নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।
এক দেশে এক রাজা ছিল । প্রচণ্ড অত্যাচারী রাজার ভয়তে প্রজারা কেউই কথা বলার সাহস করতো না । তবে রাজাকে ভয় পাওয়ার প্রধান কারণ রাজার সৈন্য বাহিনী না, এক দল কাল-সাপ বাহিনী । জি হ্যাঁ, সর্পের কথাই বলছি । কাল-সাপ মানে পুরো বিষওয়ালা ভয়ংকর সাপ । রাজা নিজে কোথা থেকে যেন এক জোড়া কুড়িয়ে এনে পোষা শুরু করেন, পরে এই এক জোড়া থেকেই আবার জন্ম হয় কয়েক জোড়া ।
এই সাপগুলো রাজার ইশারা মত চলতো । হয়তো রাজার সাথে কেউ উঁচু গলায় আওয়াজ করলো, অথবা কেউ প্রতিবাদ করলো, অথবা কেউ কোন কথা অমান্য করলো, ব্যস রাজার নির্দেশে সে নির্ঘাত ঐ সাপের ছোবলে আক্রান্ত হতো আর পরিণাম ? সে তো নির্ঘাত মৃত্যু । রাজার কাছে কেউই তেমন জরুরী ছিল না ঐ সাপগুলো ছাড়া । অর্থাৎ সেনাপতি, মন্ত্রী, সৈন্য ইত্যাদি কেউই না । প্রজা ছাড়াও এই সেনাপতি, মন্ত্রীরা, সৈন্যরা প্রায় সকলেই রাজার প্রতি নাখোশ ছিল কিন্তু সাপগুলোর ভয়তে কেউ কিছুই বলার সাহস করতো না । ফলে সে রাজা যতদিন ইচ্ছা রাজত্ব করে গিয়েছিলেন । শেষমেশ অবশ্য কি হয়েছিল তা আর জানা যায়নি ।
এই গল্পটির মত মিল রেখে আমাদের দেশেও কিন্তু রাজা সাপ পুষে যাচ্ছেন নিয়মিত । হ্যাঁ, এই রাজা হচ্ছেন সরকার, বর্তমান সরকার । আর সাপগুলো হচ্ছে ছাত্রলীগ । এই ছাত্রলীগের জোরেই এই সরকার পরপর এতগুলো নির্বাচন জিতে গেলো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় । কেউ কিছু বলতে পেরেছে ? না । বলে মরবে নাকি, আজব !! এই সাপের দংশন যারা খেয়েছে তারা কেউই আর বেঁচে ফিরতে পারেনি । এমনকি সত্যিকার সাপের মত প্রতিদ্বন্দ্বী হারিয়ে এরা নিজেদের নিজেরাই দংশন করে সবশেষে শ্রান্ত হয়েছে বা প্রায়ই হয় ।
সিলেট এমসি কলেজ দ্বিতীয় বর্ষের ডিগ্রিপরীক্ষার্থী খাদিজার কথা বলি এবার । সেও সাপের ছোবল খেয়েছে । না, সত্যিকার সাপ নয় । ছাত্রলীগ নামক ভয়ংকর কাল-সাপ । বদরুল আলম নামক ছাত্রলীগ নেতা নিজের প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখিত হয়ে যাওয়ার পর নিজের রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে দিনে-দুপুরে সকলের সামনেই খাদিজা নামক মেয়েটিকে রাস্তায় পড়ে যাবার পরও উপুর্যপুরি কুপিয়ে ভয়াবহ জখম করে । মেয়েটি এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে, খুব বেশি আশাবাদী হওয়ারও জো নেই যে মেয়েটি আবার আগের মত করে ফিরতে পারবে । কি প্রমাণ হলো তো ভয়ংকর সাপের কামড়ে মানুষ বেঁচে ফিরতে পারে না সে যতই চিকিৎসা চলুক ।
এখন হয়তো আপনি বলতেই পারেন, একজনের দায়ভার পুরো ছাত্রলীগ কেন নেবে ? অথবা এই এক ঘটনায় কি ছাত্রলীগ খারাপ হয়ে যাবে ? তাহলে উত্তর হবে, জী, না, ঘটনা এই একটা মাত্র নয় । এই একটা মাত্র ঘটনার মত হাজারটা ঘটনা ঘটেছে এই কয়েক বছরে, যার খবরগুলো মিডিয়ায় পর্যন্ত আসেনি । ধামাচাপা দিয়ে দেওয়া হয়েছে অনেক মানুষের স্বপ্নকে শুধু এই ভয়ংকর কাল-সাপগুলোর কারণে । যাই হোক, রাজাকে সরানো যাবে না, আবার রাজার কাছে সাপ নিয়ে অভিযোগ করেও লাভ নেই । এই সাপই তো রাজার রক্ষক আর দেশের ভক্ষক, তাই না ?
হ্যাঁ, মিডিয়া, তরুণ সমাজ, ভার্চুয়াল জগৎ সবকিছু আরেকবার আরেকটা হট টপিকস নিয়ে মাতামাতি করার সুযোগ পেলো । খাদিজাকে দিনদুপুরে সবার সামনে এলোপাতাড়ি কোপানো । আসলেই হট টপিকস । এটাও মাত্র এক-দুই সপ্তাহের ব্যবধানে হারিয়ে যাবে । মানুষ খাদিজা মরে গেলে কিংবা কোনরকমে বেঁচে ফিরলেও তাকে মনে রাখবে না । আর বদরুল আলম !! তার নামে তো মামলা হয়েছে । দেখি, রাজার দেশে তার সাপের কি বিচার হয় !! অপেক্ষায় থাকলাম ।
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ১:০৫
মোশারফ হোসেন ০০৭ বলেছেন: আপনি মনে হয় শুধুমাত্র জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কথাই বলছেন, অথচ আমি কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ইত্যাদি অর্থাৎ ছোটখাট এসব নির্বাচনকেও আমলে নিয়েছি । ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী বাহিনী যে হাজার হাজার জাল ভোট দিয়ে, ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে, নির্বাচনের আগের রাতে টাকা ছিটিয়ে কিংবা মানুষকে হুমকি-ধামকি দিয়ে এমনকি বিপরীত দলের মানুষগুলোকে ভয় দেখিয়ে নির্বাচন কেন্দ্র থেকে দূরে রেখে, নির্বাচনগুলোর ফলাফলে যে প্রভাব খাটালো, সেগুলো আপনার চোখ এড়িয়ে গেছে । যাই হোক, ইদানিং তো আবার বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে বললে রাজাকার, মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী চেতনা হতে হয় । তাই মানুষ বলতে চাইলেও চুপ আছে । তবে রাজনৈতিক পছন্দ যে কারও যে কোন একটা দল হতেই পারে ।
অনেক ধন্যবাদ, লেখাটি কষ্ট করে পড়ার জন্য ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১:৪৯
রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
পোস্ট দিয়েছেন। বেশ। ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে এরা অনেক অপরাধই করছে। কয়েকদিন পরপরই। তাদের বিরুদ্ধে কোন শব্দও উচ্চারণ করা যায় না।
তবে, এইবার মনে হয় না - বদরুলকে কোন রাজনৈতিক প্রভাব বাঁচাতে পারবে। দিনে-দুপুরে ঘটায় অনেক মানুষই স্বচক্ষে দেখেছে ঘটনাটা। অকাট্য প্রমাণস্বরূপ ভিডিওটাও আছে। জনগণ হাতে নাতে ধরে তাকে পিটিয়েছে।
অন্য ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে শুধু ধারণা করা হতো, চাক্ষুস প্রমাণ থাকতো না। এমনকী সত্য হলেও, চাক্ষুস প্রমাণের অভাবেই মুক্ত করে দেওয়া হত। এইবার সেই সম্ভাবনা খুবই কম দেখছি। যদি না সরকার দিনকে রাত বানিয়ে ফেলার মত কাজ করতে না চায়, তাহলে বদরুল মুক্তি পাবে না।
ছাত্রলীগের জোরেই এই সরকার পরপর এতগুলো নির্বাচন জিতে গেলো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়
সত্যিই? ছাত্রলীগের জোরে নির্বাচন জিতেছে? এতগুলো তাও আবার?
টানা তো জিতলো দুইবারই। তার মাঝে এইবারই শুধু বিনা প্রতিদ্বন্দীতায় জিতলো। এর আগের বার তো বাংলাদেশের সাধারণ ধারায়ই তারা জিতলো। [যেহেতু, বাংলাদেশে একবার এক দল নির্বাচনে জিতলে, পরেরবার তার বিপরীত দল জিতে।]
ছাত্রলীগ প্রচুর ক্ষমতার অপব্যবহার করছে, তাই বলে তারা নির্বাচন জিতায়নি।