নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
প্রেম শ্বাস্বত, সুন্দর, পবিত্র। প্রেম মানুষকে নতুনত্ব দান করে। এছাড়া স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী প্রেম। বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত প্রেম শুধু পরবর্তী প্রজন্মই সৃষ্টি করে না; এটা মানুষকে সুখী ও সৃজনশীল করে তোলে। বেঁচে থাকার জন্য খাবার এবং পানীয়র মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রেম। আর এগুলো হারালে প্রভাব পড়বেই। তরুণ বয়সে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি জৈবিক আকর্ষণ স্বাভাবিক। তথাকথিত প্রেম নামের জৈবিক আসক্তির কবলে পড়ে কত তরুণ-তরুণী যে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জীবনের সম্ভাবনাকে নষ্ট করেছে, নিজের এবং পরিবারের জীবনে বিপর্যয় ডেকে এনেছে তার ইয়ত্তা নেই। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিনসে ইনস্টিটিউটের জেষ্ঠ্য গবেষক এবং বায়োলোজি অব লাভ এর প্রধান গবেষক হেলেন ফিশার বলেন, হৃদয় ভাঙার মর্মবেদনা আবেগ এবং শারীরিক শক্তিও হ্রাস করে। ফিশার বলেন, হৃদয় ভাঙলে আপনি শুধু সঙ্গীই হারান না, একইসাথে এটি আপনার স্থায়িত্ব, দৈনন্দিন রুটিন, এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকেও ক্ষতি করে। বর্তমান ডিজিটাল যুগে যেমন দ্রুততম সময়ে মন দেয়া নেয়া চলে নারী পুরুষের মাঝে তেমনি কাঁচের পাত্রের মতো অহরহ ভাঙ্গছে হৃদয়। সম্পর্ক ভাঙলে শুধু মনই ভাঙে না এটা আত্মার শান্তিও নষ্ট করে। এর প্রভাব পড়ে শরীরে; বিশেষ করে মস্তিষ্কে। এ সমস্যার নাম ‘টক্সিক এক্স সিনড্রম’ বা সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পরের দুঃখবোধ। কেউ কেউ বলেন, "মন ভাঙ্গা আর মসজিদ ভাঙ্গা সমান কথা"। সচেতন কোন মানুষ চাইবেনা কারো মন ভেঙ্গে একটি মসজিদকে ভাঙ্গার মতো গর্হিত কাজ করুক। আবার কারো মনে আঘাত দিলে সে আঘাত স্পর্স করে পবিত্র কাবা ঘরকে। আমরা মানুষের সাথে সুসম্পর্ক করতে চাই, বিশেষ কোন মানুষের সাথে হৃদয়ের কথা বলিতে চাই। তবে সব সময় সব মানুষের সাথে সকল কথা হয়তো বলা হয় না। বলতে পারা যায়না। হয়তো তার শুনবার সময়ই নাই। তাইতো কবি বলেন, " আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল, সুধাইলো না কেহ"। আবার কেউ হয়তো শুনতে চায়, কাছে আসে, ভালোবাসে, সাথে থাকে বহুদিন, হৃদয়ের দেয়া নেয়া হয়, কাছা কাছি থাকে সুখে দুঃখে। আবার অনেকে সুখে দুঃখে সাথে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েও ক্ষুদ্র স্বার্থে অনেকেই সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনা। ফলশ্রুতিতে মন ভাঙ্গে, হৃদয় ভাঙ্গে, প্রেমিক বা প্রেমিকার সঙ্গে হয়েছে বিচ্ছেদ। কাঁচের পাত্রের মতো অহরহ ভাঙ্গছে মন। সেই ভাঙ্গা হৃদয় ও ক্ষত বিক্ষত হৃদয় নিয়ে চলার কষ্টকে বইতে না পেরে চাইছেন এ থেকে বেরিয়ে আসতে। তবে যত সহজে এর থেকে পরিত্রান পাবার চিন্তা করতে পারছেন, ব্যাপারটা কিন্তু মোটেও ততটা সহজ নয়। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগের এ যুগে তা আরও অসম্ভব। কারণ যেখানে আপনি মনপ্রাণ দিয়ে চাইছেন প্রেমিক-প্রেমিকার সঙ্গে কাটানো মধুর সে স্মৃতিগুলো ভুলে থাকতে, কিন্তু আপনার পাশের জনকে সুখী ও মধুর সম্পর্কের মাঝে থাকতে দেখে আপনার হৃদয় যেন আরও ক্ষত-বিক্ষত হওয়ার উপক্রম। কারণ রোমান্টিক বিচ্ছেদ শুধু যে মনকেই অশান্ত করে তা নয়, বরং এটি শারীরিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় বলে গবেষকদের দাবি। গবেষণায় দেখা গেছে, জাগ্রত অবস্থার ৮৫ ভাগ পর্যন্ত সময় তারা সাবেকদের চিন্তা করেন। গবেষণার অংশ হিসেবে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়া মানুষদের মস্তিষ্ক স্ক্যান করে দেখা গেছে, যখন তারা সাবেক প্রেমিক-প্রেমিকার কথা ভাবেন তখন, মস্তিষ্কের একটি বিশেষ অঞ্চলে আসক্তি এবং ব্যথা একইসাথে থাকে। স্নায়ুতন্ত্রও হয় উদ্দীপ্ত। তবে আন্তরিক ভাবে চাইলে মানুষ আবার তার ভাঙ্গা মন জোড়া লাগাতে পারে। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় ইমিউন নেগলেক্ট। ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের প্রফেসর টিমোথি ডি উইলসন বলেন, যদি ভাবা হয় আমি ব্রেকআপের দুঃস্মৃতি কাটাতে পারবই তবে তাড়াতাড়ি আমরা তা থেকে মুক্তি পাব। তার মতে যারা পুরানো প্রেমিক-প্রেমিকার সঙ্গ মাঝে মাঝে যোগাযোগ করেন তাদের জন্য ভুলে যাওয়ার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়। তার পাঠানো টেক্সট পড়া,পুরানো অ্যালবাম হাতড়ানো থেকে বিরত থাকলে দ্রুত আপনি মুক্তি পাবেন। চিন্তাগুলো ভিন্নখাতে প্রবাহিত করুন। সত্যিই আপনি সাবেক প্রেমের স্মৃতি ভুলতে চাইলে তার সম্পর্কে খারাপ ধারণা পোষণ করুন। মন ভাঙ্গার অন্তহীন দুঃখ বেদনা থেকে বের হয়ে আসার উপায় বাতলে দিয়েছেন সম্পর্কবিষয়ক বিশেষজ্ঞ সুসান পিভার। তার বহুল বিক্রীত বই "The wisdom of a broken heart"এ বলেছেন আমাদের এ ধরনের ভাঙ্গা মনের আবেগ থেকে পালিয়ে না গিয়ে, এর সঙ্গে মানিয়ে নেয়া উচিত। কারণ এ ধরনের কষ্টই দীর্ঘমেয়াদি দুঃখের প্রধান উপলক্ষ। লেখক তার নিজের জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতায় হূদয়ভাঙার কষ্ট থেকে বের হয়ে আসার ৮টি উপায় জানিয়েছেন।
প্রথমতঃ দুঃখ-কষ্টকে জীবন থেকে মুছে ফেলতে হলে প্রথমে নেতিবাচক চিন্তাকে ভালোভাবে সামাল দেয়ার উপায় আয়ত্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মেডিটেশন হতে পারে যথোপযুক্ত। কারণ এটি আপনার মনকে শান্ত করতে সাহায্য করবে। কোনো কিছু আপনার মনমতো হচ্ছে না— নিজেকে এ ধরনের পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়ারও শক্তি জোগাবে।
আর যখন নেতিবাচক চিন্তা নাছোড়বান্দার মতো আপনার পিছু ছাড়তে চাইবে না, তখন কোনো কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ুন। এ ক্ষেত্রে বাইরে খোলা হাওয়ায় একটু ঘুরে আসা বা আপনার থেকেও কষ্ট রয়েছে এমন কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেন। তাদের সমস্যা নিয়ে ভাবতে পারেন। এ ছাড়া একজন সমালোচক হিসেবে আপনার সমস্যা খুঁটিয়ে বিশ্লেষণ করতে পারেন— এ কারণে আপনার ভবিষ্যত্ কেমন হতে পারে। দেখবেন আর তেমন কষ্ট বোধ হচ্ছে না।
দ্বিতীয়তঃ আপনার কষ্টকে বন্ধু বানিয়ে ফেলুন। যত এ থেকে পালাতে চাইবেন, তা দুঃস্বপ্নের মতো আপনার ওপর জেঁকে বসবে। তাই কষ্টকে নিজের করে নেয়া অনেক বেশি সাহসিকতাপূর্ণ। লেখক বলেন, শুধু আমি কেন, কেউই চান না এভাবে দুঃখী থাকতে। কিন্তু একবার যদি আপনি আপনার দুঃখ থেকে শিক্ষা নিতে পারেন, তাহলে আর যেকোনো উপায়ের চেয়ে দ্রুত আপনার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
তৃতীয়তঃ কোনো কিছুতেই যখন মন বসছে না, তখন সঙ্গীতের জগতে ঘুরে আসতে পারেন (তবে অবশ্যই কোনো দুঃখের গান নয়!) বা সময় কাটাতে পারেন আপনার পছন্দের কোনো কাজ করে।
চতুর্থতঃ দুঃখ ও বিষন্নতার মধ্যে পার্থক্য বুঝতে শিখুন। কারণ অধিকাংশ দুঃখবোধই শেষ পর্যন্ত বিষণ্নতায় পরিণত হয়। এ ক্ষেত্রে যখন আপনি দুঃখে থাকেন, সে সময় সবকিছুই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় এবং যখন তা বিষণ্নতায় পরিণত হয়, তখন কোনো কিছুকেই গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় না, যা আদতে জীবনের জন্য বিপর্যয় নিয়ে আসে। তাই এ দুয়ের মধ্যে পার্থক্য করতে শিখুন ও দুঃখকে বিষণ্নতার দিকে না ঠেলে বরং সময় থাকতেই এ থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করুন। কারণ এতে আপনার জীবনে ঘটে যাওয়া বেদনাদায়ক স্মৃতি প্রতি সেকেন্ডে ক্ষত-বিক্ষত করে চলবে। এর ওপর আপনার আর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না।
পঞ্চমতঃ আপনাকে ছেড়ে যাওয়া সঙ্গীর ভালো দিকগুলো নিয়ে চিন্তা করুন। কারণ এটি আপনার ক্ষত সারতে খুবই কার্যকর একটি দাওয়াই। হয়তো তা আয়ত্ত করা আপনার কাছে প্রথমে অসম্ভব মনে হবে, কিন্তু একবার তা শুরু করলে এটি আপনার মধ্যে স্থিতিশীলতা ও শান্তি নিয়ে আসবে। এ ক্ষেত্রে আপনার তাকে ক্ষমা করে দেয়া, ভুলে যাওয়া বা তার সঙ্গে আবারও যোগাযোগ করার কোনো প্রয়োজন নেই, বরং একটি জায়গায় একা কিছুক্ষণ বসুন ও ভাবুন, তিনি যত খারাপ ব্যবহারই আপনার সঙ্গে করে থাকুন না কেন, আবারও সুখ ও ভালাবাসা পেতে তাকেও আপনার মতোই কষ্ট পোহাতে হবে।
ষষ্ঠতঃ তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে আপনার সম্পর্কের গল্পটি লিখতে শুরু করুন। প্রথমে কীভাবে পরিচয়, তারপর কীভাবে ভালোবাসার গভীরে প্রবেশ করা এবং শেষ পর্যন্ত কীভাবে সে সম্পর্কের সমাপ্তি হলো, তা বিস্তারিত লিখুন। শুনতে হাস্যকর লাগলেও এর প্রধান উপকারী দিকটি হলো, তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে আপনি সম্পর্কের এমন কিছু বিষয় আবিষ্কার করবেন, যা হয়তো তখন আপনার চোখ এড়িয়ে গেছে— এখন এ থেকে হয়তো সহজেই একটি যুক্তিসঙ্গত সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব।
সপ্তমতঃ মানুষকে ভালোবাসতে শিখুন। কারণ সবসময়ই তা করার অনেক সুযোগ রয়েছে। নিঃস্বার্থ ভালোবাসাই আপনার দুঃখ ও ক্রোধের মধ্যে ভারসাম্য তৈরিতে সাহায্য করবে। মনকে করে তুলবে প্রশান্ত।
অষ্টমতঃ যা হয়েছে, তা হয়েছে। এ জন্য কখনই নিজেকে দোষী করবেন না বা সারাক্ষণ এ চিন্তা করে কাটিয়ে দিবেন না যে, কেন এমনটি হলো বা ভবিষ্যতে কীভাবে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা যায়, বরং আপনার মন ভেঙেছে, আপনি কষ্ট পেয়েছেন— এটি স্বাভাবিকভাবে নেয়ার চেষ্টা করুন, দেখবেন এটিই আপনাকে কষ্ট ভুলতে সাহায্য করবে।
১৮ ই জুন, ২০১৫ সকাল ১০:৪৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ মিরাজ ভাই
লেখাটি ভালো লাগার জন্য।
কেমন আছেন।
২| ২৪ শে মে, ২০১৫ দুপুর ২:০৩
রিকি বলেছেন: পোস্ট অনেক অনেক ভালো লেগেছে নুরু ভাই
১৮ ই জুন, ২০১৫ সকাল ১০:৪৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে ভালো লাগার জন্য।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে মে, ২০১৫ রাত ১:৫১
মিরাজ উল কবির বলেছেন: আসল কথা হচ্ছে, ইসলামে বিয়ের আগে প্রেম হারাম। :-(
এই ব্যাপারটি জানা সত্ত্বেও এটা থেকে মুক্ত থাকা ভীষণ কষ্টসাধ্য কাজ। :-(
আপনার লেখাটি পড়ে ভালো লাগলো। :-)