নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নগণ্য একজন মানুষ। পছন্দ করি গল্পের বই পড়তে, রান্না করতে। খুব ইচ্ছে করে ঘুরে বেড়াতে। ইচ্ছে আছে সারা বাংলাদেশ চষে বেড়ানোর।
টিউশনির ভাগ্য আমার সবসময়-ই খারাপ! প্রফেশনালী টিউশনি করাইনা কখন-ই, প্রয়োজনও পড়েনি। তবে নিজের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যেই টিউশনিটা করাই। আমার স্বপ্ন হল একজন ভাল শিক্ষিকা হবো। বেশীরভাগ সময়-ই ভাবি চাকরী আমাকে দিয়ে হবেনা, রুলসের মাঝে জীবন যাপন আমার পক্ষে সম্ভব না কিন্তু যখন রুম ভর্তি স্টুডেন্টের মাঝে কোন টিচার লেকচার দেন আর আমি মুগ্ধ হয়ে শুনি তখন নিজের অজান্তেই টিচারের ঐ জায়গায় নিজেকে কল্পনা করি, ভাবি কবে আমি এরকম হলরুম ভর্তি স্টুডেন্টের সামনে লেকচার দিবো আর তারা মুগ্ধ হয়ে শুনবে! কিন্তু এর জন্যে প্রধান যে গুণ থাকা লাগে তার মাঝে অন্যতম হল ধৈর্য্য, যা আমার খুবই কম। টিউশনি মূলত এই জন্যেই করার চেষ্টা করি। কিন্তু প্রতিবার তিক্ত অভিজ্ঞতার পরে শপথ করি যে আর পড়াবোনা, বিশেষ করে কোন বাচ্চাকে।
শেষ যে বাচ্চাকে পড়িয়েছিলাম সে পড়তো থ্রী'তে। পড়ানোর শুরুতে স্টুডেন্টের কথা ছিল ক্লাসের পড়া পড়িয়ে দিতে হবে! যেটা শুনে আমার কাছে খুব অবাক লাগে এইভেবে যে, ক্লাসের সব পড়া কেন টিচারকে পড়াতে হবে। ক্লাসের খব কঠিন কোন বিষয় হলে টিচার বুঝিয়ে দিতে পারে বাকীটা স্টুডেন্ট নিজেই পড়বে আর প্রাইভেট টিচার তার গতিতে শেষ করবে। ক্লাসের গতিতে পড়ালে সিলেবাস শেষ করা অসম্ভব। যাইহোক রেগুলার টিউশনি করিয়ে অভ্যাস নেই বলে মেনে নিলাম স্টুডেন্টের কথা। তার চাহিদা অনুযায়ী-ই পড়াতে শুরু করলাম। কিছু দিন পরে বুঝলাম আমি কিসের মধ্যে এসে পড়েছি !! ধৈর্য্যের চরম পরীক্ষা শুরু হলো আমার। ছাত্র ঠিক মত বাংলা রিডিং পড়তে পারেনা! আমি জায়গায় বসে মুখস্ত করালেই সে পড়ে নয়ত বাসায় পড়েনা। এক টিচারের পক্ষে একসাথে প্রতিদিনের সব সাবজেক্ট শেষ করা অসম্ভব! কিন্তু এটা স্টুডেন্ট বা তাদের বাবা-মাকে বোঝানো যায় না। প্রায় কম্প্লিট করে দেয়া পড়া পরের দিন সামান্য পড়লেই পড়া দিতে পারে কিন্তু সেটা দেয় না। এটা বাবা-মা'র দোষ। টিচার ১/২ ঘন্টা পড়াবে সেই পড়াতেই ত হয়না। বাকীটা সময় বাবা-মা'কে গাইড দিতে হবে। এখানে যদি বলেন তাহলে টিচার রাখলাম কেন, আমি বলব টিচারের কাজ মুখস্ত করে গিলিয়ে দেওয়া না, বুঝিয়ে দেওয়া, পড়াটা সহজ করে দেওয়া বাকীটা স্টুডেন্টকে করতে হবে আর সেটা করার জন্যে বাবা-মা কে সাহায্য করতে হবে।
এরকম অসচেতন বাবা-মা আমি আর দেখিনি!! ৪/৫ মাস পড়ে মনে হয় আমি ছেড়ে দিয়ে চলে এসেছিলাম সেটা।
এর পরে ইদানিং এক বান্ধবীর বিয়ে হয়ে যাওয়াতে তার স্টুডেন্টকে পড়াতে বলে। ভাবলাম দেখি চেষ্টা করে। স্টুডেন্ট ঢাকার নামী এক স্কুলে পরে। একেও তার স্কুলের পড়া পড়াতে হয় যেখানে এক পৃষ্ঠা পড়তে তার সময় এক ঘন্টা সেখানে বাকী সাবজেক্ট কিভাবে আমার বান্ধবী পড়িয়েছে আমি জানিনা। প্রফেশনাল টিউটর ছিল সে, এক-দেড় ঘন্টার বেশী সময় দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব না এর মাঝে হলে হয়েছে না হলে চলে এসেছে কিন্তু আমার পক্ষে সম্ভব না এরকম করা, আমি নিজের বিবেকের কাছে আটকা পড়ে যাই। স্টুডেন্টের বাবাকে বলে সময় বাড়িয়ে নেওয়ার পরেও বিপত্তি! স্টুডেন্ট এত সময় পড়বেনা, আমার ঠিক পরেই তার অন্য টিচার আসবে তাই। ক্লাস সেভেনের বাচ্চার জন্যে ৪জন টিচার তাও এক সাবজেক্টের জন্যে দুই টিচার !! এই ছাত্রী পড়াতে গিয়ে আমি টাশকি খেতে খেতে এখন বোধহীন হয়ে গেছি মনে হয়। বাচ্চাদের সাথে সাথে বাবা-মা'র ও ধ্যান-ধারনা টিচার সব পড়িয়ে দিবে। আমার মাথায় আসেনা এরকম ধ্যান-ধারনা তাদের কেন বা কিভাবে আসে! এটা কিভাবে সম্ভব !! টিচার বেশী থাকা দোষের না, কিন্তু শুধু টিচার পড়িয়ে যাবে তার পরে আর কোন দ্বায়িত্ব থাকবেনা বা পড়বেনা এটা কেন ! আর এক সাবেজেক্টের দুই টিচার থাকার পরেও কেন স্টুডেন্ট বা তার অভিভাবক ভাল রেজাল্ট নয় পাশের কথা মাথায় রেখে টিচারকে পড়াতে বলতে হবে!
কী জানি আমি-ই হয়ত ব্যার্থ টিচার।
তবে আমি অভিভাবকদের উদ্দ্যেশ্যে বিনীত ভাবে অনুরোধ করছি,
দয়া করে আপনারা শতভাগ প্রাইভেট টিউটরের উপর ভরসা করবেন না, তার উপর ছেড়ে দিবেন না। আপনার সন্তান ১/২ ঘন্টা টিউটরের কাছে থাকবে বাকীটা সময় আপনার কাছে থাকছে। আপনি নিজে পড়াতে না পারলেও একটু নজর রাখুন। প্রাইভেট টিউটরের উপর নির্ভরশীল করবেন না। এতে আপনার সন্তানের-ই ক্ষতি ছাড়া লাভ হবে না।
কারো যদি মনে হয় আমাকে কোন পরামর্শ দেয়া উচিত, তবে নিঃসংকোচে দিতে পারেন, আমি খুশী মনে তা গ্রহন করবো।
০৬ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৮
নীল-দর্পণ বলেছেন: প্রাইভেট টিউশনি টা আমি নিজের তৃপ্তির জন্যে করাই কিন্তু দূর্ভাগ্য সেটা খুব কম-ই পেয়েছি । আর ধৈর্য্য...দেখা যাক সেটা কদ্দূর কী হয়
২| ০৬ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:০৪
নাহিদ ইসলাম ৩৫০ বলেছেন: ভালো লেখা।
প্রযুক্তি বিষয়ক বাংলা ব্লগঃ আইডিয়া বাজ
০৬ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:১৪
নীল-দর্পণ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
৩| ০৬ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:২১
মুনতাসির নাসিফ (দ্যা অ্যানোনিমাস) বলেছেন: আমি, স্টুডেন্ট লাইফে প্রাইভেট পড়েছিলাম দুবার, তাও ইন্টার মিডিয়েট লেভেলে ব্যাচ করে ...
অথচ অবস্থা এখন যা দেখি, ক্লাস থ্রি এর বাচ্চার টিউটর থাকে পার সাবজেক্ট ২ জন!! আমি নিজেও পড়িয়েছি এমন
০৬ ই জুন, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৬
নীল-দর্পণ বলেছেন: আমাদের ছোটবেলা থেকেই টিচার ছিল কিন্তু টিচারকে কখনো আমাদের পড়িয়ে দিতে হয়নি। নিজেরাই পড়েছি। আর এখন গিলিয়ে দিতে হয়...কী আজিব !!
৪| ২২ শে জুন, ২০১৪ সকাল ৯:৪৪
ডাইরেক্ট টু দ্যা হার্ট বলেছেন: তোমার এই জন গুরুত্বপুর্ন পোস্টে আমার কোন ভুমিকা নেই বলে আবার সেই অবান্তর মন্তব্য করতে হচ্ছে যা আমি বরাবরি করে থাকি
বইন তুমি কেমন আছো?
২৪ শে জুন, ২০১৪ সকাল ১০:৫৪
নীল-দর্পণ বলেছেন: অবান্তর হবে কেন ভাইয়া! আমি ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আপনি কেমন আছেন?
৫| ২২ শে জুন, ২০১৪ সকাল ১০:৪১
নতুন বলেছেন: কিছু দিন পরে তো প্রাইভেট টিচার দের ফাস হওয়া প্রশ্নও জোগাড় করে দিতে হবে....
তখন যে বেশি ফাস হওয়া প্রশ্ন যোগাড় করে পরিক্ষার আগে বাচ্চা দের খাইয়ে দিতে পারবে সেই সবচেয়ে কাজের মাস্টার...
২৪ শে জুন, ২০১৪ সকাল ১০:৫৪
নীল-দর্পণ বলেছেন: খারাপ বলেন নাই। সেটাই হবে ! :/
৬| ২৩ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৫:০১
পল্লীবালক বলেছেন: অভিভাবকেরা মনে করেন যে টিচাররা থাকলেই বাচ্চারা পড়বে। অথচ আমার ছাত্র আমি বাসায় গেলে প্রথম যে কথাটা বলে তা হচ্ছে,"স্যার, ছুটি দিবেন কখন?" আমি আর কি বলব। এখনকার শহুরে ছাত্রদের বদ্ধমুল ধারণা হচ্ছে বাসায় যতক্ষণ টিউটর থাকবে পড়াশোনা ঠিক ততক্ষণই করতে হবে। তারা নিজে থেকে পড়বে এমনটা এখন যেন ভাবাই যায়না।
আর আমাদের মতো ছা-পোষা যারা, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা নিরুপায় হয়ে টিউশনি করতে বাধ্য হয়। আমি যেমন করছি।
আমার ছাত্রদের দেখে অনেক সময় আমার মায়া হয়। বাবা-মা, শিক্ষক সবার সেই একই কথা, বিরতিহীন- পড়, পড়,পড়..........
২৪ শে জুন, ২০১৪ সকাল ১০:৫৮
নীল-দর্পণ বলেছেন: সেটাই। বাবা-মা'দের (বিশেষ করে মা'দের) কথা পড়তে হবে, বই নিয়ে বসে থাকতে হবে নইলে প্রতিযোগিতায় টিকবে না। এই করে করে যে বাচ্চাদের শেষ করে ফেলছেন কে বোঝাবেন উনাদের ! আমি পড়াতে গিয়ে ভাবি সত্যিই কী হবে এইসব টিচার নির্ভর বাচ্চাদের।
৭| ২২ শে জুন, ২০২৪ দুপুর ১২:১৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: এ জন্যেই মনে হয় প্রাইভেট টিউটর নির্ভর ছাত্র ছাত্রীদের মনে কোন আত্মবিশ্বাস জন্মাতে পারে না।
নতুন এর মন্তব্যটা চমৎকার হয়েছে।
দশ বছর পরে এসে আপনার এই পোস্টের প্রথম প্লাসটা আমিই দিয়ে গেলাম! ++
০৬ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:৫০
নীল-দর্পণ বলেছেন: কিন্ডারগার্টেনগুলোতে বেতন খুবই কম কিন্তু সেটা পুষিয়ে যায় টিউশনি দিয়ে। স্কুলের ম্যাডামদের দিয়ে পড়ালে পরীক্ষার জন্যে ভালো হয়! কী আর বলার আছে
সযতনে তুলে নিলাম আপনার দেওয়া এই পোস্টের একমাত্র প্লাসটি।
©somewhere in net ltd.
১| ০৬ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৫৬
মহিদুল বেস্ট বলেছেন: BE PATIENCE!
আমি দিনে ৫টা পড়াই!.. তবে শুধু ইংলিশ... কোনটা ব্যাচ করে আবার কোনটা সিঙ্গল/বাসায় গিয়ে... ছাত্র/ছাত্রীরা আমায় ছাড়তে চাচ্ছে না... যদিও চাকরির কথা চলছে.. .