নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ অনেক বছর জুম্মার নামায পড়া হয় না। পরপর দুই জুম্মার নামায না পড়লেই অন্তরে সিল মোহর পরে যায়। আমার অন্তরে কত সীল মোহর পড়েছে, কেবল আল্লাহ জানেন!
যেদিন থেকে নামায পড়া বাদ দিয়েছি, যে ঘটনায় বাদ দিয়েছি তা কেবল আল্লাহ না, আরও একজন হয়তো জানে, লুৎফা! আমি যেখানে থাকি যেভাবেই থাকি প্রতিনিয়ত মনে পড়ে যায়। অবশ্য এ ছাড়া মনে করার আমার অত বেশি কিছু নেই-ও।
সেদিন ভোরে আমি হিসু দিয়ে গর্ত করার চেষ্টা করছিলাম, গতকালের চেয়েও বড় গর্ত। এখানকার বালুতে যে গর্ত, সব আমি করেছি।
পথের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, শাকিল, রবিন দাড়িয়ে আছে। আমি লুৎফাকে খুজলাম। ও আজও আসেনি! আমাদের বাড়ি থেকে মক্তবে যাবার পুরো রাস্তা দেখা যায়। ওকে কোথাও দেখা গেল না।
আম্মা ভাত বেড়ে অপেক্ষা করছেন। আমি রাগ করে বললাম, "আমি খাবো না৷ ওরা দাঁড়িয়ে আছে, দেরি করলে আমারে রেখে চলে যাবে।" আম্মা আমাকে ধরার চেষ্টা করলেন। আমি ততক্ষণে দে ছুট।
"তুমি আমারে সকালে ডাক দাও না।এখন আমি না খেয়েই মক্তবে যাবো।"
আম্মা রাগে বিজবিজ করছেন,"যহন সকালে ডাকপারি তহন উঠস না। কাইল যদি পানি না ঢাইলা দিছি, দেহিস।"
শাকিল, রবিন কাটাকুটি খেলছে। আমাক দেখেই রবিন রেগে গেল।"তর লেইগা ফির দেরি অইয়া গেল!কাইল তরে থুইয়া যামুগা।"
"একটু দেরি হলে কি হয়?আর গিয়েতো দেখবো হুজুরে ঘুমায়!"
রবিন আরও রেগে যায়,"তরে আগই কইছি না, আমার লগে শুইদ্ধ ভাষা মারাবি না।আবার যদি কইছস, তর নাক ভাইঙ্গা দিমুনে। না দিলে আমার নাম থুইস কালা কুত্তা!"
বাড়িতে কাকা এসেছেন, উনি নিয়ম করেছেন সবাইকে শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে হবে। কেউ না বললে ওর খাওয়া বন্ধ, আর একঘন্টা করে বেশি পড়তে হবে। এটা রবিনকে কে বোঝাবে?
রবিনের ঘুসির ভয়েই আমি কথা ঘুরিয়ে দেয়ার জন্য বললাম,"কিরে লুৎফায় মক্তবে যাইতো না?"
শাকিল বললো,"অর পেট খারাপ। ও আইজ আর যাইবো না।ল আমরা রওনা দেই।"
ও কখনো মক্তবে যেতে চাইতো না। পেট ব্যাথা, কষা হইছে বলে সারা সকাল ল্যাট্রিনে বসে থাকতো। লুৎফা কিন্তু এমন না, ও আগ্রহ করে স্কুলে যায়। আমরা তিনজন যেতে চাইনা।
ও আমাদের ছাড়া কিছুতেই যাবে না। স্কুল মানেই রায়হানের স্যারের অংক ক্লাস। আল্লাহ উনার হাত বিশেষভাবে তৈরি করেছেন আমাদের চড়-কিল দেয়ার জন্য, আমরা দম আটকে মারা যেতে যেতে বেচে যাই।
অংকের মত ভয়ানক বিষয় না থাকলে রবিন যে নামকরনের জনক ক্যারোলাস লিনিয়াসকে ছাড়িয়ে যেত, তা বলাই বাহুল্য। লিনিয়াসের নাম সবাই ভুলে গেলেও ওর দেয়া নাম কেউ ভুলে না। যেমন, রায়হান স্যারের নাম পাঠা স্যার, আমজাদ স্যার হয়ে গেছেন আন্তা স্যার, বাংলার রশিদ স্যার বাঘা স্যার! নামগুলো এখনো টিকে আছে কিনা, আমি জানি না!
আমরা স্কুলে যেতে চাই না। স্কুলে না যাওয়া মানেই, ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে সারাবেলা কাশ চাবানো, চড়ের ক্ষেত থেকে কালাই চুড়ি করে খাওয়া, আর ব্যাপারী বাড়ির পেয়ারা বাগানের ডাসা পেয়ারার স্বাদ নেয়া!লূৎফা আমাদের সাথে থাকলে নেংটা হয়ে নদীতে ঝাপাঝাপি। তারপর স্কুল ছুটির সময়ে বাড়ি ফেরা!
আমরা কেবল লুৎফার জন্যই স্কুলে যাই। আমরা চাই ওর ভালো বিয়ে হোক। পড়াশোনা না করলে, ভালো বিয়ে হয় না। লুৎফা অংকের মত বিষয়ে ৯৯ পায়, পড়াশোনা ওর কাছে কিছুই না।ও থাকলে আমাদের চিন্তা নাই, এইটে উঠা ফেরায় কে?
আমার বড় আপা আরবী পারে না, তাই ওর বিয়ে হয় না। আপা আরবী শিখে নিল, এখন লোকেরা ধরে ইংরেজি ট্রান্সলেশন। আপা পারে না, আপার বিয়েও হয় না।
আপার কষ্ট পাওয়ার কথা, আপা কষ্ট পায় না। আমার খারাপ লাগে। আম্মা রেগে যান, আম্মা আপাকে মারেন। আপার ফরশা গালে দাগ পরে যায়, আপাকে আরও ভালো লাগে। মনে হয়, ফরশা গালে লালচে ফুল ফুটেছে! আমি আপার দিকে তাকিয়েই থাকি।
আপা বলেন,"কি দেখিস, ওমন করে? মুখ বন্ধ কর, মুখে মশা ঢুকে যাবে!"
আমি বলি,"আপা, এইযে তুমি এত সুন্দরী!তবুও তোমার বিয়ে হয় না কেন?"
আপা হেসেই যায়, হাসির চোটে কিছুই বলতে পারে না।
আপা যে ট্রান্সলেশন পারে না, আমরা তা লুৎফাকে শিখিয়ে দেই, ওর বিয়ে হলে ও যে আমাদের শ্বশুর বাড়ি দাওয়াত দিয়ে মুরগী রান্না করে খাওয়াবে!
আমরা তিনজন লুৎফাদের বাড়ি গেলাম। ও মাথা ঢেকে দিয়ে ইছা মাছের মত শুয়ে আছে। কাথা টান দিয়ে সড়িয়ে দিলাম।
"কিরে, ঊঠ। মক্তবে যাইতি না। ইংরেজি অংক যেমুন জরুরি, আরবি শিখাও জরুরি। ল, মক্তবে যাই।"
শাকিল আমার কথায় সায় দেয়। রবিন রাগে বিজবিজ করছে।
ওর রাগের জন্যই হয়তো লুৎফা রেডি হয়ে বের হল।
লুৎফার দুইহাত রবিন আর শাকিল ধরে আছে। আমি কি করবো? ওরা প্রতিদিন এমনই করে, আমার রাগ লাগে। আমি কিছুই বলি না।
রবিনের সাথে মারামারি করে আমি পারবো না। আমি লুৎফার জামার ফিতে ধরে হাটি,ও টের পায় না। আমার পকেটে ওর জন্য একটা পোয়া পিঠা আছে।দিতে পারছি না, এখন দিলেই ওরা দুজন কেড়ে খেয়ে ফেলবে। আমি কিছুই বলতে পারবো না। আর হুজুর বলেছেন, বেহেশতে বন্ধুদের অবশ্যই দেখা হবে। তাই আমি ওদের সাথে মারামারি করতে চাই না।
পুবের সড়ক পার হয় ব্রিজের উপর আসতেই লুৎফা ঘাসে বসে যায়৷ ও আজ মক্তবে যাবে না। ওর পায়ে ব্যাথা, হাটতে পারছে না। এটা ওর প্রতিদিনকার রুটিন। আজও ব্যতিক্রম হল না। আমরা তিনজন ওকে জোর করে তোলার চেষ্টা করছিলাম। বেশি টানাটানি করছে রবিন। হুট করে ওর পকেট থেকে চারটা ডিম পড়ে গেল!
আমি বললাম," ডিম আনছস কেন? হুজুররে দিবিনি?"
"হ, হুজুরে খালি লুৎফারে বেশি পড়ায়। হের লেইগগা আম্মায় দিয়া দিছে, তাইলে আমারেও বেশি পড়াইবো।"
শাকিলও তাল দিল," আমার পকটেও দুই টেকা আছে। আব্বায় কইছে, হুজুররে দিতে।তুই কিছু আনস নাই?"
আমার অত রাগ হয় না, তবে এবার খুব রাগ হল,বললাম, "তোরা লূৎফারে বেশি পড়ায় দেইখা হিংসা করস? আর এগুলা দেওন লাগবো ক্যা? লূৎফাতো কিছুই দেয় না। তয় হুজুরে হেরে বেশি পড়ায় কেন? আরবি, কুরআন পড়াতো ওর বেশি দরকার। কুরআন না পড়তে পারলে অর বিয়া অইব নি? আর তরা আছস ওরে হিংসা করা নিয়া!"
ওরা লজ্জা পেল কিনা ঠিক বোঝা গেল না। তবে রবিন রেগে গেল, লুৎফার পিঠে বসিয়ে দিল ধুমধাম দুইটা কিল।কিল খাওয়ার ভয়ে আমি চুপ করে গেলাম, লুৎফাও হাটা শুরু করলো।
শাকিল দুই টাকা, রবিন ডিম দিল হুজুরকে। তাতে কোন লাভ হল না। হুজুর তিনজনরেই দুইটা করে ছুপছুপ বেতের বাড়ি দিল। কেবল লূৎফার পিঠে হাত বুলিয়ে বললো,"পড় দাদা, পড়। মনোযোগ দিয়া পড়বা।"
হুজুর পড়া শেষে আমাদের ছুটি দিয়ে দিলেন।লুৎফারে রেখে দিলেন। প্রতিদিনই রাখেন, ওরে বেশি পড়ান। অবশ্য ওরে বেশি পড়ানোর দরকার নাই। ওর একবার পড়েই মনে থাকে।
মনে থাকে না রবিনের। ওকে বেশি পড়াই দরকার। আমরা যখন চলে আসি, লূৎফা আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। ওর চোখ পানি টলমল করে।
আমি ওকে বলে আসলাম,"কান্দিস না, হুজুর তরে বেশি পড়ায় এইডাতো ভালা। রবিন, শাকিল বেশি পড়ার জন্য কত কিছু দেয় তর কিছুই দেওন লাগে না।"
তবুও গাধাটা বুঝে না। আমার পাঞ্জাবীর কোণা ধরে রাখে।
আমরা অনেকক্ষন তিন রাস্তার মাথায় বসে আছি। দু'দান করে ষোলো-গুটি, তিন দান নয়-গুটি পাইত খেলা শেষ। খালে মাটির ঠিলা ছুড়ে কিছুক্ষণ ব্যাঙ লাফ খেললাম। লূৎফার ফেরার নাম নেই!
তিনজন মিলে "রস কস সিংগারা বুলবুলি" খেলছিলাম। আঙুল গোণা নিয়ে রবিন আর শাকিল মারামারি লেগে গেল! ওরা মারা করছিল। আমি গেলাম লূৎফা কি করছে দেখতে।
দেখি মক্তবের দরজা বন্ধ। ভেতর থেকে লুৎফার কান্নার আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। হয়তো পড়া পারে নাই, তাই হুজুর মারছে। তয় দরজা লাগানোর দরকার কি?
আমি দরজার ফাক দিয়ে উঁকি দিলাম।
আমার মাথায় রক্ত উঠে গেল। আমি দরজার সামনে থেকে ইটটা হাতে নিয়ে কষে একটা লাত্থি দিয়ে মক্তবঘরে ঢুকে গেলাম।
হুজুরের মাথায় দিলাম জোরে একটা বাড়ি।এক বাড়িতেই হুজুর কাইত, আরও দিলাম দুইটা। হুজুরের মাথা থেতলে গেল। রক্ত দেখেই হয়তো লূৎফা অজ্ঞান হয়ে গেল।
ততক্ষণে রবিন, শাকিল আমার পেছনে এসে দাঁড়িয়েছে। ছোট মক্তব ঘরের মেঝেটা টকটকে লাল, ঠিক মাঝখানে পড়ে আছে হুজুরের নিথর দেহ, বুকটা এখনো ঊঠানামা করছে কেবল মাথাটাই নেই, পাশে সারি করে রাখা তিনটা কায়দা ছিটা রক্তে ভিজে গেছে, রক্তের চিকন চিকন ধারা দ্রুত গতিতে ছুটে চলছে দিগবিদিক।
রক্তের একটা মোটা স্রোত ওদের পায় ছুতেই ওরা দুজনে সমস্বরে চিৎকার জুড়ে দিলো,"কিরে, তুই হুজুররে মাইরা ফালাইছস! কি করছস এইডা? ও আল্লাহ! হুজুরে তোরে বেশি পড়ায় না দেইখা মাইরা ফালাইলি?তুমরা কেরা কই আছো? দেখ শরিফে হুজুররে মাইরা ফেলছে!"
খুব দ্রুতই মানুষ জমে গেল।
আমি লুৎফার গালে আস্তে আস্তে নাড়া দিচ্ছিলাম,"এই লুৎফা, লুৎফা! এই ওঠ।"
কেউ আমার ঘাড়ে ধরে দুরে ছুড়ে দিল, বললো,"হারামির বাচ্চার সাহস কত দেখছ? হুজুররে মাইরা এখন মাইয়াডার গলা চাইপ্পা ধরছে।"
আমার গায়ে এলোপাতাড়ি কয়েকটা কিল,ঘুসি, লাত্থি পরলো।হুরমুছের নাতি মানুষ খুন কইরা ফালাইছে, এখন তাকে ইচ্ছেমতো গালি দেয়া যায়, মারা যায়।
শেষবার দাদা ভাই, লূৎফাকে দেখেছিলাম কোর্টে। আমি কথা বলিনি। দাদা ভাই শুকিয়ে গিয়েছিলেন, সোজা হয়ে দাড়াতে পারছিলেন না। আমার জন্য তাকে বিশাল অপমানের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে!দাদা মারা যাবার আগ পর্যন্ত লুৎফাকে সাথে নিয়ে জেলে দেখা করতে আসতেন, বসে থাকতেন। আমি দেখা করিনি, কোন মুখে সামনে যাবো? যদি জিজ্ঞেস করেন, কেন হুজুরকে মেরে ফেলেছি? কি বলবো?
আমি চাইনা, এই ঘটনা আমি, আল্লাহ আর লুৎফা ছাড়া আর কেউ জানুক। কিছু বিষয় অজানা থাকাই ভালো।
দাদা মারা যাবার পর আম্মা আসতেন, লুৎফাকে নিয়ে সারাদিন বসে থাকতেন। মাঝেমধ্যে লুৎফার চিঠি আসতো। গত চার বছরে তাও বন্ধ হয়ে গেল!হয়তো ওর বিয়ে হয়ে গেছে! তাতে অবশ্য আমার কিছুই যায় আসে না। সবাই ভালো থাকলেই ভালো।
আজ আমার সাজা শেষ। আমার আনন্দিত হওয়া উচিত কিনা বুঝতে পারছি না! আমি কারাগার গেটে রেজিষ্ট্রি বইয়ে স্বাক্ষর করলেই বাইরে বেড়িয়ে যেতে পারবো। কি হবে বাইরে গিয়ে? এখানেতো আমার অনেক কাজ ছিল।
আমার সাথে ছাড়া পাচ্ছে আরও অনেকে।
আমরা সবাই একসাথে বেড়িয়ে এলাম। সবার জন্যই কেউ না কেউ এসেছে, আমার জন্য কেউ আসেনি। গত দশ বছরে আমি কারও সাথে দেখা করিনি, আমার কথা সবাই ভুলে গেছে হয়তো!
আমি ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার গেইট পেড়িয়ে রাস্তার দিকে এলাম। ঠিক সামনে বিশাল ডালপালা ছড়ানো রেইনট্রি গাছটার নিচে দাঁড়িয়ে ভাবলাম, কি করব?
অটোতে করে বাস স্ট্যান্ডে যাবো, সেখান থেকে ঢাকা। আমি আর কোনদিন বাড়ি যাবো না।
পেছন থেকে কেউ একজন ডাকলো,এই যে শুনুন।
আমি পেছনে তাকালাম। একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে, চোখে পানি টলমল করছে, সে খুব চেষ্টা করছে স্বাভাবিক থাকার পারছে না। ওর গা কেঁপে কেঁপে যাচ্ছে। আমি ওর চোখ ছাড়া কিছুই দেখতে পাছি না, মেয়েটি বোরকা পড়ে আছে।
আমি এগিয়ে গেলাম, বললাম, "আমাকে ডাকলেন? কিছু বলবেন?"
মেয়েটি আমাকে জড়িয়ে কাঁদতে শুরু করলো।
আমি আর লূৎফা ঈদগাহমাঠ পুকুর পাড়ে বসে আছি। লূৎফা আমার হাত ধরে বললো,"চল বাড়ি ফিরে যাই।"
আমি প্রসঙ্গ পাল্টে বললাম,"তুমি ভালো আছো লূৎফা? কতদিন পর তুমারে দেখলাম।"
"কই দেখলা, আমার মুখতো ঢাকা!" বলে ও হাসতে শুরু করলো। ওর হাসির শব্দে আশেপাশের লোকজন আমাদের দিকে তাকিয়ে রইল।
আমি ওর মুখের দিকে কতক্ষণ তাকিয়ে আছি, খেয়াল নেই।পিচ্চিটা যখন বললো,"ভাইজান চা খাইবেন। কফিও আছ", আমার ঘোর কেটে গেল!
আমি চোখ নামিয়ে নিলাম, লূৎফাও একটু লজ্জা পেল।
আমি বললাম,"আমি আর বাড়ি ফিরে যাবো না, চল তোরে বাড়ি দিয়ে আসি।"
ও আমার হাত ধরে বললো,"আমিও বাড়ি যাবো না।"
"তাইলে কই যাবি তুই?"
"তুই যেখানে যাবি, সেখানেই যাবো।"
আমি ওর হাত ছাড়িয়ে ঈদগাহ মাঠের মসজিদের দিকে হাঁটা দিচ্ছিলাম। ও আবার আমার হাত শক্তকরে ধরে ফেললো। আতঙ্কিত স্বরে জিজ্ঞেস করলো,"কই যাও?"
"নামায পড়ে আসি।"
"এখনো আসরের ওয়াক্ত হয় নাই।"
"শোকরানা নামায পড়বো।"
"কেন?"
"একজন অতিরূপবতী আমার হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে, এটাই কি শোকরানা নামায পড়ার জন্য যথেষ্ট না!"
আমি আস্তে আস্তে মসজিদের দিকে হাটছি, পেছনে না তাকিয়েও বুঝতে পারছি লূৎফা আমার পেছনে আসছে। যেন চোখের আড়াল হলেই আমি হারিয়ে যাবো। আসুক, আমিও চাইনা ও আমার চোখের আড়াল হোক। আমি পেছনে ফিরে তাকাচ্ছি না। চোখের জল কাউকে দেখাতে হয় না!
০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৩৪
মেহরাব হাসান খান বলেছেন: ধন্যবাদ।
আপনিও নিশ্চয়ই মোহিত হবার অস্বাভাবিক গুণ নিয়ে জন্মেছেন!
বাহ!
২| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:২৩
আহমেদ জী এস বলেছেন: মেহরাব হাসান খান,
খুব সুন্দর লেখা, ঝরঝরে। চমৎকার নকশায় ছেলেবেলার দুষ্টুমী ফুটিয়ে তুলেছেন।
আসলেই - চোখের জল কাউকে দেখাতে হয়না।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:১৮
মেহরাব হাসান খান বলেছেন: ধন্যবাদ, চেষ্টা করছি আরকি!
পড়বেন। উৎসাহ পাই।
৩| ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:১৬
রাজীব নুর বলেছেন: আবারও বলি- আপনার লেখা আমার ভালো লাগে।
সহজ সরল ভাষায় আপনি লিখেন।
আমি নিজে দীর্ঘদিন ধরে জুম্মার নামাজ পড়ি। শেষ কবে পড়েছি তাও মনে নেই।
০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:২২
মেহরাব হাসান খান বলেছেন: আপনাদের উৎসাহে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
নামায কেন পড়েন না, পড়া উচিত।
৪| ০৩ রা মার্চ, ২০২০ বিকাল ৩:৪৯
রায়হান চৌঃ বলেছেন: আপনার লিখা গুলো বরাবর ই ভালো লাগে ভাই......... ভালো থাকবেন
০৬ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১০:১৭
মেহরাব হাসান খান বলেছেন: ধন্যবাদ। চেষ্টা করছি আরকি।
©somewhere in net ltd.
১| ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫৫
নেওয়াজ আলি বলেছেন: বেশ, মন ছুঁয়ে গেল লেখা।