নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

A learning Advocate!

মেহরাব হাসান খান

আমি H2O,,,,Solid,Liquid & Gas.How do you deserve me?

মেহরাব হাসান খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

ছেলেটা

২৪ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ২:২৮

মা সারাক্ষণ রেগে থাকেন।মা বলেন, বাবার আমাদের কাজের মেয়ে রাহেলার সাথে অবৈধ সম্পর্ক। আজও এটা নিয়েই ঝগড়া। কাল রাতে নাকি বাবা রাহেলার ঘরে ছিল।মা দেখেছে, দরজা ভেতর থেকে বন্ধ।অথচ রাতে আমি বিছানা ভিজিয়েছি, আর ঘুম আসছিল না।মা-বাবার ঘরে গিয়েছি, ভয়ে কথা বলিনি।তাই বাবা আমার ঘরে এসে শুয়েছিল।
আমি মাকে বলেছি।মা আরও রেগে গেলেন।বললেন,"বাপের মতই হয়েছিস।একটু গোঁফ গজালেই মেয়ে ছেলে নিয়ে ফষ্টিনষ্টি করবি।"

অবৈধ সম্পর্ক, ফষ্টিনষ্টি কি?আমি জানি না।তবে বুঝতে পারি এগুলা খুব খারাপ।তাই আর কিছু বলিনি।আর মা ইদানীং খুব মারে, সেদিন বেত দিয়ে পাছায় মেরেছে।আমি ক্লাসে আরামে বসতেই পারিনি!

আমি দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে আছি।তুলি আমাদের বাসায় এসেছে। কোনভাবেই তুলির সামনে পরা যাবে না, তুলি কেচোকে খুব ভয় পায়।আমার নুনু দেখে নিশ্চয়ই একটা চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে যাবে।সেদিন নিহান আমার নুনু দেখে বলেছে, তোর নুনু সাদা কেচোর মত!আমার নুনু চেইনে আটকে গেল।অথচ টিস্যু দিয়ে নুনুটা ধরে সে-ই চেইন থেকে ছূটিয়ে দিয়েছিল।আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কোনদিন বিয়ে করবো না।কিন্তু যদি করি, তবে নিহানকেই করবো। আর বাসায় কোন কাজের মেয়ে রাখবো না।

আমার নাম ফরেস্ট। ক্লাসের সবাই ডাকে "জংগল"।আমার খারাপ লাগে না।কিন্ত নিহান ডাকে "অরণ্য"। কি যে ভালো লাগে,আনন্দে কান্না চলে আসে।কিন্ত মামা বলেছে, ছেলেদের কাদতে নেই।মা-বাবাকে বলে নামটা বদলে ফেলা যায়, কিন্তু বাবা রাজি হলেই মা রাজি হবে না।মা "ফরেস্ট গাম্প" মুভি দেখে আমার না রেখেছিল।এজন্যই আমি ফরেস্টের মত ভীতু। মা যদি "জন উইক" মুভি দেখে আমার নাম জন রাখত, আমি নিশ্চয়ই সাহসী হতাম। জন উইক যে ফাইট করে, দেখতেই ভালো লাগে।আমি গুন্ডা হতে চাই, জানি মা রাজি হবে না।

আমার মা বেশ রাগী আর নির্দয়ও। আমি আজ বিছানা ভিজিয়েছি, তাই আমার শাস্তি সারাদিন নেংটো থাকা।কিন্তু মা ভয়ংকর কথা বলল যে আমাকে নেংটো হয়েই স্কুলে যেতে হবে।মা যা বলে তাই করে, ভাগ্যিস আজ শুক্রবার। তাই বেচে গেছি।কাল নিশ্চয়ই মার রাগ কমে যাবে।

বাবা থাকলে আমাকে বাচিয়ে দিত।কিন্ত বাবা যে এত সকালে কোথায় গেল?অবশ্য মা অনেক রেগে আছে, আমার একটা বোন হবে তাই। মা বেশি রেগে থাকলে বাবা আমাকে বাচাতে পারে না।মা আমাকে মারে, পরে টয়লেটে আটকে রাখে।টয়লেটে তেলাপোকা নেই, কিন্তু তখন একটা বড় তেলাপোকা এন্টেনা বের করে আমায় দেখে।অবশ্য হুস হুস করলে ভয়ে চলে যায়।

আমি পায়ে-পায়ে মামার ঘরের দিকে চলে যাচ্ছি।মার সামনে কিছুতেই পরা যাবে না।কপাল খারাপ, তুলির সামনে পরে গেলাম।তুলি বললো, "এই জংগল! তুই টাই দু'পায়ের মাঝখানে পরে আছিস কেন।টাই খুলে গলায় পর।"
আমি দৌড়ে মামার ঘরে চলে এলাম।খাটের নিচে শুয়ে আছি।

আমার খুব ঘুম পাচ্ছে।কিন্তু ঘুমালে নিশ্চয়ই আবার ফ্লোর ভিজিয়ে দিবো।মা আরও রেগে যাবে।আমি চোখ বন্ধ করে আছি।মামা আমার গায়ে একটা কাপড় জড়িয়ে আমায় বিছানায় শুইয়ে দিলেন।আমি জেগেই আছি, কিন্তু কিছুই বলবো না।মামা আমার পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন।কিছু মানুষের হাতে মায়া থাকে,মায়া সব দুঃখ ভুলিয়ে দেয়। বাবার হাতেও আছে, কিন্তু মামার হাতে বেশি।আমার কান্না পাচ্ছে।কিন্তু আমিতো ছেলে!

আমার মামা খুব ভালো মানুষ। মামার মত কেউ পৃথিবীতে নেই।আমি জানি আর আসবেও না।আমি দুবার মামার বিছানা ভিজিয়েছি। মামা দুবারই সকালে বলেছে,"ফরেস্ট, রাতে পানি খাবার সময় বিছানায় পানি ফেলে দিয়েছি-রে।দেখ তোর প্যান্টেও একটু পানি পরে গেছে।যা প্যান্ট বদলে ফেল।"

ঘুম থেকে জেগে দেখে ঘর অন্ধকার। আমি সুইচ টিপলাম, কারেন্ট নেই।আস্তে আস্তে ডাকলাম, মামা! মামা!যাতে মা না শুনতে পায়।মনে হয় কেউ বাসায় নেই।যেদিন আমাকে বাসায় রেখে সবাই চলে যায়, সেদিন কারেন্ট থাকে না। আমি সুরা নাস আর সুরা ইখলাস পড়ি।এই দুইটা পড়লে ভূত-পেত্নী আসে না।কিন্তু আজ আমার অযু নেই।তবুও পড়ছি, আল্লাহ নিশ্চয়ই আমায় মাফ করবেন।

দরজায় শব্দ হচ্ছে।আমাদের বাসায় দারোয়ান নেই।ছেলেধরা বা কল্লা-কাটা সহজে আসতে পারবে, পদ্মা সেতুর জন্য নাকি অনেকগুলো মাথা দরকার।আমি ভয়ের চোটে আরেকবার ফ্লোর ভিজিয়েছি। মা আজকে আমাকে আর খাবার দিবে না।

"কিরে ব্যাটা, ভয়ে পেয়েছিস!আমি তোর বাপ!" আমি বাবাকে জড়িয়ে ধরলাম।বাবা বললো, মা হাসপাতালে।আমি খুশিই হলাম, আজ সারারাত টিভি দেখা যাবে, কাল নেংটো হয়ে স্কুলে যেতে হবে না।তবে রাতে নিশ্চয়ই ভাত খাওয়া হবে না।

বাবা বললো,"ফরেস্ট, তুই একা প্যান্ট পরতে পারিস?"
বললাম,"পারি!"
"পরিক্ষা হয়ে যাক, ১০০ নাম্বারে পরিক্ষা।"

আমি প্যান্ট পরে এলাম।বাবা হাসলেন।আমি আবারও দুইপা একসাথেই দিয়েছি।এত চেষ্টা করি, পারি না!
বাবা বললো,"তুই যেহেতু একটাতে দুই পা দিয়েছিস, যা তুই ৫০ পেয়েছিস।এটাও ভালো নম্বর। তুই পাস করেছিস, এজন্য তোকে আজ চাইনিজ খাওয়াবো।"

আগেই বলেছিলাম, আমার বাবা অনেক ভালো। সারাদিনে দুঃখ কেমন চমকেই ভুলিয়ে দিল।আমার বাবা ম্যাজিশিয়ান, তবে মামা দি গ্রেট ম্যাজিশিয়ান!

আমি এখন বাংলাদেশ মেডিকেল হাসপাতালে ১৪৩ নম্বর রুমের সামনে বসে আছি। মা বলে, ১৪৩ মানে "I love you". কিন্তু নিহান বলেছে, এর মানে "I hate you"ও হতে পারে। মেয়েটার কি যে বুদ্ধি।মাকে জানালে নিশ্চয়ই রেগে যাবে।

আমার খুব খিদে পেয়েছে। বাবা চাইনিজের কথা ভুলে গেছে, এখন মনে করিয়ে দিতেও খুব লজ্জা লাগছে।বাবার চেহারা দেখেই বোঝা যাচ্ছে, কোন সমস্যা হয়েছে। কিন্তু আমার খুব খিদে পেয়েছে।

" কি হয়েছে বাবা?"
"তোর বোন কিছুতেই মায়ের পেট থেকে বের হবে না।ডাক্তার খুব টানাটানি করছে।কাজ হচ্ছে না।"

"বাবা, আমি গিয়ে যদি ডাক দেই।বলি, মীরা বাইরে আয়।আমি তোর জন্য পুতুল এনেছি।"
"বাহ!তুই বোনের নামও ঠিক কিরেছিস!তা পারিস, কিন্তু তোর মা রেগে যাবে।আর বোনকে শুরুতেই মিথ্যে বলা কি ঠিক হবে?"

"তা ঠিক।আচ্ছা বাবা, মা কাকে বেশি ভালোবাসে?"
"তোর মামাকে, পরে তোকে,শেষে আমাকে।"

"আমি দুই নাম্বার! কিন্তু আমার ফার্স্ট হতে ইচ্ছে করে।"

বাবা আর কিছু বললো না।
মামার জন্য খারাপ লাগছে, মা নিশ্চয় মীরাকে বেশি ভালোবাসবে।তবে আমি মামাকেই বেশি ভালোবাসবো। মীরা, নিহানের চেয়েও অনেক বেশি।

মন্তব্য ১৬ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ২:৪১

রানার ব্লগ বলেছেন: ভালো , তবে অনুকরন দোষে দুষ্ট ।

২৪ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:৫১

মেহরাব হাসান খান বলেছেন: দেখুন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, হুমায়ুন আহমদে, ররবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, তারা শংকর, আহমদ ছফা, জীবনানন্দ, নজরুল,জহির রায়হান আরও অনেকে এমন কোম প্লট আছে যা নিয়ে লেখেননি? ভাগ্যিস রবীন্দ্রনাথ আর শরৎচন্দ্র সাধু ভাষায় লিখেছেন। তারা চলিত ভাষায় লিখলে হুমায়ুন আহমেদের লেখা জনপ্রিয় হত

হুমায়ুন আহমেদও উপিন্যাসের নাম রবীন্দ্রনাথের থেকে কপি করেছেন। দেখুন সবই লেখা হয়ে গেছে, এবিচারে সবই অনুকরণ!
আমি হুমায়ুন আহমেদের একটা উপন্যাস পড়েছিলাম, নাম মনে করার চেষ্টা করলাম খুব।মনে নেই।
সেখানে ফরেস্ট চরিত্রটা ছিল পৃথু নামে।
লেখক তার মামা, আর মামার বন্ধুকে মূল বিবেচনায় উপন্যাস লিখেছেন।

আমি সুধু ঐ চরিত্রটাকে অন্যভাবে, মানে তার ভালোবাসার ইচ্ছে আর ভালোবাসা পাবার ইচ্ছেটাকে প্লট করে গল্প লিখেছি। এই যা!
হ্যা, এটা অনুকরণ হলে, আমি দুঃখিত।

২| ২৪ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ২:৫৬

নীল আকাশ বলেছেন: @ রানার ব্লগ বলেছেন: ভালো , তবে অনুকরন দোষে দুষ্ট ।
কার অনুকরন দোষে সেটা বললে লেখক এবং পাঠকের সবার জন্যই ভাল হতো।
লেখাটা তাড়াহুড়ো করেছেন। কিছু জায়গায় তাল কেটে গেছে। বিশেষ করে প্রথম প্যারাটা খুব বেশি দরকার ছিল না।
মা রাগী সেটা অন্য কোন ভাবেও বুঝান যেত। প্রেগ্ন্যান্ট অবস্থায় মেয়েদের অনেক রকম উপসর্গ দেখা দেয়।
অনেক দিন পড়ে আপনার লেখা পড়লাম। কেমন আছেন আপনি?

২৪ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:৫৩

মেহরাব হাসান খান বলেছেন: আপনার জন্যও আগের উত্তর।

দেখুন সব লিখা শেষ!আমি আর নতুন কি লিখবো। আমি ফরেস্ট এর ইচ্ছে টাকে পুজি করে লিখেছি।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

৩| ২৪ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৩:১৭

দৃষ্টিসীমানা বলেছেন: বাহ , চমৎকার উপ

















চমৎকার বর্ণনা , আপনার লেখার ধরণটি ভাললাগল ।






২৪ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:৫৩

মেহরাব হাসান খান বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ২৪ শে জুলাই, ২০১৯ বিকাল ৫:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: মীরা ভালো থাকুক।

২৪ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ৯:৫৪

মেহরাব হাসান খান বলেছেন: মীরা নামটা হুমায়ুন আহমেদের থেকে ধার করা।

৫| ২৫ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১২:১৭

মা.হাসান বলেছেন: আমার কাছে খুব ভালো লাগলো। নিয়মিত লিখতে থাকুন।

২৫ শে জুলাই, ২০১৯ সকাল ৮:২৭

মেহরাব হাসান খান বলেছেন: ধন্যবাদ।

৬| ২৫ শে জুলাই, ২০১৯ রাত ১২:২২

নীল আকাশ বলেছেন: আপনি ভুল করেছেন। আমি আপনাকে বলিনি। যে অভিযোগ করেছে তাকে সেটার ব্যাখ্যা দিতে বলেছি। তাকে মার্ক করার জন্যই @ ব্যবহার করেছি।
ধন্যবাদ।

২৫ শে জুলাই, ২০১৯ সকাল ৮:২৭

মেহরাব হাসান খান বলেছেন: দূঃখিত জনাব, হয়তো মনোযোগ দিয়ে পড়িনি। আর এমন ভূল করবো না।

আমি ভালো আছি। আল্লাহ আপনাকেও ভালো রাখুন।

৭| ২৫ শে জুলাই, ২০১৯ সকাল ১০:৩৯

তানজীর আহমেদ সিয়াম বলেছেন: দুঃখে ভরা গল্প টা ভালোই লেগেছে :(

২৫ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ২:০৯

মেহরাব হাসান খান বলেছেন: আমি ফরেস্ট'র ভালোবাসা পাওয়া আর সবাইকে ভালোবাসার দৃঢ় ইচ্ছেটাই প্রকাশ করেছি।
ধন্যবাদ।

৮| ২৭ শে জুলাই, ২০১৯ দুপুর ১:০৮

রানার ব্লগ বলেছেন: নীল আকাশ @ হুমায়ুন আহমদে

২৭ শে জুলাই, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫৩

মেহরাব হাসান খান বলেছেন: ছেলেটা আবার লিখেছি। অপেক্ষা করুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.