নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।
প্রেক্ষাপট - ১
সুহাসের আজ বিয়ে । তিহানার পিছনে আঠার মত প্রায় ২ বছর লেগে থাকার পর তার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়ে আজ থেকে প্রায় ৪ বছর আগেই । এরপর ২ বছরের প্রেম আর আজকে তার শুভ পরিণতি হওয়ার দোরগোড়ায় । তিহানা ও সুহাস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একই ডিপার্টমেন্টের দুই বছরের সিনিয়র-জুনিয়র । চোখ ধাঁধানো সুন্দরী উপমাটা ঠিক খেটে যায় তিহানার ক্ষেত্রে । যে কোন ছেলের চোখ ঘুড়িয়ে দিতে যথেষ্ট তিহানার সৌন্দর্য্য । সেখানে সুহাস শ্যামলা গড়নের গড়পড়তা চেহারার সামান্য একটি আইটি কোম্পানির জুনিয়র স্পেশালিষ্ট ।
তিহানা সদ্য গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছে । আগে থেকেই প্ল্যান করা ছিল তিহানার গ্রাজুয়েশনের পরপরই হবে বিয়ে । ঠিক হয়েছেও তাই । বিয়ে হবে তিহানাদের জেলা ঢাকাতে । বিশাল বড় কমিউনিটি সেন্টারে হচ্ছে সব আয়োজন । ভাইবোন বলতে ছোট্ট একটা মাত্র বোন আছে তিহানার । তাই তো বাড়ির বড় সন্তানের বিয়েতে খরচের কোন কার্পণ্য করছেন না তিহানার বাবা, আকরাম আলী । তিহানার পর আবার সুহানার ব্যবস্থা করতে হবে । ভদ্রলোক সবকিছু তাল রেখেই ব্যবস্থা করেছেন ।
সুহাসদের বাড়ি চট্টগ্রাম । বরপক্ষ ঢাকার যাওয়ার জন্য একটি মিনিবাস আর দুইটি মাইক্রোবাস ভাড়া করা হয়েছে । সুহাসের বাড়ির একমাত্র সন্তান । সুহাসের বাবা-মা তাই ছেলের বিয়েতে নিকটাত্মীয় সকলকেই দাওয়াত করেছেন । ঢাকায় বিয়ে হবে সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ । তাই চট্টগ্রাম থেকে বরপক্ষ দুপুর ১২ টার দিকেই রওনা হলো ।
প্রেক্ষাপট - ২
তিহানা আর সুহানা দুই বোন একসাথে পার্লারের উদ্দেশ্যে সেই দুপুর ৩টার দিকেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছে । এখন প্রায় ৫ টা বাজতে গেলো । আকরাম আলীর কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ । কারণ একদিকে বরপক্ষ প্রায় চলে এসেছে আর ঐদিকে তার দুই মেয়েরই মোবাইলে পাওয়া যাচ্ছে না । বড়টার না হয় ফোনে চার্জ না থাকার সম্ভাবনা আছে কিন্তু ছোটটার ফোন অফ কেন, আল্লাহ্ মালুম । একটু পরই তিহানার আম্মা তিহানার এক চাচাতো ভাই আর চাচাতো বোনকে পার্লারে খোঁজ নিতে পাঠালো । আকরাম আলী এমনিতে খুব ঠাণ্ডা স্বভাবের মানুষ কিন্তু মেয়েদুইটার এমন সময়জ্ঞান হারানোর ব্যাপারটা তাকে ভীষণ উত্তেজিত করেছে । তাই তো তাকে বসিয়ে রেখে এখন আশপাশ দেখছেন তার স্ত্রী ।
আধা ঘণ্টার মধ্যে বরপক্ষ এসে উপস্থিত হলো । ওদিকে এখনও তিহানা আর সুহানা এসে পৌঁছায়নি । কি মুশকিল !! আকরাম আলী এবং তার স্ত্রী এত টেনশনের মধ্যেও মুখে হাসি রেখে বরপক্ষকে বরণ করে নিলেন । ওদিকে সুহাসও আসার পথে তিহানাকে বারবার ফোন দিয়ে পাচ্ছে না, তাই একপ্রকার অস্থির হয়ে গেছে কিন্তু তার এই অস্থিরতাটুকু তার বাবা-মা ছাড়া নিকটাত্মীয় কারও কাছেই প্রকাশ করলো না । আকরাম আলী বরপক্ষের লোকদের খেতে বসিয়ে দিলেন । হাজার হলেও বরপক্ষ না খেলে কন্যাপক্ষ তো আর খেতে পারে না । ওদিকে তিহানার মা আরও বাকী আত্মীয় স্বজন ক্রমাগত ফোন দিলেও তিহানার আর সুহানার খোঁজ নেই । এমনকি তাদের খোঁজে পার্লারে গিয়েও জানা গেছে তারা বেরিয়ে গেছে আরও ঘণ্টা দেড়েক আগেই । আরও লোক পাঠানো হয়েছে শহরের অন্যান্য জায়গায় বিশেষ করে পরিচিত জনদের কাছে ।
সময় গড়াতে গড়াতে রাত ৮টা বেজে গেলো । না, এখনও তিহানা আর সুহানা ফেরেনি । বরপক্ষের আত্মীয়দের কাছে ফিসফিসানি এখন উচ্চকণ্ঠে উপনিত হয়েছে । "তবে কি মেয়ের বিয়েতে মত ছিল না ?" "মেয়ের কি অন্য কোথাও সম্পর্ক আছে ? অন্য কারও সাথে পালিয়ে যায়নি তো ?" ইত্যাদি ইত্যাদি । কিন্তু সুহাস এবং তার বাবা-মা আকরাম আলী এবং তার স্ত্রীর পাশে দাড়িয়ে সান্ত্বনা দিচ্ছে । বিয়ে বাড়িতে যেন অনেকটা ভুতুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে ।
প্রেক্ষাপট - ৩
আকরাম আলী, তার স্ত্রী, সুহাস এবং তার বাবা-মা আরও সাথে বেশ কয়েকজন এখন দাড়িয়ে আছে বারডেম হাসপাতালের মর্গে । সন্ধ্যার দিকে কে বা কারা যেন একটি ব্যস্ত রাস্তার ধারে একজন তরুণীর লাশ দেখে পুলিশকে খবর দেয় । মেয়েটির মুখে সাজ ছিল অনেক, আর পরনে বিয়ের শাড়ি । সুহাস এবং তিহানার চাচাতো ভাই রাত ৯টার দিকেই পুলিশ স্টেশনে গিয়ে তিহানা এবং সুহানার ছবি দিয়ে একটি মিসিং রিপোর্ট করে আসে, পুলিশ সেই ছবি দেখেই তিহানাকে সনাক্ত করেছে । এখন রাত প্রায় ৩টা । তিহানাকে পাওয়া গেলেও সুহানাকে পাওয়া যায়নি এখনও । প্রায় সব আলামত পরিস্কার করছে যে তিহানাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ।
আকরাম আলী তার স্ত্রীকে নিয়েই কুল পাচ্ছেন না, মেয়ের লাশ দেখবেন কিভাবে !! ভদ্রমহিলা একটু পর পর অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন । ওদিকে সুহাস যেন পাথর হয়ে গেছে । তার কাছে সবকিছুই দুঃস্বপ্নের মত লাগছে । মনে হচ্ছে হয়তো ঘুম ভেঙ্গে যাবে, আর তিহানা তাকে ভেংচি কেটে বলবে, "ঐ, তুমি এত ঘুমকাতুরে কেন ?" "বিয়ের দিন কেউ এত ঘুমায় নাকি রাতে জেগে থাকবে বলে দিনে অগ্রিম ঘুমিয়ে নিচ্ছ বেশি করে ?" নাহ, সমীকরণ কিছুই মিলছে না । পুলিশের তৎপরতা বেশ বেড়ে গেছে সুহানার খোঁজে ।
বাংলাদেশে এটাই যেন এখন বাস্তবতা, চোর পালালে মারাত্মক বুদ্ধি বাড়ে সকলের
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৫৩
মোশারফ হোসেন ০০৭ বলেছেন:
২| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৮:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: এই দেশ নষ্ট হয়ে গেছে।
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৫৩
মোশারফ হোসেন ০০৭ বলেছেন: আর আমরাও কেমন জানি এই কথাটা বারবার বলে হাত-পা গুটিয়ে বসে আছি
৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১২
বোকা মানুষ বলতে চায় বলেছেন: গল্পের সাথে শিরোনাম এর সম্পর্কটা ব্যাখ্যা করবেন প্লিজ?
১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৫২
মোশারফ হোসেন ০০৭ বলেছেন: পুলিশের অতিরিক্ত তৎপরতা যা কিনা তিহানার মৃত্যুর পর । অথচ এমন তৎপরতা আগে থেকে থাকলে এমন সমস্যাগুলোই এত প্রকট আঁকার ধারণ করতো না । তাই তো বললাম, চোর পালাএই মারাত্মক বুদ্ধি বাড়ে সকলের
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:০৯
মাহের ইসলাম বলেছেন: ভাই, মন খারাপ করে দিলেন।