নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নগণ্য একজন মানুষ। পছন্দ করি গল্পের বই পড়তে, রান্না করতে। খুব ইচ্ছে করে ঘুরে বেড়াতে। ইচ্ছে আছে সারা বাংলাদেশ চষে বেড়ানোর।
কালবৈশাখী ঝড় যেমন হয় আরকি, ঈশান কোনে কালো মেঘ জমে কিছুক্ষন পরিবেশ থম মেরে থেকে হুটহাট ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। আজো এরকমই হল। বৈশাখ মাস শুরু হবার ৬দিন পরে আজ-ই মনে হয় প্রথম হল, বারান্দার দরজা অর্ধেক খুলে বাইরের অবস্থা দেখতে দেখতে ভাবছে নিরু। পাখিরা প্রকৃতির মেজাজ মর্জি বুঝে আগে ভাগেই নীড়ে ফিরে গেছে, যারা যেতে পারেনি বাতাসের সাথে পাল্লা দিয়ে, যুদ্ধ করে ফেরার চেষ্টা করছে। সামনের বাড়ীর বউটা তাড়াহুড়ো করে শাশুড়ির বারান্দার কাপড় তুলে ঠিক ওপর তলায় নিজের ফ্ল্যাটে গিয়ে নিজের কাপড় তুলে দরজা লাগিয়ে দেয়, অদ্ভুত মানুষ এরা। এসি লাগানোর পর থেকে চব্বিশ ঘন্টার চার ঘন্টাও মনে হয় দরজা জানলা খোলে না! কীভাবে থাকে এরা ভেবে পায়না নিরু। দিনে দুই ঘন্টা দরজা জানলা বন্ধ রাখলে ওর অস্থির লাগে। চোরের ভয়ে রাতটা কোনমতে বন্ধ করে পার করে সকাল হবার সাথে সাথেই খুলে দেয়। ওর মধ্যবিত্ত মন বোঝায় ওকে যে ওর বাসায় এসি লাগালেও হয়ত এরকম-ই করবে । তবে বাইরের আলো বাতাস না ঢুকলে ঘরের পরিবেশ গুমোট হয়ে থাকে এটা ঐ বউ বা তার ঘরের কেউ জানেনা ! বাসায় ছোট্ট একটা বাবু আছে তাদের, তার জন্যে হলেও ত ভাবা উচিত। নাহ্ বড্ড বেশি ভাবছে ও অন্য বাসার ব্যাপার নিয়ে। যাদের বাচ্চা তারাই ভাবুক। ও দাড়িয়েছে ঝড়-বৃষ্টি দেখার জন্যে , অন্যের অন্দরমহল নিয়ে ভাবার জন্যে না। গলির মাথায় একতলা বাড়িটার নারকেল গাছটা ভয়ানক ভাবে দুলছে। কিছুদিন আগেই গাছটা ছেঁটে দিয়েছে এখন আরো লম্বা লাগছে। বাতাসে এমন ভাবে দুলছে মনে হচ্ছে এখনি বুঝি ভেংগে পড়বে। কিন্তু না আবার সোজা হয়ে যায়। এই বাসায় আসার পর থেকে এরকম-ই দেখে আসছে। চারপাশ মোটামুটি খোলা থাকার দরুন ঝড়ের সময় বিল্ডিংয়ে বাতাস আছড়ে পড়ে এমন ভয়ানক শব্দ করে না ! আত্নারাম খাঁচা ছাড়া হতে চায়! মনে হয় বিল্ডিংটা বুঝি এইবারই গেল ভেংগে। এই সময়টা নিরু দোয়া দুরুদ পড়তে থাকে আর আল্লাহকে ডাকতে থাকে। ঝড়ের সাথে সাথে ঘন ঘন বিজলী চমকাচ্ছে। নাহ আর বারান্দায় থাকা যাবে না ভাবতে ভাবতে দরজা বন্ধ করে ঘরে ঢুকে পড়ে।
রান্না ঘরের জানলার সাথে ঝোলানো কড়াই ঝড়ের সাথে পাল্লা দিয়ে তুমুল বেগে আছড়াচ্ছে। ওগুলোকে থামানোর জন্যে যাওয়ার পথে নিরু দেখে মায়ের ঘরের জানলার সাথে যুদ্ধ করছে ওর ভাই। সব দরজা জানলা বন্ধ করে নিজের ঘরে এসে বিছানায় বসে নিরু। মন টিকছে না। বাইরে কী হচ্ছে দেখার জন্যে মনটা আঁকুপাকু করছে। পশ্চিমের জানলা খুলে বাইরে তাকায়। বৃষ্টির ছাঁটে বিছানা ভিজে যাচ্ছে, যাক একটু ভিজলে কিচ্ছু হবে না ভেবে এক হাতে জানলা বাইরের দিকে ঠেলে ধরে বসে থাকে। হুক গুলো নেই যে আটকে রাখবে। বাড়ি খেয়ে কাঁচ ভাংলে আবার কে যাবে বাড়িওয়ালাকে তেল মালিশ করতে তার চাইতে এই ভাল ভাবতে ভাবতে বাইরে মনযোগ দেয়। পাশের চারতলার ছাদে বড় রং এর ড্রামে লাগানো অনেকগুলো কাঠগোলাপের গাছ। প্রত্যেকটিতে ফুল এসেছে। ভীষণ ভাল লাগে দেখতে। কয়দিন যাবত ভাবছে একটা ডাল এনে বারান্দার টবে লাগাবে। কিন্তু চাইতে কেমন যেন লাগছে যদিও ঐ বাড়ীতে অনেক বছর থেকে এসেছে নিরুরা। বৃষ্টি নামলে গাছে ভরা ছাদটা দেখতে বেশ ভালই লাগে। জানলা খুলে নিরু দেখে আর ভাবে দূর থেকে সব-ই ভাল লাগে।
ছাদ পেরিয়ে দৃষ্টি মেলে দেয় আরো সামনে, দূরে রেইল লাইনে। মানুষ দৌড়োদৌড়ি করে যার যার গন্তব্যে ফিরছে। কেউ বাজার করেছিল, কেই অফিস থেকে ফিরছে কেউবা এমনিই হয়ত বের হয়েছিল বিকেলের হাওয়া খেতে। বৃষ্টির বেগ বেড়ে যাওয়া জানলা বন্ধ করতে বাধ্য হয় নিরু। এবার কী করবে যে ভাবতে থাকে। করার অনেক কিছু থাকলেও কিছুই করতে ইচ্ছে করে না। এলোমেলো একটা অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ধৈর্য্য ধরে অবিচল থাকাটা খুবই জরুরী সে জানে কিন্তু মাঝে মাঝে বালির বাঁধের মত ভেংগে যায়। শক্ত হতে হবে, শক্ত করতে হবে নিজেকে। ভাবতে ভাবতেই মনে হয় ঝড় বৃষ্টিটাকে অন্তত উপভোগ্য করা দরকার, আর তার জন্যে ভাল করে দুকাপ চা বানানো উচিত। আপাতত তাই করতে যায় নিরু, ততক্ষণে ঝড় কিছুটা থেমে গেলেও বৃষ্টি বেড়েছে।
২০ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:৩১
নীল-দর্পণ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে
২| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:০৮
আমি ইহতিব বলেছেন: অনেকদিন পর দেখলাম আপনার পোস্ট, ভালো লাগছে দেখে। পোস্ট পড়ে আবার আসছি।
২০ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:০৪
নীল-দর্পণ বলেছেন: পুরনো মানুষদের দেখে খুব ভাল লাগে। কেমন আছেন, ভাল নিশ্চই?
৩| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৫:১১
আমি ইহতিব বলেছেন: ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। আপনিও ভালো আছেন আশা করছি।
বৃষ্টি বিলাস ভালো লাগলো। উথাল পাথাল ঝড় আমাদের মনকেও কিছুটা উথাল পাথাল করে দেয়। তারই আভাস গল্পে।
২০ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:১১
নীল-দর্পণ বলেছেন: বলেছেন: আছি আলহামদুলিল্লাহ ভালই।
ঝড় বৃষ্টি ব্যাপারটাই উথাল পাথাল।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে।
৪| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:২৮
অবনি মণি বলেছেন: ভালো লাগছে। পড়লাম !!
২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৯
নীল-দর্পণ বলেছেন: ধন্যবাদ অবনি মণি আপনাকে !
৫| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৪:১৫
মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: মনোযোগ দিয়ে পড়েছি।
ছিমছাম শৈলী, যা খুব কঠিন।
সময় হলে পড়বেন।
২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২০
নীল-দর্পণ বলেছেন: আমি তো খুব সহজ ভাষায় লিখি।
আপনার লেখাটা প্রথম পাতা পড়ে বেশ ভয় পেয়ে গেছিলাম শব্দের কঠিন বুননে কিন্তু মনে হল খুব মজা পাবো । তাই বুকমার্ক করে রেখেছি আস্তে আস্তে পড়ার জন্যে।
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ।
৬| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৯
মোহাম্মাদ আব্দুলহাক বলেছেন: আপনরা এই গল্পের সাথে মিল পেয়ে লিংক দিয়েছিলাম।
নতুন বই কাজ করছে, ওটা কঠিন হলে নতুনটার কথা আপনাকে বলতে চাই না। আমার সমস্যা হচ্ছে
শুরু করেছি বিধায় শেষ করতে হবে।
দোয়া করবেন আমার জন্য।
২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:৫৫
নীল-দর্পণ বলেছেন: না , মজাই পাচ্ছি পড়ে।
অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
৭| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৫
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ভাল লিখেছেন ।সুন্দর সাবলিল বর্ণনা ।
২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:৫৬
নীল-দর্পণ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ।
৮| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৫
Tanju H বলেছেন: আসাধারন লেখা
২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:৫৭
নীল-দর্পণ বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন ।
৯| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৫৬
জুন বলেছেন: ঝড় দেখার বিলাসও আমারও ছিল নীল-দর্পন । আপনার ভাবনাগুলোর সাথে মিল পেয়ে আপনার ছোট লেখাটি আমার মনে অনেক বড় জায়গা করে নিলো ।
অনেক ভালোলাগা রইলো
+
২১ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:০০
নীল-দর্পণ বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।
১০| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৮:৫৯
আহমেদ জী এস বলেছেন: নীল-দর্পণ ,
ঝড়-বৃষ্টি বিলাস আমার ও আছে , এখনও আছে । অবশ্য উপরে সহব্লগার "জুন" বলেছেন ওনার "ছিলো" । কেন এখন নাই হয়ে গেলো , বুঝিনা !
আমিতো এখনও ঝড়-বৃষ্টি এলেই জানালা-কবাট খুলে রাখি সব । আজও দুপুরে রেখেছি অফিসের আট তলায় নিজের রুমের জানালা। খুব ভালো লাগছিলো । এটাও বোধহয় একধরণের বিলাস ।
ভালো লাগলো লেখাটি ।
২৩ শে এপ্রিল, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৭
নীল-দর্পণ বলেছেন: উনার ঘোড়াঘুড়ির যে বিলাস সেটাই যথেষ্ট বৃষ্টি বিলাস দিয়ে কী হবে। একটা থাকলেই হল।
গতকাল বিকেলে বের হয়েছিলাম। সন্ধ্যায় আমি আর বান্ধবী মিলে এক হোটেলে ঢুকলাম। খেয়ে বের হতে গিয়ে দেখি তুমুল বৃষ্টি ! কিছুক্ষন অপেক্ষা করে মোটামুটি গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মাঝেই বের হলাম। বৃষ্টি হতে বাঁচার জন্যে দাড়িয়ে যথাকা মানুষজন অবাক হয়ে দেখছিল বোরখা পড়া দুজন মেয়ে বৃষ্টি মাথায় করেই হেটে যাচ্ছে ! ২/৩ দোকান পরেই দেখলাম কেকের দোকান। টুপ করে সেখানে ঢুকে পড়ে কেক খেয়ে বের হলাম। ততক্ষনে বৃষ্টি প্রায় থেমে গেছে। এর পর খুশি মনে বাসায় ফেরা
১১| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৯
খায়রুল আহসান বলেছেন: প্রায় এক বছর পর আপনার এ লেখাটা পড়লাম। আজও দুপুর তিনটার কিছু পর আমাদের এখানে ঝড় না হলেও বেশ এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেল। আমিও বৃষ্টি হলেই বারান্দায় যাই। বেডরুমের জানালা বৃষ্টির ভয়ে খুলতে না পারলেও পর্দা সরিয়ে একটু ফাঁক করে রাখি, হেলে দুলে নুয়ে পড়া গাছ পালা দেখি। ঘরে ফেরা পাখিও দেখি।
লেখাটা ভাল লেগেছে। + +
০৭ ই এপ্রিল, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৬
নীল-দর্পণ বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন আবারো । এখনো আমার এত আগের লেখা কেউ পড়ছে দেখে একটু অবাক এবং সাথে বেশ ভাললাগা।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ২:১৬
আহমাদ সালেহ বলেছেন: ভালো লাগলো।