নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।
যারা আগের তিনটি পর্বই মিস করেছেন, তাদের জন্য পর্ব তিনটির লিংক দেওয়া হলোঃ প্রসন্ন বাতায়ন - একটি পর্বভিত্তিক গল্প - ১ম পর্ব, প্রসন্ন বাতায়ন - একটি পর্বভিত্তিক গল্প - ২য় পর্ব এবং প্রসন্ন বাতায়ন - একটি পর্বভিত্তিক গল্প - ৩য় পর্ব
৩য় পর্ব শেষে -
- খাবারের অর্ডার করেছেন ?
- না মানে, তোমার কি পছন্দ, তা না জেনে কিভাবে...
- ওহ, তাইলে আপনি দেখছি আমার পছন্দ-অপছন্দের কিছুই জানেন না
- ইয়ে মানে...
- তাও তো দেখি ঠিক জানেন গোলাপ আমার প্রিয় ফুল !!
- মানে ?
- এত মানে মানে করবেন না তো !! বিরক্ত লাগে । তার চেয়ে বরং খাবার অর্ডার করেন, আগে খাওয়া, পরে কথা
রাফিয়া যেভাবে খাওয়ার কথা বলছে সৌহার্দ্যের মনে হচ্ছে মেয়েটা অনেকদিন ধরে না খেয়ে আছে । আচ্ছা আসলেই কি মেয়েটা এরকম খাই খাই করে ?! কি জানি, হয়তো করে, আবার হয়তো করে না । কিছুক্ষণ চুপ থেকে সৌহার্দ্য রাফিয়ার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
- কি খাবে, বলো ?
- দাঁড়ান, আমি নিজেই অর্ডার দিচ্ছি । এই যে ওয়েটার ভাইয়া এদিকে একটু আসেন তো
রাফিয়ার ডাক শুনে ডেস্কের পাশে দাড়িয়ে থাকা একজন ইউনিফর্মধারী ওয়েটার কাগজ-কলম নিয়ে খাবারের অর্ডার নিতে আসলো । টেবিলে আগে থেকেই একটা মেন্যু কার্ড ছিল । সেখান থেকে পড়ে রাফিয়া রাইস, ভেজিটেবল, দুই পিস বিফ, দুই পিস রেজালা আর দুইটা কোল্ড ড্রিংকস্ অর্ডার করলো । ওয়েটার অর্ডার নিয়ে চলে যেতেই সৌহার্দ্য রাফিয়ার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো, বাহবা !! এ তো দেখছি মস্ত বড় খাদক !! সৌহার্দ্যের এই মনের কথা রাফিয়া শুনতে পারলে হয়তো সত্যি তুলকালাম বাঁধতো । খানিকক্ষণ নীরবতা ভেঙে রাফিয়াই প্রথম কথা বলে উঠলো,
- নিঃসন্দেহে আমাকে বাচাল আর খাদক বলে মনে হচ্ছে আপনার, তাই না ?
- না, না, কই না তো !! এরকম মনে হবে কেন, আজব তো !!
- মনে হলেও কিছু করার নেই । আমি এরকমই ভালো আছি । আচ্ছা ভালো কথা, আপনি প্রতিদিন আমার বাড়ির সামনে কেন দাড়িয়ে থাকেন, বলেন তো !!
- না, ইয়ে মানে
- আবার মানে মানে করছেন ? আসলে কি চান আপনি ? আমার সাথে কথা বলতে চান নাকি আমাদের বাড়িতে আসতে চান নাকি মায়ের হাতে এক কাপ চা খেতে চান, কোনটা ? একটু ঝেরে কাশুন তো
রাফিয়া উপমাযুক্ত বাক্য বললেও এই কথা শুনে সৌহার্দ্য সত্যি সত্যি কেশে উঠলো, আর সেটা দেখে রাফিয়া হেসে দিলো । রাফিয়ার হাসি দেখে সৌহার্দ্যের নার্ভাসনেস একটু হালকা হলো । এবার সৌহার্দ্য-ই নীরবতা ভাঙ্গলো আগে,
- সত্যি করে বলবো ?
- ও মা, তাহলে কি মিথ্যা বলবেন ?
- আসলে তোমাকে এক নজর দেখার জন্য যাই
- আমাকে রোজ রোজ দেখার কি আছে ? আমি পরী নাকি সেলেব্রিটি ?
- আমার জন্য তো সবকিছুই
সৌহার্দ্য নিজেই যে এরকম কিছু বলে ফেলবে তা বুঝতে পারেনি, হঠাৎ মুখ ফসকে বেরিয়ে গেছে । তবে এই কথা বলামাত্রই রাফিয়া লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে ফেললো । সৌহার্দ্য আর দেরী না করে খপ করে রাফিয়ার হাত দুটি ধরে বসলো । ঘটনার আকস্মিকতায় রাফিয়া চমকে উঠলো । আরও খানিকটা লজ্জা এসে যোগ হলো রাফিয়ার আগের অবস্থার সাথে...
- হাত ধরলেন যে... ধরে রাখতে পারবেন তো ?
সৌহার্দ্যের বেশ সাহস চলে এসেছে ইতিমধ্যেই । সেও জবাব দিলো,
- খুব পারবো, ছাড়ার জন্য তো হাত ধরিনি
- হুম, হয়েছে, ডায়ালগ বন্ধ, এবার খাওয়া, তারপর ঘুরাঘুরি । আস্তে আস্তে আবদার মেটাতে মেটাতেই না ক্লান্ত হয়ে যান !!
- তোমার সব আবদার আমার কাছে হুকুম, মেনে নিতে তো বাধ্য আমি
- বাহ, কি ডায়ালগ !! মেয়ে পটাতে তো দেখছি জনাব একেবারেই ওস্তাদ
- হ্যাঁ, সে কি বললেই হলো !! তাই তো তোমার সামনাসামনি এসে এভাবে কথা বলতেই দুই মাসের বেশি লেগে গেলো, তাই না ?
সৌহার্দ্য এমন কথা বলে উঠতেই রাফিয়া আর সৌহার্দ্য দুইজনে মিলেই হেসে উঠলো । ওয়েটার খাবার নিয়ে এসেছে, রাফিয়া খাওয়া শুরু করে দিয়েছে কিন্তু সৌহার্দ্য খেতে পারছে না । তার কাছে মনে হচ্ছে সে স্বপ্নের জগতে আছে । মুগ্ধ, স্নিগ্ধ এবং অতি প্রসন্ন বাতায়নের মাঝে ডুবে আছে সে...
©somewhere in net ltd.