নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের পরিচয় লেখার মত বিখ্যাত বা বিশেষ কেউ নই। অতি সাধারণের একজন আমি। লিখতে ভাল লাগে। কিন্তু লেখক হয়ে উঠতে পারি নি। তবে এই ব্লগে আসা সে চেষ্টাটা অব্যাহত রাখার উদ্দেশ্য নয়। মনে হল ভাবনাগুলো একটু সশব্দে ভাবি।
প্রতিক্রিয়াশীল চক্র প্রভাতফেরি আর শহিদমিনারে ফুল দেয়াকে মূর্তিপূজা সঙ্গে তুলনা করে মানুষকে শহিদমিনারে যেতে নিরুৎসাহীত করতে চাইছে। কাজটি করতে গিয়ে তারা বরাবরের মত ধর্মকেই ঢাল হিসেবে বেছে নিয়েছে। ব্যাপারটা আসলে নতুন নয়। এরা সব সময়েই আমাদের সমাজের মগজ ধোলাইয়ের কাজটি সম্পন্ন করতে ধর্মকেই ব্যবহার করে। এদের নিজেদের চর্চাটাও উর্দু ফার্সি আর আরবি ভাষায়। এই এরাই উর্দু অক্ষরে বাংলা লেখার নিয়ম চালু করেছিল। তারপরই তো ভাষা আন্দোলন। ভাষা আন্দোলনের সেই পরাজয় আজও এদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দৌড়াদৌড়ি করে।
১৬ জুলাই ১৯৭১ জামায়াতের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদকীয়তে লিখেছিল, 'আইয়ুব খানের গভর্নর আজম খান ছাত্রদেরকে খুশী করার জন্য যে শহিদমিনার তৈরি করলেন, তাকে পূজামণ্ডপ বলা যেতে পারে। কিন্তু মিনার কিছুতেই না। সেনাবাহিনী এই কুখ্যাত মিনারটি ধ্বংস করে সেখানে মসজিদ গড়ে সেখানে শহিদদের প্রতি যথার্থ সন্মান প্রদর্শনের চেষ্টা করেছেন জেনে দেশবাসী খুশি হয়েছে।'...পয়তাল্লিশ বছর পেরুলেও আমরা এখনও শহিদমিনারকে পূজামণ্ডপ আখ্যান আমরা এখনও শুনছি।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার সাদুল্লাহ্ তার 'ইস্ট পাকিস্তান টু বাংলাদেশ' বইয়ে শহীদ মিনারের বর্ণনা দিতে গিয়ে লিখেছেন, 'হাই স্কুল পেরুবার সময় আমরা দেখলাম একটা শহীদ মিনার, কোথাকার কোন ভাষা আন্দোলনের সময় নাকি ঢাকার দুই তিনজন ছাত্র মারা যায় তারপর থেকেই হিন্দুয়ানী বাংলার প্রতিটি স্কুলে স্কুলে শহীদ মিনার গজায়। জিনিসটার একটু বর্ণনা দেই। মিনারের পাদদেশে আছে একটা কবর। প্রতিদিন সকালে মিনার প্রদক্ষিন একটা রিচুয়াল। খালি পায়ে ফুল হাতে নিয়ে প্রভাতফেরিতে অংশ নিতে হয়।...'
পাকিস্তান সরকার দুবার কেন্দ্রীয় শহিদমিনার ভেঙেছিল। প্রথমবার ১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি। আর দ্বিতীয়বার ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ। অথচ রাজাকার বাহিনীর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা গোলাম আযমকে জামায়াত ভাষা সৈনিক দাবী করেছে। শহিদমিনারে ফুল দেয়াকে মূর্তিপূজার সঙ্গে তুলনা করতে, শিরক হিসেবে সাব্যস্ত করতে, এই প্রজন্মকে দূরে সরিয়ে রাখতে বছর জুড়েই এরা তৎপর থাকে।
শহিদমিনারে তো কোন প্রার্থনা হয় না। কেউ সেখানে মনের আশা পূরণের মানত করে না। নিজের পাপের জন্যে ক্ষমা চেয়ে কপাল ঠুকে কান্নাকাটি করে না। যেটা করে সেটা শ্রদ্ধা প্রদর্শন। এই যে বাংলা ভাষায় আমরা কথা বলছি, লিখছি, এই ভাষাকে আমাদের করতে যাঁরা জীবন দিয়েছেন তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন। এটাকে শিরক বলে না। আগে শিরক সম্পর্কে ধারণা নিয়ে আসুক 'শিরক' কাকে বলে ?'
শহিদমিনার কেবলই একটা সংস্কৃতি চর্চা। এই সংস্কৃতিকে এত ভয় কেন ? শহীদ দিবসের চেতনাটা বিলুপ্ত করা গেলে সংস্কৃতির ওপর আগ্রাসন চালানোটা সহজ হয়। সেই আগ্রাসনের আক্রমণটা চালাতে আবার ধর্মকেই ব্যবহার করছে। ধর্ম ব্যবহার করে মানুষের ওপর মানসিক চাপ তৈরি করছে। আর আমাদের ছেলেমেয়েরা তাতে বিভ্রান্ত হচ্ছেও। এ আমাদেরই ব্যর্থতা।
২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৮:৩৬
কলাবাগান১ বলেছেন: জামাতি-রাজাকারদের চিৎকার শুরু হয় ২১শে ফেব্রুয়ারী আসলেই...ওদের যত ভয় এই কথা না বলা ইট-পাথরের এই প্রতিক কেই
৩| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৫:৪৯
মুবিন খান বলেছেন: ৩| ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৫:৪৬
মুবিন খান বলেছেন: প্রাচীন আরবী ভাষায় 'শহীদ' শব্দর আভিধানিক অর্থ 'সাক্ষী।' পবিত্র কোরআনেও 'শহীদ' শব্দটি 'সাক্ষী' হিসেবেই ব্যবহার করা হয়েছে। আবার পবিত্র কোরআনেই সত্য ও ন্যায়ের জন্যে জীবন উৎসর্গকারীকেও 'শহীদ' হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সকাল ৭:২৯
তার ছিড়া আমি বলেছেন: শহীদ দিবস,
'শহীদ' শব্দের অর্থ কি হতে পারে?