নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বিশ্বসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবিদের অন্যতম ইংরেজ কবি জন মিল্টনের ৩৪০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:৫৮


সপ্তদশক শতাব্দীর ইংরেজ কবি (John Milton), প্রসিদ্ধ কালজয়ী মহাকাব্য প্যারাডাইস লস্ট এর লেখক জন মিল্টন। যিনি একাধারে লিখেছেন- গদ্য ও কবিতা; কবিতার মধ্যে আছে- শোকগাথা, মহাকাব্য, ছন্দনাটক, সনেট, পল্লীগাথা ও আরো নানারকম পদ্য। তার গদ্য ও পদ্যে ব্যক্তিগত প্রত্যয়ের প্রতিফলন লক্ষণীয়। ইংরেজি, লাতিন এবং ইতালীয় ভাষায় লিখতেন তিনি। তার বিতর্কমূলক সাহিত্যকর্ম অ্যারোপেগিটিকা (মূলত অনিবন্ধিত মুদ্রণগুলোকে ইংল্যান্ডের সংবিধান কর্তৃক বৈধতাদানের পক্ষে মিল্টনের বক্তৃতা) বাক স্বাধীনতার রক্ষাকবচ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছে। ইংরেজি সাহিত্যের এই কবি ১৬৭৪ সালের আজকের দিনে ইংল্যান্ডের বানহিলে মৃত্যুবরণ করেন। আজ তার ৩৪০তম মৃত্যুবাষিীকী। বিভিন্ন সামাজিক ও সাহিত্য জার্নালের কল্যাণে মিল্টনের অবদান একুশ শতাব্দীতেও অটুট রয়েছে। বিশ্বসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবিদের অন্যতম ইংরেজ কবি জন মিল্টনের ৩৪০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

জন মিল্টন ১৬০৮ সালের ৯ ডিসেম্বর লন্ডনের চিপসাইডের ব্রেড স্ট্রিটে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা জন মিল্টন সিনিয়র। মায়ের নাম সারাহ্ জেফরি। মিল্টনের পূর্বপুরুষরা ছিলেন রোমান ক্যাথলিক। কিন্ত মিল্টনের পিতা প্রোটেস্ট্যান্ট ধর্মমত গ্রহণ করে পরিবার থেকে আলাদা হয়ে যান। ছাত্রজীবনে মিল্টন ছিলেন অত্যান্ত মেধাবী। লন্ডনের সেন্ট পলস স্কুলে তার পড়াশোনা। ১৬২৫ সালে মিল্টন ক্যামব্রিজের ক্রাইস্টস কলেজে ভর্তি হন এবং ১৬২৯ সালে এখান থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। স্কুলের ছাত্র থাকাকালে মিলটন নিয়মিত পড়াশোনার পাশাপাশি লাতিন, গ্রিক, হিব্রু ভাষা ও সাহিত্য অধ্যয়ন করেন। সে সঙ্গে কাব্যচর্চাও শুরু করেন। ১৬২৬ সালে কলেজে পড়ার সময় তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। প্রজাতান্ত্রিক আদর্শের জন্য মিল্টন কয়েক শতাব্দী ধরে ব্রিটিশ রাজনৈতিক দলগুলোর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত ছিলেন। ১৬৩৮ সালে মিলটন ইউরোপ ভ্রমণে বের হন। ব্রিটেনের ঐতিহাসিক এবং রাজনৈতিক বিভক্তির সমান্তরাল বলা চলে মিল্টনের জীবনের ধাপগুলোকে।

মিল্টন তৎকালীন ইউরোপের শিল্প-সাহিত্যের কেন্দ্রবিন্দু ইতালিতে কয়েক মাস কাটিয়ে ১৬৩৯ সালের জুলাইয়ে ইংল্যান্ডে ফিরে আসেন এবং লন্ডনে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে থাকেন। ১৬৪২ সালে পার্লামেন্ট ও রাজার মতবিরোধের কারণে ইংল্যান্ডে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে মিল্টন পার্লামেন্টের সমর্থনে গদ্য রচনা শুরু করেন। এ সময় সংবাদপত্রের স্বাধীনতার বিষয়ে লেখা তার অ্যারোপাজিটিকা (১৬৪৪) বইটি আলোড়ন সৃষ্টি করে। এটি মানুষের বাক স্বাধীনতা, মুদ্রণ স্বাধীনতা ও সংগ্রামের এক জীবন্ত দলিল। গৃহযুদ্ধের পর রাজা প্রথম চার্লসকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলে মিল্টন দ্য টেনুর অব কিংস অ্যান্ড ম্যাজিস্ট্রেটস (১৬৪৯) শিরোনামের বিখ্যাত রাজনৈতিক পুস্তিকাটি লেখেন। এতে রাজার করুণ পরিণতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘জনগণই দেশের সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী’।

এর পর কমনওয়েলথ কাউন্সিল অব স্টেটের পক্ষ থেকে বিদেশী ভাষাবিষয়ক সচিব নিযুক্ত হন জন মিল্টন। ১৬৫১ সালে কমনওয়েলথ নিউজপেপার কর্তৃক প্রকাশিত মারকুরিয়াস পোল্লিকাস পত্রিকার প্রধান সম্পাদক পদে যোগ দেন। কিন্তু তখন থেকে কঠোর পরিশ্রম করার কারণে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসতে থাকে। ১৬৫২ সালে জন মিল্টন পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যান। দৃষ্টিশক্তি হারানোর পর মিলটন কিন্তু তার অন্ধত্বকে মেনে নেননি। সব প্রতিকূলতা তুচ্ছ করে তিনি সাহিত্যসাধনা চালিয়ে যেতে থাকেন। অন্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন ইংরেজ কবি জন মিল্টন। এছাড়াও গ্রীক কবি হোমার, ফার্সী কবি রুদাকী এবং লেখিকা হেলেন কিলার, আরবী সাহিত্যের খ্যাতনামা কবি বাশার বিন বোরদ, সিরিয়ার আবুল আলা আল-মা'আররী এবং মিশরের বিশিষ্ট লেখক তাহা হোসাইনের নাম উল্লেখ্যযোগ্য। তারা কাব্য-সাহিত্যে এমন অবদান রেখেছেন যে, যতদিন পৃথিবী থাকবে ততদিন তাদের নাম বিশ্ব ইতিহাসে লিপিবন্ধ থাকবে। তারা যেন অন্ধ হয়েও অন্ধ নন।

জন মিল্টন ছিলেন ইংরেজী সাহিত্যের অন্যতম প্রধান ও প্রভাবশালী কবি। ইংরেজি সাহিত্যে শেক্সপিয়ারের পরেই যার স্থান। তার সবচেয়ে বিখ্যাত ও কালোত্তীর্ণ ‍সৃষ্টি হল “Paradise Lost” মহাকাব্যটি, যেটি সেই মিল্টনের সময় থেকে আজ অবধি ইংরেজ সাহিত্য-সমালোচনার কেন্দ্রেই রয়ে গেছে। ১৬৫৮ থেকে ১৬৬৪ সালের মধ্যে মিলটন তার মহাকাব্য প্যারাডাইজ লস্ট রচনা করেন। বাইবেল-এর কাহিনীকে ভিত্তি করে রচিত এই মহাকাব্যটি ১৬৬৭ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। সে সময় তিনি অন্ধ এবং দরিদ্র ছিলেন। মহাকাব্যটি তার নিজের জীবনের হতাশা এবং ব্যর্থতা তুলে ধরে, একই সঙ্গে মানুষের সুপ্ত ক্ষমতাকে নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে। ১৬৭৪ সালে বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়। মিল্টন ১৬৭১ সালে প্যারাডাইস লস্টের পরবর্তী অংশ প্যারাডাইস রেগেইনড রচনা করেন। একই সময় স্যামসন অ্যাগনিস্টস নামক একটি ট্র্যাজেডি রচনা করেন।

ইংরেজি সাহিত্যের বিখ্যাত এই কবি ১৬৭৪ সালের ৮ নভেম্বর ইংল্যান্ডের বানহিলে মৃত্যুবরণ করেন। আজ তার ৩৪০তম মৃত্যুবাষিীকী।বিশ্বসাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবিদের অন্যতম ইংরেজ কবি জন মিল্টনের ৩৪০তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.