নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নগণ্য একজন মানুষ। পছন্দ করি গল্পের বই পড়তে, রান্না করতে। খুব ইচ্ছে করে ঘুরে বেড়াতে। ইচ্ছে আছে সারা বাংলাদেশ চষে বেড়ানোর।
নূপুর, বাংগালী নারীর প্রিয় অলংকারের মাঝে অন্যতম একটি। কবে থেকে এর প্রচলন জানিনা। সময়ের সাথে নকশায় এসেছে বিভিন্ন পরিবর্তন, নামেও । দু'পায়ে পরলে নূপুর একপায়ে পড়লে হয় পায়েল । জিনিসতো একই, নাকি তফাৎ আছে? গয়না বিশেষজ্ঞরা বলতে পারবেন ভাল।
প্রায় প্রতিটি মা-ই মনে হয় তার ছোট্ট মেয়েকে নূপুর কিনে দেন । তার আদরের ছোট্ট সোনামনি ছোট ছোট পায়ে নূপুর পড়ে নিক্কণ ধ্বনি তুলে সারা ঘরময় ঘুরে বেড়াবে এটা দেখে নিজের ছোট্ট বেলার স্মতি মনে করেন।
কোরবানীর ঈদের দিন বিকেলে আমার মামাতো বোনকে দেখি মামীর আঁচল ধরে খুন খুন করছে। কারন জিজ্ঞেস করে জানা গেল তার জন্যে নূপুরের অর্ডার দেওয়া হয়েছে অনেক আগে। বাসা থেকেই তার বায়না ছিল ঈদর দিন সকাল বেলা সে নূপুর পড়বে। যে কোন কারনেই হোক সকাল বেলা আনা হয়নি। এই সব কথা বলার পরে তার কান্নার ভলিউম আরো বেড়ে গেল। বুক ফেটে কান্না আসছে তার । যাইহোক সন্ধ্যায় দোকান থেকে এনে দিলে সেই নূপুর পায়ে দিয়ে সেকী আনন্দ ! এটা যে তার প্রথম নূপুর তা নয়, আগেরটা ছোট হওয়ায়, নাহ বরং পুচকীটা বড় হওয়ায় সেটা ভেংগে নতুন করে গড়ে দেওয়া হয়েছে আরেক জোড়া।
নূপুরের কথা মনে হতেই মনে পড়ে আমার নুুপুরের কথা। গ্রামে গেলে আশেপাশের কারো বা চাচাতো-ফুপাতো বোনদের কোন নূপুর দেখে ভাল লাগলে আম্মা গড়িয়ে এনে দিতেন নতুন নকশার নূপুর। বাড়ীর পাশে স্বর্ণকারের দোকান থাকায় এই সুবিধা। নিত্য নতুন কত কত নকশার নূপুর যে পড়েছি ! বড় করে বাড়তি চেইন রেখে বানানো হতো যাতে তাড়াতাড়ি ছোট হয়ে না যায়। সেটা ছোট হলে ভেংগে আবার নতুন করে, নতুন নকশায় গড়ানো হতো। পড়তে যে খুব ভাল লাগত তা নয় বানানোর পরে কয়েকদিন পড়া, তার পরে খুলেই রাখতাম। অলংকারে বড় অস্বস্তি লাগে!
বেশ কয়েক বছর আগে রুপার দাম খুব বেড়ে যায়। পড়া হয়না বলে তখন বিক্রী করে দেই একজোড়া নূপুর। মনে আছে ১২০০ টাকা দাম পেয়েছিলাম। সেই টাকা দিয়ে গ্রামীন চেক থেকে জামা কিনেছিলাম । এর পরে আর বানাইনি। তবে ছিল একজোড়া। খুব ছোট্টবেলার, জীবনের প্রথম নূপুর ছিল সেটা। আম্মা যত্নকরে রেখে দিয়েছিলেন স্মৃতি হিসেবে। দেখতে বেশ সুন্দর ছিল । আমি মাঝে মাঝে বের করে দেখতাম। আম্মা আমাকে খেপানোর জন্যে বলতেন, "আমার ছেলের ঘরের নাতনীকে দিবো এটা" । । আমি বলতাম ঠিকাছে আমার মেয়েকে স্বর্ণ দিয়ে বানিয়ে দিও তাহলে ।
নূপুর জোড়া এখন অতীত হয়ে গেছে। কেবল স্মৃতিতেই পাওয়া যাবে সেটাকে। প্রায় দুই বছর আগে বাসায় চুরি হয়, তখন আমার সমস্ত গয়নার সাথে নূপুর জোড়াও চলে যায়। গয়নার প্রতি আমার তেমন দূর্বলতা নেই তাই ক্ষতির তুলনায় সেরকম আফসোস হয়নি। আফসোস হয়েছে দুটি জিনিসের জন্যে। দুটিই ছিল স্মৃতি জড়িত। আমার বৃত্তির টাকা এবং সাথে কিছু জমানো টাকা যোগ করে একটা স্বর্ণের আংটি বানানো হয়েছিল। সলিড রিং, উপরে একটু ডিজাইন করা। সেটার জন্যে খারাপ লেগেছে। তার চাইতে বেশী খারাপ লেগেছে এক একজোড়া রুপার চুড়ির জন্যে। দাদী মারা যাওয়ার পরে তার হাতের চুড়ি দিয়ে বানানো ছিল চুড়ি জোড়া! যাইহোক সেই গল্প আরেক দিন করা যাবে, আজ এসেছিলাম নূপুরের গল্প নিয়ে।
আমার এখন আর কোন নূপুর নেই। আছে সোনালী রং এর একটা পায়েল । চিকন সোনালী চেইনের উপর চকচকে সাদা অনেক গুলো পাথর , সাধারন তবে খুব সুন্দর। আমার খুব পছন্দের। পড়তে নয় দেখতেই ভাল লাগে । মাঝে মাঝে বের করে দেখে আবার যত্ন করে রেখে দেই।
********************
১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৪২
নীল-দর্পণ বলেছেন: মাঝে অনেক দিন আসি নাই। ইদানিং বেশ আসছি যদিও রেগুলার পারিনা।
১০৩ বার পঠিত কিন্তু কোন মন্তব্য নাই, আমিও সামান্য একটু অবাক ছিলাম। তার চাইতে বেশি অবাক হলাম আপনাকে এখানে মন্তব্য করতে দেখে! ভেবেছিলাম এখানে কেউ আসবে না আর।
এই পোষ্টটা লেখার সময় মন অসম্ভব খারাপ ছিল!
ধন্যবাদ আমার ব্লগ বাড়ীতে বেড়াতে আসার জন্যে।
২| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:০৫
মলাসইলমুইনা বলেছেন: বন্ধু : নুপুরের রিনরিন শব্দে আমিও এলাম | নুপুরের শব্দের মতো আমিও শুনলাম স্মৃতির গল্প | খুব ভালো লাগলো | বৃত্তিরটাকায় বানানো সোনার আংটি চুরি হয়েছে জেনে খারাপ লাগলো | আপনার জেনে ভালো লাগতে পারে তাই বলছি -চোরকে শাপ শাপান্ত করলাম অনেক্ষন | খুব ভালো লাগলো আবারো বলছি | দাদির হাতের চুড়ি দিয়ে বানানো রুপার চুড়ির গল্পটা কি আর পরে লিখেছিলেন ? জানাবেন ওটাও পড়ার ইচ্ছে রইলো | বন্ধু, নিয়মিত একটু আসুনতো ব্লগে | আমার প্রিয় ব্লগারের লেখাগুলো অন্যরা পড়ুক -পরে দেখুক কি মণিমুক্তো জড়ানো থাকে তার লেখায় | অপ্সরার প্রিয় ব্লগার নিয়ে লেখাটায় আমি আপনার লেখার কথা লিখছিলাম | আপনি নিয়মিত ব্লগে থাকলে আমার কথার সত্যিটা অন্যরা সহজেই বুঝতে পারতো |
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ ভোর ৬:৪৬
নীল-দর্পণ বলেছেন: চোরকে আমার বন্ধু শাপ-শাপন্ত করেছ জেনে হাসলাম কতক্ষণ।
দদীর হাতের চুড়ির গল্পটি আর লিখিনি। দাদী মারা যাবার পরে চুড়িটা কেটে বের করেছিল। সেই চুড়ি ভেঙ্গে আবার নতুন চুড়ি গড়িয়েছিলাম আমার জন্যে। চাচাতো বোনের বিয়েতে গ্রামে গিয়েছিলাম বাসায় আমার গয়নাগাটি সেফ থাকতে রেখে। বাকীটা ইতিহাস!
৩| ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:০২
ওমেরা বলেছেন: আমারও একজোড়া নুপুর ছিল, এখনো আছে , আমি নাকি ছোট বেলায় খুবই চঞ্চল ছিলাম। আমাদের বাসা ছিল বড় মানুষ ছিল কম। মূহুর্তের ভিতরই আমাকে খুঁজে পাওয়া যেত না । তাই আম্মু আমার পায়ে নুপুর পরিয়ে রাখত ।এখন আমি অনেক বড় সেই চঞ্চলতা এখনো আছে কিন্ত নুপুর গুলো এখন আর পায়ে লাগে না ।
আপু পায়েলটা পায়ে পরে থাকবেন না হলে আবার কখন চোরে নিয়ে যাবে তখন আবার কষ্ট লাগবে ।
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ ভোর ৬:৫০
নীল-দর্পণ বলেছেন: আমার নূপুর জোড়া মাঝে মাঝে বের করে নেড়েচেড়ে দেখতাম।
এখন পায়েল যেটা আছে ওটা সবসময় পড়ে থাকার মত নয়।
ধন্যবাদ আপুনি আমার এত আগের পোষ্টে বেড়ু করতে এসেছেন দেখে ভাল লাগছে।
৪| ১৭ ই আগস্ট, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: কি সুন্দর অম্লমধুর স্মৃতি নিয়ে লেখা একটা পোস্ট! অতি সাধারণভাবে, গল্পের ছলে বলে যাওয়া কিছু কথা, কিন্তু খুবই আবেদনময় হয়েছে।
এত চমৎকার একটি পোস্টে এত অল্পসংখ্যক মন্তব্য দেখে আমিও অনেক অবাক হ'লাম।
পোস্টে চতুর্থ ভাললাগা রেখে গেলাম। + +
১৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৮:০০
নীল-দর্পণ বলেছেন: আমি আরো বেশি অবাক হই আপনি পুরনো আবজাব লেখাগুলো খুঁজে পড়েন তা দেখে!
আপনার কমেন্ট করার জন্যে এত আগের একটা লেখা পড়লাম, এখন মনে হচ্ছে খুঁজে দেখতে হবে পায়েলটা আছে কিনা এতদিনেও...
ভালোলাগাটুকু সযতনে তুলে নিলাম। আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন।
৫| ১৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৮:২৪
খায়রুল আহসান বলেছেন: আপনার "তেলাপোকার স্বাদ টক !!" পোস্টেও একটা মন্তব্য রেখে এসেছিলাম।
১৮ ই আগস্ট, ২০২২ রাত ৮:৩১
নীল-দর্পণ বলেছেন: মাত্রই মন্তব্যের জবাবে লিখলাম
কন্যাদের নিয়ে ব্যস্ততায় ব্লগেই আসা ভুলে যাচ্ছি!
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:০০
ভারসাম্য বলেছেন: আপনারা দেখি কত কি লেখেন এখনো! দেখে ভাল লাগলো, আর এত সুন্দর লেখায় কোন মন্তব্য নেই দেখে খারাপও লাগলো।
শুভকামনা রইল।