নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।
আমাদের বর্তমান সমাজ ব্যবস্থাটাই কেমন যেন কনফিউজড । আমাদের দেশে গ্রাজুয়েশন যেকোন ভাবেই পাশ করা যায় । এরপর থেকে শুরু হয় চাকুরির সমুদ্রে পতিত হওয়া । আসল যুদ্ধ যেন বাধে তখনই । গ্রাজুয়েশন পাশ করেই হাতে অনেকগুলো অপশন হাতে আসে যেমন বিসিএস (সরকারী জব), ব্যাংক জব, প্রাইভেট জব, বিদেশে পাড়ি ইত্যাদি । আদতে এই অপশনগুলোর মধ্যে বিসিএস কিংবা ব্যাংক জব ছাড়া যেন তথাকথিত এই সমাজ কিছুই চেনে না ।
কারও ছেলে বা মেয়ে গ্রাজুয়েশন পাশ করলেই ধেয়ে আসতে থাকে নানান কথা, "বিসিএস দিচ্ছ তো ?" "বিদেশে যাওয়ার কথা ভাবছো কেন, বিসিএসে কনফিডেন্স নেই ?" "আচ্ছা স্কলারশিপের জন্য এত দৌড়াদৌড়ি কেন, বিসিএস কিংবা ব্যাংকে হয়নি ?" "অমুকের ছেলে কিংবা অমুকের মেয়ে তোমার সাথেই পাশ করে বিসিএসে চান্স পেয়েছে, তুমি কি ঘাস খাও ?" ইত্যাদি কথাগুলো খুব পরিচিত শোনায় । অনেকের কাছেও তাই ।
[নিজ হাতে লেখা সুইসাইড নোট; পুরো লেখাটা কালো কলম দিয়ে লিখে শেষ সিগনেচারটা লাল কালি দিয়ে রেখে দিয়ে গেছেন]
ভাবটা যেন এমন "চাকুরীর জন্য জীবন" কিন্তু এটা সত্য নয় বরং "জীবনের জন্য চাকুরী" । কয়েকদিন আগে THE DAILY STAR- এ একটা নিউজ বেরিয়েছিল যে এশিয়ার যে কোন ইনোভেটিভ দেশের মধ্যে"বাংলাদেশ" অবস্থান সর্বনিন্ম । পরিসংখ্যানটা একটু আঁতে ঘা লাগালেও এটাই সত্যি । যে দেশে "বিসিএস" কিংবা "ব্যাংক" জব ছাড়া বাকী জবগুলো করা মানে ব্যার্থতার ফলাফল ভেবে নেওয়া হয়, সে দেশ ইনোভেটিভ দেশের তালিকায় ঢুকতে এখনও দিব্যি ৫০-১০০ বছর লাগবেই ।
চাকুরী নিয়ে হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফএমআরটি ১০ ব্যাচের সৈকত মণ্ডল দাদার সুইসাইড করে মৃত্যু । কি বলা যায় এই মৃত্যুকে ? হতাশা থেকে পালিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্ঠা ? নাকি আশেপাশের মানুষের সাফল্যের চাকচিক্যে চোখ ঝলসে আঁধারে হারিয়ে যাওয়া ? নাকি মেধাবী তরুণের ব্যার্থতার ইতিকথা, অবশেষে চির পলায়ন ? যাই বলা হোক না কেন, দিনশেষে বিসিএস কিংবা ব্যাংক হুজুগ কেড়ে নিলো আরেকটি তরতাজা মেধাবী প্রাণ ।
[কয়েকদিন আগে খুলনা মেডিকেল কলেজে রক্তদান করা অবস্থায় তোলা ছবি]
গ্রাজুয়েশন শেষ, এরপর শুরু থেকে যে প্রচণ্ড চাপ আসে, এর শেষ কোথায় ? অথচ যে কোন বাবা-মাই পারে তাদের ছেলে-মেয়েকে বিসিএস কিংবা ব্যাংক জবের পিছনে মাতালের মত না ঘুরিয়ে মানুষ হতে বলতে । কিংবা পারে তাদের ছেলে-মেয়েকে একা এই সমুদ্রে না ফেলে, হাতটা ধরে রাখতে । প্রিয়তমা মেয়েটি পারে, বিসিএস কিংবা ব্যাংক জব ছাড়া প্রেমিককে ছুঁড়ে ফেলে না দিয়ে, ভালোবাসার একজন মানুষ হিসেবে পাশে থাকা, সমর্থন দিতে । কিংবা এই ঘুণে ধরা সমাজ পারে তাদের চিরাচরিত ধ্যান-ধারণাকে বদলে ফেলতে । হ্যাঁ, পারে কিন্তু করবে না ।
আর যেন কোন ছেলে কিংবা মেয়ের জীবন এমন হতাশায় হারিয়ে না যায়, এখন মনে মনে এই কামনাই করতে পারি । যদি যায়ও, হয়তো এমন লেখা আরও হবে, এমন পোস্ট ফেসবুকে আরও দেখবো । আবারও কয়েকদিন চিৎকার-চেঁচামিচি, আবার যা তাই ।
উপরে ভালো থাকবেন দাদা, হতাশা আর আফসোস নিয়ে হয়তো চলে গেছেন কিন্তু আদতে পরিবার, পরিচিতমহল এবং দেশকে ডুবিয়ে দিয়ে গেলেন এর চেয়েও বড় ধরনের আফসোসে
২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৪৫
আখেনাটেন বলেছেন: গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন। ডেইলি স্টারের অার্টিকেলটা দেখে খারাপ লেগেছে। আমাদের জঘন্য উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা ব্যাংকের স্যুট বুট কেরানী আর আমলা নামের উচ্চপদস্থ কেরানী হওয়া ছাড়া আর কিছু শিক্ষা দিতে পারছে না (নো অফেন্স)। এটা একটা জাতির জন্য ভয়ঙ্কর অবস্থা।
অথচ বিকাশমান জাতির জন্য দরকার হাজার হাজার টেকনিক্যাল লোক যারা নিজ নিজ ক্ষেত্রে দক্ষ। পুরোটাই উল্টোপথে চলছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা। যত পারো কেরানী বানাও। এগুলো কি পলিসি মেকাররা দেখতে পায় না?
৩| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: দুঃখজনক।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৫৭
সনেট কবি বলেছেন: কিছুটা পড়লাম।