নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।
লেখার শিরোনাম দেখে অবাক হওয়াটা খুব স্বাভাবিক । না, এমন কোন ঘোষণা এখনও সরকারী-বেসরকারী-স্বায়িত্তশাসিত কোন অথরিটি থেকে আসেনি, আর ঘটা করে ঘোষণা আসবে কিনা সেটার গ্যারান্টি নেই । কিন্তু শিরোনাম দেওয়ার পিছনে আমি যে ছবিটা ব্যবহার করেছি সেটা অনেকাংশেই দায়ী । আমি আরও বিস্তারিত করে বলছি ।
আমার মত যে বা যারা ঢাকা শহরের মিরপুর ১১, মিরপুর ১২, কালশী, মানিকদি, ইসিবি, মাটিকাটা ইত্যাদি জায়গার বাসিন্দা আছেন এবং অফিস বা অন্যান্য যে কোন উদ্দেশ্যে বনানী/গুলশান/মহাখালী রুটে যাবার পথে লোকাল বাসের শরণাপন্ন হন (হতে হয়) প্রতিনিয়ত, তা মাত্রই জানেন এই লোকাল বাসে করে সকাল বেলা অফিস যাওয়া কিংবা অফিস শেষে বাসায় ফেরাটা, কত্ত বড় কঠিন একটা ব্যাপার ।
এই রুটের লোকাল বাসের সিন্ডিকেট নিচের ছবিতে দেখানো ২টি বাসের দখলে । আপনি হয় রবরব পরিবহনে করে যাবেন নয়তো বিজয় পরিবহনে । এমন না যে এই দুইটা বাস কোম্পানির অল্প কয়টা বাস আছে কিন্তু এরা সিন্ডিকেট করে সকাল বেলা কিংবা বিকেল বেলা অফিস টাইমে মাত্র অল্প কিছু বাস ছেড়ে রাখে, যাতে তাদের বাসে সবসময়ই যাত্রীদের আধিক্য বজায় থাকে ।
ঝে মধ্যে সকাল বেলা অফিস টাইমে বিআরটিসির কিছু দোতলা বাস মহাখালী পর্যন্ত যাত্রীদের পৌছে দিলেও বিকেল বেলা সেই দোতলা বাসের দেখা আর মেলে না । এমনও হয় যে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে শেষমেশ বাসের গেটে ঝুলে ঝুলে বাড়িতে যাওয়ার শর্তে একজন যাত্রী হার মেনে নিতে বাধ্য হয় এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এভাবে ঝুলে ঝুলে অফিস থেকে বাসায় ফেরে আর বাসের মধ্যে কোনরকমে দাঁড়িয়ে যাওয়া পাওয়া একেকজন অন্যজনের ঘাড়ে উঠে পড়ার উপক্রম হয় । এই চিত্র মহিলা হলে তো আরও ভয়ংকর । বাসে মহিলাদের উঠতেই নিষেধ করে বা হাত দিয়ে আটকে দেয় বাসের সুপারভাইজাররা।
আপনি যদি বিকেল সাড়ে ৪ টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ঢাকা শহরের বনানী এলাকার যে কোন প্রান্ত থেকে মিরপুর আসতে চান, তবে আপনি নিঃসন্দেহে এই ঘটনার সাক্ষী হবেন । বাসে বসার সিট পাওয়া তো দূরের কথা, যদি সহজে দাঁড়িয়ে যাবার সুযোগ পেয়ে যান, নিজেকে এই দুনিয়ার অন্যতম সৌভাগ্যবান ভেবে নিবেন । রবরব পরিবহন ও বিজয় পরিবহনের সিন্ডিকেটের কারণে অন্য কোন বাস কোম্পানি এই রুটে পেরে তৈরি হতেও পারে না । বাস মালিকদের এহেন সিন্ডিকেটের কাছে এই রুটের যাত্রীরা অনেক অসহায় ।
এ তো গেলো বাসে উঠতে পারা কিংবা বাসে দাঁড়ানো বা বসার ব্যাপার, আরেকটা ভয়ানক বিষয় হচ্ছে এই বাসগুলোর সুপারভাইজার (কিংবা হেলপার যাই বলেন) এদের সাথে ভাড়া নিয়ে কথা বলা । আমরা ঢাকা শহরের যে কোন রুটে লোকাল বাসে নিয়মিত চলাচলকারী মাত্রই জানি, লোকাল বাসগুলো এখন সরকারী নির্দেশ মোতাবেক ডিজিটাল টিকিট চেকার মেশিনের মাধ্যমে ভাড়ার বিনিময়ে টিকিট (কিংবা টিকিট অনুযায়ী ভাড়া) এর আওতায় এসেছে । গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ গণপরিবহনের ভাড়া সংক্রান্ত কিছু বিষয় নির্ধারণ করে যেমনঃ সর্বনিন্ম ভাড়া ১০টাকা, প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ২টাকা ৪৮ পয়সা ইত্যাদি) । আর এই বছর থেকে শুরু হয়েছে পরিপূর্ণ টিকেট সিস্টেম, আর বাতিল হয় ওবিল সিস্টেম । টিকেট সিস্টেম শুরুতে যাত্রীরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেও এটা যে এখন আবার গলার কাটা হবে এটা বোধ হয় কেউ ঘুণাক্ষরে ভাবেনি ।
ওবিল সিস্টেম (নির্দিষ্ট স্টেশনে বাস থামলে কোম্পানি থেকে ঠিক করা একজন যাত্রী গুনে একটি কাগজে যাত্রী সংখ্যা লিখে সই করে দিতো) চালু ছিল বিধায় মালিকপক্ষের কাছে মোটামুটি একটা যাত্রী সংখ্যা হিসেব থাকতো । তখন বাসের সুপারভাইজাররা অল্প দূরত্বেও বেশি ভাড়া নিয়ে নিতো (যেমন বনানী থেকে মিরপুর ১২ এর ভাড়া নিতো ২০ টাকা আবার মিরপুর ১ এর ভাড়াও নিতো ২০ টাকা) । এটা ছিল মিরপুর ১২ কিংবা মিরপুর ১১ তে বসবাসকারী যাত্রীদের জন্য জুলুম । এটা নিয়ে কাছের যাত্রীরা নিয়মিত ক্ষোভ দেখালেও দূরের যাত্রীরা সুবিধা পেতো ।
বর্তমান টিকেট সিস্টেমে কিলোমিটার অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে (তবে কিছু ক্ষেত্রে বাসমালিকরা ভাড়া ২/৩ টাকা বাড়িয়ে ভাড়া নির্ধারণ করেছে) । বর্তমানে দূরের ভাড়া বেড়ে গেছে বেশ কিন্তু কাছের ভাড়াটা কমে গেছে (যেমন বনানী থেকে কালশীর ভাড়া ১৫ টাকা, মিরপুর ১২ এর ভাড়া ২০, মিরপুর ১১ এর ভাড়া ২৫ আবার মিরপুর ১ এর ভাড়া ৩৫টাকা) । এখন ওবিল না থাকাইয় মালিকপক্ষের ভরসা কতগুলো টিকিট কাটা হয়েছে এটার উপর । কিন্তু বাসের সুপারভাইজাররা কাছে যাবার যাত্রীদের কাছে ভাড়া নেয় ঠিকি টিকেট দেয় না ।
তবে আগের অবস্থার আর বর্তমান অবস্থা, ওবিল সিস্টেম বলেন আর টিকেটিং সিস্টেম বলেন, বাসে উঠলে বাসের সুপারভাইজার বা ড্রাইভারের সাথে কোন না কোন যাত্রীর চিৎকার চেচামিচি খুব নিত্য স্বাভাবিক একটা ঘটনা ।
তবে অস্বাভাবিক ঘটনা কোনটা জানেন? এই বাসের সুপারভাইজারগুলো কখনও কখনও মস্তানি করে । যে কোন যাত্রী যদি এদের মন মত না হয়, সরাসরি বা পরোক্ষভাবে থ্রেট করে এরা । আমি এমনকি এমনটাও বলতে শুনেছি একজন সুপারভাইজারকে যে 'আপনি ওমুক জায়গায় যাবেন না? দাড়ান আমি ফোন করতাছি, আপনারে আজকে দেখামু, কত ধানে কত চাল' । ভাবছেন একবার? কি বুকের পাঠা এদের?!! এই অবাধ সাহসের একটাই কারণ এদের মালিকপক্ষের একচেটিয়া সিন্ডিকেট । এ থেকে মিরপুরবাসী আদৌ মুক্তি পাবে কিনা, আল্লাহ্ মালুম ।
বনানী-গুলশান-মহাখালী থেকে মিরপুর আসার পথে ঘন্টা দুয়েক দাঁড়িয়ে থেকে ২০০ টা বাসের মধ্যে উত্তরা-গাজিপুরগামী ১৯০ টা বাস আর মিরপুরগামী মাত্র ১০টা বাস!! এরকম ভাবে চলতে থাকলে হয়তো জনজীবনের দুর্দশা বাড়বে বৈ কমবে না ।
আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, এই সমস্যা থেকে মুক্তির পরিত্রাণ পাবার জন্য কোন একটি বিকল্প উপায়ের ব্যবস্থা করুন...
২| ০১ লা মার্চ, ২০২৩ রাত ১১:০০
শেরজা তপন বলেছেন: মিরপুরে বরাবরই বাস সিন্ডিকেট ভয়ঙ্কর! এদের বিষয়ে অনেক ভয়াবহ তথ্য দেয়া যায় কিন্তু অনেকে জেনে চুপ করে থাকে। আগে কত যাত্রীকে ১২ নম্বর স্ট্যন্ডে পিটাইত!!
৩| ০২ রা মার্চ, ২০২৩ সকাল ১০:৩৪
বিটপি বলেছেন: আপনার কথা আমার বিশ্বাস হচ্ছেনা। আমি মাঝেমধ্যেই কালসী হয়ে যাই। আমি ওখানে অনেক খালি বাস দেখতে পাই অফিস টাইমে। অনেক রূটের অনেক বাসই এই লাইনে চলে। খেয়াল করিনি, কিন্তু বাসের আধিক্যের কারণে মাঝেমাঝে ইসিবি চত্বরে যানজট লেগে যায়।
৪| ০২ রা মার্চ, ২০২৩ সকাল ১১:০৩
জিয়াউর রহমান ফয়সাল বলেছেন: ভেবেছিলাম এগুলা নিয়ে পোস্ট লিখবো, কিন্তু সামুর মানুষজন আবেগী কবিতা বেশি পছন্দ করে। এখন আমি বলি,
১। বাস এ উঠলে নিজেকে অনেক গরীব মনে হয়, কিন্তু চীনে গিয়ে দেখলাম সেখানে বাসে হাই ফাই ক্লাস এর মানুষ জন ও উঠে।
২। ঢাকায় বাস পরিবহন এর সকল কর্মচারী মালিক গন হলেন খুবই নিম্ন জাতের মানুষ, তাদের রুচি বোধ তো দুরের কথা তাদের কে দেখলেই মনে হবে মাদক সেবনকারি।
৩। বাস এ যাত্রী পুরা ভরা থাকলেও তারা দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের বলে আরো পিছনে যেতে, আরো পিছনে।
৪। বেশির ভাগ যাত্রী পিছনে যেতে চায় না, এর কারন হলো, আপনি যদি পিছনের দিকে চলে যান আর বাস যদি ভরা থাকে, আপনাকে সবার পাছা ঘষে ঘষে বের হতে হবে। এটা যে কি বিরক্তিকর বলে বোঝানো যাবে না।
এখন বলি যাত্রী দের সমস্যা
১। ইনারা যেখানে ইচ্ছা সেখানে হাত দাঁড়িয়ে বাস থামাবে।
ঢাকার বাস এর সমস্যা বলে শেষ করা যাবে না।
৫| ০২ রা মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১:৩৩
রাজীব নুর বলেছেন: একদম বাস্তব একটা লেখা লিখেছেন।
ধন্যবাদ আপনাকে।
৬| ০৪ ঠা মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৫:০২
সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: এই সব সমস্যা ভুক্তভোগী ছাড়া কেহ বুঝে না!
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা মার্চ, ২০২৩ রাত ৯:৫৩
দারাশিকো বলেছেন: আপনার বেদনাটা খুব ভালোভাবে বুঝতে পারছি। একসময় আমি রবরবে যাতায়াত করতাম।
একটা পরামর্শ দেই। এই লেখাটা একটা চিঠি আকারে লিখুন। তারপর এক পৃষ্ঠায় প্রিন্ট করে ৫ টাকা সরকারি খামে ভরে বিআরটিএ এবং সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিন। চিঠির নীচে অনুলিপি কাকে কাকে পাঠাচ্ছেন সেটা দয়া করে উল্লেখ করবেন, তাহলে গুরুত্ব পাবে।
এই পরামর্শ বাস্তবায়ন করতে আগ্রহ পাবেন না জানি। তবে এটা কার্যকর পন্থা, সেটা আমি বিশ্বাস করি। দ্য শশাংক রিডেম্পশন দেখেছিলেন? চিঠি লিখতে লিখতে লাইব্রেরির জন্য বই পাওয়ার ঘটনাটা মনে আছে?