নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেলাশেষে ক্লান্ত-তৃষ্ণার্ত পথিকের ন্যায় আসলাম সামুর তীরে, রেখে যেতে চাই কিছু অবিস্মরণীয় কীর্তি । পারি না আর না পারি, চেষ্ঠার ত্রুটি রাখবো না, এই ওয়াদা করছি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭

একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি লাল গোলাপ আর হারিয়ে যাওয়া একজন - ।। পর্ব - ০৩ ।।

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১১:১৩

যারা আগের পর্ব ২টি পড়েননি, শুধুমাত্র তাদের জন্য আগের পর্বগুলোর লিংক দিলামঃ
একটি লাল গোলাপ আর হারিয়ে যাওয়া একজন - ।। পর্ব - ০১ ।।
একটি লাল গোলাপ আর হারিয়ে যাওয়া একজন - ।। পর্ব - ০২ ।।



জনাব হাসান সাহেব এবং মিসেস সুমনা চৌধুরীর পরিচয় হয় একটি স্বনামধন্য সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ডিপার্টমেন্টে পড়ার সুবাদে । অবশ্য তারা এক সাথে পড়তেন না । মিসেস সুমনা চৌধুরী যখন ফাস্ট ইয়ারে ক্লাস শুরু করেন, তখন হাসান সাহেব ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র । তো পরিকল্পনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের নিজের এবং নিজের স্ত্রীর বন্ধু-বান্ধবদের পরিবারসহ দাওয়াত করলেন । যেহেতু হাসান সাহেব এবং মিসেস সুমনা চৌধুরী একই ডিপার্টমেন্টে পড়তো, তাই তাদের বন্ধু-বান্ধব সম্পর্কে সিনিয়র-জুনিয়র । অনেকটাই ডিপার্টমেন্টের রি-ইউনিয়ন হয়ে যাবে কয়েক ব্যাচের । তবে এই কারণে সবচেয়ে আনন্দ পাবে সুমনাই, ভেবে বেশ আনন্দ পেলেন হাসান সাহেব । সকলকে অবশ্য রাতের ডিনারের সময় আসতে বলা হলো ।

তো সেই নির্দিষ্ট দিনে সন্ধ্যার দিক থেকেই দাওয়াতকৃত মানুষজনের আনাগোনা বাড়তে লাগলো হাসান সাহেবের বাড়িতে । মিসেস সুমনা চৌধুরী যখন এই পার্টি সম্পর্কে বুঝতে পারলেন, তখন বেশ খুশি হলেন । সবচেয়ে বেশি খুশি হলেন তার স্বামীর কষ্ট করে আয়োজন করার কারণে । আসলে এই মানুষটাকে যত ভালোবাসা যায়, ততই আরও ভালবাসতে ইচ্ছা করে । এত ভালো একজন মানুষকে নিজের স্বামী হিসেবে পেয়ে মিসেস সুমনা চৌধুরী সবসময় মনে মনে গর্ব করেন, অবশ্য মুখে খুব একটা প্রকাশ করেন না । তার এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐ বিশেষ দিনটির কথা মনে পড়ে । ক্যাফেটেরিয়ায় বসে সেদিন বন্ধু-বান্ধবের সাথে আড্ডা মারছিলেন মিসেস সুমনা চৌধুরী তথা সুমনা । প্রায় সবার হাতেই প্লেট, প্লেটে সিঙ্গারা ও সামুচা, আর সাথে একটা কোল্ড ড্রিংকস । এভাবেই তাদের আড্ডা চলতো সবসময় । হঠাৎ সেদিন কোথেকে যেন ঝড়ের মত উদয় হলেন হাসান সাহেব তথা হাসান । তাকে দেখেই সবাই যে যার জায়গা থেকে দাড়িয়ে সিনিয়র দেখে সালাম দিলো । হাসান ছিল ব্যাচের ফাস্ট বয় । খুব একটা আড্ডা মারায় অভ্যস্ত ছিলেন না । দেখতে বেশ সুশ্রী থাকলেও কোন মেয়ের দিকেই তাকাতেন না কোন সময় । সবসময় মনোযোগ ছিল পড়াশুনায় । তিনি হয়তো সেদিন প্রথমবারের মতই ক্যাফেটেরিয়ায় এসেছিলেন তার চার বছরের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে । তো, এসেই তিনি ব্যস্ত ভাব দেখাতে আরম্ভ করলেন । এমন একটা ভাব, কিছু একটা বলতে চাচ্ছেন কিন্তু বলতে পারছেন না । প্রায় সবাই মিলেই তাকে জিজ্ঞাসা করলো,

- কি হয়েছে ভাই ? কিছু বলবেন ?

জুনিয়রদের কাছে এরকম প্রশ্ন শুনে আৎকে উঠলো হাসান । তবু কোনরকমে নিজেকে সামলে নিয়ে বললো,

- কই, না তো । কিছু বলবো না ।

এবার সবার মধ্যে সাহস করে সুমনা আগ বাড়িয়ে হাসান ভাইকে জিজ্ঞাসা করলো ।

- ভাই, কি হয়েছে ? আমাদের বলেন । আমরা তো আপনার ছোট ভাই-বোনের মত । আমাদের বলবেন না তো কাকে বলবেন ?

এই কথা শুনেই মনে হয় হাসান বেশ সাহস পেলো । এরপর সাহস করে বলেই ফেললো ।

- এই, তোমার নাম সুমনা, না ? একটু এদিকে এসো তো । তোমাকে একটা কথা বলবো ।

হাসান যে ঐসময় কাউকে এই কথা বলতে পারে, তা কেউ কল্পনাতেও নিতে পারতো না । সেখানে উপস্থিত সবার মুখ আশ্চর্য হওয়ার তীব্রতায় হাঁ হয়ে গেলো । এমনকি সুমনাও বেশ অবাক হলো । তবু কোনরকমে নিজেকে সামলে নিয়ে হাসানের সাথে ক্যাফেটেরিয়ার এক কোনার দিকে চলে গেলেন । সে যে এখন কি শুনতে যাচ্ছে, তা সম্পর্কে তার আদৌ কোন ধারণা নেই । যাই হোক, হাসান এবং সুমনা ক্যাফেটেরিয়ার এক কোণায় যখন দাঁড়ালেন, তখন কিছু বলার আগেই হাসান বেশ ঘামতে লাগলো এবং দুই হাত অস্বাভাবিক আকারে ঘষতে লাগলো । একটি মেয়ের সামনে একটি ছেলের এরকম আচরণ স্বাভাবিক হয়তো কিন্তু একজন জুনিয়রের সামনে একজন সিনিয়রের এরকম আচরণ অনেকটাই অস্বাভাবিক ।

(বাকীটা আগামী পর্বে)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.