নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভাগ্যক্রমে আমি এই সুন্দর গ্রহের এক বাসিন্দা! তবে মাঝেমধ্যে নিজেকে এলিয়েন মনে হয়। তবে বুদ্ধিমান এলিয়েন না, কোন আজব গ্রহের বোকা এলিয়েন!
সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে যেকোনো একটি ইস্যু সারাদেশে সবার মাঝে খুব দ্রুতই ছড়িয়ে যাচ্ছে। পজেটিভ বিষয়ের চেয়ে নেগেটিভ জিনিসগুলো বেশি দ্রুত ছড়াচ্ছে এবং মানুষের নেতিবাচক রিয়েকশন দেখা যাচ্ছে। আপাত দৃষ্টিতে এটা সোশ্যাল মিডিয়ার খারাপ দিক বিবেচনা করা হলেও মূলত এমন একটি জেনারেশন গড়ে উঠেছে, যারা নেতিবাচক বিষয়গুলিকে খুব দ্রুত এডপ্ট করে নিচ্ছে নিজেদের মধ্যে। এটা খুবই ভয়ঙ্কর একটি বিষয় ঘটে যাচ্ছে জাতির মধ্যে।
গত ১৫ বছর স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকার পরেও দেশে সুশিক্ষিত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারেনি। প্রশ্নফাঁস, শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতি, অদক্ষ শিক্ষক নিয়োগ এগুলি সুশিক্ষিত জনশক্তি তৈরিতে প্রধানতম বাধা। প্রগতিশীল মানুষেরা মোটামুটি প্রতিক্রিয়াশীল মানুষের কাছে কোণঠাসা হয়ে পড়ছে। যেকোনো একটি নেতিবাচক ও ভুল অবস্থানকে প্রতিক্রিয়াশীল মানুষের কাছে খুব সহজেই পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে এবং তারা সেটা একযোগে গ্রহণ করছে। অনেকেই হয়তো বলবে ভুল অবস্থান সময়ের সাথে সাথে একটা সময় হারিয়ে যাবে। হ্যাঁ, এটা হতে পারে কিন্তু এই সময়ের সাথে সাথে সময়টুকু কতটুকু লম্বা সেটা অজানা। এটা যদি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকে তাহলে এর নেতিবাচক প্রভাব এমনভাবে ছড়িয়ে পড়বে যার থেকে উত্তরণের পথ বের করা খুবই কঠিন হবে।
ভাস্কর্য ইস্যু থেকে শুরু করে পাঠ্যপুস্তকে হস্তক্ষেপ, লিঙ্গ সমতা, বয়কট বয়কট খেলা, বৈশাখী উৎসব সব জায়গায় শেষ পর্যন্ত প্রতিক্রিয়াশীল জনগোষ্ঠী জয়ী হয়েছে। ধর্মের মোড়কে যত ইস্যু বানানো হয়েছে কিংবা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে সবগুলিই সফল হয়েছে। এটা জাতির জন্য এক ধরনের অশনি সংকেত। আধুনিক জাতি গুলির সাথে যদি আমাদের উন্নতির গ্রাফ তুলনা করা হয় তাহলে অবশ্যই আমরা পেছনের দিকে যাচ্ছি।
সবচেয়ে ভয়ংকর বিষয় হচ্ছে জাতির অর্থনৈতিক সমস্যা গুলিকে ক্ষমতাশীলরা রাজনৈতিক সমাধান দিচ্ছে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ধর্মীয় সমাধানও দেওয়ার চেষ্টা করছে। যার জন্য অর্থনৈতিক খাত গুলো দিন দিন অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হচ্ছে। যার কারণে বর্তমান উন্নয়ন গুলো ভবিষ্যতের গলার কাটা হয়ে দাঁড়ায় কিনা বলা মুশকিল! আগামী বছর থেকে বড় বড় অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য যে ঋণ সহায়তা নেওয়া হয়েছে সেগুলির কিস্তি দেওয়া শুরু হবে। বর্তমানে রিজার্ভের যে অবস্থা এবং পণ্য আমদানি যেভাবে সীমিত করা হচ্ছে তাতে এই লোন পরিশোধ করতে গিয়ে অর্থনীতির কি অবস্থা হয় সেটাই এখন দেখার বিষয়।
যাই হোক যেমনটি বলছিলাম বর্তমানে একটি ফ্লেক্সিবল জেনারেশন গড়ে উঠেছে, যাদেরকে খুব সহজে যে কোনো দিকে মুভ করানো সম্ভব হচ্ছে। গত কয়েক বছরে বেশ কিছু ইস্যুতে দেখেছেন কিভাবে ম্যাসিভ আকারে নতুন জেনারেশনের ছেলেমেয়েরা মোটিভেটেড হচ্ছে। এখন এই মোটিভেটেড হওয়াকে প্রতিক্রিয়াশীল একটি গোষ্ঠী খুব সূক্ষ্মভাবে কাজে লাগাচ্ছে। প্রগতিশীল মানুষজন এখানে ব্যর্থ হচ্ছে।
এ ফ্লেক্সিবল জেনারেশনকে প্রতিক্রিয়াশীল গুষ্টি যেভাবে মোটিভেটেড করছে ঠিক একইভাবে প্রগতিশীল লোকজন সে পথে হাঁটতে হবে। প্রতিক্রিয়াশীল লোকজন ৫ বছরে যে পরিমাণ মোটিভেটেড ও মিস গাইডেড তাদেরকে করতে পারবে প্রগতিশীল লোকজন তাদের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে ৫ মাসে তাদের সে পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে পারবে। তাই আমি এতসব হতাশার ভিতরেও কিছুটা আশার আলো দেখতে পাই। ছোট্ট একটি উদাহরণ হচ্ছে, যারা আমার পূর্বের ব্লগ পোস্ট পড়ছেন তারা জেনেছেন আমাদের একটি স্বেচ্ছা-সেবামূলক ফাউন্ডেশন আছে। যেখান থেকে বিভিন্ন সৃজনশীল প্রোগ্রাম করা হয় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদেরকে নিয়ে। গ্রামের একটি গোষ্ঠী এই ধরনের সৃজনশীল প্রোগ্রামে সব সময় বাধা প্রদান করে ও গুজব রটনা করে। আমি দেখেছি তারা গত পাঁচ বছরে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার বাচ্চাদের তাদের আয়োজিত বিভিন্ন প্রোগ্রাম ও শিক্ষার মাধ্যমে কুসংস্কারাচ্ছন্ন করে রাখে। কিন্তু আমাদের একটি প্রোগ্রামে তাদের বাচ্চারা তাদের অগোচরে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে, আমাদের সাথে জড়িত হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে। আমাদের প্রোগ্রাম গুলো তাদের বেশি আকৃষ্ট করে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, প্রগতিশীল লোকজন যদি তাদের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে দেশব্যাপী বিভিন্ন প্রোগ্রাম হাতে নেয়, তাহলে এক নিমিষেই প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর সাম্রাজ্য ভেঙে পড়বে।
২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪
নূর আলম হিরণ বলেছেন: আপনি প্রগতিশীল নয় কিন্তু প্রগতিশীল ভেক ধরাদের কথা বলছেন মনে হয়।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:২৯
ফিনিক্স পাখির জীবন বলেছেন: তথাকথিত প্রগতিশীল ও প্রতিক্রিয়াশীল উভয় দলই ভন্ড। এরা উভয়েই নিজ নিজ উপায়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে নিজের মত করে ধ্বংস করে যার যার প্রভাব বজায় রাখতে ব্যাস্ত। এবং এতে তারা উভয়েই সফল। এর প্রমান হল এই "চরম ফ্লেক্সিবল" জেনারেশন। এখন দুই পক্ষ এদের নিয়ে দড়ি টানাটানি করতেছেন।
আপনি স্বীকার করেন আর না ই করেন, সত্যি এটাই।
প্রগতিশীলতার নামে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঠুনকো করে মেধাহীন জেনারেশন তৈরী হচ্ছে।
আর প্রতিক্রিয়াশীলতার নামে ধর্মান্ধ মেধাহীন জেনারেশন তৈরী হচ্ছে।
অতএব, এরা দুই গ্রুপই সমানভাবে বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর।