নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।
কয়েকদিন আগের কথা বলতে এলাম আজকে, দেশে তখন ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন জোরদার । তারও বেশ কিছুদিন আগে একটি গ্রুপে পোস্ট করেছিলাম, ওয়েব সিরিজ কিংবা চলচ্চিত্র কিংবা নাটকগুলোতে চরিত্রের প্রয়োজনের কথা বলে খোলাখুলি দৃশ্য কিংবা রগরগে অশ্লীল দৃশ্য বন্ধ করতে হবে - আমার এই পোস্টে অসংখ্য হা হা রিয়্যাক্ট পড়েছিল। অনেকেই কমেন্ট করেছিল, আপনার ভালো না লাগলে আপনি দেখবেন না, যাদের ভালো লাগে তারা দেখবে। এটা কেমন কথা!!
এখন পর্ণ ভিডিওগুলোর মতো এই ওয়েবসিরিজ কিংবা চলচ্চিত্রগুলোও যদি কারো কারো জন্য নারীদেহ দেখলেই ধর্ষণের প্রেরণা হয়, আমি কিন্তু সেইজন্য সেই রিয়্যাক্টধারী কাউকেই পটেনশিয়াল রেপিস্ট বলবো না (যেমনটা তোমরা সুবিধাবাদী নারীবাদীরা কিংবা কিছু কিছু আন্দোলনকারীরা যে কোন উছিলাতেই যারে তারে বলে দিচ্ছ)। জি, না, কারও নামও আমি বলবো না। তবে এরাই সেই ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে সামনের কাতারে ছিল কিনা, তা আমি জানি না, হয়ত থাকতেও পারে !!
ধর্ষণবিরোধী যে গণজাগরণ দেশে তৈরী হয়েছিল বাস্তবে এবং অনলাইনে দুই জায়গাতেই, সেটি ছিল মূলত ধর্ষণের একমাত্র শাস্তি যেন মৃত্যদন্ড দেওয়া হয়, সেই দাবীতে। যারা পারছে রাস্তায় নেমে প্ল্যাকার্ড উচুতে ধরে প্রতিবাদে নাম লিখিয়েছে আর বাকীদের অনেকেই অনলাইনে তাদের প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছিল। প্রোফাইল পিকচার কালো করা কিংবা ধর্ষণবিরোধী হ্যাশট্যাগ লাগানো ইত্যাদি তার প্রমাণ।
আগে দেখে নিই বিভিন্ন জনের মতামতের উপর ভিত্তি করে দেশে এক বছরে ধর্ষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণসমূহঃ
ক) অবাধে পর্ণ ভিডিও বা সামগ্রী সহজলভ্য হয়ে যাওয়া। পর্ণ ভিডিওতে দেখানো স্ক্রিপটেড কন্টেন্ট মানুষের ভিতর মানসিকভাবে গেথে যাওয়া
খ) ওয়েবসিরিজ কিংবা চলচ্চিত্র কিংবা নাটকগুলোতে খোলামেলা বা রগরগে অশ্লীল দৃশ্য
গ) দেশে ধর্ষণ সহজ কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার ২/১ বছর আগেই বিয়ে করাটা কঠিন
ঘ) ধর্ষণের কারণে বিচার প্রয়োগে জটিলতা এবং বেশ কয়েকটি ঘটনায় পুলিশের তৎপরতার শিথিলতা
ঙ) ধর্ষিতা বা ভিকটিমের পোশাক বা স্বাধীনচেতা মনোভাব কিংবা সবদিক থেকে তারা যে পুরুষের সমকক্ষ নয় কিংবা হতে পারে না কখনোই, এটা ভুলে যাওয়া
চ) বিভিন্ন উপরিমহলের কাছ থেকে ঘটনা ঘটাবার পর সেল্টার পাবার প্রতিশ্রুতি পাওয়া
ছ) পশ্চিমা সংস্কৃতিকে দেশীয় সংস্কৃতির সাথে গুলিয়ে ফেলবার অপচেষ্টাকে রোধ করবার জন্য
জ) অনেক সময় বিভিন্ন মাদকের কারণে মাদকাসক্ত ব্যক্তি উত্তেজনার বশবর্তী হয়ে সুযোগ পেয়ে ধর্ষণ করে বসে। তাদের কারণে ভিকটিমগুলোও স্বাভাবিক হয় না। এক্ষেত্রে শিশু কিংবা বৃদ্ধারাও তাদের হাত থেকে রেহাই পায় না
ঝ) পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীকে অবলা ও ভোগ্যপণ্যের সামিল ভাবা
ইত্যাদি আরও অনেক কারণ। আমি আবারও বলছি, এগুলো আমার কথা নয়। অনলাইনে ঘাটাঘাটি করে বিভিন্ন জনের মতামতের উপর ভিত্তি করে এই কারণগুলো এক জায়গায় সাজানো। আসলে কারণ কোনগুলো তা নির্ধারণ করা সত্যিই কষ্টকর। কারণ সবকয়টি কারণই যুক্তিসংগত। না, না, আগে ক্ষেপবেন না। আগে আমার কথা শুনুন।
এইক্ষেত্রে সবচেয়ে বেস্ট সল্যুশন দিয়েছে ইসলাম। আপনি সেই সল্যুশন জেনে, মানতেও পারেন আবার নাও মানতে পারেন। ইসলামে জবরদস্তিও নেই।
আমি একজন মুসলিম, আর একজন মুসলিম মানতে বাধ্য যে ইসলামই তার জন্য পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা। অর্থাৎ শুধু ইমান, নামায, রোজা, হজ্ব, যাকাত এই পাচটি নিয়েই ইসলাম নয়, ইসলামের পরিধি অনেক অনেক বিস্তৃত। ইসলাম আপনাকে কোনটা করতে হবে, কোনটা করা উচিৎ না, তাও বলে দেবে।
এই যে যারা কথায় কথায় বলে পর্দার অভাবেই এই ঘটনা ঘটছে তাদের সুরেই ইসলাম বলে নারীদের পরিপূর্ণ পর্দা করে চলতে কিন্তু তাদের জন্য সমস্যা হয় যখন ইসলাম এও বলে যে, পুরুষদের ক্ষেত্রেও একই বিধান। পর্দা নারী পুরুষ উভয়ের জন্যই ফরজ। পর্দা শুধু পোশাকে না, আচার আচরণে, অংগের কার্যকলাপে, চলাফেরাতে সবকিছুতেই নিজেকে হারামের নিয়ন্ত্রণে রাখাই পর্দা। এখন কেউ যদি উচ্ছৃঙ্খল উপায়ে পোশাক পড়েও তার দিকে খারাপ নজর দেওয়ার বিধান আমার আপনার নেই, ধর্ষণ তো অনেক দূরের কথা।
অনেকেই বলে দেশ যখন ধর্মনিরপেক্ষ তখন মৌলবাদীরা ইসলামের আড়ালে থেকে নিজেদের সুবিধা আদায়ে সর্বদা সচেষ্ট। আচ্ছা, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ মানে তো সকল ধর্মের মানুষের নিজ নিজ ধর্ম পালনে স্বাধীনতা, সকল ধর্মকে শিকেয় তুলে দেওয়া তো আর নয়। তাহলে আপনি সকল ধর্মের পজিটিভ বিষয়গুলো কাজে লাগান না, কে মানা করেছে!! ইসলাম এইক্ষেত্রে লজিকাল, সমাধানের কথা বলছে, আপনি ইসলামের এই দিকটা নেন, যদি অন্যের ধর্ম কোন পজিটিভ কিছু বলে, সমাধানের কথা বলে, আমলে নিতে সমস্যা কি?! সমস্যাটা কিন্তু ধর্মীয় নয় কিন্তু সমাধান ধর্মীয় ভাবে সহজেই করা যায়।
অনেকেই ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে সৌদি আরবের মত পাবলিকলি শিরোচ্ছেদ করার পক্ষে কিন্তু সৌদি আরবের মত ধর্মীয় শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে। ইহাকে হিপোক্রেসি বলে। আবার অনেককে দেখলাম ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে অন্য অনেকের মত ইসলামপ্রিয় হুজুরদের অংশগ্রহণকেও হিপোক্রেসি বলছেন, যেহেতু অনেক মাদ্রাসায় অনেক ছাত্র অনেক হুজুর শিক্ষক দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় কিন্তু আপনি এক দাড়িপাল্লায় সবাইকে মাপলে তো সাধারণ কোন পুরুষ যখন ধর্ষণের মত ঘৃণ্য কাজ করে তখন আমাদের মত সাধারণ সকল পুরুষকে ধর্ষণের দায়ে অপরাধী বলতে হয়। একটি মেয়ের জীবনে পুরুষ কিন্তু তার বাবাও, তার ভাইও, তার স্বামীও, তার ছেলেও। সকল পুরুষকে ঢালাওভাবে খারাপ বলাও কিন্তু অপরাধ।
আমার মনে হয় ধর্ষণের জন্য সবচেয়ে বড় কারণ ধর্ষণ করার পর পার পেয়ে যাওয়া। উপরিমহলের কাছ থেকে সেল্টার পাবার প্রতিশ্রুতি, রাজনৈতিক আশ্রয় কিংবা আইন প্রয়োগে শিথিলতা ইত্যাদির চেয়ে বড় কারণ হতে পারে না।
জি, না, আপনি পশ্চিমা দেশের শাস্তির উদাহরণ এখানে আনতে পারেন না, আনলে আমি বলবো আগে শিক্ষায়, চলনে, মননে পশ্চিমা দেশগুলোর মত হয়ে দেখান। তাদের মত উন্নত হন আগে। যদিও সম্প্রতি মন্ত্রীসভায় ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড করা হয়েছে এবং এই অধ্যাদেশে মহামান্য রাস্ট্রপতিও সাক্ষর করে দিয়েছেন। এটা নিশ্চিত যে এই নতুন অধ্যাদেশ জারি হওয়া মানেই হচ্ছে সেই গণআন্দোলনের জয়। এই জয় আমার, আপনার আর দেশের সবার। আশা করি, এই অধ্যাদেশের কার্যকারিতার কারণে ঘৃণ্য কাজটি বন্ধ হয়ে যাবে চিরতরে ।
যাই হোক, আমার আসল কথার উদ্দেশ্য হচ্ছে, দেশে ধর্ষণবিরোধী গণআন্দোলন পুরোপুরি যৌক্তিক ছিল। তবে যারা এই আন্দোলনের আড়ালে অন্য উদ্দেশ্য চরিতার্থ করে আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অভিপ্রায় করেছিল, তাদের প্রতি ধিক্কার জানাই একেবারে মনের গভীর থেকে....
২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৭
চাঁদগাজী বলেছেন:
এই বিষয়ে আপনার ধারণা পরিস্কার নয়।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৯
মোশারফ হোসেন ০০৭ বলেছেন: মাঝে মধ্যে মনে হয় আমাদের চাঁদগাজীর মত সর্ব বিষয়ে পন্ডিত লোক থাকতে দেশে এখনও এত ঝামেলা কেন ?
৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০৫
চাঁদগাজী বলেছেন:
লেখক বলেছেন, " মাঝে মধ্যে মনে হয় আমাদের চাঁদগাজীর মত সর্ব বিষয়ে পন্ডিত লোক থাকতে দেশে এখনও এত ঝামেলা কেন ? "
-কারণটা সহজ, দেশে অপ্রয়োজনীয় ভাবনার লোকজনের সংখ্যা বেশী; আমাদের শিক্ষিতরা বিশ্বের অন্য এলাকার শিক্ষিতদের তুলনায় কম জানেন, কম বুঝেন।
৪| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ বিকাল ৩:০৬
রাজীব নুর বলেছেন: সিলেট আর নোয়াখালির ঘটনার পর কিন্তু ধর্ষন কমেছে। নতুন আর কিছু শোনা যাচ্ছে না।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:৫৪
চাঁদগাজী বলেছেন:
অপ্রয়োজনীয়, অকেজো ভাবনা।