নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সব দুঃখের মূল এই দুনিয়ার প্রতি অত্যাধিক আকর্ষণ – হযরত আলী (রাঃ)
একটা সময় এদেশের অর্থনীতি ছিলো পুরোপুরি কৃষিভিত্তিক এবং জিডিপির পুরোটাই প্রায় কৃষি থেকে আসত। তখন এদেশের শ্রমবাজার বলতে কৃষক-ক্ষেতমজুর-বর্গাচাষীই ছিলো, আজকের মত শিল্প শ্রমিক কিংবা গার্মেন্টস শ্রমিক ছিলো না। আর এদের নিয়ন্ত্রক ছিলো জমিদার, জোতদার যাদের কুকর্মে সন্তুষ্ট হয়ে ইংরেজরা তাদেরকে আদর স্নেহ করে মাঝে মাঝে স্যার,নাইটহুড, নওয়াব, খানবাহাদুর, রায়বাহাদুর উপাধিও দিত কারন শোষণ ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে এদের খুব দরকার।
এবার আসি মূল কথায় তখনকার দিনে এসব শ্রমিক মজুরদের সারাদিন খাটিয়ে সন্ধা হলে কিছু পয়সা দিত যা দিয়ে বাজার থেকে মোটা চাল কেনার পর কিছু থাকলে ঐটা দিয়ে অন্যান্য আনুসঙ্গিক জিনিসপাতি কিনে চাষাভূষারা রাতের বেলায় বাড়ি ফিরত। কারণ পুঁজিবাদীরা আপনাকে কোনদিন এতোটা মজুরি দিবে না যে ভাত কাপড় কেনার পর রিক্রিয়েশন করতে পারেন কিংবা দু’মাস বসে খেতে পারেন। বরং শোষন, নিপিড়ন টিকিয়ে রাখতে হলে আপনাকে কুশিক্ষার অন্ধকারে নিমজ্জিত রাখতে হবে, আর বিনোদন তো বহু পরের হিসেব। যদিও বা কিছু এলাকায় বিনোদনের ব্যবস্থা করতো সেটা হতো তাদের স্বার্থে, যেমনটা দেখবেন চা বাগন এলাকাগুলোতে, চা শ্রমিকদের জন্য সস্তায় মদ গেলবার ব্যবস্থা রেখেছে মালিকরা কারন পৃথিবীর সবচেয়ে সস্তা শ্রমিকদের অমানুষিক পরিশ্রম করাতে হলে সস্তা মদের গুরুত্ব অনেক। সারাদিন পরিশ্রমের পর সস্তায় মদ গেলার পর দুনিয়ার সব শোসন নিপীড়ন ভুলে যাবে, তাদের চিন্তা করবার অবসরটুকু পাবে না। মদ খেয়ে বাসায় এসে বউয়ের সঙ্গে ঝগড়া করবে, বাচ্চাদের পড়াশোনার খরচ যোগাতে পারবে না। ফলে আজীবন অন্ধকারেই থেকে যাবে আর সস্তা শ্রমের উৎস হয়েই থাকবে। কোথাওবা সস্তায় যৌন পল্লীর ব্যবস্থা করে রেখেছে। থাকগে ঐসব কথা, মূল কথায় আসি। সারাদিনের হাড়ভাঙা খাটুনির পর যে বাজার নিশে আসতো তা দিয়ে চাষাদের বউরা(মানে আমাদের দাদী/নানীরা) তাদের রাতের বেলা রান্না করে খাওয়াতো এবং কিছুটা পরেরদিন খাওয়ার জন্য রেখে দিত কারন সকাল ভোরে উঠে যখন মাঠে(ক্ষেতে) যাবে তখন তো কিছু খেয়ে যেতে হবে। আর তখনকার দিনে যেহেতু ফ্রিজ ছিলো না তাই ভাতে পানি দিয়ে সংরক্ষণ করা ছাড়া আর কোন উপায় ছিলো না, যেটাকে আমরা পান্তা ভাত বলে উৎসব করি!!! আর সকালে ফজরের আগে উঠে একজন মজুর পোড়া মরিচ আর পেঁয়াজ দিয়ে খাওয়াদাওয়া করে যখন কাজে যেতেন তখন সেটা উৎসবও ছিলো না কিংবা আবহমান বাঙালীর সংস্কৃতিও ছিলোনা। পান্তা খাওয়াকে বাঙালির সংস্কৃতি না বলে শোষণের চিহ্ন বলা উত্তম।
ইলিশের ব্যাপারটা আসছে অনেক পরে, বিষয়টা পুরোপুরি বানিজ্যিক হিসেবনিকেশ দ্বারা চালিত। পহেলা বৈশাখে কোন গরিবকে কিংবা নিম্ম-মধ্যবিত্তকে কোনদিন ইলিশ কিনে খেতে দেখেছেন?? আমি বলব না!! কারন পহেলা বৈশাখে ইলিশের বাজার আগুন থাকে যেখানে মধ্যবিত্তদের প্রবেশাধিকার অসম্ভব হয়ে ওঠে তাছাড়া ব্যাংক ডাকাতি কিংবা লুটপাটের টাকা যখন ইলিশের বাজারে অনুপ্রবেশ করে তখন বিষয়টা সাধারণের সংস্কৃতির নাগালের বাইরে চলে যায়। ইলিশের সংস্কৃতি এলিটদের সংস্কৃতি এটা কোনভাবেই বাঙালির সংস্কৃতি না। আমার বাড়ি মেঘনার কোলঘেষেই, আমি জানি ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে মার্চ কিংবা এপ্রিল পর্যন্ত ইলিশ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা চলে যেটাকে আমরা বলি অভিযান !! কারণ এসময় নদীতে প্রায় অধিকাংশ ইলিশের সাইজ ২৩ সে.মি. এর নিচে থাকে যা ঝাটকা বলে পরিচিত আর এখন যেহেতু সংরক্ষণ এর সুযোগ আছে তাই ফ্রিজিং করে পহেলা বৈশাখ পর্যন্ত খাওয়া যায় কিন্তু যে আবহমান বাংলার সংস্কৃতি বলে পান্তা ইলিশ খাওয়ানো হচ্ছে ঐ আবহমান বাংলায় ত কোন ফ্রিজ ছিলো না তখন, তাহলে পহেলা বৈশাখে বাঙালি এতো ইলিশ কই পেতো!!!?
সকাল বেলা যারা পান্তা ইলিশ দিয়ে দিন শুরু করে তাদের অনেকেরই সন্ধা হলে লালপানি লাগে পান্তা ইলিশ হজম করতে!!!! কারণ সারাবছর বাঙালি সংস্কৃতির বাইরে থেকে হঠাৎ করে একদিন বাঙালি সংস্কৃতি সোদাইলে তো ডাইজেস্ট সমস্যা হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়!!!সারাদিন বাঙালি সংস্কৃতি পালন করে ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে সন্ধা বেলা রিফ্রেশমেন্ট এর জন্য ৫ স্টার হোটেলে লালনীল বাতির নিচে আইটেম গানের তালে শরীরটা না দোলাতে পারলে পহেলা বৈশাখ বড্ড বেশি পানসে হয়ে যায়,ওহ্ ডিজগাস্টিং ব্লাডি বেঙ্গলি কালচার ! একটু পর যখন নাচতে নাচতে ক্লান্ত তখন একটু ভোদকা, শ্যাম্পেইন, রেডওয়াইন, কিংবা হোইস্কি হলে সংস্কৃতিটা আরেকটু ভালোভাবে পালন করা যায়!!!
২| ০৮ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৮:২৬
অনামিকাসুলতানা বলেছেন: লেখাটা ভাল লাগলো ।
তবে আমি পান্তা ইলিশ দিয়ে খেতে খুবই ভালবাসি।
৩| ০৮ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:১০
পাজী-পোলা বলেছেন: সংস্কৃতি বলতে কী বোঝায়? কোন দেশের সংস্কৃতি আসে কোথা থেকে? মানুষ যখন গুহায় ছিলো তখন কোন সংস্কৃতি ছিল? লালপানির বদলে সাদাপানি হলে কি বাঙালি সংস্কৃতি ঠিক থাকবে?
৪| ০৮ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ৯:৫৮
বিটপি বলেছেন: জ্বি না, আমাদের সংস্কৃতির অংশ না। এপ্রিল মাসে মোটামুটি ভালোই গরম পড়ে। এঈ গরমে পান্তা ভাত টালা মরিচ, পেঁয়াজ আর লবণ দিয়ে চটকে খেতে দারুণ মজা লাগে। সাথে এক পিস ইলিশ মাছ হলে তো বাদশাহী খাবার। আমি মাঝে মাঝেই খাই। কিনতু এপ্রিলের ১৪ তারিখে এই খাবার কখনোই খাই না।
৫| ০৮ ই মার্চ, ২০২৩ সকাল ১০:৫৭
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: আইন করে নিষিদ্ধ হোক
৬| ০৮ ই মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:০৮
নতুন বলেছেন: দুনিয়াতে সব দিবসের পেছনেই কোন না কোন ব্যবসায়ী উদ্দেশ্য আছে...
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ৩:০৯
কামাল১৮ বলেছেন: ভালো লিখেছেন।ইতিহাস সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন বিশ্লেষণ ভালো লাগলো।