নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
একজন শৌখিন লেখক আমি, আবার কবিও বলা যেতে পারে । যখন যা ভালো লাগে তাই লিখি ।
- নীলা, এই নীলা, কোথায় গেলি ?
- কি হয়েছে, আবার, ডাকো কেন ?
- কি করছিলি ? আবার সেই কবিতা নাকি ?
- হুম, কবিতা । তাতে তোমার কি ভাইয়া ? তুমি তোমার কাজ নিয়ে থাকো, আমাকে বিরক্ত করো কেন ?
- যেই না আমার কবি, তার আবার ভাব দেখো ! যা ফট, তোকে দুই পয়সা দিয়ে গুনার টাইম নাই আমার ।
- তাহলে ডেকেছ কেন আমাকে ?
- আচ্ছা, তোর ঐ বান্ধবীটার নাম কিরে ?
- কোন বান্ধবী ?
- আরে ঐ যে, সেদিন ভার্সিটিতে যখন তোকে নামিয়ে দিতে গেলাম, যে মেয়েটা তোকে দেখে দৌড়িয়ে আসলো । ঐ যে, মনে হয়, পুরো লাল ম্যাচিং করে জামা পড়েছিল ।
- কেন রে ভাইয়া, প্রেমে পরেছিস নাকি আমার বান্ধবীর ? ওর নাম তো রূপা । ভালো নাম ইশরাত তালুকদার রূপা । জানিস ভাইয়া, মেয়েটাকে দেখলে মনে হয় না কিন্তু ও দারুণ ব্রিলিয়ান্ট । আমার খুবই ভালো বান্ধবী । অবশ্য ওকে ভাবী ডাকতে আমার সমস্যা নেই ।
- ঐ, পাকনামি করবি না, তোর ঐ বান্ধবী আমাকে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়েছে । তাই তোর কাছ থেকে শিউর হলাম, আর কি । দেখ, আমি কিন্তু এসব একদম পছন্দ করি না । ওকে বলে দিবি আমি এসব একদম পছন্দ করি না । আর তোর কোন বান্ধবী যেন আমাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট না পাঠায়, ঠিক আছে ?
- কেন, ভাইয়া, সমস্যা কি ?
- যা ভাগ, এসব আমার একদম ভালো লাগে না । সবকথা কি তোকে বলতে হবে ? যা, তুই, ঐ বস্তাপচা প্রেমের কবিতা লিখতে থাক গিয়ে । এইসব কবিতা কবিতা করে তো পড়াশুনা মাথায় উঠাইছিস । কিছু বলা হয়না বলে বেশি বাড়াবাড়ি । যা, তোর ঘরে যা ।
(নীলা চুপচাপ তার ঘরে চলে আসলো । তার এই একটা মাত্র ভাই । তার থেকে চার বছরের বড় । ছোটবেলা থেকেই দুই ভাইবোন মারামারি, দুষ্টামি করতে করতে বড় হয়েছে । কিন্তু ইদানিং খুব খিটমিটে হয়ে গেছে ভাইয়া । কথায় কথায় খালি বকা দেয় আর ঝাড়ি মারে । নীলার মন খারাপ হয়ে গেলো । ঘরে আসার পরেই টেবিলে বসে গেল সে । কালকের কবিতাটায় আজকে আর মনোযোগ বসবে না । নতুন কবিতা লিখতে হবে । প্রতিবাদী কবিতা, মনে মনে ভাবলো নীলা)
"যেদিনের অশ্রু-হাসি
সেদিনের কষ্ট রাশি
আকাশের লাল-নীল চাঁদ
নেমেছে অথৈ রাত
বিষাদেই সিন্ধু অতল
করেছে খুশি কতল
অনেকের মাঝেই বাঁচা
ছেড়েছে জন্ম আশা"
কি মনে করে আবার ভাইয়ার ঘরের দিকে গেল নীলা । ঘরে ঢুকতেই যাবে এমন সময় ঘরের বাইরেই থমকে গেল সে । ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে ঘরের ভিতর থেকে । তাহলে কি ভাইয়া কাঁদছে ? হ্যাঁ, ভাইয়াই তো । কারণ এই বাসায় তো তারা দুই ভাইবোন ছাড়া আর কেউ থাকে না । একলা ঢাকা শহরে এসে তারা দুইজন থিতু হয়েছে তাও তিন বছরের মত । মা-বাবা গ্রামেই আছে ।
নীলা এখানে ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়ে । আর ওর ভাইয়া, নিলয় চাকরি করে সোনালি ব্যাংকে, জুনিয়র এক্সিকিউটিভ হিসেবে । নিলয় কিন্তু মোটেও এরকম ছিল না । খুবই হাসিখুশি ছেলেটা মাতিয়ে রাখতো পুরো বাসা । কিন্তু সমস্যা হয়েছে রেখা চলে যাওয়ার পর । রেখা, নিলয়ের এক্স ওয়াইফ । একদিন নিলয় ব্যাংক থেকে ফিরে এসে দেখে বাসায় রেখা নেই । তখন এই বাসায় থাকতো খালি তারা স্বামী-স্ত্রী । রেখার বাসায়, এমনকি ওর বন্ধু-বান্ধবী সবাইকে ফোন দিলেও রেখার খোঁজ আর পাওয়া যায়নি । রেখা যেন পুরোপুরি গায়েব হয়ে যায় । পুলিশে খবর দিলেও রেখা আর কোনদিন ফিরে আসেনি বা তাকে পাওয়া যায়নি । এরপর থেকে নিলয় একা । এরপর কয়েকদিন পর নীলা ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে চান্স পায় । তখন বাড়ি থেকে সিদ্ধান্ত হয় সে উঠবে তার ভাইয়ের কাছেই । কিন্তু হাসিখুশি সেই ভাইটিকে আর তেমন হাসতে, কথা বলতে দেখে না এখন নীলা । যেন হারিয়ে গেছে পুরাতন নিলয় ।
- কি রে, তোর মন খারাপ কেন ? ভার্সিটির ক্লাসে নীলাকে চুপচাপ দেখে প্রশ্ন করলো রূপা ।
- ভাইয়াকে আজকে আবার কাঁদতে শুনলাম ।
- আবার ?
- হুম । আচ্ছা, তুই কি ভাইয়াকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট পাঠিয়েছিলি ?
- হুম, পাঠিয়েছি । কিন্তু তোর ভাইয়া তো একসেপ্ট করেনি । মনে হয় ফেসবুকে আমাকে ব্লক করে দিছে ।
- (হঠাৎ কি ভেবে) আচ্ছা, তুই একটা কথা বলবি ?
- কি কথা ?
- তুই না সেদিন বললি, তোর আমার ভাইয়াকে ভালো লাগে । তুই নিশ্চয় ইয়ার্কি মারিসনি ?
- (প্রশ্ন শুনে ঢোক গেলে রূপা) না, মানে । করি তো । কিন্তু তোর ভাইয়া বলে কথা ।
- তো কি হয়েছে ? আচ্ছা, তুই কি আমার ভাইয়াকে বিয়ে করবি । তুই তো সব জানিস । তোর কাছে তো আমি সবই বলেছি । তোর বাবা-মা কি আপত্তি করবে ?
- না, ইয়ে মানে, আমি তোর ভাইয়ার কথা আর তার সব কথা আমার বাবা-মাকে বলেছি । তারা প্রথমে একটু নাখোশ হলেও এখন তারা রাজী ।
- সত্যি ? (আনন্দে যেন লাফিয়ে উঠলো নীলা) । তাহলে চল, আজকেই তোকে বাসায় নিয়ে যাবো ।
- কি !!? আজকেই ? ইয়ে মানে, আজকে না গেলে হয়না ?
- না, আজকেই তোকে যেতে হবে, চল ।
এরপর দুইবান্ধবী নীলার বাসায় চলে আসলো । নিলয় বসে ছিল তার ঘরে । রূপাকে ঠেলেই যেন ভাইয়ার ঘরে পাঠিয়ে দিলো নীলা । রূপা ইতস্তত করে ঘরে ঢুকলো । প্রায় নিঃশব্দেই নিলয়ের কাছে চলে আসলো রূপা । হঠাৎ সাহস সঞ্চয় করে নিলয়ের কাধে হাত দিলো রূপা । হঠাৎ পিছন থেকে হাত পড়তেই চমকে পিছন ফিরলো নিলয় । নিলয় পিছন ফিরে তাকাতেই রূপা সব লজ্জা ভেঙ্গে বলে ফেললো, আই লাভ ইউ । হঠাৎ-ই যেন রূপাকে জড়িয়ে ফেললো নিলয় । আর তখন তার চোখে কান্নার জল । এই কান্না সুখের কান্না, এই কান্না প্রিয় কাউকে ফিরে পাবার কান্না । আজ নিলয় সুখী, অনেক সুখী ।
১৪ ই মে, ২০১৬ সকাল ১১:৩৫
মোশারফ হোসেন ০০৭ বলেছেন: কল্পনা শক্তিই একজন লেখকের লেখার হাতকে সমৃদ্ধ করে । যাই হোক, আপনার লেখাটি দেখলাম, যথার্থ বলেছেন ।
২| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:৪২
সায়ান তানভি বলেছেন: আপনার লেখার হাত আছে, চালিয়ে যান।শুভ কামনা।
১৪ ই মে, ২০১৬ সকাল ১১:৩৫
মোশারফ হোসেন ০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে, কষ্ট করে লেখাটি পড়ার জন্য ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:২০
আশরাফুল ইসলাম মাসুম বলেছেন: হুম ভালো কল্পনা.....
Click This Link