নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
গুস্তাভ ফ্লবেয়ার, এমিল জোলা, আলফস দোঁদে-দের উত্তরসূরী বিখ্যাত ফরাসি কবি গল্পকার ও ঔপন্যাসিক গি দ্য মোপাসাঁ। যাকে আধুনিক ছোটগল্পের অন্যতম জনক মনে করা হয়। চাতুর্যপূর্ণ গল্পের প্লট তার লেখার উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য, যা ও হেনরি এবং সামারসেট মমের মতো লেখককে দারুণভাবে প্রভাবিত করেছে। ১৮৮০ সালে একটি কাব্যগ্রন্থ (De Ver) প্রকাশের মধ্যে দিয়ে তাঁর সাহিত্যজগতে পদার্পণ। মাত্র এক দশকের সংক্ষিপ্ত সময়ে তিনি তিনশ' ছোট গল্প, ছয়টি উপন্যাস, বেশ কিছু কবিতা এবং তিনটি ভ্রমণকাহিনী লেখেন। তার বিখ্যাত গল্প ‘লা পারুর’ বা ‘দ্য নেকলেস’। দুর্ভাগ্যবশত তারুণ্যের শুরুতেই তিনি সিফিলিস রোগে আক্রান্ত হন, যা তাঁকে ধীরে ধীরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। ১৮৯৩ সালের আজকের দিনে মাত্র ৪৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন গি দ্য মোপাসাঁ। আজ তার ১২২তম মৃত্যুবার্ষিকী। প্রতিভাবান সাহিত্যিক গি দ্য মোপাসাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
(কিশোর বয়সে গি দ্য মোপাসাঁ)
১৮৫০ সালের ৫ আগস্ট ফ্রান্সের নরম্যান্ডির এক মধ্যবিত্ত ঘরে জন্মগ্রহণ করেন গি দ্য মোপাসাঁ। মায়ের চারিত্রিক বৈশিষ্ট অনেকখানিই প্রভাব ফেলেছিল তার উপর। তিনি ছিলেন সল্পভাষী লাজুক স্বভাবের। মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান বলে লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন কিছুটা। ১৮৬৯ সালে মোপাসঁ প্যারিসে আইন বিষয়ে লেখাপড়া শুরু করেন, কিন্তু শীঘ্রই তাঁকে ফরাসি-প্রুশীয় যুদ্ধের কারণে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে হয় । এরপর ১৮৭২ থেকে ১৮৮০ সাল পর্যন্ত তিনি সিভিল সার্ভেন্ট হিসেবে ফ্রান্সের নৌ মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কাজ করেন। ঔপন্যাসিক গি দ্য মোপাসাঁ সর্ম্পকে একটি মজার তথ্যঃ
গি দ্য মোপাসাঁ আইফেল টাওয়ার অপছন্দ করতেন। তবুও তিনি প্রায় প্রতিদিন আইফেল টাওয়ারে অবস্থিত হোটেলে নাশতা করতে যেতেন এই কারণে যে, প্যারিসের একমাত্র এ জায়গা থেকেই আইফেল টাওয়ারটিকে দেখা যায় না।
১৮৮০ সালে একটি কাব্যগ্রন্থ (De Ver) প্রকাশের মধ্যে দিয়ে তাঁর সাহিত্যজগতে পদার্পণ করেন গি দ্য মোপাসাঁ। বইটি খুব বেশি জনপ্রিয়তা পাননি। এ সময় প্যারিসের তরুণ সাহিত্যিকদের লেখা নিয়ে ‘লেস সভরেস দ্য মাদেন’ নামে একটি সাহিত্যিক সঙ্কলন প্রকাশ হয়। সঙ্কলনে তার প্রথম বড় গল্প ‘ব্যুল দ্য সুইফ’ প্রকাশিত হয়। গল্পে ছিল ফ্রাঙ্কো-প্রুশিয়ান যুদ্ধের পটভূমিতে এক পতিতার কাহিনী। ‘ব্যুল দ্য সুইফ’সহ তার বেশকিছু গল্প বাংলাদেশে অনুদিত হয়েছে। সাহিত্যের নানান ধারায় কাজ করলেও তিনি ছোটগল্পের জন্য বেশি পরিচিত। তার গল্পে অতিবাস্তবতা, কল্পনা, অতিপ্রাকৃতিক, মনস্তাত্ত্বিক বিষয়সহ বিভিন্ন মানবিক সঙ্কটের উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়। তাকে বিখ্যাত লেখক গুস্তাভ ফ্লবেয়ার, এমিল জোলা ও আলফস দোঁদের যোগ্য উত্তরসূরি ধরা হয়। ১৮৮৩ সালে প্রকাশিত আরেকটি বিখ্যাত গল্প ‘মাদমোয়াজেল ফিফি’। এর পর প্রকাশিত হয় তার প্রথম উপন্যাস ‘আন-রি’। উপন্যাসটি সরকারি রোষানলের শিকার হয়। এর পর ১৮৮৫ সালে লেখেন বিখ্যাত উপন্যাস ‘বেল আমি’। তবে গি দ্য মোপাসাঁ ছোটগল্পকার হিসেবে যতটুকু পারদর্শী ছিলেন, উপন্যাসে তিনি ততটা ছিলেন না।
তারুণ্যের শুরুতেই সিফিলিস রোগে আক্রান্ত হন গি দ্য মোপাসাঁ, যা তাকে ধীরে ধীরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। মারাত্মক মানসিক বৈকল্যের শিকার হয়ে ১৮৯২ সালের ২ জানুয়ারি কণ্ঠনালি কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্যারিসের একটি প্রাইভেট অ্যাসাইলামে ভর্তি করা হয়। সেখানেই পরের বছর অর্থাৎ ১৮৯৩ সালের ৬ই জুলাই, মাত্র ৪৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন এই প্রতিভাবান সাহিত্যিক। আজ তাঁর ১২২তম মৃত্যুবার্ষিকী। প্রতিভাবান সাহিত্যিক গি দ্য মোপাসাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
০৬ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৪১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ কাবিল ভাই
প্রতিভাবান সাহিত্যিক গি দ্য মোপাসাঁর
মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১:১৬
কাবিল বলেছেন: প্রতিভাবান সাহিত্যিক গি দ্য মোপাসাঁর ১২২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।