায়। পুলিশের সাথে দ্বিতীয় দফা সংঘর্ষ বাঁধে ঢাকা কোর্টের সামনে। এখানেও পুলিশ ও ইপিয়ার গুলি চালায়। এতে প্রচুর আহত হয়, ৩ জন শহীদ হয়, এবং শত শত ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়। বাবুল, গোলাম মোস্তফা ও ওয়াজিউল্লাহ শহীদ হন। ওই দিন শুধু ঢাকা নয়, সারা দেশে মিছিলের উপর পুলিশ হামলা চালায়। টঙ্গিতে ছাত্র-শ্রমিক মিছিলে পুলিশ গুলি চালিয়ে হত্যা করে সুন্দর আলী নামে এক শ্রমিককে। কিন্তু ওই দিন রক্তাক্ত ঘটনার পর রাজনৈতিক নেতারা একটি বিবৃতি দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছিলেন।
পাদটিকাঃ এই হল আমাদের স্বর্ণোজ্জ্বল ইতিহাস যা হিরন্ময় দ্যুতিতে ভাস্বর ও প্রোজ্বল হয়ে ঊঠতে পারেনি। এর পেছনে যতটা না আমাদের আত্মবিস্মৃতির ঘোড়ারোগ দায়ী তার চেয়ে বেশি দায়ী আমাদের দন্ডমুন্ডের কর্তাদের ইতিহাস মুছে ফেলার হীন অপপ্রয়াস। বাংলাদেশ নামক ভুখন্ডের অভ্যুদয়ের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আছে এ শিক্ষা আন্দোলন। এই আন্দোলন ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন, শিক্ষার সার্বজনীন অধিকার সংরক্ষণের আন্দোলন, শিক্ষার পণ্যায়ন ও সাম্প্রদায়িকীকরণের বিরুদ্ধে আন্দোলন, সর্বোপরি এর সাথে যুক্ত হয়েছিল প্রায় ঔপনেবেশিক শোষণের বিরুদ্ধে জাতীয় মুক্তিস্পৃহা। যেহেতু স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বুর্জোয়া রাজনৈতিক দলসমুহের ক্ষমতার পালাবদল করেছে, কিন্তু শিক্ষানীতির প্রশ্নে কেউই ঘাড় থেকে আইয়ুবী ভুত নামাতে পারেনি, আর তাই তারা চায় না এই সংগ্রামী ইতিহাস যুগ যুগ ধরে জীবন্ত থাকুক, প্রেরণা দান করতে থাকুক।কারণ শিক্ষার নীতিগত প্রশ্নে বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসক, পাকিস্তানী প্রায় ঔপনেবেশিক শাসক এবং স্বাধীন দেশের বুর্জোয়া শাসকের মধ্যে সময়, পরিস্থিতি এবং মাত্রাগত কিছু তারতম্য ছাড়া মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গির তেমন কোন পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় না। একটা সুরের ঐক্য তাদের সকলের মধ্যে রয়েছে তা হল; যে শোষণ ও বৈষম্যের সমাজ তারা টিকিয়ে রেখেছে-এর প্রয়োজনের বাইরে তারা শিক্ষাকে গণমানুষের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে দেবে না। ফলে জনগণের অধিকার প্রশ্নে-সমাজ প্রগতির অর্থে শিক্ষার প্রয়োজন তাদের কাছে বাহুল্য এবং দুঃসাধ্য হয়ে ওঠে। এটাই স্বাভাবিক। কারণ একটা রাষ্ট্রের চরিত্র-বৈশিষ্ট্য এবং শাসক শ্রেণীর শ্রেণী চরিত্রের ওপর নির্ভর করে শিক্ষানীতি কি ধরনের হবে। শিক্ষানীতির ভুমিকা ও প্রস্তাবনায় চমৎকার ও চটকাদারী বক্তব্য যতই থাকুক না কেন, শেষ পর্যন্ত তা শিক্ষা সঙ্কোচনের নীল নকশায় পরিণত হয়।
উপসংহারঃ ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয়মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। দেশের মানুষ পেয়েছে মুক্ত ভূখন্ড, একটি সুন্দর পতাকা। পেয়েছে একটি শিক্ষা দিবস। কেটে গেছে তার ৫১ বছর। স্বাধীন বাংলাদেশেও কেটেছে তার একচল্লিশ বছর। কিন্তু এদেশে এখন পর্যন্ত কোনো পূর্ণাঙ্গ শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়নি। সেই ব্রিটিশ-পাকিস্তান আমলের কেরানী তৈরী করার শিক্ষাব্যবস্থা বহাল রয়েছে। যে শিক্ষাব্যবস্থা মানুষকে ভোগবাদী-সুবিধাবাদী হিসেবে তৈরি করে। শিক্ষা এখন আলু-পটলের মত পণ্য। বিদ্যা ও বিদ্ব্যান টাকায় বিক্রি হয়। শিক্ষা তার, টাকা আছে যার। টাকা নেই, শিক্ষা পাওয়া যাবে না। বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১১ সেই নতুন বোতলে পুরানো মদই হাজির করেছে। চটকদার ও প্রাঞ্জল ভাষার আড়ালে শুভঙ্করের ফাঁকি। অতীতের সমস্ত গণ আন্দোলন থেকে উঠে আসা সর্বজনীন, বিজ্ঞানভিত্তিক, সেক্যুলার, বৈষম্যহীন, একই ধারার শিক্ষানীতির দাবিকে পাশ কাটিয়ে শিক্ষার বেসরকারীকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণ এবং টাকা যার শিক্ষা তার এই নীতিকে নতুন আঙ্গিকে উপস্থাপন করেছে। শিক্ষাক্ষেত্রে পিপিপি , বেসরকারী বিনিয়োগ এই সব গাল ভরা বুলির আড়ালে ব্যবসায়ীদের শিক্ষা-ব্যবসার নিত্য নতুন পথ বাতলে দিয়েছে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১১।
উদ্বেগঃ আজ শিক্ষার উপর দেশী-বিদেশী লুটেরাদের শ্যেনদৃষ্টি পড়েছে। সাম্রাজ্যবাদীদের অর্থের মোড়ল বিশ্বব্যাংকের নির্দেশে নতজানু শাসকশ্রেণী উচচ শিক্ষার মেয়াদী কৌশলপত্রের নামে শিক্ষাকে একটা শ্রেণীর হাতে তুলে দিচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে বছর বছর বেতন-ফি বাড়ছে। নাইট কোর্স , ইভিনিং শিফট ,HEQEP , PPP এর নামে বাণিজ্যিকীকরণের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ধ্বংসের ষোলকলা পুর্ণ করতে যাচ্ছে শাসক শ্রেণী। শিক্ষা আমাদের মৌলিক অধিকার। শিক্ষাকে সব পর্যায়ে সমানভাবে সবার জন্য নিশ্চিত করতে হবে। বৈষম্যহীনভাবে মানসম্মত একই ধারার শিক্ষা বিস্তৃত করতে হবে। সেই শিক্ষা হবে বিজ্ঞানমুখি, জীবনঘনিষ্ট, মানবিক এবং সর্বাগ্রে আধুনিক। সেই শিক্ষা ধনী-গরিব নির্বিশেষ সব মানুষের সন্তানদের গড়ে তুলবে, সচেতন-দেশপ্রেমিক-দক্ষ এবং মেধাবী মানুষ হিসেবে। সেই শিক্ষা ছাত্রসমাজকে ভ্রান্ত পথের পথিক করবে না। সেই শিক্ষার মান হবে বিশ্ব দরবারে ঈর্ষণীয়। সেই শিক্ষা যে মানুষ তৈরি করবে তার অবদান জাতিকে এগিয়ে নেবে উন্নয়নের পথে। সেই শিক্ষা গড়ে তুলবে একটি উদার-গণতান্ত্রিক-অসাম্প্রদায়িক-বৈষম্যহীন-সমৃদ্ধ-অগ্রগতিশীল সমাজ-অর্থনীতি। তখন আর আত্মকেন্দ্রীক মানসিকতার, ব্যক্তিকেন্দ্রীক ভাবনার বৃত্তবন্দী চিন্তার দারিদ্র্যে কাতর থাকবে না আমাদের ছাত্রসমাজ, আমাদের নাগরিক সমাজ। সেই কাজটি করতে হলে এই মূহুর্তে ছাত্রসমাজকেই নিতে হবে অগ্রণী ভূমিকা। ছাত্রসমাজেরই আছে অসুস্থতার বৃত্ত ভেঙে সুস্থ ধারা ফিরিয়ে আনবার সোনালী ইতিহাস। সেই ইতিহাসের ধারক হিসেবে আজকের ছাত্রসমাজকেই দায়িত্ব নিয়ে সকলকে জাগিয়ে তোলার কাজটি হাতে নিতে হবে। পাঁচ বছর আগে প্রণয়ন করা জাতীয় শিক্ষানীতিতে সব স্তরের শিক্ষকদের জন্য পৃথক বেতনকাঠামো করার কথা বলা হলেও সরকার সেটি করেনি। এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগও নেই। আলাদা বেতনকাঠামোর দাবিতে এখন দেশের সব সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা আন্দোলন করছেন।
প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ থেকে শুরু করে শিক্ষার অন্য স্তরেও পৃথক বেতনকাঠামো শিক্ষকদের অন্যতম দাবিতে পরিণত হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদও বিভিন্ন সময়ে শিক্ষকদের পৃথক বেতন স্কেল দেওয়ার আশ্বাস দেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ লক্ষ্যে বছর দুয়েক আগে একটি বেতন কমিশন গঠনের আলোচনা শুরু করলেও তা আর এগোয়নি। অষ্টম বেতন স্কেল ঘোষণার পর অধিকাংশ শিক্ষক তা মেনে নিতে পারছেন না। তাঁরা বেতন বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছেন। সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বেতন বৈষম্যের পাশাপাশি মর্যাদার প্রশ্নেও ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এদিকে শিক্ষানীতির কার্যকর বাস্তবায়নে শিক্ষা আইন প্রণয়নের বিষয়টি প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে ঘুরছে। এই আইন প্রণয়ন না হওয়ায় শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের বিষয়টিও অনেকটা ঐচ্ছিক হয়ে পড়েছে। আইনি বাধ্যবাধকতা ছাড়া এই নীতি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ রকম পরিস্থিতির মধ্যে আজ বৃহস্পতিবার পালিত হচ্ছে শিক্ষা দিবস। মন্ত্রণালয়ের সূত্রমতে, ২০১১ সালে শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের জন্য কয়েকটি উপকমিটি করা হয়েছিল। এর মধ্যে শিক্ষা আইন করার জন্যও একটি কমিটি করা হয়। কিন্তু সাড়ে চার বছর হয়ে গেলেও আইনের খসড়া চূড়ান্ত হয়নি। আইন ছাড়া কোন কিছুই বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। অথচ আইনের শুধু খসড়ার পর খসড়াই হচ্ছে, চূড়ান্ত রূপ দেখা যাচ্ছে না।
প্রত্যাশাঃ বিস্মৃতি , সংকোচের বিহবলতা ,হতাশার অমানিশা আমাদের কাটিয়ে উঠতেই হবে। বিস্মৃত ইতিহাস কথা বলছে, আমাদের কান পেতে শুনতে হবে সেই স্বনন । তার অনুরণনে আমাদের চেতনার রুদ্ধদ্বার উদঘাটিত হোক, প্রখর প্রতিবাদী তেজে উদভাসিত হোক আমাদের মানসালোক। অতীতের সংগ্রামী ঐতিহ্যের অনুপ্রেরণা নিয়ে আমাদের ঝাপিয়ে পড়তে হবে সর্বাত্মক ছাত্র আন্দোলনে। আজ দিকে দিকে ছাত্রআন্দোলন দানা বেঁধে উঠছে, এখন প্রয়োজন সময়ের আহবানে সাড়া দেওয়া। এটাই আমাদের দায়ভার। অন্যথায় অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানভিত্তিক, সার্বজনীন ও একই ধারার শিক্ষানীতি জন্য তুমূল আন্দোলন চলবেই। বিজ্ঞানভিত্তিক, সার্বজনীন ও একই ধারার শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন হোক আমাদের অঙ্গীকার।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই
জাতীয় শিক্ষা দিবসে আমাদের
সকলের প্রত্যাশার পূর্ণ বাস্তবায়ন চাই।
২| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৫
ছাসা ডোনার বলেছেন: অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানভিত্তিক, সার্বজনীন ও একই ধারার শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন হোক ।এইটা সব সচেতন বাংগালীর কাম্য, তাই এই আন্দোলন যেন থেমে না যায়। ধন্যবাদ
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ ছাসা ডোনার,
চমৎকার প্রত্যাশার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন
হোক এটা আমাদের সকলের কাম্য।
৩| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৫
কাবিল বলেছেন: প্রখর প্রতিবাদী তেজে উদভাসিত হোক আমাদের মানসালোক।
১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৭
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: কাবিল ভা্ই অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে
সুন্দর মন্তব্যের জন্য।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০৮
প্রামানিক বলেছেন: বিজ্ঞানভিত্তিক, সার্বজনীন ও একই ধারার শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন হোক আমাদের অঙ্গীকার।
ধন্যবাদ নুরু ভাই।