নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
আধুনিক বাংলাসাহিত্যের প্রথম মুসলিম কবি কায়কোবাদ, মহাকবি কায়কোবাদ বা মুন্সী কায়কোবাদ। কায়কোবাদের সাহিত্যকর্মে পশ্চাত্পদ মুসলিমদের নিজেদের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য সংরক্ষণে এবং তা অনুশীলনে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। বাংলা মহাকাব্যের অস্তোন্মুখ এবং গীতিকবিতার স্বর্ণযুগে মহাকবি কায়কোবাদ মুসলমানদের গৌরবময় ইতিহাস থেকে কাহিনী নিয়ে ‘মহাশ্মশান’ মহাকাব্য রচনা করে যে দুঃসাহসিকতা দেখিয়েছেন তা তাঁকে বাংলা সাহিত্যের গৌরবময় আসনে স্থান করে দিয়েছে। তিনি বাংলার অপর দুই মহাকবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও নবীনচন্দ্র সেনের ধারায় মহাকাব্য রচনা করেন। তবে নবীনচন্দ্রই ছিলেন তার প্রধান আদর্শ। তিনি কবি হেমচন্দ্র ব্যানার্জী এবং কবি নবীন চন্দ্র সেন এর দ্বারা প্রভাবিত হলেও তাঁদের মত সাম্প্রদায়ীক ভেদবুদ্ধির পরিচয় দেন নি | তাঁর কাছে হিন্দুও বীর, মুসলমানও বীর | মুসলমানদের মধ্যে পিছিয়ে পড়া মানুষের কাছে তাঁদের হৃত গৌরবের কথা পৌঁছে তাঁদের উন্নতি সাধনে উদ্বুদ্ধ করাই তাঁর প্রধাণ প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে । বাঙালি মুসলমান কবিদের মধ্যে প্রথম সনেট রচয়িতা মহা কবি কায়কোবাদ ১৯৫১ সালের আজকের দিনে ইন্তেকাল করেন। আজ তাঁর ৬৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। খ্যাতিমান কবি কায়কোবাদের মৃত্যুদিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
বাংলা ভাষার উল্লেখযোগ্য কবি কায়কোবাদ ১৮৫৭ সালে (জন্ম তারিখ অস্পষ্ট) ঢাকার নবাবগঞ্জের আগলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম কাজেম আলী কোরেশী। তার পিতা শাহামতউল্লাহ আল কোরেশী ছিলেন ঢাকা জজকোর্টের আইনজীবী। ঢাকার পোগজ এবং সেন্ট গ্রেগরী স্কুলে পড়াশোনা করেন কায়কোবাদ। তারপর ঢাকা মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষা পর্যন্ত অধ্যয়ন করেন কিন্তু তিনি প্রবেশিকা পরীক্ষা না দিয়ে পোস্টমাস্টারের চাকুরী নিয়ে তার স্থানীয় গ্রামে ফিরে আসেন। এখানে তিনি অবশর গ্রহণের আগ পর্যন্ত কাজ করেন। বাল্যাবস্থা থেকেই তাঁর কবিতার পারদর্শিতা চোখে পড়ে | ১৮৭০ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সেই তার প্রথম কাব্য গ্রন্থ 'বিরহবিলাপ' প্রকাশিত হয়। কায়কোবাদ দীর্ঘ জীবন লাভ করেছিলেন। এই দীর্ঘ জীবনে তিনি বহু সাহিত্যকর্ম রচনা করেন।
জীবদ্দশায় প্রকাশিত তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ সমুহঃ ১। কুসুমকানন (১৮৭৩), ২। অশ্রুমালা (১৮৯৫), ৩। শিবমন্দির (১৯২২), ৪। মহাশ্মশান (১৯০৪), ৫। অমিয়ধারা (১৯২৩) উল্লেখযোগ্য। তাঁর মৃত্যুর পরে প্রকাশিত গ্রন্থ ১। প্রেমের ফুল (১৯৭১), ২। প্রেমের বাণী (১৯৭০), ৩। প্রেম পারিজাত (১৯৭০), ৪। মন্দাকিনী ধারা (১৯৭১) এবং ৫। গাউছ পাকের প্রেমের কুঞ্জ (১৯৭৯) ইত্যাদি। তৃতীয় পানিপথের যুদ্ধ অবলম্বনে রচিত মহাশ্মশান হচ্ছে তার মহাকাব্য। এটাকে তাঁর শ্রেষ্ঠ রচনা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সাহিত্যে অসমান্য অবদানের জন্য তাকে নিখিল ভারত সাহিত্য সংঘ থেকে তাঁকে কাব্যভূষণ, বিদ্যাভূষণ এবং সাহিত্য রত্ন পুরস্কারে ভূষিত করেন | বাংলাদেশ সরকার তার সম্মানে ১৯৯১ সালে ৬ টকা মূল্যমানের ডাকটিকিট প্রকাশ করে।
১৯৫১ সালের ২১ জুলাই খ্যাতিমান কবি কায়কোবাদ ইন্তেকাল করেন। আজ তার ৬৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। মহাকবি কায়কোবাদের মৃত্যুদিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
২১ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৪৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ কাশেম ভাই
সর্বদা সাথে থেকে মন্তব্য প্রদান করার জন্য।
ভালো থাকবেন, শুভেচছা জানবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ১০:৪০
এম এ কাশেম বলেছেন: ১৯৫১ সালের ২১ জুলাই খ্যাতিমান কবি কায়কোবাদ ইন্তেকাল করেন। আজ তার ৬৪তম মৃত্যুবার্ষিকী। মহাকবি কায়কোবাদের মৃত্যুদিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
শুভেচ্ছা নুরু ভাই।