নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পরিচয় বলতে আপাতত দেয়ার মত কিছু নেই!
আমি এখন যেখানে আছি এখান থেকে ফার্মগেট যেতে ১ ঘন্টা ২০ মিনিটের মত লাগার কথা,জ্যাম সহ। ছুটির দিন এবং সকাল বলেই এর বেশি সময় লাগার কথা না। ঘড়িতে সময় এখন সকাল ৮ টা, ১০টায় পরিক্ষা। জীবনে নানান সময় প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে অনেক পরিক্ষাই দিতে হয়েছে তবে চাকরির উদ্দেশ্যে পরিক্ষা এটাই প্রথম। যদিও এতে আমার আগ্রহ খুবই সামান্য।
যখন পান্থপথের কাছাকাছি পৌঁছালাম ঠিক তখনই রাস্তা আঁটকে দিল। তখন ৯:২০ এর মত আর ২/৩ মিনিটেই ফার্মগেট পৌঁছে যেতাম। এখানে জ্যাম পরলে সাধারনত খুব বেশি সময় আঁটকে রাখেনা,৫/৭ মিনিটেই ছেড়ে দেয়ার কথা। এইজন্য খুব একটা চিন্তিত ছিলাম না। কিন্তু ১০ মিনিটা পরেও যখন দেখলাম ছাড়ার কোন লক্ষণ নেই তখন আস্তে আস্তে টেনশন হতে শুরু করলো। কারন ৪০/৫০ মিনিট বা তারও বেশি সময় জ্যামে আটকে থাকার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
একটু পরেই অবশ্য এই আঁটকে থাকার কারন জানা গেল। দেখলাম ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বাস বের হচ্ছে তারা স্টেডিয়ামে যাবে প্রাকটিসের জন্য। অন্যসময় হলে অবশ্য এতটা বিরক্ত লাগতোনা যতটা এখন লাগছে। কিংবা আমার যতটা বিরক্ত লাগছে অন্য যাত্রীদের হয়ত ততটা লাগছেনা। তারা হয়ত আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে জানালা দিয়ে যদি তাদের কোন প্রিয় ক্রিকেটারকে দেখা যায়। মানুষের ভালো লাগা,মন্দ লাগা সবই সিলেকটিভ। কোন একটা পার্টিকুলার বিষয় সবারই ভালো লাগবে এমনটা হয়না। এই যেমন এই ঘটনাই, একই ঘটনা ঘটছে কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন মানুষের ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া।
এমুহূর্তে যেহেতু আমার কিছু করার নেই আমি বসে মানুষ দেখি। হকার আসে হকার যায়। আমি অপেক্ষায় থাকি জ্যাম ছাড়ার। আমার দুই সিট সামনে দুই পাশের কলামের কিনারের সিটে দু'জন মহিলা বসেছেন এবং তাদের কোলে দুজন মেয়ে বাচ্চা। বাচ্চাদের বয়স প্রায় কাছাকাছিই হবে তবে পোশাকে আর্থিক অবস্থার পার্থক্য দৃশ্যমান। বাসে হকার উঠে, 'এই আইসক্রিম লাগবে আইসক্রিম'। কেউ কিনে কেউ কিনেনা। ডান পাশের কলামের বাচ্চাটাকে তার মা আইসক্রিম কিনে দেয়। বাচ্চাটা মনের আনন্দে খাচ্ছে, কি সুন্দর দৃশ্য। বাঁ পাশের বাচ্চাটা তাকিয়ে তাকিয়ে সেই দৃশ্য দেখছে। তার মা তার গালে হাত দিয়ে তার মুখটা অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিল। বাচ্চাটা আবার তার মুখ ঘুরিয়ে অন্য বাচ্চাটার খাওয়া দেখছে। এর ফলে ফাইনালি যে দৃশ্যটা তৈরি হল সেটা খুবই করুন। আর আমাকে বসে বসে তা হজম করতে হচ্ছে।
আচ্ছা আমিও তো ওই বাচ্চাটাকে একটা আইসক্রিম কিনে দিতে পারতাম কিন্তু দিলামনা। হয়ত নিত হয়ত নিতনা। কিন্তু দিলামনা। ক্যান দিলাম না?শুধু আমি না পুরো বাসের কেউই দিলনা। এই আমি শুধু আমি না, এই আমি আমাদের সমাজের সবচেয়ে বড় অংশের প্রতিচ্ছবি।
বাস স্টার্ট দেয়। আমি ফার্মগেট পৌঁছাই। এক্সাম হলে যখন ঢুকি তখন অলরেডি পাঁচ মিনিট লেট। উত্তর পত্র পাই,প্রশ্নপত্র পাই।আমি প্রশ্নের দিকে তাকাতেই দেখি বাচ্চাটা তাকিয়ে তাকিয়ে অন্য বাচ্চাটার খাওয়া দেখছে।
২| ২৪ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ১২:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: ঢাকা শহরের গজব অবস্থা।
সুন্দর ভাবে বেঁচে থাকতে হলে এই শহর ছেড়ে দূরে কোথাও চলে যেতে হবে।
৩| ৩০ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ২:১১
রিম সাবরিনা জাহান সরকার বলেছেন: ছোট্ট লেখা। ভিড়ভাট্টার ফোঁকর গলে যেঁ আমিও আপনার সাথে দৃশ্যগুলো দেখলাম পরপর।
ধন্যবাদ জানবেন। আর দেখার এই চোখটা হারাবেন না।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে অক্টোবর, ২০২৩ রাত ৯:০৮
বাউন্ডেলে বলেছেন: এতো টাকা দিয়ে মানুষ কি করবে- সেটাই চিন্তা করি । আমি ভুমিহীন, বেকার, কোন অর্থ একাউন্ট নেই এবং ঋণ জর্জরিত একজন দিনমজুর । দিন শেষে বাজার করে আমি খালি পকেটেই বাড়ী ফিরি এবং আমি বিশ্বাষ করি মানুষ অর্থ সংকটে মরবে না কখনো, মরবে খাদ্য সংকটে । যা মহাসংকটে অর্থ-কড়ি, সোনাদানার বিনিময়ে পাওয়া যাবে না , পাওয়া যদি যায়- তা শুধু ভালোবাসায় পাওয়া যাবে। আমাদের ভিতরে হৃদয়ের আদ্রতা ও ভালোবাসা লালন করা খুবই জরুরী।