নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"আমার মা নুয়াখাইল্লা,আমার বাপ বরিশাইল্লা....আমরা সবাই মিইল্লা-ঝিইল্লা থাকি যে কুমিল্লা...."
পেছনে একনাগাড়ে এই গান বাজছে।
ডানপাশে কাইল্লা একটা ছেলে পরীরমত একটা মেয়েকে বকাবকি করছে,"তুই একটা মা**,তর লেইগগা আমি আমার জীবন নষ্ট করছি,আর তরে কল দিলে তুই বিজি থাকিস!......",
বামপাশে একদল ছেলেমেয়ে কি নিয়ে গল্প করছে বুঝা যাচ্ছে না;তবে একটু পরপর হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
আর সামনে একটা ছেলে প্যানপ্যান করে যাচ্ছে,"ও স্যার,একটা টেহা দেন হারাদিন কিছু খাইনাই রুডি খামু।দ্যান স্যার,আল্লা আফনের ভালা করবো।"
এই হল মুহিবের অবস্থা।
মুহিব বসে আছে রমনা পার্কের একটা বেঞ্চে।মনে চাচ্ছে,ছেলেটাকে কঠিন একটা ধমক দিতে।কিন্তু দিচ্ছে না,ছেলেটার ধৈর্যের পরিক্ষা হয়ে যাক।
হঠাৎ ঠাস শব্দ শুনে মুহিব ডানপাশে তাকাল।কাইল্লা ছেলেটা পরীটাকে থাপ্পড় মেরে চলে গেল।মেয়েটার চোখে চোখ পরতেই,সে চোখ নামিয়ে ফেলল।মেয়েটা ভয়মিশ্রিত লজ্জা পেয়েছে।এর মানে মেয়েটা বাসা থেকে মিথ্যা কথা বলে এসেছে,এখন সে এখানে বসেও থাকতে পারবে না,আবার চলেও যেতে পারবে না!
মেয়েটি তার দিকে তাকিয়ে কেঁদে উঠলো। গেটের দিকে হাটতে শুরু করলো।মুহিব দেখল সে ব্যাগ ফেলে গিয়েছে।মুহিব ব্যাগ নিয়ে তার পিছুপিছু যেতে শুরু করলো।
মেয়েটি পার্কের বাইরে গাড়িতে করে চলে গেল।মুহিব কি করবে বুঝতে পারছে না।সবাই তার দিকে মজারু চোখে তাকিয়ে আছে,তার প্রেমিকা তার সাথে রাগ করে ব্যাগ রেখে চলে গিয়েছে!খুব মজার দৃশ্য!
মুহিব ব্যাগ থেকে একটা আইডি কার্ড পেল।মেয়েটি সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মাসির ছাত্রি,নাম নিহান।বাসা উত্তরা ৭ নাম্বার সেক্টর।
একটা টিউশনি করিয়ে,জ্যাম পেরিয়ে সে যখন নিহানদের বাসায় পৌছালো তখন রাত ৮টা বাজে।গেট পেরোতেই বাগান দেখেই আভিজাত্য বুঝা গেল।
বসার ঘরে একঘণ্টা বসে থেকেও কারো দেখা নেই।ভেতরে শোরগোল শুনে মনে হচ্ছে,বাসায় মেহমান এসেছে।কেউ কেউ তাকে উকিমেরে দেখছিল,আর শব্দ করে হেসে চলে যাচ্ছিল।
মুহিবের পায়ের কাছে যে বিদেশি কুকুর ঘুরাঘুরি করছিল,এটাকে একটা সাদা উলের বল মনে হচ্ছিল।কষে একটা লাত্থি দিতে পারলে হত।কিন্তু তা করা যাবে না,বড়লোকেরা সন্তানের চেয়ে কুত্তাকে বেশি ভালোবাসে।
বসার ঘরে একটা লালপরীউকি দিল,মুহিব বুঝতে পারলো না,সে ঊঠে দাঁড়াবে কিনা!
:আপনি?আমাকে ফলো করে বাসায় চলে এসেছেন!
:এই যে আপনি ব্যাগ ফেলে চলে এসেছিলেন।
এমন সময় একজন ভদ্রলোক রুমে প্রবেশ করলেন।দেখেই মনে হল তিনি অত্যন্ত বদমেজাজি, আর্মির বড় কর্মকর্তা ছিলেন।ইনারা চাকরী থেকে অবসর নিলেই একই রকম জীবনযাপন পছন্দ করেন।চুলে আর্মিকাট দেয়া দায়িত্ব বলে মনে করেন।
:নিহান,তুমি ভেতরে যাও।এই ছেলে আমার দিকে তাকাও।
:জ্বী,আসসালামু আলাইকুম!
:তুমি কি কর?
:জ্বী,আমি সাউথইস্ট থেকেই এবার এলএলবি পাস করেছি।চাকরী খুজছি।
:তোমার সাহস দেখে আমি অভিভূত। আসলে কি জানো,আর্মি মেজরের মেয়ের সাথে প্রেম করা মোটেই সহজ কাজ না।হা হা হা,,,,
:...হ্যা,,মানে জ্বী,জ্বী..
:শোনো, আমিও তোমার মতই ছিলাম,এক মেজরের মেয়েকে নিয়ে ভেগেছিলাম।তখন আমি অনার্স পাসও করিনি।কি করব,নিহানের মার বিয়ে হয়ে যাচ্ছিল। বুঝ ব্যাপার টা,,,,হা হা হা,..
:ও,,..
:তুমিতো মিয়া আরও সাহসী।প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাবে, এই খবর শুনে একেবারে বাসায় চলে এলে।You brave man!
:না,মানে,আর কি,,,,
:ব্যাপার না,সৎ-সাহসী ছেলে আমার খুব পছন্দ,এবার শুধু ওর মায়ের মত পছন্দ হলেই হয়।তুমি ভয় পেয়ো না,....
মুহিব কিছু বলার সুযোগ পাচ্ছিল না।মেজর সাহেব নিজেই কথা বলে যাচ্ছিলেন।
ঘরে যিনি প্রবেশ করলেন,তিনি নিহানের মা।
:এই ছেলে।তোমার নাম কি?
:জ্বী, মুহিব।
:তোমার এত্ত সাহস তুমি আমার মেয়ে চড় মেরেছ!মেক-আপ করেও দাগ লুকানো যাচ্ছিল না।কি কর তুমি?
:জ্বী,আমি বেকার চাকরী খুজছি।
:তোমার পরিবারে কে কে আছেন?
:জ্বী,বাবা-মা,আমরা দু-ভাই আর এক বোন।
:তারা কি করেন?
:ভাই গার্মেন্টসে চাকরী করেন,বোন ইংরেজি নিয়ে অনার্স পড়ছে।বাবা গ্রামে কৃষিকাজ করেন।
:তোমার বাবা-মাকে কোথায় পাওয়া যাবে?
:জ্বী,মা আমাদের সাথে ঢাকায় থাকেন।
এই ছিল মুহিবের সাথে নিহানের বাবা মায়ের কথা।সে রাতেই মুহিবের বাবা-মাকে বাসায় এনে রাত ৪ টায় বিয়ে পড়ানো হয়েছিল।
মুহিব বা নিহান কেউ অমত করেনি।
মুহিব আমার দাদা। তিনি কিছুদিন আগে বিচারকের দায়িত্ব থেকে অবসর নিয়েছেন।দাদার কাছে এই কাহিনী শুনতে খুব ভালো লাগে।দাদী একটু লজ্জা পেলেও প্রতিবার খুব মনযোগ দিয়ে শোনেন।
২| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৬
রাজীব নুর বলেছেন: বাহ!!!
চমৎকার !!
৩| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৪০
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: বলেন কি? সত্যি সত্যি কাহিনী! গল্প না!!
বেশ বেশ একেবারে সিনেমাটিক কাহিনী
+++
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৬
মেহরাব হাসান খান বলেছেন: এটা মিথ্যে গল্প,অনেক দিন আগে আধালিখা ছিল!সেদিন গোঁজামিল দিয়ে শেষ করা হয়েছে।ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো!
৪| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ বিকাল ৪:৪৫
আনু মোল্লাহ বলেছেন: একেবারেই সিনেমাটিক কাহিনী।
কিন্তু আপনি সাজিয়েছেন বেশ। শেষ পর্যন্ত পড়াই লাগে। ধন্যবাদ।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৭
মেহরাব হাসান খান বলেছেন: ভালো লেগেছে জেনে, ভালো লাগলো।
৫| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১০
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: আপনার দাদা সাউথ ইষ্ট ইউনিভার্সিটিতে পড়তো? বিষয়টি গোলমেলে হয়ে গেল না তখন কি সাউথ ইষ্ট ইউনিভার্সিটি ছিল?
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:০৪
মেহরাব হাসান খান বলেছেন: জনাব,এটাতো গল্প!মিল খুজলে হবে,হুম!
৬| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:১৭
মাআইপা বলেছেন: অসাধারণ লেগেছে।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১০:৪৯
মেহরাব হাসান খান বলেছেন: ধন্যবাদ!
©somewhere in net ltd.
১| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৪৪
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: গল্প ভালই লেগেছে।