নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি বর্তমানে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগে লিখি। আমার সকল লেখা আমি এই দুটি ব্লগেই সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। এই দুটি ব্লগের বাইরে অনলাইন পোর্টাল, লিটল ম্যাগাজিন এবং অন্য দু-একটি ব্লগে কিছু লেখা প্রকাশিত হলেও পরবর্তীতে কিছু কিছু লেখা আমি আবার সম্পাদনা করেছি। ফলে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগের লেখাই আমার চূড়ান্ত সম্পাদিত লেখা। এই দুটি ব্লগের বাইরে অন্যসব লেখা আমি প্রত্যাহার করছি। মিশু মিলন ঢাকা। ৯ এপ্রিল, ২০১৯।
যাচ্ছিলাম আমের আড়তে। প্রধান সড়কের কাছে যেতেই দেখি রাস্তা বন্ধ, চৌরাস্তায় অবস্থান নিয়েছে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। রিক্সা ছেড়ে দিয়ে ভাবলাম রাস্তার ওপাড়ে গিয়ে আবার রিক্সা নেব। রাস্তা পার হচ্ছি, বামদিক থেকে স্লোগান উঠল, ‘তুমি কে আমি কে/ রাজাকার রাজাকার।’
কয়েকবার স্লোগান দেবার পর একজন শিক্ষার্থী দৌড়ে এসে স্লোগানরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলল, ‘এই স্লোগান দিও না।’
স্লোগান থামল। আমি মুখগুলো পড়ার চেষ্টা করলাম।
টানা পনের বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। নেতাকর্মীরা নানাভাবে মুক্তিযুদ্ধ বিকিয়ে আখের গোছাতে ব্যস্ত। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্তি আর বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষে হাজার কোটি টাকার বিকিকিনি করেছে নেতাকর্মী ও কিছু সাংবাদিক। বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবসে চাঁদাবাজি করে নেতারা। অথচ আসল কাজটি করতেই ব্যর্থ হয়েছে। নতুন প্রজন্মের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ছড়িয়ে দিতে পারেনি। হাজার হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত করেছে। বিএনপির মতোই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীারাও মুক্তিযোদ্ধাদের ভূমি দখল করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ে হাত তুলেছে। আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের এখন চেনা যায় না! ২০০১-২০০৬ সালে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের যেমন উশৃঙ্খল ও মারমুখী দেখেছি, এখনকার ছাত্রলীগও তেমন। সামন্ত জমিদারের লাঠিয়াল বাহিনীর মতো এদের কর্মকাণ্ড!
দায় মুক্তিযোদ্ধাদেরও আছে। কাদের সিদ্দিকীর মতো শত শত মুক্তিযোদ্ধা বিপথগামী হয়েছে, দুর্নীতি করেছে। মানুষের মনে বিতৃষ্ণার জন্ম দিয়েছে। এদের দৌরাত্মে সৎ মুক্তিযোদ্ধারা হালে জল পায়নি। ব্যক্তিস্বার্থের কারণে মুক্তিযোদ্ধারা সম্মিলিত শক্তি হয়ে থাকতে পারেনি। বিপুল সংখ্যক মানুষের কাছে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ এখন হাসির বস্তু। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা নিজেদের রাজাকার বলছে! স্বাধীনতাবিরোধীরা এই দিনটির জন্য এতদিন অপেক্ষা করছিল। এই দিনটি দেখার জন্য স্বাধীনতাবিরোধীরা অনেক লড়াই করেছে। ওরা আজ সফল।
মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও সংস্কৃতিবান্ধব রাষ্ট্র গঠনের চেষ্টা না করে আওয়ামী লীগ হেফাজতে ইসলামের সাথে আপোস করেছে। মুসলমানদের খুশি করতে ৫৬০ টি মডেল মসজিদ করেছে। এসবই এখন বুমেরাং হয়ে আওয়ামী লীগের দিকেই ফিরে আসতে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগের এই সহজ হিসাবটি বোঝা উচিত ছিল যে- তারা বিপুল সংখ্যক মানুষের অনিচ্ছা সত্ত্বেও পাকিস্তানের সাথে লড়াই করেছে, স্বাধীনতাযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে। দেশের সব মানুষ রাজাকার-আলবদর হয়নি। রাজাকার-আলবদর না হওয়া মানুষের বিরাট অংশ পাকিস্তানের সাথেই থাকতে চেয়েছিল। ফলে ‘ইসলামী রাজনীতি’তে আওয়ামী লীগ কখনোই বিএনপি-জামায়াত-হেফাজতের সাথে পারবে না। কারণ, তাদের গায়ে পাকিস্তান ভাঙার গন্ধ লেগে আছে। আওয়ামী লীগের হাঁটা দরকার ভিন্ন পথে। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে সংস্কৃতিবান্ধব সমাজ ও রাষ্ট্র নির্মাণের পথে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সেই পথে না হেঁটে ‘ইসলামী রাজনীতি’র দিকে হেঁটেছে। আওয়ামী নেতৃত্ব কি জানে যে হাটে-মাটে-ঘাটে সর্বত্র মোল্লা ও ওয়াজকারীরা তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষদের ক্ষেপিয়ে তোলে? কে জানে! আওয়ামী লীগের আমলেই মানুষ সবচেয়ে বেশি সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে। সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড সংকুচিত হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড করতে গেলে প্রশাসন অনুমতি দিতে চায় না, আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরাও বাধা দেয়। যদিবা অনুমতি দেয় তো চাঁদা চায়। যাত্রা, পুতুলনাচ, পালাগান, সার্কাস করতে গেলে হয়রানি হতে হয়। অথচ রাতভর ওয়াজ চলে বিনা বাধায়। তৃণমূলের সংস্কৃতিকর্মীরা আক্রমণের শিকার হয়। বাউলরা প্রহৃত হন। আওয়ামী লীগ সরকার দেখেও দ্যাখে না। ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মানিকগঞ্জের গোবিন্দল গ্রামের মতো ইসলামী গ্রাম গড়ে উঠেছে- যেখানকার প্রায় সব ছেলেমেয়ে মাদ্রাসায় পড়ে, কোনো সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড করতে দেওয়া হয় না। আওয়ামী লীগকে বুঝতে হবে যে- এই দেশে সংস্কৃতি না টিকলে, আওয়ামী লীগও টিকবে না। কারণ তারা মুসলমানের ‘পেয়ারের পাকিস্তান’ ভেঙেছে!
এই দেশে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড সংকুচিত হয়ে, মোল্লাতন্ত্রের যত বিস্তার ঘটেছে, আওয়ামী লীগের ভোট তত কমেছে। দিন দিন আরও কমবে। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিনের জন্য ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে।
মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে সংস্কৃতিবান্ধব সমাজ ও রাষ্ট্র গড়তে না পারার ফলেই আজকের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মুখে শুনতে হচ্ছে এই স্লোগান- ‘তুমি কে আমি কে/ রাজাকার রাজাকার।’
ঢাকা।
১৬ জুলাই, ২০২৪
১৬ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৫
মিশু মিলন বলেছেন: সবারই উচিত ভালো হওয়া।[/sb
হলে তো দেশটার এই অবস্থা হতো না। ধন্যবাদ।
২| ১৬ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৪:২৫
কাঁউটাল বলেছেন: হাউয়ামী লীগ
১৬ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৬
মিশু মিলন বলেছেন: শব্দ বিকৃত না করে আওয়ামী লীগের কোনো অভিযোগ থাকলে সেটা নিয়ে লেখা উচিত।
৩| ১৬ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: কি লিখলেন ভাই,
কিছুই বুঝলাম না, সব মাথার উপর দিয়ে গেল।
তবে এতটুকু বুঝেছি - আমজনতার সামনে ভয়াবহ বিপদ। শাসকদল ও তাদের সুবিধাভোগী ব্যতীত।
১৬ ই জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৭
মিশু মিলন বলেছেন: না বোঝার মতো তো কিছু লিখিনি। সামনে কেন, আমরা তো এখনই বিপদের মধ্যে আছি।
৪| ১৬ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:৩৯
কামাল১৮ বলেছেন: সরকারের উচিত ছিলো, সকল শ্রেনির পাঠ্য পুস্তকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংযোজন করা।তবেই নতুন প্রজন্ম জানতে পারতো মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে।রাজাকাররা কি করেছিলো কিছুই তারা জানে না।জানলে আর যাই বলুক আমি রাজাকার বলতো না।
১৬ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১০:৪৭
মিশু মিলন বলেছেন: ঠিকই বলেছেন। এই দায় আওয়ামী লীগ সরকারের। সরকার মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে পারেনি।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৯
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
বাজে কাজ।
সবারই উচিত ভালো হওয়া।