নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
আজ ১৫ নভেম্বর ভয়াল ঘুর্ণিঝড় সিডরের সপ্তম বার্ষিকী। ২০০৭ সালের এই দিনে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ সামুদ্রিক ঝড় সিডর আঘাত হানে বরিশাল, বরগুনাসহ দেশের উপকূলীয় এলাকায়। ২০০৭ সালের ১৪ নভেম্বর সারাদেশের আকাশ ছিল মেঘলা। আবহাওয়াবিদরা প্রথমে ৫ নম্বর সংকেত দিতে থাকেন। রাতে তা ৮নং বিপদ সংকেত গিয়ে পৌছে। ১৫ নভেম্বর সকালে ঘোষণা করা হয় সিডর নামের ঘূর্ণিঝড় ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে বাংলাদেশের উপকূলে। দুপুর নাগাদ তা বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করবে। ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত। ৫ টা নাগাদ হিরণ পয়েন্টে থাকা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির ওয়্যারলেসের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় যোগাযোগ। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সমুদ্র থেকে উপকূলে উঠতে শুরু করে সিডর। রাত ১০ টার দিকে প্রবল বাতাসের সঙ্গে যুক্ত হল ১২-১৫ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাস। অবশেষে এটি বাংলাদেশের আঘাত হানে ১৫ নভেম্বর রাত ৯টায়। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল পিরোজপুর, মংলা, বরগুনাসহ বেশকিছু অঞ্চল ঘুর্ণিঝড় সিডর আঘাত হানে। ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটার বেগে সিডরের তাণ্ডবে আর ধেয়ে আসা ১২ ফুট উচু জলচ্ছাসে নিমিষেই উড়ে গেল ঘর-বাড়ি, গাছ-পালা। মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে তরতাজা সাড়ে পাঁচশত জীবন। পিরোজপুর জিয়া নহরের একটি গ্রামেই মারা যায় ৫৭জন। বঙ্গোপসাগরের সব পানি যেন যমদুত হয়ে ভাসিয়ে নিল হাজার হাজার মানুষ। মাত্র কয়েক মিনিটে লন্ড ভন্ড হয়ে গেল গোটা এলাকা। পরের দিন দেখা গেল চারদিকে শুধুই ধ্বংসলীলা। উদ্ধার করা হল লাশের পর লাশ। দাফনের জায়গা নেই, রাস্তার পাশে গণকবর করে চাপা দেওয়া হল বহু হতভাগার লাশ। স্বজন আর সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেল উপকুল এলাকার কয়েক লাখ মানুষ। সিডরের ছোবলে দক্ষিণের উপকুলীয় জেলাগুলো পরিণত হয়েছিল মৃত্যুপুরীতে। সিডরের দিন জলোচ্ছ্বাসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল বাগেরহাটের সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলা উপজেলা।
সরকারি-বেসরকারি হিসাব অনুযায়ী সে সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৩০ জেলার ২০০ উপজেলা। সরকারিভাবে মৃতের সংখ্যা বলা হয় ৩,৩৬৩। অপরদিকে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার বলে জানায় রেড ক্রিসেন্ট। পাথরঘাটাসহ গোটা উপকূলের রাস্তাঘাট, ব্রিজ, ঘরবাড়ি, গৃহস্থালি, গাছপালা, হাঁসমুরগি, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা সব লণ্ডভণ্ড করে দেয় সিডর। মানুষ অসহায়ের মতো শুধু চোখ দিয়ে দেখেছে। প্রতিরোধ করার মতো কিছুই তাদের ছিল না। সময়ের আবর্তনে বছর ঘুরে আজ আবার এসেছে সেই দিন। দীর্ঘ ৬ বছর অতিবাহিত হলেও অনেকে হারানো স্বজনদের এখনও ফিরে পায়নি। অনেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেনি। প্রিয়জনকে হারিয়ে এখনো এই দিন আসলে বুক ফাটা কান্নায় ভেঙ্গে পরেন অনেকেই। নিখোঁজ হওয়া পাথরঘাটার শতাধিক জেলে এখনও ভারতের উড়িষ্যা কারাগারে আটক রয়েছে। স্মৃতিচারণায় উপকূলের বাতাসে ভাসছে চাপা কান্না আর দীর্ঘশ্বাস। সিডরের ক্ষত চিহ্ন বহন করে চলেছেন অনেকে। তবে যারা সিডরের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেচে আছেন তাদের মধ্যে অনেকেই নিজেদের যোদ্ধা বলে দাবি করেন। কেননা সিডরের পর উপকুলীয় অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া আইলা ও নারগিস নামের ঘুর্ণিঝড়কে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছেন।
। আমাদের প্রত্যাশাও তাই। ১৫ নভেম্বর পালিত হোক সিডর দিবস হিসেবে।
১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
লেখায় শেষ প্যারা ও তৃতীয় ছবিটি কোন মতেই আপলোড করতে পারছিনা। তাই বাধ্য হয়ে এখানে সংযুক্ত করলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
"প্রতিবছর উপকূলের মানুষ এই দিনটিকে সিডর দিবস হিসেবেই পালন করে থাকে। উপকূলের মানুষ চায় ১৫ নভেম্বর সরকারিভাবে সিডর দিবস পালিত হোক।আমাদের প্রত্যাশাও তাই। ১৫ নভেম্বর পালিত হোক সিডর দিবস হিসেবে।"
২| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৭
সরদার হারুন বলেছেন: যারা এখনও সিডরের ক্ষতি কাটায়ে উঠতে পারেনি তাদের সাহায্য করা
উচিৎ। রাস্তা ঘাট এখনও ঠিক করা হয়নি। ওগুলো ঠিক করতে হবে ।
লেখায় ++++++++++++++
১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৭
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সহমত।
ধন্যবাদ আপনাকে
সরদার হারুন
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৫
কান বরাবর দিমু কইলাম বলেছেন: সহমত । ১৫ নভেম্বর পালিত হোক সিডর দিবস হিসেবে।