নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
আজ ১লা জুলাই ২০১৫ ইং জনপ্রিয় টেলিভিশন নাট্যাভিনেত্রী মিতানূরের ২য় মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৩ সালের এই দিনে সকাল ৬.৪৫ রাজধানীর গুলশানে নিজের ফ্ল্যাট থেকে টেলিভিশন অভিনেত্রী মিতা নূরের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছিলো পুলিশ। তার নিজ বাসার ড্রইং রুমে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না প্যাঁচানো এই অভিনেত্রীর ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। মিতা নুরের দাম্পত্য জীবন খুব একটা ভালো ছিলোনা। একটি সূত্রে জানা যায়, স্বামীর পরকীয়াকে মেনে না নিতে পেরেই জনপ্রিয় অভিনেত্রী মিতা নূর আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন! জানা যায়, স্বামী রানার সঙ্গে পরকীয়া বিষয় নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই মিতা নূরের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। তার স্বামী রানার সাথে সম্পর্কের অবনতি হলে গুলশান থানার মধ্যস্থতায় একবারনিস্পত্তি করা হয়েছিলো। জানা গেছে, দীর্ঘ ২৪ বছরের সংসার করার পর যখন স্বামীর কাছে প্রতারিত হয়ে তা মেনে নিতে না পারার কারণেই আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি। স্বামী শাহানূর, দুই ছেলে শেহজাদ নূর ও সাদমান নূরকে নিয়ে গুলশান-২ এর ১০৪ নম্বর রোডের ১৬ প্রাসাদ লেকভ্যালি অ্যাপার্টমেন্টের ছয়তলায় থাকতেন মিতা নূর। মৃত্যুর দিন রাত ১০টায় মিতা নূরের স্বামী বাসায় আসার পর একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেন তারা। খাওয়া শেষে মিতা নূর ঘুমিয়ে পড়েন। পরে রাত ১২টা পর্যন্ত ছেলেদের সঙ্গে কথা বলে ঘুমাতে যান রানা। ০১ জুলাই সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হঠাৎ রানার ঘুম ভেঙে গেলে ড্রয়িংরুমের দিকে তাকালে তার স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান। পরদিন ০২ জুলাই, সন্ধ্যায় বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয় মিতানূরকে।
অন্যসূত্র মতে মিতা কুমিল্লায় নবম শ্রেণীতে লেখাপড়া করার সময় রানার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয়। এর দুই বছরের মধ্যেই তাদের বিয়ে হয়। এরপর ২৪ বছর ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অন্য কোনো কারণে কোনো সমস্যা ছিল না। মিতানূরের জেদ আর ছোট বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি বাদ দিলে তাদের সংসারে অন্য কোনো বিষয় নিয়ে কোনো ঝামেলাও ছিল না। দুই সন্তান ছিল তার স্বপ্ন। ওদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য খুব সচেষ্ট ছিল তারা। অতিরিক্ত রাগের কারণে অনেক মানুষের সঙ্গেই মিতার ছোট ছোট মতানৈক্য ছিল। তবে সেগুলো খুবই সাধারণ মতপার্থক্য। মিতানূরের মেজ বোন রেহানা ফয়জুন্নেছা দাবি করেন, মিতানূর ছোট থেকেই জেদি স্বভাবের ছিল। ওর মতের বাইরে কেউ কিছু করতে পারত না। বিষয়টি মানসিক ছিল। এ নিয়ে অনেক চিকিৎসকের কাছে ওকে নেওয়ার পরও ঠিক হয়নি। মারা যাওয়ার আগের দিন তাঁদের বনশ্রীর বাড়িতে ছোট বোন লোপার বিয়ে নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে কথাবার্তা হওয়ার কথা ছিল। সবকিছু ঠিক থাকলে সুমন নামে এক প্রকৌশলীর সঙ্গে লোপার বিয়ে সেদিনই হয়ে যেত। রেহানা আরো বলেন, মিতানূরের ভালোবাসা, রাগ, অভিমান, ক্ষোভ সবকিছুই ছিল বাড়াবাড়ি পর্যায়ে। ছোট বোনের হবু স্বামীকে পছন্দ হয়নি মিতা নূরের। কোনোভাবেই বিয়ে হতে দেবেন না বলে প্রচণ্ড জেদ করেন তিনি। এ নিয়ে সবার সঙ্গেই তাঁর দ্বিমত হয়। বরপক্ষের লোকজনের সামনেই মিতা হৈচৈ শুরু করেন। থামানোর চেষ্টা করতে গেলে আরো বেশি 'সিনক্রিয়েট' করেন তিনি।
বড় বোন আরো জানান, মিতানূর এলে বিয়ে ভেঙে যেতে পারে বলে তাঁরা আগে থেকেই শঙ্কিত ছিলেন। মিতার স্বভাবজাত কিছু কারণে আগে থেকেই পরিবারের লোকজন বিরক্ত ছিলেন। এরপরও এক সময় মিতানূর তাঁদের বাড়িতে আসে এবং লোপার বিয়েতে আপত্তি তোলে। এ নিয়ে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে বরপক্ষের লোকজনের সামনেই তার চরম বিরোধের সৃষ্টি হয়। পরে অনুষ্ঠানে সবাইকে অপমান করে মিতানূর গুলশানের নিজের বাসায় চলে আসে। বাসায় ফেরার আগে স্বামী রানার অফিসে গিয়ে সেখানেও পরিবেশ নষ্ট করে। লোপার বিয়েতে বাধা দিতে স্বামী রানাকেও বাধ্য করার চেষ্টা করে সে। কিন্তু রানা তার কথা শোনেনি। এ কারণে রানার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অফিসে গিয়ে সিনক্রিয়েট করে। লোপার বিয়ে ভেঙে যায়। এরপর থেকে পরিবারের লোকজন মিতানূরকে বয়কট করে। বাবা রাগের মাথায় ওকে ত্যাজ্য করার কথা বলে। ছোট বোনের বিয়ে ভেঙে যায়। তারপর বাবার বনশ্রীর বাসা থেকে গুলশানে নিজের বাসার উদ্দেশে রওনা দেন মিতা। কিন্তু বাসায় না গিয়ে স্বামীর অফিসে গিয়ে সেখানেও শোরগোল করেন। অফিসের লোকজনের সামনেই এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে চরম ঝগড়া হয়। কেউ একজন খবর দিলে সেখানে পুলিশ যায়। এক পর্যায়ে মেজাজ ঠাণ্ডা হয় মিতার। স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় ফেরেন। কিন্তু ওর কারণে বিয়েটা ভেঙে গেলে পরিবারের সবাই ওকে 'বয়কট করে'। বাবা রাগের মাথায় 'ত্যাজ্য' করবেন বলেন।এর পরদিন 'গভীর রাতে নিজেকে হত্যা করেন' টেলিভিশন অভিনেত্রী সাবিনা ইয়াসমিন মিতানূর। আজ তার ২য় মৃত্যুবার্ষিকী।
১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের সাপ্তাহিক নাটক ‘সাগর সেঁচা সাধ’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে মিতা নূরের অভিষেক হয়। ১৯৯২ সালে আফজাল হোসেনের নির্দেশনায় অলিম্পিক ব্যাটারির বিজ্ঞাপনে মডেল হয়ে ব্যাপক পরিচিতি পান। এরপর তাকে নিয়মিত বিভিন্ন নাটকে দেখা যেতে থাকে। টিভি নাটকে অভিনয় ও মডেলিংয়ের পথ ধরে ২০১১ সালে নাট্য নির্মাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন মিতা নূর। ওই বছর ‘চৌঙ্গালি’ নামের একটি খণ্ড নাটক নির্মাণ করেন তিনি। সুন্দরী সুঅভিনেত্রী মিতা নূর ‘আলো আলো' জিঙ্গেলের বিজ্ঞাপন দিয়ে টেলিভিশনের পর্দায় আলোকিত সূচনা করলেও আজ তিনি কবরের অন্ধকারে শায়িত। সহকর্মী, আত্মীয়, পরিবার সবাইকে কাঁদিয়ে অভিমানে নিঃশব্দে বিদায় নিলেন তিনি পৃথিবী থেকে। আজ জনপ্রিয় এই অভিনেত্রীর ২য় মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধায়
০১ লা জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৪১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে,
তবে যে নামেই নামকরণ করেন
মৃত্যুর রং কিন্তু বদলাবেনা।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:০০
এসব চলবে না..... বলেছেন: মৃত্যুবার্ষিকীর বদলে আত্মহত্যা বার্ষিকী টা মানানসই।
আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুক।