নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক,
"বাসুদেব সিদ্ধার্থকে বললেন, নীরবে মন দিয়ে শেখার বিদ্যা শিখেছি নদীর কাছ থেকে; তুমিও মন দিয়ে তা শিখবে। নদী সব জানে, নদী সব শেখাতে পারে। এরই মধ্যে নদী তুমাকে শিখিয়েছে নিম্নাভিমুখী হয়ে গভীরতায় ডুবে যাওয়া ভালো।
হাজার হাজার পথিকের কাছে নদী কেবলই বাধা, মাঝি সেই বাধাকে দূর করেন। কিন্তু সেই হাজার হাজার লোকের ভীড়ে খুব কম লোকই নদীর গোপন বাণী শুনতে পেয়েছে; নদীর পবিত্র রূপটি দেখতে পেয়েছে।"
হেরমেন হেসের সিদ্ধার্থের বর্ণনায় নদীর কাছ থেকে এমন শিক্ষা পাওয়া যায়। যেন অপার অপলক মুখোমুখি বয়ে যাওয়া শুধু; জ্ঞানে, ধ্যানে শির নত করতে শেখা।
এমন এক নদী যাকে পূজো করা হয়, তাকে পাই গঙ্গা রূপে। এমনই তীব্র ছিল তার স্রোত, যে দেবী পৃথিবীর সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। তাই গঙ্গাকে রাখা হলো ভগবান শিবের মাথায়। এরপর তার চুলের জটা বেয়ে ভূমিতে নেমে এলেন দেবী গঙ্গা।
দুই,
লৌকিক কাহিনীতে নদীর দেবী রূপ দেখলেও, মানবী রূপ প্রবল। মূলত আমরা প্রকৃতিকে জানতে চাইতে গিয়ে নিজেকে জানতে চাই। কেননা পরিবেশ-প্রকৃতিকে জানবার মাধ্যমে মানুষ শিক্ষিত হয়ে উঠে এবং নিজেকে জানবার মাধ্যমে মানুষ হয়ে উঠে জ্ঞানী।
তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষায় শিক্ষিত একজন মানুষ জ্ঞানী না-ও হতে পারেন, অথচ একজন জেলেও নিজেকে জানবার মাধ্যমে জ্ঞানী হয়ে উঠতে পারেন। তাই আজ থেকে আড়াই হাজার বছর পূর্বে সক্রেটিসের বলা, "Know Thyself (নিজেকে জানো)" বাক্যটি আজও সমান প্রাসঙ্গিক।
আল্লাহ কুরআনে বললেন, আমি জ্বিন ও মানব জাতিকে একমাত্র আমার ইবাদতের উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছি। আর ইবাদতের পূর্ব শর্ত হচ্ছে আল্লাহকে জানা এবং নিজের পরিচয়ও জানা।
আল্লাহ তাআ’লা দাউদ (আঃ) এর কাছে ওহী পাঠালেন, তুমি তোমার পরিচয় গ্রহণ করো আর আমার পরিচয় গ্রহণ করো। দাউদ (আঃ) বললেন, হে আমার রব! আমি কিভাবে আমার পরিচয় গ্রহণ করব, আর কিভাবে তোমার পরিচয় গ্রহণ করব? আল্লাহ তাআ’লা তাকে বললেন, তোমার দুর্বলতা, তোমার অক্ষমতা ও তোমার বিলীন বা লুপ্ত হওয়াকে মনে করে তোমাকে চেন। আর আমার শক্তি, আমার ক্ষমতা ও আমার স্থায়ীত্বের পরিচয় গ্রহণ করে আমাকে চেন।
[মেশকাত, হাদীছ নং - ৫৪৯১] [ভার্সনের সত্যতা যাচাই হয়নি]
প্রভু বলেন, তোমরা আমার কাছে ফিরে এসো, তাহলে আমিও তোমাদের কাছে ফিরবো।
[সখরিয়- ১:৩, ওল্ড টেস্টামেন্ট]
সুতরাং, আমাকে স্মরণ করো, আমিও তোমাকে স্মরণ করবো।
[সূরা বাকারা, আয়াত: ১৫২]
উপর্যুক্ত বাক্য দু'টির কত মিল!
হে কিতাবীগণ! তোমাদের কাছে যে কিতাব (পূর্ব থেকে) আছে, তার সমর্থকরূপে (এবার) আমি যা (অর্থাৎ কুরআন) নাযিল করেছি, তোমরা তাতে ঈমান আন। [সূরা নিসা, আয়াত: ০৪]
তিন,
তোমার ঈমান খাঁটি করো, অল্প আমলই নাজাতের জন্য যথেষ্ট।[বায়হাকি, শুআবুল ইমান, হাদীছ নং- ৬৪৪৩]
তোমরা তোমাদের পিতা ইব্রাহীমের ধর্মে কায়েম থাকো। তিনিই তোমাদের নাম মুসলমান রেখেছেন পূর্বেও এবং এই কোরআনেও, যাতে রসূল তোমাদের জন্যে সাক্ষ্যদাতা এবং তোমরা সাক্ষ্যদাতা হও মানবমন্ডলির জন্যে। [সূরা হাজ্জ্ব, (আংশিক) আয়াত: ৭৮]
ঈমান আনতে হবে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) এর মতো চিন্তার দ্বারা, এরপর তা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে আত্নসমর্পণের দ্বারা।
প্রকৃতির নিকট হতে শিক্ষা লাভের মাধ্যমে স্রষ্ট্রাকে চিনতে পেরেছিলেন ইব্রাহীম (আঃ), অন্যান্য কিতাবী যাকে আব্রাহামও বলে থাকেন। যিনি ঈমান আনার পর তার পুত্রকে উৎসর্গের জন্য প্রস্তুত হয়ে সর্বোচ্চ পরীক্ষাটিতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন।
চার,
'ভগবান বললেন- হে অর্জুন, আমি ইতিপূর্বে ব্যাখ্যা করেছি যে দুই প্রকার মানুষ আধ্যাত্ম্যচেতনা উপলব্ধি করতে চেষ্টা করে। আর কিছু লোক দার্শনিক জ্ঞানের আলোচনার মাধ্যমে নিজেকে জানতে চান এবং অন্যেরা আবার তা ভক্তির মাধ্যমে জানতে চান।
[শ্লোক: ০২, কর্মযোগ, ভগবত গীতা]
আপনি কি জানতে চান?
আপনি কি ভাববাদী?
আপনি কি ওহী এবং ধারণার পার্থক্য বোঝেন? আপনার অন্তরে ধাক্কা লাগা প্রয়োজন।
সর্বশক্তিমান প্রভু বলেছেন, সেই সময় আমি পৃথিবী থেকে মূর্তিসমূহের নাম কেটে দেব। ভ্রান্ত ভাববাদীদের আর অশুদ্ধ আত্নাদের সরিয়ে দেব। লোকেরা এমনকি তাদের নামও মনে করবে না। এবং আমি ভ্রান্ত ভাববাদী এবং অশুচি আত্নাদের পৃথিবী থেকে দূর করব। যদি কেউ ভাববাণী অব্যাহত রাখে, তবে তাকে শাস্তি পেতে হবে। এমনকি তাদের পিতামাতাও বলবে, প্রভুর নামে তুমিও মিথ্যা কথা বলছ। সে ভাববাণী করছে বলে তার মাতাপিতাই তাকে বিদ্ধ করে হত্যা করবে।
[সখরিয়- ১৩:২-১৩:৩, ওল্ড টেস্টামেন্ট]
রোমান সাম্রাজ্যে আগাস্টাস সিজারের সময়ে সম্রাটকে পূজা করবার রীতি চালু হয়; আর এর পরপরই জেরুজালেমে যিশুখ্রিস্ট জন্মগ্রহণ করেন।
আর তার মৃত্যুর বহুবছর পর ইউরোপের প্যাগানরা তাকে ঈশ্বরের পুত্র হিসেবে গ্রহণ করলো।
তারও অনেক বছর পর, আজ থেকে চৌদ্দশো বছর আগে আরবের এক অক্ষরজ্ঞানহীন মানুষকে বলা হলো, পড়ুন।
লোকটি উত্তর দিলেন, আমি তো পড়তে জানিনা।
তিনিও পূর্বেকার মতো শুধুমাত্র ধারণার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠা দর্শনসমূহকে প্রত্যাখ্যান করলেন। এই লোকটি বললেন, আমার কাছে ওহী আসে। লোকটির নাম মুহাম্মদ (সাঃ)।
বুদ্ধের কাছেও কি ওহী আসতো? অথবা তারা, যারা মনে করেন স্রষ্ট্রার সাথে সংযোগের ক্ষেত্রে তার স্তরে পয়গাম্বরদের প্রয়োজন নেই!
হে লোকসকল, তোমরা সাক্ষী থেকো।
হে বন্ধু, জন্মমাত্রই তুমি ঈমান এনেছ। এবার সেই ঈমানের ভিত্তিকে শক্ত করবার পালা।
১৯ শে আগস্ট, ২০২০
২| ০২ রা নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:২০
রাজীব নুর বলেছেন: ওহী। শব্দটা হাস্যকর। যার কোনো প্রমান নেই। লজিক নেই।
০২ রা নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:০৬
মারুফ তারেক বলেছেন: এটা তো বিশ্বাসী আর অবিশ্বাসীদের মধ্যে পার্থক্য। একদম টু দি পয়েন্ট বলেছেন। মক্কার কাফেরেরা অবশ্য হাস্যকর বলতো না, ওরা কুরআনকে কবিতা বলতো। ওরা বলতো মুহম্মদ (সাঃ) এর মাথা খারাপ হয়ে গেছে।
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ৮:৪০
সোনাগাজী বলেছেন:
অন্যের আয়ে চললে মাথায় কাউয়া বাসা বাঁধে