নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি ফররুখ আহমদ। তিনি একাধারে গীতি-কবিতা, সনেট, মহাকাব্য, ব্যঙ্গ-কবিতা, কাব্যনাট্য, গীতিনাট্য ও শিশু-কিশোর কবিতা রচনা করেছেন। তাঁর কবিতায় বাংলার অধঃপতিত মুসলিম সমাজের পুনর্জাগরণের অণুপ্রেরণা প্রকাশ পেয়েছে। এই বাঙ্গালী কবি 'মুসলিম রেনেসাঁর কবি' হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। মুসলিম রেনেসাঁর বাঙ্গালী কবি ফররুখ আহমদ ১৯১৮ সালের আজকের দিনে যশোহরের মাগুরায় জন্মগ্রহণ করেন। আজ তাঁর ৯৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। মুসলিম রেনেসাঁর কবি ফররুক আহমদের মৃত্যু দিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
ফররুখ আহমদ ১৯১৮ সালের ১০ই জুন তৎকালীন যশোহর জেলার মাগুরা মহকুমার শ্রীপুর থানার অর্ন্তগত মাঝআইল গ্রামের বিখ্যাত সৈয়দ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সৈয়দ হাতেম আলী এবং মাতা বেগম রওশন আখতার। পুলিশ ইন্সপেক্টর সৈয়দ হাতেম আলী আই.এ. পাশ করেই চাকরিতে যোগ দেন। প্রাচীন শিক্ষিত পরিবার হিসেবে গ্রামে তাঁদের ব্যাপক সম্মান ও খ্যাতি ছিল। ফররুখ আহমদের দাদা ছিলেন সরকারী চাকরিজীবী আর দাদী ছিলেন তৎকালীন সময়ের শিক্ষিত জমিদার কন্যা। সৎ মানুষ হিসেবে পরিচিত হাতেম আলীর দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রীর ঘরে পর পর তিনটি মেয়ে জন্মের পর রমজান মাসে ফররুখ আহমদের জন্ম হয়। এই জন্য দাদি তাঁকে আদর করে রমজান বলে ডাকতেন। ফররুখ ছিলেন সচ্ছল পরিবারের সন্তান। ছয় বছর বয়সে ১৯২৪ সালে মাতৃহারা হয়েছিলেন ফররুখ। প্রথম পক্ষের স্ত্রী মারা যাবার পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন তার পিতা সৈয়দ হাতেম আলী। ১৯৪৩ সালে ফররুখের বাবা ইন্তেকাল করেন। তাঁর দাদিও ঐ বছর মারা যান। বাল্যকালে মাঝআইল গ্রামের পাঠশালাতেই ফররুখ আহমদের শিক্ষাজীবনের হাতে খড়ি। ফারসি-জানা এক মহিলা বাড়িতে এসে তাঁকে ধর্মীয় শিক্ষা দিতেন। পরবর্তীতে কলকাতায় এসে তালতলা মডেল এম. ই. স্কুলে ভর্তি হন। এরপর কলকাতার বিখ্যাত বালিগঞ্জ সরকারী হাইস্কুলে ভর্তি হন। পরবর্তীতে তিনি খুলনা জেলা স্কুলে ভর্তি হন এবং সেখান থেকেই ১৯৩৭ সালে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৩৯ সালে তিনি কলকাতা রিপন কলেজ থেকে আই. এ পাস করেন। কলকাতা স্কটিশ চার্চ কলেজ ও সিটি কলেজেও পড়াশুনা করেছেন তিনি। আই. এ পাস করার পর প্রথমে তিনি দর্শন ও পরে ইংরেজীতে অনার্স নিয়ে বি. এ তে ভর্তি হন। ইংরেজী সাহিত্যে বেশ কিছু দিন অধ্যয়ন করলেও শেষ পর্যন্ত তাতে তিনি পরীক্ষা দিতে পারেননি।
কবি ফররুখ আহমদ প্রথম জীবনে প্রখ্যাত মানবতাবাদী কমরেড এম. এন. রায়ের শিষ্য ছিলেন। কিন্তু জন্মসূত্রে ইসলামী আদর্শ ও ঐতিহ্যের অধিকারী কবি ফররম্নখ আহমদ বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ধর্মীয় চিন্তায় নিমগ্ন হয়ে পড়েন। এর বহিঃপ্রকাশ তাঁর সাহিত্য কর্মের মধ্যে অন্তর্নিহিত। ব্যক্তি জীবনে তিনি ছিলেন সৎ, ধার্মিক, মানবতাবাদী ও অসাধারণ ব্যক্তিত্ববান কর্মপুরুষ। দেশ বিভাগের পূর্ব পর্যন্ত কবি কলকাতায় ছিলেন। কলকাতায় থাকাকালীন ফররুখ আহমদ অনেকগুলি চাকরি করেছেন। তবে এসব কোনো চাকরিই বেশি দিন করেননি তিনি। তাঁর সবগুলি চকরি ছিল স্বল্পস্থায়ী। শুধুমাত্র 'মোহাম্মদী' ছাড়া অন্যগুলির কোনটিই তাঁর কবিমনের সঙ্গে খাপ খায়নি। ফররুখ আহমদ ১৯৪৩ সালে আই.জি.প্রিজন অফিসে, ১৯৪৪ সালে সিভিল সাপ্লাইতে এবং ১৯৪৫ জলপাইগুঁড়িতে একটি ফার্মেও কিছু দিন চাকরি করেন। এর পর ১৯৪৫ সালে মাসিক 'মোহাম্মদী'-র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। কিন্তু তাঁর একটি কবিতা সেই সময়কার 'মোহাম্মদী' ও 'আজাদ' সম্পাদক নিজের নামে ছাপানোর কারণে তিনি ১৯৪৫ সালের ডিসেম্বর মাসে 'মোহাম্মদী'-র চাকরি ছেড়ে দেন। এর পর ১৯৪৬ সালে জলপাইগুড়িতে একটি ফার্মে চাকরি করেন তিনি।
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের কিছুদিন পরে কলকাতা থেকে ঢাকায় চলে আসেন ফররুখ আহমদ। এখানে তিনি ঢাকা বেতারে ‘স্টাফ আর্টিস্ট’ হিসেবে যোগদান করেন। ঢাকা বেতারে তিনি ‘ছোটদের খেলাঘর’ অনুষ্ঠান পরিচালনা করতেন। ঢাকা বেতারে থাকাকালীন সময়ে তিনি বিভিন্ন নিবন্ধ, কবিতা ও সর্বোপরি অসংখ্য গান, হামদ, নাত, গজল লিখে রেডিওতে পরিবেশন করেছেন। সঙ্গীত বিষয়ে কবি ফররুখ আহমদের অগাধ জ্ঞান ছিল। তাঁর লিখিত গান গুলির মধ্যে কয়েকটি জনপ্রিয় গানঃ
১। দ্বীন দুনিয়ার সাথী আমার নূরনবী হয়রত ---
২। শুনেছি এ বাণী পথে ঊষার, মান একতা শৃঙ্খলার।
৩। তোরা চাসনে কিছু কারো কাছে, খোদা -------- ছাড়া ।
৪। চাঁদ ছিল জেগে রাতের মিনারে প্রভাতের কিনারায় ।
মুসলিম বাংলা সাহিত্যের আধুনিক কবি ফররুখ আহমদের সাহিত্য অনুরাগ ও কাব্যপ্রীতি অল্প বয়স কাল থেকেই লক্ষ্যণীয় এবং তাঁর আত্নপ্রকাশ ছাত্র জীবনেই পরিলক্ষিত হয়। তাঁর লেখনী যেন সদ্য প্রস্ফূটিত একটি গোলাপী পদ্ম। হান্সা হেনার মত সুরভিত করেছে জগৎ ও জীবনকে। তাঁর প্রতিটি কাব্যে ফুটে উঠেছে মানব প্রেম ও অকৃত্রিম পলস্নীপ্রীতি।১৯৪৪ সালে কবি বেনজির আহমদের অর্থানুকূল্যে ঊনিশটি কবিতা নিয়ে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্য গ্রন্থ ‘সাত সাগরের মাঝি’। কবি ফররুখ আহমদের ছিল অত্যাধিক কবিতা প্রীতি। সাহিত্যের নানা শাখায় বিচরণ করলেও তাঁর প্রধান পরিচয় 'কবি'। ফররুখ আহমদ কিছু সনেট রচনারও করেছেন তাঁর রচনায় ধর্মীয় ভাবধারার প্রভাব দেখা যায়। বাংলা সাহিত্যের সার্থক রূপকার কবি ফররুখ আহমদের ‘হাতেম তা’য়ী’ কাব্যটি অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত এক অমূল্য সম্পদ। এখানে তিনি কবি মাইকেলকে সম্পূর্ণরূপে অনুস্মরণ করেননি। ‘হাতেম তা’য়ী’ কাব্যটিকে বাংলার অনেক কবি সাহিত্যিক ‘মহাকাব্য ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। কবি এখানে পৌরাণিক উপমার আশ্রয় না নিলেও মুসলিম ঐতিহ্যের উপমা সম্ভার ভাষা ও ছন্দের মনোহারিত্বে বর্ণনা করেছেন। এ কাব্য বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ। তবে ডানপন্থার প্রতি সমর্থন থাকলেও তিনি ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক ছিলেন। বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে লেখা ‘মধুর চেয়ে মধুর যে ভাই আমার দেশের ভাষা ’ গানটি বিশেষ প্রশংসিত হয়েছিল। এ ছাড়া আরবি ও ফারসি শব্দের প্রাচুর্য তাঁর লেখার অন্যতম বৈশিষ্ঠ্য।
কবিতাকে তিনি ভালবাসতেন ছন্দের মহিমায়। বিংশ শতাব্দীর এই কবি ইসলামী ভাবধারার বাহক হলেও তাঁর কবিতা প্রকরণকৌশল, শব্দচয়ন এবং বাক্প্রতিমার অনন্য বৈশিষ্টে সমুজ্জ্বল। আধুনিকতার সকল লক্ষণ তাঁর কবিতায় পরিব্যাপ্ত। তাঁর কবিতায় রোমান্টিকতা থেকে আধুনিকতায় উত্তরণের ধারাবাহিকতা পরিস্ফুট। তিনি ছিলেন গদ্য ছন্দে কবিতা লেখার বিরোধী পক্ষ। তাঁর ধারণা কবিতা মানেই মানুষের মনের ছন্দবদ্ধ কথা, ভাবনার কথা। ফররুখ আহমদ শিশু মনস্তত্ব সম্পর্কেও সচেতন ছিলেন। তাই শিশুদের জন্যও তিনি অনেক ছড়া, কবিতা ও গান রচনা করেছিলেন। ফররুখ আহমদ শুধু শিশু-মনস্তত্ত্ব সম্পর্কে সচেতন ছিলেন তাই নয়, শিশু কিশোরদেরকে তিনি গভীরভাবে ভালবাসতেন। ছন্দ, শব্দ, ছড়া-কবিতার মাধ্যমে শিশু-কিশোররা আনন্দ লাভের সঙ্গে সঙ্গে যাতে চরিত্রবান নাগরিক ও আদর্শ মানুষ হিসাবে গড়ে উঠতে পারে, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই তিনি তাঁর বিভিন্ন ছড়া-কবিতার মধ্যে কৌশলে ছোট ছোট কথায় চমৎকার সব উপদেশ ও উৎসাহব্যঞ্জক বাণী পরিবেশন করেছেন। যেমনঃ
নতুন সফরে শুরু হোক আজ জীবন সেই,
মুক্ত প্রাণের রোশনিতে ভয়-শংকা নেই।
অথবাঃ(মেলায় যাওয়ার ফ্যাঁকরা)
বাপ্রে সে কী ধুম ধাড়াক্কা
দিচ্ছে ধাক্কা, খাচ্ছে ধাক্কা,
গুঁতোর চোটে হয় প্রাণান্ত
হাঁপিয়ে ওঠে ক্যাবলা কাণ্ড!
লাগলো যখন বিষম তেষ্টা
ক্যাবলা করে ডাবের চেষ্টা।
তাকিয়ে দেখে পকেট সাফ,
ভিড়ের ভিতর দেয় সে লাফ।
কিংবাঃ (চিড়িয়াখানা : চিড়িয়াখানা)
দেখতে যাবো কাজের ফাঁকে
প্রাণীর বাসা জগৎটাকে
খোদার গড়া এই দুনিয়ায়
কেউ পানিতে কেউবা ডাঙায়
কেউবা ঘোরে শূন্য হাওয়ায়
দেখি আজব চিড়িয়া খানায়।
হরিণ ঘাটা নদীর বাঁকে
দল বেঁধে ভাই হরিণ থাকে,
একটু খানি শব্দ হ’লে
হাওয়ার আগে হরিণ চলে
বিজলি আলো ঝিলিক দিয়ে,
মিলায় যেন চোখ ধাঁধিয়ে।
এভাবে ফররুখ আহমদ শিশুদের জন্য অসংখ্য ছড়া-কবিতা রচনা করেছেন। এগুলো বিষয়বস্তুর দিক থেকে যেমন বৈচিত্র্যপূর্ণ তেমনি শিশু-কিশোরদের মন-মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে সম্পূর্ণ উপযোগী। এতে তারা যেমন আনন্দ পায়, তেমনি নানা বিষয়বস্তুর আকর্ষণ তাদেরকে এগুলো পাঠ করতে উৎসাহ যোগায়। আনন্দ লাভের সাথে সাথে তারা অনেক শিক্ষণীয় বিষয়ও জানতে পারে। সার্বিক বিচারে বাংলা শিশুতোষ কাব্য রচনার ক্ষেত্রে ফররুখ আহমদের অবদান অসামান্য এবং তিনি এক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে অন্যতম শ্রেষ্ঠ। কবি ফররুখ আহমদ লিখেছেন অবিরাম ধারায়, কবির উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থঃ
১। সাত সাগরের মাঝি (ডিসেম্বর, ১৯৪৪), ২। সিরাজাম মুনীরা (সেপ্টেম্বর, ১৯৫২), ৩। নৌফেল ও হাতেম (জুন, ১৯৬১), ৪। মুহূর্তের কবিতা (সেপ্টেম্বর, ১৯৬৩), ৫। ধোলাই কাব্য (জানুয়ারি, ১৯৬৩), ৬। হাতেম তায়ী (মে, ১৯৬৬), ৭। নতুন লেখা (১৯৬৯), ৮। কাফেলা (অগাস্ট, ১৯৮০), ৯। হাবিদা মরুর কাহিনী (সেপ্টেম্বর, ১৯৮১), ১০। সিন্দাবাদ (অক্টোবর, ১৯৮৩), ১১। দিলরুবা (ফেব্রুয়ারি, ১৯৯৪)[১০]
শিশুতোষ গ্রন্থঃ
১। পাখির বাসা (১৯৬৫), ২। হরফের ছড়া (১৯৭০), ৩। চাঁদের আসর (১৯৭০), ৪। ছড়ার আসর (১৯৭০), ৪। ফুলের জলসা (ডিসেম্বর, ১৯৮৫), এ ছাড়াও তাঁর আরো অনেক কাব্য গ্রন্থের অপ্রকাশিত পান্ডুলিপি রয়েছে। কবি সাহিত্যে তার অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বিভিন্ন পুরস্কারে ভুষিত হয়েছেন। ১৯৬০ সালে ফররুখ আহমদ বাংলা একাডেমী পুরস্কার, ১৯৬৫ সনে প্রেসিডেন্ট পদক "প্রাইড অব পারফরমেন্স" এবং ১৯৬৬ সালে পান আদমজী পুরস্কার ও ইউনেস্কো পুরস্কার। ১৯৭৭ ও ১৯৮০ সালে তাঁকে যথাক্রমে মরণোত্তর একুশে পদক ও স্বাধীনতা পদক দেয়া হয়।
ব্যাক্তিগত জীবনে ১৯৪২ সালের নভেম্বর মাসে আপন খালাতো বোন সৈয়দা তৈয়বা খাতুন (লিলি)-এর সঙ্গে ফররুখ আহমদের বিয়ে হয়। তাঁর নিজের বিয়ে উপলক্ষে ফররুখ 'উপহার' নামে একটি কবিতা লেখেন যা 'সওগাত' পত্রিকায় অগ্রহায়ণ ১৩৪৯ সংখ্যায় ছাপা হয়। ফররুখ আহমদের ছেলে-মেয়ে ১১ জন। তাঁরা হলেন- সৈয়দা শামারুখ বানু, সৈয়দা লালারুখ বানু, সৈয়দ আবদুল্লাহল মাহমুদ, সৈয়দ আবদুল্লাহেল মাসুদ, সৈয়দ মনজুরে এলাহি, সৈয়দা ইয়াসমিন বানু, সৈয়দ মুহম্মদ আখতারুজ্জামান (আহমদ আখতার), সৈয়দ মুহম্মদ ওয়হিদুজ্জামান, সৈয়দ মুখলিসুর রহমান, সৈয়দ খলিলুর রহমান ও সৈয়দ মুহম্মদ আবদুহু।
প্রাচুর্য্যের মাঝে জন্মগ্রহন করা এই অভিমানী কবি চরম দারিদ্র্যতার মধ্যে চিকিৎসার অভাবে পরম পৌরষত্বের সাথে ১৯৭৪ সালের অক্টোবর মাসের ১৯ তারিখ সন্ধেবেলা ৫৬ বছর বয়সে ঢাকায় ঢাকায় ইস্কাটন গার্ডেনে নিয়তি নির্ধারিত মৃত্যুকে বরণ করেন। কবি ফররুখ আহমদের মৃত্যু বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক অভাবনীয় শূন্যতা সৃষ্টি করেছে। 'মুসলিম রেনেসাঁর কবি' ফররুখ আহমদের ৯৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। কবির মৃত্যুদিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
১৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:২৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আরজুপনি মন্তব্যের জন্য
আশা করি আগামীতেও কথা হবে
শুভেচ্ছা, শুভকামনা জানবেন
২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১:০০
ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: মুসলিম রেনেসাঁর কবি ফররুখ আহমদের ৯৬তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।
কোবিদ কি আপনার অন্য আরেকটা নিক নাকি আপনার সাথে বোবিদ এর কোন সম্পর্ক আছে। লেখার ধারাবাহিকতা কিন্তু একই।
১৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ২:৪০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ইমতিয়াজ ভাই আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ
প্রথম থেকে সাথে থাকার জন্য। আশা করি আগামীতেও
সাথে পাবো। শুভকামনা রইলো
৩| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১:১১
নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: ফররুখ আহমদ জামাতী কবি। সেই হিসেবে তিনি রাজাকার। আর ফুল দেওয়া হয় শহীদ মিনারে, যা চেতনা ব্যবসায়ীদের বাবার সম্পত্তি বলে পরিচিত। তাই ফররুখ আহমদকে ফুলেল শুভেচ্ছা দিতে গেলে আপনারও রাজাকার হবার সম্ভাবনা আছে।
মনে রাখবেন, একবার যে রাজাকার, সে চিরদিনই রাজাকার। কিন্তু একবার যে মুক্তিযোদ্ধা, সে চিরদিন মুক্তিযোদ্ধা নয়।
২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:২২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
হয়তোবা, হয়তো নয়!! তবে তার লেখায় প্রকাশ পায়নি তার রাজনৈতিক ভাবধারা। তবুও আপনাকে ধন্যবাদ ক্লাসিফিকেশন করার জন্য।
তবে আমার ধারণা তার তাঁর কবিতার মূল উপজীব্য মানবতাবাদ। তিনি অনাহারকিষ্ট মানুষের আর্তনাদ শুনে ব্যথিত হয়েছেন, জড় সভ্যতার মুখোশ উন্মোচন করে মানবিক সভ্যতার সন্ধান দিয়েছেন। ইসলামকে তিনি চেয়েছেন শোষণমুক্ত সমাজের নির্মাতা হিসেবে, মানবতার মুক্তির নিদের্শনা হিসেবে। এ জন্য তাঁর ইসলামি ভাবধারার সাহিত্য মানবতাবাদী সাহিত্যে পরিণত হয়েছে। ইসলাম যে মানবতার আদর্শ তা বারবার উল্লিখিত হয়েছে কবি ফররুখের কবিতায়। মানুষের তৈরী ইসলামের সঙ্কীর্ণতা ও মেকি রূপ ছিন্ন হয়ে ইসলামের প্রকৃত রূপ উদ্ভাসিত ও মানবতার জয়গান উচ্চারিত হয়েছে তাঁর সাহিত্যে। ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য
৪| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:৫৮
রিলকেজিরোজিরোসেভেন বলেছেন: আপনার পোষ্টটটি অসাধারণ| অনেক ধনবাদ আপনাকে|
২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:২৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ
রিলকেজিরোজিরোসেভেন
মন্তব্য করার জন্য
৫| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৫:২৫
শাশ্বত স্বপন বলেছেন: কবি ফররুখ আহমদ প্রথম জীবনে প্রখ্যাত মানবতাবাদী কমরেড এম. এন. রায়ের শিষ্য ছিলেন। কিন্তু জন্মসূত্রে ইসলামী আদর্শ ও ঐতিহ্যের অধিকারী কবি ফররম্নখ আহমদ বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ধর্মীয় চিন্তায় নিমগ্ন হয়ে পড়েন। এর বহিঃপ্রকাশ তাঁর সাহিত্য কর্মের মধ্যে অন্তর্নিহিত।..'
নীল আকাশের ২০১৪ মত বলব না। তবে এটা সত্য যৌবনে শুরুতে অনেকেই, বিশেষ করে যারা জন্মসূত্রে মুসলিম উদার, কমিউনিস্ট, নাস্তিক ইত্যাদি থাকে। পরে....
কবি আল মাহমুদের সম্ভবত ৯ ছেলেমেয়ে, ফররুখের ১১্। ফররুখ মোহাম্মদী ছাড়া কোথাও বেশি দিন কাজে করেনি। বুঝতেই পারছেন, এত বড় সংসার..., ইচ্ছা না থাকলেও...। হ্যা উনি রাজনীতি বিষয়ক বোধহয়, কিছু লেখেননি, আল মাহমুদও লেখেন না। তারপরও অনেকে তাদেরকে নীল আকাশ ২০১৪ মতই মনে করে।
মিজানুর রহমানও পড়েছি। তার প্রতি শ্রদ্ধা নেই বলে কোন মন্তব্য করিনি।
২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:২৮
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ দাদা
প্রত্যেক নাগরীকের অধীকার আছে
স্বাধীন মন্তব্য প্রদান করার। কাউকে
শ্রদ্ধা করা না করা তার নিজস্ব এখতিয়ার।
আমি শুধু স্মরণ করিয়ে দিলাম।
৬| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৮:৪৩
মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:
নূরু ভাইকে স্বরূপে দেখে আনন্দিত.......
এই নিক থেকেই লিখুন এবার।
২০ শে অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৩:২৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আলো আমাদের সাথে যে আলো আধারী খেলা খেললো তাতে
আর অন্ধকারে থাকতে সাহস করলাম না।
ধন্যবাদ মাইনুল ভাই
মন্তব্য করার জন্য
৭| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:১০
কালো গুপ্তচর বলেছেন: আমার জানামতে ফররুখ আহমদের জন্মতারিখ ১০ জুন ১৯১৮ এবং তার মৃত্যুতারিখ ১৯ অক্টোবর ১৯৭৪ । বিষয়টা একটু দেখবেন ।
৮| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫২
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আপনার শীরোনাম লিখেছেন.....
" মুসলিম রেনেসাঁর বাঙ্গালী কবি ফররুখ আহমদের ৯৬তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা"
কালোগুপ্তচর এবং আপনার আলোচনায় -শিরোনাম সংশোধন আবশ্যক!
লেখায় ++++++++
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৪
আরজু পনি বলেছেন:
কোবিদ কি আপনার আরেকটা নিক ?
পোস্টের জন্যে ধন্যবাদ ।।