নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বেলাশেষে ক্লান্ত-তৃষ্ণার্ত পথিকের ন্যায় আসলাম সামুর তীরে, রেখে যেতে চাই কিছু অবিস্মরণীয় কীর্তি । পারি না আর না পারি, চেষ্ঠার ত্রুটি রাখবো না, এই ওয়াদা করছি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭

একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।

মোশারফ হোসেন ০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাসায় কাজ করা মহিলা অর্থাৎ বুয়াদের নিয়ে একটি ফিচার রচনা :( :(

১৫ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ১২:০৩

বাসায় কাজ করা মহিলাদের কে আমরা অনেকেই অনেক কিছু বলে সম্বোধন করে থাকি । কেউ বলে “বুয়া”, কেউবা আবার “খালা/আপু/অ্যান্টি/ভাবী” আবার কেউ কেউ একধাপ এগিয়ে “মামানি/খালাম্মা” ইত্যাদিও বলে থাকে । বুয়া রা দুই ধরনের হয় । “ছুটা” আর “বান্ধা” । ছুটা বুয়ারা সাধারণত দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কাজ করে থাকে । দেখা যায়, ছুটা বুয়ারা শুধু একটি নির্দিষ্ট বাসাতেই না, অনেকগুলো বাসাতেই কাজ করে থাকে । এদের কাজ করার ব্যাপারটা নির্দিষ্ট পরিমাণ কাজ করার চুক্তিতে কিংবা ঘণ্টা চুক্তিতে কিংবা টাকার পরিমাণের চুক্তিতে হয় । আর বান্ধা বুয়ারা সাধারণত একটি নির্দিষ্ট বাসাতেই সারাদিন ধরে কাজ করে থাকে । এদের চুক্তি একবারে মাসের জন্যই হয় । দেখা যায় মাস শেষে ছুটা বুয়াদের আয় বান্ধা বুয়াদের চাইতে অনেক বেশি হয় । তবু বান্ধা বুয়ারা মাসের প্রতিটি দিন চোখের সামনে থাকতে থাকতে ধীরে ধীরে পরিবারের সদস্যদের মতই হয়ে যায় । দেখা যায়, বাংলাদেশে এই বান্ধা বুয়াগুলো বেশিরভাগ ১৮ বছরের নিচের মেয়েরা আর ৪০ বছরের বেশি মহিলারাই হয় । আর ছুটা বুয়াদের বয়সের কোন নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই । কারণ কাজ করাটা ছুটা বুয়াদের যেমন নিজ ইচ্ছার উপর নির্ভর করে (ভালো লাগলে করবে, ভালো না লাগলে করবে না) সেখানে বান্ধা বুয়াদের অনেক সময় অসুস্থ শরীরেও ছুটি হয় না, কাজ করাই লাগে ।

যাই হোক, আমার এই লেখার পিছনে উদ্দেশ্য বুয়াদের সংজ্ঞা দেওয়া নেই বরং একটি গভীর কষ্টের বিষয় তুলে ধরা । বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, এই বাসায় যারা কাজ করে বিশেষ করে মহিলারা, এরা জীবনের একেবারে শেষ দিকে অর্থাৎ মৃত্যুর সময় একেবারে একাকী হয়ে যায় । অর্থাৎ মৃত্যুর সময় এরা মুখে এক ঢোক পানি তুলে দেওয়ার মতও কাউকে পায় না । এর কারণ অনেকগুলো । যেমন ধরুনঃ কাজের বুয়ারা সারাজীবন মানুষের বাড়ি কাজ করে যে আয় করে সেই আয় দিয়ে নিজের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষিত করে । এই শিক্ষিত ছেলে-মেয়েগুলো যখন পুরোপুরি শিক্ষিত হয় অর্থাৎ পড়াশুনার অধ্যায় শেষ করে তখন ঐ মহিলাদেরকে নিজের মা বলে পরিচয় দিতে লজ্জা বোধ করে । কারণ বাসায় কাজ করা একজনকে নিজের বন্ধু-বান্ধবের সামনে কিভাবে পরিচয় করিয়ে দেবে, এই ভাবনাটিই মূলত তাকে লজ্জিত করে তোলে । ফলশ্রুতিতে এক সময় তারা নিজেদের মা থেকেই আলাদা হয়ে যায়, হয় বাড়ি থেকে বের হয়ে যায় নয়তো বিয়ে করে ঘরজামাই হয়ে যায় অথবা বিয়ে করে বউকে নিয়ে আলাদা করে বসবাস করতে থাকে । জীবনে আর কোনদিন আর তারা তাদের মায়ের সাথে যোগাযোগ করে না এমনকি তার মৃত্যুর সময়ও না ।

আরেকটি উদাহারন দেই । এই বাসায় কাজ করা মহিলাদের অনেককেই আমি দেখেছি, নিজেদের স্বামীদের উচ্ছৃঙ্খল জীবন কে সোজা পথে আনার জন্যই বাড়িতে কাজ করতে বাধ্য হয় । অনেকের স্বামী আবার কোন কাজ না করে নিজের বউয়ের আয় খেতে থাকে । আবার অনেকেই এই আয় দিয়ে মাদক, জুয়া, নারীবাজি ইত্যাদি করতে থাকে । এই মহিলাগুলো স্বামীকে বাধাও দিতে পারে না কারণ বাধা দিতে গেলেই তাদের মারধোরের শিকার হতে হয় । আমরা কে না জানি, নিন্মবিত্ত পরিবারগুলোতে পারিবারিক নির্যাতন সমাজের অন্য স্তরের পরিবার থেকে অনেক বেশি । এই মারধোরের হাত থেকে বাঁচার জন্যই আবার স্বামীহারা হবার ভয়তেই এই কাজের বুয়ারা অর্থাৎ বাসায় কাজ করা মহিলাগুলো সারাজীবন পুরুষ মানুষের সব অন্যায়গুলো মুখ বুঝে সহ্য করে । কিন্তু তবুও দেখা যায় এই শয়তান পুরুষ মানুষগুলো নিজেদের বউকে ছেড়ে অন্য কোন মহিলার হাত ধরে পালিয়ে যায় আর নিজের স্ত্রী-কে একা ফেলে যায় । আবার অনেক সময় উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপন করতে গিয়ে এই পুরুষ মানুষগুলো এই মহিলাদের মৃত্যুর অনেক আগেই নিজেরা মৃত্যুবরণ করে । ফলশ্রুতিতে ঐ বাসায় কাজ করা মহিলাগুলো একা হয়েই যায় । আবার এই বাসায় কাজ করা মহিলাদের আত্মীয়-স্বজনরাও কিভাবে কিভাবে যেন পর হয়েই যায় ।

ভাবতেই অবাক লাগে, যারা আজীবন আরেক জন মানুষের সুখের জন্য নিজের সুখ ভুলে যাচ্ছে, নিজের শেষ সময়টুকুতেও তারা নিজেরদের ন্যায্য সুখটুকু পায় না । আমি যেই অবস্থার কথা বলছি এটি শুধু বাংলাদেশেই না, ভারতে, শ্রীলংকা, পাকিস্তান ইত্যাদি উন্নয়নশীল কিংবা অনুন্নত দেশগুলোতেও দেখা যায় । অথচ উন্নত দেশগুলো কিন্তু এই অবস্থা থেকে কবেই বের হয়ে এসেছে । কারণ উন্নত দেশগুলোতে সব মানুষ এক, ওরা মানুষ মানুষে ভেদাভেদ করে না ।

আমার মনে সবসময় একটা প্রশ্ন জাগে, আচ্ছা, বিধাতা যখন মানুষ সৃষ্টি করে পৃথিবীতে পাঠায়, তখন সবার ভাগ্যে কি একরকম সুখ দিয়ে দেন না ? নাকি কাউকে কাউকে পাঠান শুধু নিজেদের সুখ অগ্রায্য করে অপরের সুখ নিশ্চিত করার জন্য ? জানি না, তবে জানার ইচ্ছা অনেক । :( :(

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুলাই, ২০১৬ দুপুর ২:৪৩

প্রামানিক বলেছেন: হিন্দু ধর্ম মতে যারা জন্মের পরে দুনিয়াতে খারাপ কাজ করে তারা মৃতূ ্যর পরে পুনর্জন্মে নিম্ন পর্যায়ে জন্ম হয় এবং কষ্টে দিন কাটায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.