নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতি:
শিক্ষাক্ষেত্রে প্রশ্নপত্র ফাঁস, ভর্তি বাণিজ্য, কিংবা ফলাফল পরিবর্তনের মতো ব্যাপারগুলো নিয়মিত শোনা যেত। আমরা - শিক্ষার্থীরা, চাকুরিপ্রার্থিরা অনেকেই ভালো ফলাফল পেতেন অনৈতিক উপায়ে । এখন এসব ব্যবস্থা যদি স্বচ্ছ হয়ে যায় (ধরে নেয়া যাক) এবং এসব অনিয়ম বন্ধ হয়, তবে অনেকেই বলবেন, "আগে ভালো ছিলাম"। কারণ, আগে এই দুর্নীতির সুবিধা নিয়ে তারা সহজেই সফলতা অর্জন করতেন বা করতে পেরেছেন। কে কে এই কাজ করেছেন তারাই ভাল বলতে পারবেন অভিজ্ঞতা কেমন।
কর্তৃপক্ষের অনিয়মিততা:
অনেক সরকারি কর্মকর্তার কাছে তদবির বা ঘুষ দিলে দ্রুত কাজ করিয়ে নেয়া যেত বা যায়। এমনটাই আমরা পত্রপত্রিয়া দেখি। টাকা ছাড়া সরকারি অফিসে কোনো ফাইল নাকি নড়ে না। কিন্তু এই সরকারি অফিসে তো মেধাবি লোকজনই কাজ করেন। সংগা অনুযায়ি তারা নাগরিকদের সেবক এবং সরকারের কর্মচারি (সারভেন্ট)। এখন যদি কোনো সৎ ও নিয়মানুবর্তী প্রশাসক আসেন, যিনি ঘুষ ছাড়া কাজ করেন (ধরে নেয়া যাক তিনি নিজে সৎ কিংবা প্রশাষনের আরও বেশি জবাবদিহীতা আছে), তখন অনেকে বলবেন, ‘আগে ভালো ছিলাম’, কারণ আগে দুর্নীতির মাধ্যমে সহজে কাজ করা যেত। এখন নিয়ম মেনে চলতে হলে সমস্যা সব দিকেই।
পরিবহন খাতের শৃঙ্খলা:
যানবাহনগুলো রাস্তায় নিয়ম না মেনে যত্রতত্র চলে। যেমন আমরা রাস্তার যেখানে সেখানে মোটরসাইলেক রেখে দেই। গাড়িরও তাই। কিন্তু এ তো হবার কথা নয়। কিন্তু হচ্ছে। হয়ে আসছে। তাই বলে এ টা যে ঠিক তা কিন্তু নয়। আবার চালকদের লাইসেন্স, ফিটনেস সনদ বা সঠিক ট্রাফিক নিয়ম মেনে চলার তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না বা এখনও নাই। কিন্তু যদি ধরে নেই হঠাৎ করে ট্রাফিক আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হয়, সব নিয়ম মেনে চলতে হয়, তখন চালক ও যাত্রীরা বলতে পারেন, ’আগে ভালো ছিলাম’। কারণ, আগে তারা নিয়ম না মেনে সহজেই চলাফেরা করতে পারতেন। অ্যাপ বাদে খ্যাপে যদি রাইড শেয়ারিং বন্ধ হয়ে যায় তবে আমাদের মধ্যে কতশত জন রাস্তা দখল করবেন, সে হিসাব আমরা নিজেরাই করতে পারি। কিন্তু এাঁও তো দূর্নিতি। বন্ধ হলেই বলা হবে ‘আগে ভাল ছিলাম’।
বিদ্যুৎ বা গ্যাস চুরি:
অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ বা গ্যাস চুরি করে ব্যবহার করা হতো যভ হয়। এই চুরির কাজে আমরা সরাসরি জড়িত। আমরা চোরাই লাইন যদি না নেই তবে তো জোর করে কেউ দিতে পারবে না। আর চোরাই লাইনের সুবিধা হলো মাস শেষে কম বিল। ধরে নেই এখন যদি কড়া নজরদারি ও প্রযুক্তির মাধ্যমে চুরি বন্ধ করা হয় এবং প্রকৃত বিল আদায় করা হয়, লাইনগুলো কেটে দেয়া হয় এবং জেল জরিমানার ব্যবস্থা করা হয়, তখন অনেকেই বলবেন, ‘আগে ভালো ছিলাম’। বলেন ঠিক না বেঠিক?
স্বাস্থ্য সেবা:
আগে হাসপাতাল বা ক্লিনিকগুলোতে তদবির বা চেনাজানার মাধ্যমে দ্রুত চিকিৎসা পাওয়া যেত। এখন যদি স্বাস্থ্যসেবা খাতে সুষ্ঠু শৃঙ্খলা ও নিয়ম প্রতিষ্ঠা করা হয়, যেখানে সবাইকে একই নিয়ম মেনে চলতে হয়, তখন অনেকেই বলবেন, ‘আগে ভালো ছিলাম’, কারণ আগে ব্যক্তিগত পরিচিতি বা আর্থিকভাবে সুবিধা নিয়ে তারা সেবা পেতেন। চিন্তুা করে দেখুন ডাক্তারদের যদি নিজ নিজ হাসপাতালেই কেবল রোগি দেখতে হয় আর ক্যাস ট্রানজেকশন বন্ধ করা হয়। সকল আয়ের সঠিক ট্যেক্স দিতে হয়। তবে কি হতে পারে? ধর্মঘট? আবার সেই ‘আগে ভাল ছিলাম’ এর দীর্ঘশ্বাস।
এমন শত শত উদাহরণে দেখা যায় বা দেয়া যাবে যাতে ব্যক্তি থেকে রাষ্ট্রকে যুক্ত করা সম্ভব। এখানে আমাদের নিজেদের দায়ভার আছে। রাষ্ট্রের দায়ভার আছে। ‘আগে ভাল ছিলাম’ মানসিকতা মূলত অনিয়ম, দুর্নীতি বা শিথিল নৈতিকতার সুবিধা থেকে এসেছে। যখন সেই সুবিধাগুলো কমে যায়, তখনই মনে হয় ‘আগে ভালো ছিলাম’। বাস্তবে, আমাদের সমাজে সুষ্ঠু আইন-কানুন, নৈতিকতা এবং শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা হলে অনেকের কাছে তা অস্বস্তিকর মনে হতে পারে, কারণ আমরা আগের সুবিধাবাদী পরিবেশের সঙ্গে অভ্যস্ত।
নিয়ম বা অনিয়ম কোনোটাই এক দিনে আসে না। যদি অনিয়মই নিয়ম হয় তবে নিয়মকে মেনে নেয়া সহজ হবে না। এভাবেই ‘আগে ভাল ছিলাম’ ভাবনার আসল কারণ আসলে অনিয়মের সুবিধাভোগী হওয়া।
গতপর্বের লিংক (view this link)
২| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৫
প্রহররাজা বলেছেন: দেশের বেশীর ভাগ মানুষ ধান্দাবাজ ও চোর, সুযোগ পাইলেই চুরি করবে। তাই সমস্যা সরকারে না, সমস্যা দেশের মানুষের চরিত্রে।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৯:৪০
এম ডি মুসা বলেছেন: আগে দুর্নীতি বাজ সুখে ছিল। আগে মত বর্তমান নেওয়ার লোক এখন ভালো থাকবেন।