নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি অনেক ভেবেছি,আমার কি করা উচিত।প্রতিবারই সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারি না!দুজনের কারও সামনে পরলে আমার সিদ্ধান্ত বদলে যায়।আমাকে আবার ভাবতে হয়।বারবার ভাবতে হয়!
আমি মুহিবকে প্রথম দেখেছিলাম শিকদার পাড়া,নদীর ঘাটে। আমি দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ি ২০১২ সাল।বুঝতেই পারছেন,সেটা আমার প্রথম প্রেমে পরা।সেটাও তাকে না দেখেই।কত কিছু ভেবেছি,কিন্তু সে ঠিক ঊল্টো ছিল।মোটেই সুন্দর না,আবার খাটো।প্রথম দেখাতেই প্রেম হয়েছিল বলা যাবে না,কারণ সে তেমন না। প্রেম চলল অনেক দিন।
আমরা একসাথে অনেক স্বপ্ন দেখেছি,অনে---ক!কোথায় থাকবো, কয়টা বেবি হবে,তাদের নাম কি হবে,সব।এই নিয়ে তার সাথে খুনসুটিও কম হয়নি!
তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক হল ঠিক ১ বছর পর,তাও আমাদেরই বাসায়।
তার বার বার থেমে যাওয়া,আমাকে দূরে ঠেলে দেয়া ;আমি ভেবেছি সে আমাকে অপমান করছে।তাই জোড় আমিই করেছিলাম।তারপর বাকিটা সব মেয়েই জানে।তার হিংস্র হয়ে যাওয়া,বিছানায় রক্তপাত আর ফলাফল ;তার সাথে আমার ৪ দিনের মৌনব্রত!
তবে হ্যা,আমি সুখ পেয়েছিলাম।এমন আরো ৫ বার হয়েছিল।হ্যা,আমি জানি আমার পরিবার তাকে পছন্দ করে।তার সাথে আমার বিয়ে হবে।তাই কখনো দ্বিধা করিনি,বা মনে জাগেনি।
সমীকরণ বদলালো যখন মেডিকেলে চান্স পেল না।মা-বোন স্পষ্ট করে বলেদিল সে আমার জন্য ঠিক নয়।আমার বিয়ে হবে ডাক্তারের সাথে।কেবল ডাক্তারের সাথেই!
আমি তাকে ভালোবেসেছি।তার দিক থেকেও কম নাই ভালোবাসা!
২০১৫ সালে আমার বিয়ে ঠিক হল, ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর।আমিও বাকি মেয়েদের মত পরিবারের মতের বিরুদ্ধে যেতে পারিনি।আমরাও সিদ্ধান্তই নিয়েছিলাম পালিয়ে বিয়ে করব না।
মুহিব তখন মাত্র এলএলবি ৩য় বছরের ছাত্র।আমার অতিশিক্ষিত ৪ দুলাভাই,বড় ২ ভাই তাকে মেনে নিবে কেন?হলও তাই।
আমার বিয়ে হয়ে গেল মাসুদের সাথে।মাসুদ বেশ সুদর্শন। সবাই পছন্দ করেছে।ঠিক যেমন মুহিবকে পছন্দ করেছিল সবাই।কিন্তু তাতে কি,সমীকরণ ছিল ডাক্তার হবার।সে তা পারেনি।
বেশ রাতে মাসুদ বাসর ঘরে এলো। কয়টা বাজে আমি জানতাম না,আমার কাছে ঘড়ি ছিল না।সে আমাকে বেশ সময় ধরে দেখলো।প্রথম চুমুতেই আমি তাকে দূরে সরিয়ে দিলাম।
বিবাহিত স্ত্রীর না-কে মেনে নিয়েছে এমন সুপুরুষ নেই।শারীরিক মিলনের জন্য যে মনের মিলন প্রয়োজন সেদিন জেনেছিলাম।মাসুদ আমার শরীরকে সেদিন রাতে ছিন্নভিন্ন কিরেছিল।
কিন্তু গত এক বছরে মাসুদ আমাকে জয় করার জন্য সব করেছে।আমাকে অবাক করেছে, হাসিয়েছে,নিজে কষ্ট পেয়েছে!আমাকে পাওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করে শেষে সফল হয়েছে।আর মুহিবের কথা আমি ভুলে গিয়েছিলাম।
এবছর জানুয়ারিতে বান্দরবন ঘুড়তে গিয়ে আমি মাসুদের প্রেমে পরেছি।কি দরকার তার কথা ভেবে যে আমাকে ভুলে গিয়েছে।আর এই দিকে মাসুদ আমাকে তার করার জন্য এত কিছু করেছে।আমি সে রাতে মাসুদকে আমার সব দিয়েছি।মাসুদ অনেক খুশি হয়েছে।
গত দু বছরের সকল কষ্ট আমি সেদিন জলাঞ্জলি দিয়েছি।কিন্তু আল্লাহর মনে অন্যকিছুই ছিল।
আমি সেদিন বাসার বেলকনিতে বসে ছিলাম।দেখলাম একটা লোককে সবাই মারছে।চুল ধরে যেই মুখটা উপরে ধরল,আমার মনে ঝড় উঠলো! এ যে, মুহিব!কি অবস্তা তার।এমন পাগল হল কবে?আমি নিচে নেমে গেলাম।
আমাকে দেখেই সে স্বাভাবিক আচরণ করল।শার্ট, চুল ঠিক করল।
:আপনি তাকে চিনেন?
:হ্যা,তাকে ছেড়ে দিন,,
:এমন পাগল,আপনের কি হয়!
:তা দিয়ে আপনার কি?ছাড়ুন বলছি।
মুহিব প্রথম কথা বলল।
:কেমন আছো, কেয়া?
আমি তাকে দেখলাম ভালো করে।এই কি সেই মুহিব!সব রকম ফিটফাট থাকতো। কখনো নোংরা পোশাকে থাকতো না।আর আজ তার পায়ে জুতা নেই।শরীর থেকে গন্ধ বের হচ্ছে!
আমি তাকে বাসায় নিয়ে এলাম।ওয়াশরুমে গোসল করতে পাঠালাম।তাদের গ্রামে খোজ নিয়ে জানলাম, আমার বিয়ের পর থেকেই সে অসংলগ্ন আচরণ শুরু করে।
গত দুই বছরে সেটা চরম আমার আকার ধারণ করে।আমি আমাদের প্রামের বাড়ি যাই নি,মানে আমাকে নেয়া হয়নি।পাছে মাসুদ সব জেনে যায় বা মুহিব কিছু একটা করে?
বিশ্বাস করুন সে আমার সাথে বাসায় পাগলের মত আচরণ করেনি।খেতে বসে সে স্বভাবসুলভ মজা করছিল।আমি আবার তার প্রতি প্রেম অনুভব করলাম।
বিপত্তি বাধলো মাসুদ বাসায় এলে।আমি পরিচয় করিয়ে দিলাম, সে আমার কাজিন।মাসুদ একটু অবাক হয়েছিল, কারণ মুহিব তার পোশাক পড়েছিল,আর মুহিব কথা না বলে ঘর থেকে বের হয়ে যায়।
এরপর থেকে মুহিব আমাদের বাসায় আসে। আমি তাকে না করতে পারি না,যদি আবার পাগল হয়ে যায়।আমাদের কথা হয়।আমি তাকে কিভাবে ফিরিয়ে দিব,সে ছিল আমার প্রথম প্রেম।
এভাবেই চলছে গত ছয় মাস।কিন্তু আর কত?আমি আর পারছি না।
আমি মাসুদকে ঠকাচ্ছি,আর মুহিবকে ঠকিয়েছি।বিবেক আমাকে বারবার কাঠগড়ায় দাড় করায়!আমি কাকে ভালোবাসি? কাকে নিয়ে থাকতে চাই?
মুহিব মাসুদ দুজনে আমাকে ভালোবাসে,, আমিও।আ-আ-আমি ঠিক কি চাই?
এই পৃথিবীতে আজ আমার শেষ দিন।আমি কাউকে আর ঠকাতে চাই না!নিজেও শাস্তি পেতে চাই না।
বি:দ্র:লেখাটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক। জীবিত বা মৃত কারো সাথে মিল খুজে পেলে সেটা কাকতালীয়। কোনভাবেই লেখক দায়ী নয়।
১৭ ই আগস্ট, ২০১৭ রাত ১২:০৫
মেহরাব হাসান খান বলেছেন: ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৪২
প্রতিভাবান অলস বলেছেন: ভাল লেগেছে