নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মিশু মিলন

মিশু মিলন

আমি বর্তমানে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগে লিখি। আমার সকল লেখা আমি এই দুটি ব্লগেই সংরক্ষণ করে রাখতে চাই। এই দুটি ব্লগের বাইরে অনলাইন পোর্টাল, লিটল ম্যাগাজিন এবং অন্য দু-একটি ব্লগে কিছু লেখা প্রকাশিত হলেও পরবর্তীতে কিছু কিছু লেখা আমি আবার সম্পাদনা করেছি। ফলে ইস্টিশন এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগের লেখাই আমার চূড়ান্ত সম্পাদিত লেখা। এই দুটি ব্লগের বাইরে অন্যসব লেখা আমি প্রত্যাহার করছি। মিশু মিলন ঢাকা। ৯ এপ্রিল, ২০১৯।

মিশু মিলন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইছামতির জলে বিষন্ন নক্ষত্র

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৪

ইছামতির বুক

কালোর ওপর হলুদ ছোপগুলো যেন তুলি থেকে ছিটকে পড়া রঙ, বেশ স্বাস্থ্যবান একটা জলঢোঁড়া অনায়াসেই ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করলো। বিনা পাসপোর্ট, বিনা ভিসা, বিনা ট্রাভেল ট্যাক্সে! জলঢোঁড়াটির আগমন টের পেতেই তড়িৎ গতিতে ভারতের দিকে ছুটলো এক ঝাঁক রুপালি পুঁটিমাছ। মেঘের শার্সি ভেদ করে সবে জলের আয়নায় তাকিয়েছে সূর্য, জলঢোঁড়ার জলকাটা ঢেউয়ে সূর্যের প্রতিবিম্ব যেন হাত ফসকে পড়া ভাঙা আয়নায় রাগী মানুষের মুখ!

কূলে ভেড়ানো নৌকার গলুইয়ে বসে নদীতে ছিপ ফেলে শালপাতার বিড়ি ফুঁকছিল মধ্য ত্রিশের জহির, লক্ষ্মীট্যারা চোখের দৃষ্টি জলঢোঁড়ার ওপর পড়তেই ডানে কাত হয়ে আঁজলায় জল তুলে ছুড়ে দিলো জলঢোঁড়াটির দিকে। অপ্রত্যাশিত বাধা পেয়ে জলঢোঁড়াটি অবশ্য ভারতে ফিরে গেল না; কিছুটা উত্তরে সরে গিয়ে বাংলাদেশের-ই কলমিলতার ঝোপ- জলজ উদ্ভিদের ভেতর হারিয়ে গেল। ঝোপের ভেতর থেকে জলে লাফিয়ে পড়লো একটা আতঙ্কিত ব্যাঙ।

এখানে ক্ষীণকায়া ইছামতি উত্তর থেকে এসে কিছুটা কোমর বেঁকিয়ে চলে গেছে দক্ষিণে। পুবে যশোরের পুটখালী, পশ্চিমে উত্তর চব্বিশ পরগণার আঙড়াইল। কাঁটাতারের বিভেদ গড়ে ওঠে নি এখানে, অরক্ষিত সীমান্ত। তবে দু-পারের মানুষ জানে এক অদৃশ্য কাঁটাতারের বিভেদ গড়ে দেওয়া হয়েছে ইছামতির বুকে। ইছামতির বুকের একপাশ বাংলাদেশ, আরেক পাশ ভারত। এক স্তন লাল-সবুজ, আরেক স্তন সাদা-সবুজ-গাঢ় জাফরান! মানুষ জানে, কিন্তু ইছামতি কি জানে!

পাতার বিড়ির শেষাংশ ইছামতির বুকে ছুড়ে দিলো জহির। কানটুপিটা টেনে কান ঢেকে নিলো ভাল মতো। উত্তরে হাওয়া বইছে। বিদায়বেলায় পিতৃগৃহ ত্যাগ করার সময় কনের তীব্র আহাজারি-কান্নাকাটির মতো শীত এখন!
সেই ভোরবেলা একটা দল পার করেছে জহির। তারপর থেকে নদীতে ছিপ ফেলে বসে আছে। পেয়েছে গোটা সাতেক পুঁটি আর একটা পোনামাছ। শীতে মাছেরা আদার খায় না সহজে। অর্ধেক জলে ডুবিয়ে রাখা খালুইয়ের মধ্যে শঙ্কায় ছুটোছুটি করছে মাছগুলো। বেলা বাড়লে জহিরের নয় বছরের ছেলে জামাল ভাত দিয়ে গেছে। ভাত খেয়ে সে আবার বসেছে ছিপ নিয়ে। এখন দুপুর হতে চললো।
নদীতে ছিপ ফেলে মাছ ধরাটা আসলে অজুহাত মাত্র। তার আসল কাজ মানুষ পারাপার করা। এই পয়েন্টে রোজ তিন-চারশ মানুষ পারাপার হয়। আজ সকাল থেকেই লাইন খারাপ। বিএসএফ এর মেজাজ-মর্জির ওপর লাইন ভাল-খারাপ নির্ভর করে। সীমান্তে খুন-টুন হলে লাইন সহজে ভাল হয় না। বিএসএফ ঘন ঘন টহল মারে বনগাঁ-ঝাউডাঙা রোডে। অবশ্য খুন-খারাবির খবর নেই আজ। তবু লাইনটা ক্লীয়ার হচ্ছে না। লাইন ক্লীয়ার হলে তার কাছে ফোন আসবে দু-পার থেকেই। তখন একটা ধকল যাবে। এ কাজের ধরনই এমন। দিন নেই, রাত নেই যখন তখন মানুষ আর মালামাল পারাপার করতে হয়। ভোর থেকে রাত অব্দি ঘাটেই থাকে সে। আবার কখনও কখনও বুকে জড়ানো স্ত্রীকে ছেড়ে কাঁচা ঘুম থেকে উঠে এসেও শক্ত হাতে ধরতে হয় বৈঠা।

আরেকটা শালপাতার বিড়ি ধরালো জহির। শালপাতার বিড়ি খেতে তার দারুণ লাগে। আবার দামেও সস্তা। দিনে এক প্যাকেট লাগে তার। তবে এপারে পাওয়া যায় না। ওপার থেকে আনতে হয়। সে অবশ্য মাসে একবার বনগাঁ যায়। ওপারের প্যানকার্ড করে নিয়েছে আঙড়াইলের ফুফুর বাড়ির ঠিকানা দিয়ে। বাসের ভেতর বিএসএফ ধরলে প্যানকার্ড দেখালেই মুক্তি; তার বাড়ি তখন পুটখালী নয়, আঙড়াইল। বনগাঁ থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস-পত্র কিনে নিয়ে আসে জহির। সঙ্গে শালপাতার বিড়ি আর দু-চারটে মদের বোতল। প্রায়ই সন্ধ্যার পর বন্ধুদের সাথে নৌকায় বসে সেই বোতলগুলো ভারমুক্ত করে। বন্ধু বলতে চোরা কারবারি আনিস-ফারুক, অবৈধ যাত্রীবাহী এবং অবৈধ মোটর সাইকেল চালক রুবেল, দালালের প্রতিনিধি আক্কাস-দীনবন্ধু আর নারী পাচারকারী হাবিবুল। হাবিবুলকে লোকে চেনে জালি হাবিব নামে। রাতের বেলা পান করতে করতে বোতল ফুরিয়ে গেলে আক্কাস দেশভাগের জন্য দায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তাদের বাপ-দাদাদের চৌদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করে। তখন রুবেল বলে, ‘দেশটা ভাগ হলো বলেই না আমরা পেটে দুটো খেতে পাচ্ছি। নইলে এই আকালের দিনে কী খেয়ে বাঁচতাম ক দিনি!’

‘একন এই রাত্তিরে মদ পাব কনে! দেশ ভাগ না হলি মতিনের মুদি দোকানে সয়াবিন তেলের বোতলের পাশে মদের বোতলও থাকতো। খাও ইচ্ছে মতোন! আর শালা একন মদ আনতি বনগাঁ ছোটো। একানকার বালের কেরুর যা দাম, এক বোতল মানষির রক্তের দামও অতো না!’ আক্কাসের গলা থেকে আফসোস ঝরে পড়ে।

চোরাকারবারী আনিস বলে, ‘হ্যারে হাবিব, তাজুল চাচার ছোট মাইয়েডারে কোন বনবাসে রাইখে আসলি ক দিনি? একনও ডাঁটো হয় নি। কচি মাইয়ে। চোখের সামনে দিয়ে ছটফট করে ঘুরে বেড়াতো। ফাইন লাগতো!’
‘হু...ফাইন লাগতো! এই তোর ফাইন লাগায় কী ওর পেট ভরতো! খালি তো চোখ দিয়ে চাটে চাটে দেখতি, হাতে কোনোদিন পাঁচটা টাকা গুঁজে দিয়েছিস? আমি রুটি রুজির ব্যবস্থা করে দিলাম। একন একজনের কামাইতে পুরো সংসার ভাল মতো চলতিছে।’
‘একন আছে কনে?’
‘সোনাগাছি, জমায়ে সংসার করতিছে! একন ওরে দেকলি তোরা চিনতি-ই পারবিনে। ওকানে তো কি সব ওষুধ-ফোষুধ খাওয়ায় ওগের! দুই দিনেই ফুলে-ফেঁপে সার দেওয়া ডাঁটার মতোন হয়ে যায়। আমি তো আবার দুডে মুরগি নিয়ে গিছিলাম। ওরে দেকে তো চক্ষু চড়ক গাছ! ছিল ছেঁড়া ন্যাতা, হয়ে গেছে জামদানী! সেইরম মাল! আমারে দেকে এট্টু চোখের জল ফেললো। তারপর সাত হাজার টাকা দিয়ে কোলো, আব্বাকে দিও। এক হাজার কমিশন কেটে নিয়েছি।’
‘তুই শালা সত্যিই জালি!’ জহির বলে।
সেদিন গল্পে গল্পে ওদের মাঝরাত পেরিয়ে যায়।
ফাতনাটা হাবুডুবু খাচ্ছে। লক্ষ্মীট্যারা চোখের দৃষ্টি আঁকড়ে ধরেছে ফাতনাটাকে। তখনই ফোনটা বেজে উঠলো।

লুকোচুরির গল্প, শূন্যতা অল্প

বনগাঁর সেভেন্টি এইট বাসস্ট্যান্ডের টিকেট কাউন্টারের পিছনের আধো আলো-আধো ছায়া ঘরটিতে যাত্রীরা অধীর অপেক্ষায় কেউ পায়চারী করছে, কেউ সিগারেট ফুঁকছে, কেউ বসে আছে, কেউ চেনা অথবা অচেনা লোকের সাথে গল্পে মশগুল। কেউবা পাশের দোকান থেকে শেষবারের মতো টুকিটাকি কিছু কিনে ব্যাগের খালি জায়গাটুকু ঠেসেঠুসে ভরাট করছে। রাষ্ট্রব্যবস্থা মতে এদের ভারতের মাটিতে থাকার বৈধতা নেই। অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিল, এখন বাংলাদেশে ফিরবে। আবার কেউ কেউ বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করবে। বাংলাদেশে ফেলে আসা স্বজনদের কাছে কয়েকটা দিন কাটিয়ে আবার ভারতে ফিরবে।

দালালরা যার যার যাত্রীর হাতে এক টুকরো কাগজ ধরিয়ে দিয়ে গেছে, তাতে ওপারের দালালের নাম এবং ফোন নম্বর লেখা। দালালরা বাইরে যায় আবার কিছুক্ষণ পর পর এসে খোঁজ নেয় নতুন কেউ এলো কিনা! কালো বেটে মতো প্রদীপ নামে এক দালালকে একজন ষাটোর্ধ বৃদ্ধ জিজ্ঞেস করলেন, ‘আর কতক্ষণ বসায়া রাকপা?’
বৃদ্ধ অসুস্থ। ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন নাতির সঙ্গে। প্রদীপ বিরক্ত চোখে বৃদ্ধের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘আরে কাকা, বলেছি তো লাইন খারাপ আছে।’
‘সেই বিয়ানবেলা থেইকে কোচ্ছো লাইন খারাপ, লাইন খারাপ। কতোক্ষণে লাইন ভাল হবি?’
উত্তর না দিয়ে ফোনে কথা বলতে বলতে বাইরে চলে গেল প্রদীপ।

এমনিতেই ঘরটায় আলো কম, তার ওপর অসমতল মেঝের মাটি স্যাঁতসেঁতে! মেঝের সিমেন্ট কোন কালে উঠে গেছে কে জানে! ঘরটির দরজা-জানালায় পাল্লা নেই, হয়তো ছিল কখনও। তবু ভেতরে অন্ধকার, জানালার সামনে দোকান উঠেছে। উত্তরের দরজার বাইরে বারান্দা, ওখানে চেয়ার-টেবিলে বসে লোকাল বাসের টিকিট বিক্রি করছে দু’জন লোক। আর দক্ষিণের দরজার ওপাশের প্রসাবখানা থেকে ক্ষণে ক্ষণে ঢুকে পড়ছে প্রসাবের গন্ধ! সঙ্গত কারণেই ঘরটায় বিস্তর মশার বসতি। ত্রিশের যুবক অনিন্দ্য গোটা দুই মশার কামড় খেয়ে এই অলিখিত বন্দীশালা থেকে নিজেকে মুক্ত করে বাসস্ট্যান্ডের খোলা জায়গায় গিয়ে একফালি রোদের নিচে দাঁড়ালো। বাসস্ট্যান্ডের পাশেই বাজার। চারপাশটা খুঁটিয়ে দেখতে লাগলো সে। এই বর্ডারকে কেন্দ্র করে কতো রকম মানুষের কতো রকম পেশাই না গড়ে উঠেছে! বছর পুঁচিশের এক যুবক এসে অনিন্দ্যকে বললো, ‘দাদা, আপনি কী বরিশাল যাবেন?’
অনিন্দ্য ভাল করে দেখলো যুবককে। যুবকের হাতে ছোট্ট একটা প্যাকেট। বললো, ‘কেন বলুন তো?’
‘বরিশালের কাউকে পেলে আমার বাবার জন্য এই ওষুধের প্যাকেটটা পাঠাবো।’ যুবকের সরল উত্তর।
‘না ভাই, আমি বরিশাল যাব না।’

বরিশালের লোকের খোঁজে চলে গেল যুবকটি। আরও কয়েকজন মানুষ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, বেশভূষা দেখে বোঝা যাচ্ছে তারাও অবৈধ যাত্রী। একটি মোটর সাইকেল এসে থামলো। চালকের পিছনে দু’জন বৃহন্নলা। একজনের পরনে শাড়ি, অন্যজনের জিন্স-শার্ট। জিন্স-শার্ট পরা বৃহন্নলার কাঁধে বেশ ভারী ব্যাগ। দু’জনই মোটর সাইকেল থেকে নামলো। তারপর জিন্স পরিহিত জন ব্যাগটি বেঞ্চের ওপর নামিয়ে পকেট খুলে কিছু বের করলো। হাতের তালুতে রেখে প্রক্রিয়া সম্পাদনের সময় বোঝা গেল-খৈনি! তখনই একজন দালাল এসে সবাইকে তাড়া দিলো অপেক্ষমাণ একটি বাসে ওঠার জন্য।

বাস চলতে লাগলো অতি আলস্যে, যেন কোন অজানার উদ্দেশ্যে যাত্রা! দু’পাশে ঘন গাছপালা-জনবসতি। অনিন্দ্য’র ঝিমুনি এসে গেল, কান্ত শরীর। ঝিমুনি ছুটে গেল বাসটি এক জায়গায় এসে থামলে। জায়গাটা চেক পোস্ট। দু’জন বিএসএফ জওয়ান বাসের দুই দরজা দিয়ে উঠে জেরা শুরু করলো যাত্রীদের; সামনের জন হিন্দিতে, পিছনের জন বাংলায়। অনিন্দ্য বসেছে বাসের মাঝামাঝি জায়গায়। দু-দিক থেকে জওয়ানেরা একটু একটু করে এগোচ্ছে আর অনিন্দ্য’র বুক দুরু দুরু করছে। দালাল তো একবারও বললো না যে বাসে বিএসএফ চেক করবে! সে ভেবেছিল এমন জায়গা দিয়ে নিচ্ছে যে বিএসএফ এর মুখোমুখি হতে হবে না! এখন জিজ্ঞেস করলে সে কি উত্তর দেবে! পিছনে জেরা চলছে-
‘বাড়ি কোথায়?’
‘বিরাটী।’
‘কোথায় যাবি?’
‘ঝাউডাঙা।’
‘আইডি কার্ড দেখা।’
‘আই ডি কার্ড সাথে নাই।’
‘ঝাউডাঙা কী করতে যাচ্ছিস?’
‘আমার বোনের বাড়ি যাতেছি।’
‘যাতেছি’ বলার পর আর কিছু বলার সুযোগ দিলো না জওয়ানটি। বললো, ‘ওঠ, নিচে নাম।’
‘নামবো ক্যা?’
‘ওঠ, নিচে নাম।’
‘স্যার, আমি সত্যি কোতেছি ঝাউডাঙা বোনের বাড়ি যাব।’
‘ওঠ।’ এবার ধমকালো জওয়ান। ছেলেটি কাঁদো কাঁদো হয়ে নিচে নামলো জওয়ানের সাথে।

এই শীতেও অনিন্দ্য ঘামতে লাগলো। তবু ভাল একটা নাম জেনেছে-ঝাউডাঙা। সামনের জওয়ান এসে কিছু জিজ্ঞাসা করলে সেও ঝাউডাঙা যাবার কথা বলবে। শুধু শব্দ প্রক্ষেপণে একটু সতর্ক থাকতে হবে! অবশ্য আশার কথা এই যে সামনের জওয়ানটি অবাঙালী, ঘটি-বাঙাল ভাষার ভিন্নতা তার বোঝার কথা নয়, ভুলভাল হিন্দি আর বাংলা মিশিয়ে কি বলবে তা মনে মনে আওড়াতে লাগলো সে। তবে ভাগ্য ভাল সামনের জওয়ানটিও নেমে গেল। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো অনিন্দ্য এবং আরো অনেকেই!

রাস্তার দু-পাশে ঘন বাঁশঝাড়। জঙ্গলের মতো একটা জায়গায় এসে বাস থামলো। হেলপার বললো, ‘যারা বাংলাদেশে যাবেন তারা নামুন। নেমে দৌড় দিন।’

বাস থেকে অর্ধেক যাত্রী নেমে পড়লো। নেমেই যে যার মতো দৌড়তে লাগলো বাঁশঝাড়ের নিচ দিয়ে পায়ে চলা সরু রাস্তা ধরে। অনিন্দ্য, বৃহন্নলা দু’জন, তিনজন মাঝ বয়সী মহিলা, একজন বিবাহিত তরুণী, একজন যুবক, একজন প্রৌঢ়, তিনজন যুবতী, একজন বৃদ্ধ এবং তার সদ্য যুবক নাতি। সবাই দৌড়তে শুরু করলো, কেবল অসুস্থ বৃদ্ধকে ধরে অসহায় নাতিটি যতোটা দ্রুত সম্ভব হাঁটতে হাঁটতে বারবার পিছনে তাকিয়ে বিপদের সম্ভবনা খতিয়ে দেখার ফাঁকে ফাঁকে বৃদ্ধকে তাগাদা দিতে লাগলো।

ঘাটে নৌকা নিয়ে প্রস্তুতই ছিল জহির, সবার উঠতে যতোক্ষণ। যে দশ-বারোজন আগে এসে নৌকায় উঠলো, তাদের নিয়ে নৌকা ছাড়লো সে। বাকিদের পার করবে পরের বার। নৌকার যাত্রীদের কারো মুখে কোনো কথা নেই। কেবল দ্রুত নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দ হচ্ছে! দৌড়ে এবং ভয়ে হাঁপিয়ে উঠেছে সবাই। কারো কারো চোখে মুখে আতঙ্কের আঁচ!

নৌকা থেকে নেমেই জহিরের নির্দেশ মতো আবার দৌড় শুরু করলো সবাই! মাঠটা পার হতেই বটগাছের আড়াল থেকে দরবেশের মতো একজন দালালদের প্রতিনিধি বেরিয়ে এলো। তার মুখেও একই কথা, ‘দৌড়ান, দৌড়ান...।’
একজন গরু বাঁধছিল মাঠে, সে-ও বললো, ‘দৌড়ান, দৌড়ান......।’

সবার মুখে শুধু একই বোল দৌড়ান দৌড়ান, অথচ ফুসফুস আর ধকল সইতে পারছে না! দৌড়তে দৌড়তে একটা বাড়ির সামনের মেহগনি বাগানে এসে থামলো সবাই। এখানে যাত্রীদের জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে দশ-বারোটি মোটর সাইকেল। যাক, আর তবে দৌড়তে হবে না! হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো সাবাই। কিছুক্ষণের মধ্যেই দ্বিতীয়বার নৌকায় পার হওয়া যাত্রীরা চলে এলো। তখনই আরেক বাইক চালক এসে নির্দেশ দিলো, ‘লুকোন সবাই, লুকোন। ঐ ঘরে যান, বিজিবি আসতিছে।’

অগত্যা ঐ ঘরের উদ্দেশে আবার দৌড়! একে একে সবাই ঘরে ঢুকে দরজাটি আটকে দিলো। ঘরটি গোয়াল ঘর! গবাদী-পশুর মল-মূত্রের ঝাঁঝালো গন্ধ পেটে পাঁক দিচ্ছে। কিন্তু কিছু করার নেই। নিঃশব্দে ঘাপটি মেরে রইলো সবাই। প্রৌঢ় লোকটি উঁকি দিয়ে বাইরেটা দেখতে যেতেই একজন মাঝ বয়সী মহিলা তাকে মুখ ঝামটা দিলো। এতোক্ষণে বোঝা গেল তারা স্বামী-স্ত্রী। অথচ দৌড়নোর সময় মনে হচ্ছিল কেউ কাউকে চেনেই না!

বিজিবি আসার কোনো সম্ভাবনা নেই দেখে প্রায় মিনিট বিশেক গোয়ালবাস শেষে দালালদের ডাকে বেরিয়ে এলো সবাই। যে যার আপনজনের সাথে বাইকে উঠে পড়তে লাগলো। কেবল একা হয়ে পড়লো অনিন্দ্য আর বিবাহিত তরুণী। ছিপছিপে এক বাইকচালক তাদের দু’জনকে বাইকে উঠতে বলতেই অনিন্দ্য বললো, ‘আমার সঙ্গে একজন পুরুষ দিলে ভাল হয়। কাঁধের ব্যাগ নিয়ে আমাকে পিছনে বসতে হবে।’
ততোক্ষণে পুরুষের ঘাটতি পড়ে গেছে। তরুণীটি বললো, ‘সমস্যা নেই, আপনার ব্যাগ আমার কাছে দিয়েন।’
অনিন্দ্য জানালো, ‘ব্যাগটা অনেক ভারী।’
পুনর্বার জানালো তরুণী, ‘সমস্যা নেই। আপনি দিন আমাকে।’
সমস্যা যে নেই তা তরুণীর মজবুত শারীরিক গঠন দেখেই বুঝতে পেরেছে অনিন্দ্য, তবু নিছকই ভদ্রতা করে বলা!

অতঃপর বাইক চলতে শুরু করলো এ বাড়ির উঠোন, ও বাড়ির আনাচ-কানাচ দিয়ে। একসময় উঠলো মাটির রাস্তায়। উচু-নিচু গর্ত আর ধুলোময় রাস্তা। তরুণীর কাঁধে অনিন্দ্য’র ব্যাগ। বাঁ-হাতে অনিন্দ্য’র কাঁধ আর ডান হাতে পেট জাপটে ধরেছে তরুণী। না ধরে উপায় নেই, নইলে ছিটকে পড়ে যাবে ধুলোময় অসমতল রাস্তায়! কিছুক্ষণ পরপরই ঝাঁকুনি খেয়ে অনিন্দ্য’র পিঠের ওপর ঝুঁকে পড়তে লাগলো সে। এই প্রথম অনিন্দ্যকে কেউ এভাবে জাপটে ধরলো, এই প্রথম তার পিঠে এমন কোমল জোড়া মহুয়া ফুলের ছোঁয়া লাগলো!

অসমতল মাটির রাস্তায় ধুলো উড়িয়ে ক্ষিপ্র গতিতে ছুটতে লাগলো বাইক। রাস্তার দু’পাশে অসংখ্য খেঁজুরগাছ, কোনোটায় হাঁড়ি ঝুলছে, কোনোটার নলে বসে তৃষ্ণা নিবারণ করছে জোড়া জোড়া অথবা নিঃসঙ্গ শালিক। রাস্তার দু’পাশের জমির মোলায়েম আদুরে কাদায় ধানের চারা রোপন করছে কৃষকেরা। অনিন্দ্য সবকিছুই দেখলো, আবার কিছুই যেন দেখলো না! তরুণী জাপটে ধরে আছে তাকে। না, অপরিচিত বিবাহিত তরুণীর ঘনিষ্ঠ স্পর্শে অনিন্দ্য’র মনে কোনো কু-ভাবনা উঁকি দিলো না, কাম ভাব জাগলো না। বরং হৃদবৃক্ষে একটা নিঃসঙ্গ কাঠঠোকরা ঠোকরালো অবিরাম! বুকের ভেতরটা ধু ধু তেপান্তরের মতো খাঁ খাঁ করে উঠলো। তেপান্তরের শূন্যতা ফুঁড়ে হু হু করে ঢুকলো শীতল বাতাস। চোখ দুটোতেও শূন্যতা! আহা, এই তরুণীর মতো একজন মনের মানুষ যদি তার থাকতো! যদি মনের কথা মনের ব্যথা সে বুঝতো; তার কোমল মহুয়া ফুলের ছোঁয়ায়-ছোঁয়ায়, ঘ্রাণে-ঘ্রাণে মাতোয়ারা হতে পারতো!

ইছামতির জলে বিষন্ন নক্ষত্র

বটগাছের নিবিড়-গম্ভীর ছায়া থেকে একে একে চৌদ্দজন মানুষ বেরিয়ে এলো নীল দেওয়া সাদা থান কাপড়ের মতো জ্যোৎস্না মোড়ানো মাঠটিতে, সবার হাতেই পোটলা-পুটলি। চতুর্দিকে কানে তালা লাগানো প্রকৃতির খঞ্জনি-ঝিঁঝিপোকার ডাক। পিছন পিছন আসা একটি কুকুরের নিচুস্বরে ঘেউ ঘেউ কিংবা সামান্য দূরের গৃহস্থবাড়ির নারকেল গাছ থেকে ইঁদুরে কাটা কচি ডাব ভূ-পাতিত হবার শব্দেও বুকের মধ্যে ছ্যাঁৎ করে উঠলো কারো কারো! এমনকি মানুষের পায়ের আওয়াজ পেয়ে দ্রুত পলায়নপর চিকার চিঁ চিঁ শব্দেও আঁৎকে উঠলো কেউ কেউ!

দালালদের প্রতিনিধি ছেলেটি তাড়া দিলো, ‘দৌড় লাগান, দৌড় লাগান। জ্যোৎস্না রাত তো, মেলা দূরের থেকেও দেকা যাচ্ছে।’
কেউ কেউ হাঁটার গতি বাড়ালো, ছেলে ছোকরারা দৌড়তে শুরু করলো। প্রত্যেকেরই হাতে, কাঁধে, কাঁখে, মাথায় ভারী ব্যাগ। দলটির মধ্যে একই পরিবারের সদস্য আছে নয় জন। বিমল-শ্যামল দুই ভাই, তাদের স্ত্রী, বৃদ্ধ মা, বিমলের দুই ছেলে-এক মেয়ে আর শ্যামলের এক ছেলে।

পরিবারটির বাড়ি ছিল যশোরের অভয়নগর, ভৈরব নদের পাড়ে চাঁপাডাঙা গ্রামের মালোপাড়ায়। পরিশ্রমী দু-ভাইয়ের দু-খানা টিনের ঘর ছিল। নিজস্ব জাল-নৌকা ছিল। ছিল দুধেল গাই আর ছোট্ট একটা হাঁসের খামার। হয়তো বনেদীয়ানা ছিল না, কিন্তু দুই ভাই আর তাদের স্ত্রীদের অকান্ত পরিশ্রমে অভাব নামক কুৎসিত বাতাস পরিবারটিতে ঢুকতে পারে নি কখনও।

এই সুখ-স্বচ্ছন্দে কাটানো পরিবারটি এক রাতেই পথে বসে গেছে! টিনের ঘর-গোয়াল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। জাল পুড়েছে, পুড়েছে হাঁসের খামার। হাঁস পোড়া গন্ধে মালোপাড়ার বাতাসও হাঁফিয়ে উঠেছিল। নৌকাখানা কুপিয়ে ফালা ফালা করে রেখেছিল ভৈরব নদের পাড়ে। কেউ-ই কিচ্ছুটি করতে পারে নি। প্রাণ বাঁচাতে পরিবার-পরিজন নিয়ে তারা কোনো রকমে সাঁতরে আশ্রয় নিয়েছিল ভৈরব নদের অপর পাড়ে। মানুষের আকৃতিতে কয়েকশো হিংস্র পশুর তা-বে নিঃস্ব হয়ে গেছে গোটা মালোপাড়ার মানুষ!

সকালে যখন ভয়ে ভয়ে অন্য সকলের সঙ্গে বিমল-শ্যামল মালোপাড়ায় ফিরেছিলো, তখন মালোপাড়া শ্মশান! গোয়ালের চালের ফাঁকে যে চড়–ইয়েরা বাসা বানিয়েছিল তারাও ঘর ছাড়া মালোপাড়ার মানুষের মতো। ভীত-সন্ত্রস্ত চোখে আমগাছের ডালে ডালে লাফাচ্ছিল! পোড়া বুক বের করে দাঁড়িয়ে ছিল ঘরের খুঁটিগুলো। খামারে হাঁস পুড়ে মরে ছিল। আধপোড়া জীবন্ত হাঁসগুলোর গলায় সে কি যন্ত্রণার কাতরতা।

গত ভাদ্র মাসে বিমলের বাবা মারা গেছেন। তার দেহ ভস্ম পুটলিতে করে রেখে দিয়েছিল গঙ্গায় বিসর্জন দেবার জন্য। ভেবেছিল আসছে চৈত্রে ভারতে গিয়ে বাবার দেহভস্ম গঙ্গায় বিসর্জন দিয়ে তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করে আসবে। সেই দেহভস্ম মিশে গিয়েছিল ঘর পোড়া রাশি রাশি ভস্মের সাথে! বিমলের মা পাগলের মতো খুঁজেছিল স্বামীর দেহভস্মের পুটলিটা। পায় নি, হাজার চেষ্টা করেও কোথাও খুঁজে পায় নি প্রিয়তম স্বামীর দেহভস্ম!

তারপর সেই পোড়া ভিটেটাও বেচে দিয়ে জন্মের মতো আজ চলে যাচ্ছে ভারতে। কী দোষ ছিল তাদের? জন্মগতভাবে তারা হিন্দু! তারা এদেশে সংখ্যালঘু! তাই মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক শক্তি জামায়াতে ইসলামীর সন্ত্রাসীদের রোষ আর ত্রাসের শিকার হয়ে পূর্বপুরুষের ভিটেমাটি ফেলে এই দেশান্তর হওয়া!

দলটিতে আছে এক মুসলমান দম্পতি। এরা কলকাতা যাবে ডাক্তার দেখাতে। বাড়ি ঝিনাইদহ। তাই আর উল্টে ঢাকা যায় নি ভিসার জন্য। প্রৌঢ় লোকটির অকাট্য যুক্তি, ‘ঘরের কাছে কলকাতা। বর্ডার পার হয়ে স্টেশনে যায়ে কুড়ি টাকার টিকিট কাটে বনগাঁ লোকালে উঠলি-ই চলে গেলাম। কিডা আবার পয়সা খরচ করে ঢাকা যায় ভিসা করতি!’

দলটির বাকি সদস্য একজন বাউল আর তার সাধন সঙ্গীনি। বটগাছের নিচে দাঁড়িয়ে শ্যামল জিজ্ঞেস করেছিল বাউলকে, ‘আপনাগের বাড়ি কনে?’
বাউল উত্তর দিয়েছিল, ‘আমাদের বাড়ি-ঘর নাইরে বাবা! পথই আমাদের বাড়ি, পথেই আমাদের সংসার! আজ কুষ্টিয়া, নড়াইল, যশোর তো কাল নদীয়া, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া।’

একে একে সবাই নৌকায় উঠলে নৌকা ছাড়লো জহির। বিমলের বউ মুখে আঁচল চেপে মৃদুস্বরে কাঁদতে লাগলো। বাংলাদেশের ভূমি ছেড়ে পা রেখেছে নৌকায়, একটু পর জলসীমাও ছেড়ে যাবে। জন্মভূমির মায়ায় বুকের ভেতর থেকে উথলে উঠেছে ব্যথা। বাউল সঙ্গীনি সান্ত¡না দিলেন, ‘কিসের জন্যে কাঁদিস রে মা! কিছুই তো সঙ্গে করে আনিস নাই, যাবার সময়ও কিছুই সঙ্গে যাবে না।’

বাউলের কথায় বিবাগীর মন ভরলেও গৃহীর ব্যথা উথলে ওঠে! বিমলের বউয়ের চাপা কান্না সংক্রামিত করলো শ্যামলের বউকেও। নৌকা চলতে লাগলো। বৈঠার ছপ ছপ শব্দ, দু-পারে ঝিঁঝি পোকার খঞ্জনি। তবু যেন সব শব্দ ছাপিয়ে উঠছে এই মানুষগুলোর দীর্ঘশ্বাস আর নিঃশ্বাসের শব্দ! বাউল সঙ্গীনি গুনগুনিয়ে গেয়ে উঠলো-
‘শূূন্য থেকে এসেছ মন
শূন্যতেই মিলাবা
মাঝখানে তে মায়ার জলে
মায়ার সাতার খেলা!
মায়ার ঘোরে, দেহের জোরে
মিছে মোহের খোয়াব দেখা....’

নৌকা কূলে ভিড়তেই বাউল সঙ্গীনির সুর ছাপিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠলেন বিমলের বৃদ্ধ মা! তার আকর্ষিক কান্নায় সবাই হতভম্ব হয়ে গেল!
মানুষগুলো জ্যোৎস্নার সীমানা ছাড়িয়ে গাছতলার অন্ধকারে হারিয়ে গেল। জহির ইছামতির মাঝখানে এসে বৈঠা তুলে রেখে পাটাতনে চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লো। চাঁদটা এখন চোখ বরাবর। সে একটার পর একটা নক্ষত্রে চোখ বুলাতে লাগলো অতিশয় আদরে। আজ অব্দি অনেক মানুষ পার করেছে সে। অনেককে চোখের জল ফেলতে দেখেছে, অনেক অন্যায় দেখেছে, চোরাই মাল-মাদক পার করেছে, হাবিবুল কতো মেয়েকে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে এসে পার হয়েছে তার নৌকায়! কিন্তু কিছুতেই কিছু আসে যায় নি তার। সে মানুষ পার করেছে, বিনিময়ে পেয়েছে টাকা। স্ত্রী-সন্তানের মুখে ভাত তুলে দিতে পেরেই সে খুশি থেকেছে। কিন্তু আজ হঠাৎ ঐ বাউল সঙ্গীনির গান আর ঐ বৃদ্ধার কান্না কেমন যেন করে দিলো তাকে। জীবনে কোনোদিন দু-মুঠো ভাত আর নিজের এবং পরিবারের সাধ-আহাদ পূরণের বাইরে অন্য কোনো চিন্তা করে নি সে। অথচ আজ তার মনে প্রশ্ন জাগছে, সে কোথা থেকে এসেছে? কেন এসেছে? আবার কোথায়-ই বা চলে যাবে? মানুষ এক জীবনে কতো দিন বাঁচে? ষাট, সত্তর, আশি, নব্বই বা একশো! তবে কেন এই হানাহানি! কেন এই দেশান্তর হওয়া! ঐ গান আর কান্নার সুর যেন তাকে ভাবতে শিখিয়ে গেল! আকাশের নক্ষত্র গুনতে শিখিয়ে গেল। একটা, দুইটা, তিনটা....।

ইছামতির জলেও কতো নক্ষত্র! বিষন্ন নক্ষত্র!


ঢাকা।
ফেব্রুয়ারি, ২০১৪

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২০

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: বেশ রসালো কথামালা
ভাল লাগল শব্দের ব্যাঞ্জনা
ভাল থাকেন , শুভকামনা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.