নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।
যারা আগের পর্বগুলো পড়েননি, শুধুমাত্র তাদের জন্য আগের পর্বগুলোর লিংক দিলামঃ
একটি লাল গোলাপ আর হারিয়ে যাওয়া একজন - ।। পর্ব - ০১ ।।
একটি লাল গোলাপ আর হারিয়ে যাওয়া একজন - ।। পর্ব - ০২ ।।
একটি লাল গোলাপ আর হারিয়ে যাওয়া একজন - ।। পর্ব - ০৩ ।।
বেশ অনেকক্ষণ পরেই সুমনাই আগে মুখ খুললো,
- ভাইয়া, কি বলবেন ? বলেন ।
- এ্যা, কি বলবো ? (হাসান ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েই বলে উঠলো)
- কি বলবো মানে ? কিছু একটা তো নিশ্চয়ই বলবেন ।
- তুমি কি করে জানলে ? (এই কথা শুনে সে আরও বেশি করে ঘামতে লাগলো)
- আমি কি জানলাম ?
- এই যে, আমি কিছু বলবো । তুমি কি করে জানলে ?
- কিছু একটা তো নিশ্চয়ই বলবেন, না হলে সবার থেকে আলাদা করে আমাকে ডাক দিলেন কেন ? আর তাছাড়া আপনি এমনভাবে ঘামছেন কেন ? আপনাকে দেখে তো অসুস্থ মনে হচ্ছে ।
- (এই কথা শুনার পর হাসান অনেকটাই জোর করে হাসার চেষ্ঠা করলো) কেন, তোমাকে এমনি কি আমি ডাকতে পারি না ?
- হুম, অবশ্যই পারেন । কিন্তু কেন জানি মনে হচ্ছে, আপনি কিছু একটা বলতে চাচ্ছেন ।
- (এবার সাহস করে বলেই ফেললো) আচ্ছা, তুমি তো বাসায় থাকো, তাই না ?
- জি, ভাইয়া, আমি তো বাড়ি থেকে এসেই ক্লাস করি ।
- তাহলে তোমার বাড়ির টিএনটি নাম্বারটা কি দেওয়া যাবে ?
- বাড়ির নাম্বার ? ইয়ে, ভাইয়া, মানে, আমি তো আমার বাড়ির নাম্বার এভাবে আপনাকে দিতে পারি না । মানে, বুঝতেছেন তো ? আব্বু-আম্মুর অনুমতি ছাড়া কি করে, মানে......
- কেন ? তোমার বাড়ির নাম্বার তো আমি ইচ্ছে করলেই যেখান-সেখান থেকে ম্যানেজ করতে পারি । কিন্তু আমি তো তোমার কাছেই চাইলাম । তাহলে দিতে সমস্যা কোথায় ?
- না, মানে, সমস্যা তো নেই ।
- তাহলে দাও ।
- আচ্ছা, নিন ।
সুমনা অনেকটাই অপ্রস্তুত অবস্থাতেই ব্যাগ থেকে একটি ডায়েরি নিয়ে তার একটি পৃষ্ঠা ছিঁড়ে তাতে কলম দিয়ে নিজের বাড়ির টিএনটি নাম্বারটি লিখে দিলো ।
- ভাইয়া, এই নেন । এবার আমি যাই ?
- যাই মানে, দাঁড়াও । আমার কথা এখনও শেষ হয়নি তো ।
- তোমাকে রাতে কল করলে সমস্যা আছে ?- ইয়ে মানে, ভাইয়া, ঐ সময় তো আব্বু বাসায় থাকে ।
- তাহলে সন্ধ্যার পরপর ?
- ইয়ে ভাইয়া, আসলে এই টিএনটি ল্যান্ডফোনটি তো আমার আব্বু-আম্মুর ঘরে । তাই সমস্যা আর কি...... মানে বুঝছেন তো ?
- তাহলে কি কোন সুযোগ নেই ?
- ইয়ে, মানে, মনে হয় না, নেই ।
- আচ্ছা, ভাইয়া, আমি তাহলে যাই এখন ।
এই কথা বলেই আর কোনদিক না ভেবেই সুমনা পিছন ফিরে হাঁটা শুরু করতেই পিছন থেকে হঠাৎ আওয়াজ আসলো, “আই লাভ ইউ” । বেশ জোরেই হল আওয়াজটা । সেখানে ভার্সিটির অন্য ডিপার্টমেন্টের যারা ছিল সবার মুখ একরকম হাঁ হয়ে গেল । আর হাসানের ডিপার্টমেন্টের অন্য ব্যাচের বেশ কয়েকজনও শুনতে পেল এই কথা, তাদের মুখ তো আরও বড় রকমের হাঁ হয়ে গেল । অনেকের তো ঢোঁক গিলতেই সমস্যা হল । আর সুমনা তো অনেকটাই পড়ে যেতে যেতে নিজেকে সামলে নিলো । আচ্ছা, সে এখন যা শুনলো তা কি সত্যি ? নাকি ভুল শুনেছে ? তাই সে আবার পিছনে ফিরে হাসানের কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো ।
- আচ্ছা, ভাইয়া, আপনি এই মাত্র কি বললেন ? নাকি আমিই ভুল শুনেছি ?
- (হাসানের সাহস এখন বৃহস্পতিতুঙ্গে । আর কাউকে থোরাই কেয়ার তার) হুম, আই লাভ ইউ বলেছি ।
- কাকে !!!!!!!!!! ???
- কাকে মানে, তোমাকে ? তোমাকে যেদিন প্রথম দেখি, সেদিন থেকেই তোমাকে ভালবাসি । আমি জানি না, তুমি কি করবে এখন । হয়তো না বলে চলে যাবে, তাও তোমাকে ভালবাসি আমি । আর সারাজীবন ভালোবেসে যাবো । তুমি রাজি না হলে সারাজীবন একা থাকবো ।
- মানে কি ? মানে, কিভাবে ?
- কিভাবে মানে ? তুমি বুঝনা কিভাবে ?
- না, ঠিক আছে । কিন্তু একবারেই কি করে ?
- একবারে না, আমি তোমাকে হাজার বার বলতে চেয়েছি কিন্তু সাহস করে উঠতে পারি না । কিন্তু আর না । আজ সাহসের সব বাঁধ ভেঙ্গেই আমি ছুটে এসেছি । বাকীটা তোমার হাতে......
সুমনা আর কিছু বলতে পারলো না । সে লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেললো । তার কেন জানি প্রচণ্ড আকারে কান্না পাচ্ছে । সে স্থির হয়ে দাঁড়িয়েই কেঁদে ফেললো । হাসান হয়তো এমন কিছুর অপেক্ষাতেই ছিল । সে তৎক্ষণাৎ সুমনাকে নিজের বাহু বন্ধনীর মাঝে জড়িয়ে ধরলো । এখন আর মেয়েটির কিছু বলতে হবে না । যদি সে ধাক্কা দিয়ে তাকে সরিয়ে দেয় তাহলে সে সরে যাবে কিন্তু যদি না দেয়...... বেশ অনেকক্ষণ পরেই তার ভালোবাসার মানুষটিও তাকে জড়িয়ে ধরে । মুহূর্তেই আশেপাশের সবাই একসাথেই উল্লাসের চিৎকার করে উঠে ।
(বাকীটা আগামী পর্বে)
©somewhere in net ltd.