নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।
যারা আগের ৩টি পর্ব মিস করেছেন, তাদের জন্য লিংক সংযুক্ত করে দিলাম । প্রথম থেকে পর্বগুলো পড়ে দেখুন, এরপর এই লেখাটি পড়ুন । একটি গ্রামীণ মেয়ের দৈন্যতা বুঝতে গল্পটি পড়াই লাগবে সবার । ১ম পর্বঃ গল্প - জীবন, মায়া সবশেষে পরিহাস - পর্ব - ০১, ২য় পর্বঃ গল্প - জীবন, মায়া সবশেষে পরিহাস - পর্ব - ০২ এবং ৩য় পর্বঃ গল্প - জীবন, মায়া সবশেষে পরিহাস - পর্ব - ০৩
৪র্থ পর্ব -
দুনিয়াটাই যেন ছোট হয়ে এসেছে সাবিনার জন্য । তার সকল চিন্তা-ভাবনার জগত এখন অনেকটাই সংকুচিত । বাবা-মায়ের দেওয়া প্রেশার, বিয়ে নিয়ে সকল মেয়েদের আরাধ্য স্বপ্নগুলো পূরণ না হবার আফসোস, এত অল্প বয়সে অপ্রিয় একজন মানুষের কাছে তার বাকি জীবন সঁপে দেওয়ার চিন্তা - এই ব্যাপারগুলো নিয়েই সাবিনা ভেবে চলেছে রাত-দিন । পড়াশুনা একরকম শিকেয় উঠেছে তার । অবশ্য এটা হওয়ারই কথা । তার বাবা-মা চায় না সে আর স্কুলে যাক । কি হবে আর পড়াশুনা করে ?!! মেয়ে মানুষ যতই পড়ালেখা করুক, শেষমেশ তাকে তো আরেক ঘরের বউ-ই হতে হয়, রান্না-বান্না করা, ঘরের কাজ করা, ছেলে-মেয়ে মানুষ করা - বড় দায়িত্বগুলো বলতে তো এগুলোই । এগুলোর জন্য আবার পড়াশুনা করা লাগে ?
ওদিকে স্কুলের শিক্ষকরা আর ছাত্র-ছাত্রীরা সাবিনার অনেকদিন স্কুলে না যাওয়ার কারণ ঠাওর করতে একযোগে সাবিনাদের বাসায় এসেছিল গতকাল । মেয়েটা পড়াশুনায় ভালো, মনোযোগ বেশি, ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে পারবে ইত্যাদি কথাগুলো শিক্ষকরা যত বুঝাতে চেষ্ঠা করছিল, সাবিনার বাবা ঠিক ততই যেন না শুনার চেষ্ঠায় রত ছিলেন । সবচেয়ে সামান্য চা-নাস্তা খেয়ে বিমর্ষ মনে ফিরে গিয়েছিল । সাবিনার সবচেয়ে ভালো বান্ধবী চাঁদনী । চাঁদনীকে ঘরে ডেকে নিয়ে ওর ঘাড়ে হেলান দিয়ে অনেক কেঁদেছে সাবিনা । সাবিনার কান্না দেখে চাঁদনীও চোখের পানি আটকাতে পারেনি । দুইজন দুইজনকে জড়িয়ে ধরে সে কি কান্না, দেখার মত ব্যাপার ।
আচ্ছা, আমাদের দেশে মেয়েদের সাথে কেন এরকম হয় !! সময় পাল্টায়, যুগ পাল্টায়, শুধু মেয়েদের স্বরূপ পাল্টায় পুরুষদের অধীনেই । মেয়েরা যেন ঠিক ততটুকুই পাল্টায় যতটুকু পুরুষশাসিত সমাজে তারা পাল্টানোর অনুমতি পায় । অনুমতি না পেলে পাল্টানোর অধিকারটুকু বিলীন হয়ে যায় তখন । সাবিনা কান্নাকাটি করেও বা কি করবে !! কি শুনবে তার এই কান্না ? কার কাছে দাম আছে এই কান্নার ? যে মেয়ের নিজের রক্তের বাবা-মা কান্নার দাম দেয় না সেখানে একাধিক বিয়ে করা বুড়ো লোকটার কাছে এর দাম থাকবে না, এটাই স্বাভাবিক । সাবিনার এরকম কান্না দেখে রুবেল ও রুবিনা দুই ভাইবোন এখন বাড়ির মধ্যে দুষ্টুমি কমিয়ে দিয়েছে অনেক । বড় বোনের সাথে সাথে তারাও যেন অনেক মনমরা হয়ে গেছে, চুপচাপ হয়ে গেছে । এই বিষয়টা অবশ্য দৃষ্টি কেড়েছে মোঃ আব্দুস সাত্তারেরও কিন্তু অসহায়ত্বের কাছে তার হাত যেন সত্যিই বাঁধা হয়ে গেছে ।
(চলবে)
©somewhere in net ltd.
১| ০৯ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০০
রাজীব নুর বলেছেন: আগের পর্ব গুলো পড়েছি।
এটাও পড়লাম।