নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আচ্ছা,ঈশ্বর কি কখনো নি:সঙ্গ বোধ করেন না?আমি নচ্ছার মানুষ হয়ে নি:সঙ্গতাকে নিতে পারি না।ঈশ্বর কিভাবে পারেন?
আচ্ছা,চিৎকার করে কি নিজের নি:সঙ্গতার বলা যায়?কিন্তু এই শিল্পী ঠিকই চিৎকার করে নিজের একাকীত্বের কথা বলছে,
"কেন এই নি:সঙ্গতা, কেন এই মৌনতা
আমাকে ঘিরে?......"
আমার খুব ভালো লাগছে।এখনকার সব শিল্পীই কলকাতার শিল্পী অরিজিৎ শিং এরমত ইনিয়েবিনিয়ে গান করার চেষ্টা করে।বিরক্তিকর, অতিশয় বিরক্তিকর!
আমি রানার মেসের কলিংবেল দুবার বাজিয়েছি,কোন সাড়া নেই।এই কলিংবেল আবার টিপ দেয়ার সাহস পাচ্ছি না,আবার শক খাবো এই ভয়ে। রানা দরজা খুললো।
"মেসে কেউ নাই,আমি জানি তুই এসেছিস,তুই ছাড়া এই কলিংবেল আর কে বাজাবে?টয়লেটে ছিলাম,কর্ম অর্ধেক করেতো আর বের হতে পারি না।হা হা হা....."
"তুই আছিস কেমন?"
"ভালো না,বিয়ে করে ফেলেছি।খুব কষ্ট পেয়েছি।ভেবেছি তুই আসবি, মীমকে বলেছি,আর কেউ না এলেও তুই আসবিই। তুই এলি না।"
"আমি কি জানি তোর বিয়ে?মীম কোথায়?"
"কেন ভাই তোকে বলেনি? আর কোথায় তার বোনের বাসায়!আর বলিস না,তাদের দুই রুমের ফ্ল্যাট, দুইটা বাচ্চাও আছে।"
"তোদের বাসর হয়নি?"
"বাসর কি?বিয়ে করলাম,তাকে রেখে আসলাম তার বোনের বাসায়।মরেতো যাইনি,বাসর হবে একদিন!হা হা হা..."
"বোকার মত হাসছিস কেন?"
"কষ্টে হাসি কষ্টে,খুব শখ ছিল মেয়েটাকে একটা লাল শাড়ি কিনে দিবো। দুই তারিখে বিয়ে করলাম।হাতে টাকা নেই।সেদিন মেয়েটা ৪০০ টাকা চাইলো। আমার কাছে ২০ টাকা ভাড়া ছাড়া আর কিছু ছিল না।কি যে লজ্জা পেলাম,গত চারদিন তার সাথে দেখা করতে যাইনি।অথচ প্রতিদিন তার বাসায় যেতাম।চারদিক শূণ্য শূণ্য লাগে।"
"তুই একনাগাড়ে কথা বলছিস।চল বাইরে যাই।"
রানা আয়েশ করে চা খাচ্ছিল। তার চায়ের কাপে কাক পায়খানা করে দিলো। আমি খুব বিরক্ত হয়ে কাকটাকে একটা কুৎসিত গালি দিলাম।অথচ সে একটা যুক্তি দাড় করালো।
"একবার ভেবে দেখেছিস,কাকটা কত দক্ষ। উড়তে উড়তে কাপে কর্ম সাড়লো।এটা মোটেই যেইসেই ব্যাপার না।বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা এতবড় স্ট্যাম্পে বল লাগাতে পারে না।অথচ এই কাক এত ছোট কাপে....."
আমি রেগে গেলাম।রানা বুঝতে পেরে চুপ করে গেল।
"শোন রানা,তোর মন খারাপ কেন?তোর তো খুশি হবার কথা।তুই এগিয়ে গেলি।তুই এখন রানা বংশ প্রতিষ্ঠা করতে পারবি।"
রানা আরও গম্ভীর হয়ে গেল।
আমরা রাজউক কমার্শিয়াল কমপ্লেক্সে এলাম।পিয়া সব সময় বলতো, কাপড় কেনার সময় যেটা তোমার ছুয়ে দেখতে ইচ্ছে করবে বুঝবে সেটা তোমার পছন্দ হয়েছে।
"কিরে মুহিব শাড়ি কিনছিস, তুই বিয়ে করবি নাকি?এই শাড়িটা কিন,যদিও পিয়া হালকা এই শাড়ির ভর নিয়ে হাটতে পারবে না।তবে মীম পারবে।"
আমি শাড়িটা কিনলাম।
"মুহিবরে,নীল পাঞ্জাবি কিনিস না।তুই কাইল্লা,তোরে নীলে ভালো লাগবে না।নীল আমার গায়ের সাথে যায়।তোরে আরও কাইল্লা দেখা যাবে।কিরে কথা বলিস না কেন?মন খারাপ করেছিস,আমি কি মিথ্যা বলেছি।"
আমরা জুতার দোকানে ঢুকলাম
"এই তোর পায়ের মাপে দে।"
"কেন,আমার পায়ের মাপ তো বড়।তোর পায়ের মাপতো মেয়েদের মত ছোট!হা হা..... "
"আমার জন্য না,তোর জন্য।"
রানা যা বোঝার বুঝে গেল।
"তুই আমার জন্য এগুলা কিনেছিস?কেন?"
"এগুলো তোর সাহসের পুরস্কার। বেকার হয়ে বিয়ে করে ফেলেছিস,তুই বীর পুরুষ-বাঘের বাচ্চা।"
আমরা রিকশায় করে মীমের বোনের বাসায় যাচ্ছি।আমার কাছে ৩ হাজার টাকা আছে।টাকাটা রানাকে দিতে চাই।খুব সংকোচ হচ্ছে।টাকাটা খুব কম,কিন্তু এই মুহূর্তে এই টাকা তার খুব দরকার।
"নে এই টাকাটা রাখ।"
"কেন,আমার টাকা লাগবে না।এমনেই অনেক পাগলামি করেছিস আর না।"
"নে,ভাবীকে নিয়ে বাইরে ঘুরতে যাবি।রেস্টুরেন্টে খাবি।বুড়িগঙ্গায় নৌকা নিয়ে ঘুরবি।আর রোমান্টিক কথা বলবি।তাকে চুড়ি আর টিপ কিনে দিবি।টিপ তুই নিজে পরিয়ে দিবি।"
"মাঝি কথা শুনে হাসবে না?"
"হাসলে হাসবে।তাতেকি?"
"তুই আমার বন্ধু না,তুই সাক্ষাৎ ফেরেশতা। "
"তুই আর কথা বলিস না।আকাশের দিকে তাকিয়ে থাক।আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের পানি ভিতরে চলে যায়।"
দরজা খুলে যে খুকি ধরণের মেয়েটি দাঁড়ালো, সে আমার দিকে না তাকিয়েই,রানার হাত ধরে তাকে টেনে ছাদে নিয়ে গেল।চোখে পানি টলমল করছিল।আমি এই আবেগঘন দৃশ্য দেখার লোভ সামলাতে না পেরে পিছুপিছু গেলাম।
মেয়েটি রানার হাত ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলল,
"তুমি এই চারদিন কোথায় ছিলে।আরেকটু হলে আমি মরেই যেতাম।আমি তোমার ঠিকানা জানি না।আমার কাছে কোন টাকাই নেই যে তোমার খোজ করবো।আপা বলেছে,তুমি বিয়ে করে পালিয়েছ। আমি অনেক ভয় পেয়েছি।"
মেয়েটি হাউমাউ করে কাঁদলো।আমি চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম।এই মুহূর্তে তাদের পৃথিবীতে আর কেউ নেই।আমি কোন নচ্ছার!
"মীম এই যে দেখ,কাকে নিয়ে এসেছি।মুহিব এসেছে, মুহিব।তোমার জন্য কত কি এনেছে, দেখ।"
মেয়েটি আমার হাত ধরে হরহর করে টেনে নিয়ে গেল।বললো,
"রানা সারাক্ষণ আপনার কথাই বলে।আপনি বিয়েতে এলেন না কেন?একটা সাক্ষী তো আমাদের নিজের থাকতো। আমাদের বিয়ের একটা সাক্ষীকেও আমি চিনি না।আমার এত খারাপ লেগেছে।আমি বাড়ি ফেরার আগ পর্যন্ত আপনার অপেক্ষা করেছি।আপনি আর কখনো এমন করবেন না।"
মীম লাল শাড়ি পরে বের হয়ে এল।আমি তার দিকে দুবার তাকাইনি যদি নজর লেগে যায়।মেয়েটি হাসতে হাসতে বললো,"দেখুনতো আপনার বন্ধু কেমন পাগলামি করছে,আমাকে টিপ,চুড়ি পরতে দিচ্ছে না।আমার জন্য নাকি কি চমক আছে!"
আমি তাদের দুজনকে রিকশায় তুলে দিয়ে উল্টোদিতে হাটতে শুরু করলাম।
এই মুহূর্তে আমি নি:সঙ্গ আর ঈর্ষাকাতর।আমার প্রিয় বন্ধুটা আর আমার নেই। আর আমায় বোকা বন্ধুটা সারা জীবন এই মেয়েটির হাসি উপভোগ করবে, ভাবতেই হিংসে হচ্ছে!
হঠাৎ পিছন থেকে কারো ডাক শুনলাম।
"মুহিব ভাই,এই মুহিইইইই....ব ভাই....."
মীম,হ্যা মীমই তো!
মেয়েটি আমাকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলো। আমার বন্ধুটি এই ছিঁচকাঁদুনে মেয়েটিকে কিভাবে সামলাবে, কে জানে?
২৮ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:২০
মেহরাব হাসান খান বলেছেন: আসলে আবেগেই একটা সংসার টিকে থাকে।বেশি বাস্তবিক হলেই ভাঙনটা ধরতে শুরু করে।
হ্যা,পার্থ বড়ুয়া দারুণ গায়।
২| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: নুষের জীবনের প্রত্যেকটা মুহুত্বই গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেকটা সময়কে কাজে লাগানো দরকার।
২৮ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৩৪
মেহরাব হাসান খান বলেছেন: জ্বী দাদা,প্রায়ই ভাবি কাল থেকে সময়ের সদ্ব্যবহার করবো। এই ধরণের জগা খিচুড়ি আর লিখবো না।
ধন্যবাদ, কিছু সময় নষ্ট করে পড়ার জন্য!
৩| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৩০
জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো না। আবেগ আর বাস্তবতার মধ্যে ব্যালেন্স না থাকলে সংসারে অশান্তি সৃষ্টি হয়।
২৮ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৪২
মেহরাব হাসান খান বলেছেন: আবেগ আর বাস্তবতা দুই বোন।আবেগ পরীরমত সুন্দরী আর বাস্তবতা অসুন্দর, নোংরা।একবোন আরেক বোনকে দেখতেই পারে না।সংসারে কেবল ছেলেটাকে এই দুই বোনের হাত একসাথে শক্ত করে ধরে রাখতে হয়।একজন ছুটে গেলেই অশান্তি।
৪| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৩০
চাঙ্কু বলেছেন: বেকার অবস্থায় বিয়ে? আপনার বন্ধু আসলেই বীর!!
২৮ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৫:৪৪
মেহরাব হাসান খান বলেছেন: সকল বেকারই বীর!
৫| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪২
বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: অচিরেই সমস্যা শুরু হবে। এই যুগে ভালোবাসা দিয়ে সংসার চলে না...
৬| ২৯ শে আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:২৯
বাকপ্রবাস বলেছেন: চাঙ্কু বলেছেন: বেকার অবস্থায় বিয়ে? আপনার বন্ধু আসলেই বীর!!
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৪২
জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: আবেগি মেয়ে। অতিরিক্ত আবেগ সংসারের জন্য সমস্যা।
কেই এই নিঃসঙ্গতা, কেই এই.... গানটা শুনতে মন্দ লাগেনা। তবে অনেকদিন শুনা হয়নি।