নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেলাশেষে ক্লান্ত-তৃষ্ণার্ত পথিকের ন্যায় আসলাম সামুর তীরে, রেখে যেতে চাই কিছু অবিস্মরণীয় কীর্তি । পারি না আর না পারি, চেষ্ঠার ত্রুটি রাখবো না, এই ওয়াদা করছি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭

একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কর্পোরেট সেক্টরের কর্মজীবীদের কিছু সত্য (বাস্তবতা) আর কিছু করণীয় :||

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৪৩



প্রসঙ্গ যখন নানাবিধ চাকুরী সার্কুলার প্রলোভনে পা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া এবং অহেতুক অর্থের যোগান দেওয়া

বর্তমান বাজারে একটি চাকুরীর মূল্য কতটা এটা একজন বেকারকে জিজ্ঞেস করলে ভালো আইডিয়া পাওয়া যায় । আবার চাকুরী পেলেও অনেকের জন্য সেই চাকুরী মনমত মেলে না । হয়তো হাজার প্রসেসের মধ্যে দিয়ে (একেবারে সার্কুলার প্রদান থেকে শর্টলিস্ট, লিখিত পরীক্ষা কিংবা ইন্টার্ভিউ তাও দুই-তিন ধাপে এর মাধ্যমে) একজন ফ্রেশার যখন চাকুরী প্রাপ্ত হয়, তখন দেখা যায় কাঙ্ক্ষিত স্যালারি পাওয়া যায় না । এরকম হাজারো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে লাখ লাখ চাকুরী প্রত্যাশীরা ।

এছাড়া বর্তমান বাজার মূল্য বৃদ্ধি কিংবা মুদ্রাস্ফীতি ইত্যাদি যতগুলো ফ্যাক্টর আমরা কন্সিডার করি না কেন, বছর কি বছর চাকুরী প্রত্যাশীদের কাঙ্ক্ষিত বেতন পাবার প্রত্যাশা যেন আশা থেকে নিরাশায় পরিণত হচ্ছে । চিন্তা করে দেখলে আজ থেকে ৫ বছর কিংবা এরও আগে থেকে একজন অনার্স শেষ করা ফ্রেশার হয়তো অনায়াসে ২০ হাজার টাকা দিয়ে তার চাকুরী জীবন শুরু করতে পারতো । এখনও বেতনের পরিমাণ সেই একই, বাড়েনি । আমি বলছি বেসরকারি চাকুরী প্রত্যাশীদের কথা, সরকারী চাকুরী প্রত্যাশীদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভিন্ন । এজন্যই অনেকে অনার্স শেষ করে ৩০ বছর পর্যন্ত মাটি কামড়ে পড়ে থাকে, সরকারী চাকুরী নামক সোনার হরিণ পাবার উদ্দেশ্যে ।

ইদানিং খেয়াল করা যাচ্ছে যে লিংকডইন, ফেসবুক, হোয়াটস এ্যাপ এর বিভিন্ন গ্রুপ কিংবা ফেসবুক এর বিভিন্ন গ্রুপ কিংবা পেজ থেকে পাওয়া যাচ্ছে দেদারছে চাকুরী সার্কুলার । এদের অধিকাংশই অথেনটিক সার্কুলার হলেও অনেক সার্কুলার দেওয়া হয়েছে কিংবা প্রচার করা হয়েছে স্রেফ ভন্ডামির উদ্দেশ্যে এবং ফ্রেশারদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে ভন্ডদের পকেট ভারী করার জন্য ।

হয়তো আপনি দেখলেন একটি সার্কুলারে ফ্রেশারদের এপ্লাই করতে বলা হয়েছে কিন্তু যোগাযোগের জন্য কিংবা সিভি দেবার জন্য জিমেইল আইডি কিংবা হোয়াটস এ্যাপ নাম্বার দেওয়া হয়েছে । এদের অধিকাংশই ভন্ড । ফ্রেশাররা তাদের সিভি সেই জিমেইল আইডিতে দিলে শর্টলিস্ট করা হয়নি, এই অজুহাতে অনেকে বাদ পড়লেই সেই সিভি নিয়ে পর্দার অন্তরালে হয় রমরমা ব্যাবসা। আবার সার্কুলারে দেওয়া হোয়াটস এ্যাপ নাম্বারে নক দিলে, বিভিন্ন প্রসিডিউরের কথা বলে ৩০০/৪০০/৫০০ ইত্যাদি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র থাকে । টাকার অংক কম থাকায় অনেক সময় চাকুরী প্রত্যাশীরা সরল মনে সেই টাকা দিয়েও দেয় । এরপরই শুরু হয়, সম্ভাব্য চাকুরী দাতার পিঠ প্রদর্শন । তখন টাকা আর সময় সেই চাকুরী প্রত্যাশীদের নস্ট হয় আর সেই ভন্ডদের পকেট ভারী হয় ।

তাই যে কোন চাকুরী সার্কুলার প্রলোভনে পা দিবেন না । এপ্লাই করুন, আমি এপ্লাই করতে না করছি না কিন্তু কিছুটা নিশ্চিত হয়ে এবং অথেনটিক সার্কুলার বুঝে। সেক্ষেত্রে বিডিজবস ফলো করতে পারেন । ভুল করে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারেন এভাবেই এবং অহেতুক অর্থের যোগান দিয়ে ভন্ডদের পকেট ভারী করা থেকে বিরত থাকুন । বরং পারলে এই ভন্ডদের পরিচয় এক্সপোজ করুন । এরা বিকাশের নাহিদ কেলেঙ্কারির চেয়ে কোন অংশে কম নয় কিন্তু....

এবার আসুন, আরেকটি প্রসঙ্গে । প্রফেশনাল জীবনে আবেগ কে খুব একটা জায়গা দেওয়া যাবে না ।

আমার সাথে এমন অনেকের পরিচয় আছে যারা গত পাঁচ বছরে ৩ থেকে ৪টি চাকুরী পরিবর্তন করেছেন । আবার এমন অনেকের সাথে পরিচয় আছে যারা গত ১০ থেকে ১৫ বছরে একই চাকুরিক্ষেত্রে থিতু হয়ে আছেন । আসলে একটি প্রশ্ন যে কোন কোম্পানির মালিকদের মাথায় বার বার আসা উচিত । আমি জানি না আসে কিনা । প্রশ্নটি হচ্ছে, তার কোম্পানির কোন একজন ব্যক্তি কেন তার কোম্পানি ছেড়ে অন্য কোম্পানিতে চলে যেতে চাচ্ছেন? কিংবা যে কোন ব্যক্তি একটি চাকুরী ছেড়ে অন্য আরেকটি চাকুরিতে যোগদান করতে চান কেন? এখানে কারণ কি শুধুই অতিরিক্ত অর্থ? জী না, তা নয় ।

এই বেসরকারী চাকুরীক্ষেত্রের চাকুরীর অবস্থা খুবই অনিশ্চিত । এমনও দেখা যায়, চোখের পলকে চাকুরী নেই । তাই শুধু অর্থ উপার্জন নয়, চাকুরীর ক্ষেত্রে অনেক অভিজ্ঞ চাকুরীপ্রত্যাশীরা নজর দেন উপযুক্ত সম্মান, কোম্পানির দেওয়া কর্মস্বাধীনতা, সুযোগ সুবিধা ইত্যাদির দিকে । অর্থ অবশ্যই এদের মধ্যে সবচেয়ে প্রাধান্য পায় কিন্তু বাকিগুলোও একেবারে ফেলনা নয় ।

চাকুরীক্ষেত্রে একটা কথা প্রায়শই শোনা যায়, "আমরা একটি পরিবার" । কথাটি যে আবেগের বহিঃপ্রকাশ, এটা বুঝাই যায় । কিন্তু কর্পোরেট চাকুরী ক্ষেত্রে পরিবার শব্দটা ঠিক যায় না । এখানে দিন শেষে কর্পোরেট স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া হয়, সত্যিকার পরিবারের মত ব্যক্তিস্বার্থকে নয় ।

আপনি এখানে যাই করেন, নিজের আবেগকে প্রশ্রয় দিবেন না । কোম্পানি আপনার সাথে যাচ্ছেতাই আচরণ করে যাচ্ছে, কিন্তু নিজের আবেগকে পুঁজি করে কোম্পানিতে খুঁটি গেড়ে পড়ে থাকবেন না । চাকুরীর অভাব আছে সত্যিই কিন্তু অভিজ্ঞ লোকের যাওয়ার জায়গার অভাব নেই । আপনাকে খালি নিজেকে প্রমাণ করে যেতে হবে ।

কিভাবে প্রমাণ করবেন, আসেন কিছু আইডিয়া শেয়ার করি । এবারের প্রসঙ্গ নিজেকে বেচুন অর্থাৎ ইংরেজিতে যাকে বলে Sell yourself

জব প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে অন্যতম পরিচিত একটি প্ল্যাটফর্ম তথা একটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে লিংকডইন প্ল্যাটফর্ম । বর্তমানে লিংকডইন প্ল্যাটফর্মে যে কাজটা বেশি দেখা যায় সেটি হচ্ছে প্রোডাক্ট অথবা সার্ভিস সেলিং এর বিজ্ঞাপন । আপনি দেখবেন এই বিজ্ঞাপনের ভাষা বা স্বরূপ আগের চেয়ে বর্তমানে অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে । বহুকাল আগে থেকে লিংকডইন চালানোর অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, লিংকডইনে এখন প্রোডাক্ট বা সার্ভিস সেল করার চেয়ে মানুষ এখন নিজেকেই সেল করছে বেশি । কিভাবে? আসুন, আলোচনা করি ।

Sell yourself as if people can trust on you or your company rather than the product or the service, you want to sell. অর্থাৎ আপনি এমন ভাবে নিজেকে সেল করুন বা বেচুন (যেটা এখন দেদারছে হচ্ছে), যেন মানুষ আপনি যে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসটি বেচতে চাচ্ছেন তার চেয়ে আপনাকে কিংবা আপনার প্রতিষ্ঠানকে বেশি ভরসা করে সেই প্রোডাক্টটি কিংবা সার্ভিসটি কিনতে পারে বা নিতে পারে ।

আসলে বর্তমান যুগে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রবণতা আগের চেয়ে ঢের বেশি । লিংকডইন একাউন্টে ফ্রিল্যান্সার ব্যক্তিবর্গদের দেখা যায় বেশি । এই ফ্রিল্যান্সার মানে কিন্তু সারাদিন কম্পিউটারের সামনে বসে বিদেশি অর্ডার নিয়ে দিন রাত জেগে জেগে কাজ করা নয়, বরং এমন অনেকেই আছে, যারা আমাদের দেশীয় ইন্ডাস্ট্রিতেই চাকুরি করে আবার ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়ে এখানে সেখানে নিজে থেকে টুকটাক কাজ করে । পার্মানেন্ট জবে ফ্রিল্যান্সিটা কিন্তু আপনার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে করাটা উচিত হবে না বলেই আমি মনে করি । তবে যদি আপনার ম্যানেজমেন্টের আপত্তি না থাকে তবে আপনি টুকটাক নিজের ব্যক্তিগত সময়টাকে এই ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারেন ।

তবে সর্বোপরি, নিজেকে জাহির করুন, প্রকাশ করুন । এক কথায় আপনার জব প্রোফাইলগুলোতে আপনি নিজেকে মেলে ধরুন । লিংকডইন একাউন্ট টাকে ভালো ভাবে সাজান । অনেক রিক্রুটাররা কিন্তু এই লিংকডইন থেকেই তাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য উপযুক্ত প্রার্থী খুঁজে বের করার চেষ্টা করে থাকেন । এটা তো গেলো যদি আপনি চাকুরি প্রার্থী হন । আর যদি আপনি কোন এক জায়গায় চাকুরি করে চাকুরিতে নিজের জন্য বিশ্বস্ততা অর্জন করতে চান তবুও নিজের লিংকডইন একাউন্ট টাকে সাজান । নিজের অভিজ্ঞতার গল্প নিয়ে মাঝে মধ্যে টুকটাক পোস্ট করুন ।

মনে রাখবেন, আপনি যত একটিভ থাকবেন, লোকজন তত আপনার সম্পর্কে জানতে পারবে । সেখান থেকে হয়তো আপনার প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কে তাদের জানার আগ্রহ আসবে । এভাবে আস্তে আস্তে প্রতিষ্ঠানের কাজ নিয়েও কিছু মানুষ পরবর্তীতে জানতে পারবে । পরোক্ষভাবে আপনার কাজ, অভিজ্ঞতার গল্প, আচার ব্যবহার ইত্যাদি আপনার প্রতিষ্ঠানের জন্য বিজ্ঞাপনস্বরূপই বটে।

আরও কিছু বাস্তবতা আর করণীয় নিয়ে ভবিষ্যতে এরকম আলোচনা পর্ব তুলে ধরবো অন্য কোন একটি পোস্টে । ততদিন পর্যন্ত সবাইকে ধন্যবাদ ।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৩৫

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: হুমম, গুরুত্বপূর্ণ কথা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.