নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চলতি অর্থ বছরে অর্থমন্ত্রী বিশাল এক বাজেট উপস্থাপন করেছেন যা নিয়ে দেশ জুড়ে অনেক আলোচনা -সমালোচনা হয়েছে।কিন্তু একটি বিষয় বরাবরের মত সকল বিশ্লেষকদের দৃষ্টি এড়িয়ে গিয়েছে।
বাজেটে ৫০ হাজার ২৯২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে শিক্ষাক্ষেত্রে।যার মধ্যে ২৩ হাজার ১৪১ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে মাধ্যমিক ও ঊচ্চ শিক্ষা বিভাগে।ধরুন এর অর্ধেক ব্যয় হবে মাধ্যমিক বিভাগে আর বাকি অর্ধেক উচ্চ শিক্ষা বিভাগে।অর্থাৎ অর্ধেক ব্যয় করা হবে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তত্ত্বাবধান ও উন্নয়নে।
বাংলাদেশে মোট সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ৩৭ টি,অপরদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় এর দ্বিগুণ, আনুমানিক ৮৩ টি।এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেশের উচ্চ শিক্ষার প্রায় ৫০% শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে।
যেখানে সরকার উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারছে না,বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই গুরুভার দায়িত্ব কাধে তুলে নিয়েছে,মান সে যেমনই হোক!সরকারের কি উচিত নয়,এ পদক্ষেপে উৎসাহ দেয়া?
শিক্ষামন্ত্রণালয় কি পারতো না,এই বাজেটের ৪-৫ কোটি টাকা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে বরাদ্দ দিতে।হয়তো কেউ ভাবছেন,বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কি টাকার অভাব?সেখানে তো সবাই বিশাল টাকা দিয়েই পড়ে,সেখানে বরাদ্দ দেয়ার কি আছে?বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মানেই তো টাকার ছড়াছড়ি।আমাদের অর্থমন্ত্রী ইতোমধ্যে এখানে ভ্যাট আরোপ করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছেন,সমালোচিত হয়েছেন।ছাত্ররাও দাবী আদায়ে যথেষ্ট সচেতনতার প্রমাণ দিয়েছে।এতে অনেক বিশিষ্টজন যারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে অথর্ব -অকেজো ভাবতো তারা একটু হলেও অবাক হয়েছেন।
দেখুন,উন্নত দেশগুলোর মোট জনসংখ্যার ৩০%-৪০% লোক উচ্চ শিক্ষিত। পাশের দেশ ভারতের কথাই ভাবুন সেখানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে ভালো,তাদের কিছু বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাতেও রয়েছে।অপরদিকে বাংলাদেশের আনুমানিক ৫% লোক উচ্চশিক্ষিত।কারণ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সীট সংখ্যার স্বল্পতা,জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘ সময় আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের লাগামহীন খরচ।
সরকারও নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে পারছে না।যেগুলো রয়েছে সেগুলোতেও দিতে হয় প্রচুর ভর্তুকি। অপরদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে ছাতার মত বেড়ে যাচ্ছে,সরকারের এ ক্ষেত্রে কোন ব্যয় নেই,ভর্তুকি তো দূরের কথা।
উচ্চ শিক্ষাক্ষেত্রে এর অবদানও অস্বীকার করা যাবে না।অথচ সরকার বরাবর এর প্রতি সুনজর দেয়নি বা প্রয়োজন মনে করে নি,বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অবহেলা করা হয়েছে।
অথচ অভিভাবক অনেক আশা নিয়ে তাদের সন্তান কে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করান।শিক্ষামন্ত্রীর কাছে বেসরকারি পড়ুয়ারা অকেজো হতে পারে,বাবা-মার কাছে তো নয়।আপনি এর পড়ালেখার মান নিয়ে প্রশ্ন করতে পারেন না,কারণ এখানকার শিক্ষার্থীরা ভালো না করলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এত টাকা হাতিয়ে নিয়েও টিকে থাকতে পারতো না।
মান নিয়ে প্রশ্ন তুললেও সরকারের দায় স্পষ্ট হয়।এর মান ভালো করার জন্য সরকার কি কোন পদক্ষেপ নিয়েছে?বিশ্ববিদ্যালয় অথরিটিকে কোন দিকনির্দেশনা দিয়েছে?না দেয়নি।সরকার ইউ.জি.।সি তৈরি করেছে,যা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করে।মান খারাপ হলে UGC অনুমোদন দিবে কেন?তাই এর পড়ালেখা নিয়ে প্রশ্ন তোলা কতটুকু সমীচীন?
আমিতো এর অনেক ভালো দিক দেখতে পাই।এখানে কোন সেশনজট নেই।ছাত্রদের নিয়মিত ক্লাস করতে বাধ্য করা হয়।যেহেতু নিয়মিত পরিক্ষা দিতে হয় তাই নিয়মিত পড়ালেখা করাটাও জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নামী শিক্ষকদের পার্ট টাইম টিচার হিসেবে নিয়োগ দেন।
বর্তমানে এর অবদান বিবেচনা করে একে কি অবহেলা করা উচিত? জাতীয় অর্থনীতিতে এর অবদানও কি কম?বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তো কর্ম সংস্থানও সৃষ্টি করছে।
দেশের ৫০ ভাগের বেশি উচ্চ শিক্ষিত তরুণ-তরুণী বের হচ্ছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে,যারা দেশের বাইরে বাংলাদেশেরই প্রতিনিধি। সরকার কেন এই খাতে বাজেট ঘোষণা থেকে বিরত থাকবে?
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খাতে বাজেট ঘোষণার মাধ্যমে এর প্রতি নজর-খবরদারিও বৃদ্ধি করা যেত। অতি ক্ষুদ্র হোক তবু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় খাতে সরকারের উচিত বাজেট বরাদ্দ দেয়া,ব্যয়ের খাত তদারকি করা।একটি সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল খাতকে এত অবহেলা কেন আর কতদিন?
বি:দ্র:অনেক আগেই প্রথম-আলোতে পাঠিয়েছিলাম।তারা ছাপায়নি।আজ হঠাৎ চোখে পড়লো,তাই পোস্ট করলাম।
১৭ ই জানুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৪৪
মেহরাব হাসান খান বলেছেন: জনাব,আমি ভুল লিখিনি!আপনি গুগল করুন।আমেরিকা ছাড়া বাকি দেশগুলার উচ্চ শিক্ষার হার সহজেই পেয়ে যাবেন।কেবল আমেরিকার জন্য একটা রিসার্চ ফাইল ওপেন করতে হবে।
হ্যা,আপনি ঠিকই বলেছেন,বাংলাদেশের অনেক মানুষের ভাবনা শক্তি এখনো লিলিপুটিয়ানদের কাছাকাছি, আপনার কমেণ্টটা সেটার উজ্জ্বল প্রমাণ!
২| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৮:০৬
তারেক_মাহমুদ বলেছেন: সরকারের উচিৎ কারিগরি শিক্ষার দিকে নজর দেওয়া, এত উচ্চ শিক্ষিত বেকার বানিয়ে লাভ কি তাই কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দক্ষ জনগোষ্ঠী গড়ে তোলা উচিৎ। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষার মান বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ।
৩| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ৯:০৬
বিজন রয় বলেছেন: বিদায় ২০১৭, স্বাগতম ২০১৮,......... নতুনের শুভেচ্ছা রইল।
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
আপনি লিখেছেন, "দেখুন, উন্নত দেশগুলোর ৩০%-৪০% মানুষ উচ্চশিক্ষি্ত।"
-জাপান, ফ্রান্স, সুইডেন, কানাডা, আমেরিকায় মাত্র ৩০%-৪০% মানুষ উচ্চশিক্ষি্ত? বাংলাদেশের অনেক মানুষের ভাবনাশক্তি লিলিপুটিয়ানদের কাছাকাছি; পুরো লেখাটা লিলিপুটিয়া স্টাইলের ভাবনার প্রসার।