নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবীর পথে পথে আমি একা অনভিজ্ঞ এক নাবিক।

মারুফ তারেক

পৃথিবীর পথে পথে আমি একা অনভিজ্ঞ এক নাবিক।

মারুফ তারেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

পুঁজিবাদ ও আধুনিক যৌন দাসত্ব।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৪৬


যুক্তরাষ্ট্রের চাকচিক্যময় লাস ভেগাস শহর। ভোগের এহেন কোন বস্তু নেই, যা এই শহরে পাওয়া যায় না। নারী, মদ, জুয়াসহ সকল ভোগের জায়গা হিসেবে সৃষ্টি করা হয়েছে লাস ভেগাসকে।
মানবিকতা বলতে কোন শব্দ নেই, টাকার কাছে ওটা বিক্রি হয়ে গেছে বহু আগেই। বড় বড় ক্যাসিনো আর হোটেলগুলো প্রলয়ঙ্করী আকার ধারণ করেছে। যৌন চাহিদাসহ বিভিন্ন ধরণের অবৈধ প্রাপ্তির জন্য মানুষ আসে এখানে। শুধু সাধারণ যৌনবাসনা পূরণ নয়, রয়েছে বিকৃত যৌনবাসনা পূরণের আয়োজন। একটি উদাহরণ দিচ্ছি, একজন নারী তার সমস্ত পরিধেয় খুলে উলঙ্গ হয়ে দাঁড়ান। এরপর নির্দিষ্ট দূরত্বে বিকৃত যৌনতালিপ্সু দাঁড়ায়, হাতে তার বিশেষ বন্দুক। সেই বন্দুকে আছে রাবার বুলেট। এই লোকটি বন্দুক উঁচিয়ে তাক করে মেয়েটির যোনী দিকে। এরপর গুলি করে যোনীর বরাবর। আহ, কতোটা নৃশংস!! কতোটা নৃশংস!!
মেয়েটির এই গুলি লাগাতে কিছুটা ব্যাথা ছাড়া তেমন কোন ক্ষতি হয়না ঠিক, কিন্তু একজন নারীর যোনীকে টার্গেটে পরিণত করাটা মানবিক পৃথিবীর উপর, সমগ্র মানুষ জাতির মুখে চপেটাঘাত স্বরূপ।
অথচ কী আশ্চর্য, কিছু লোক এটাকে নারীদের অধিকার বলছে! তারা কী দেখছে না, একজন নারী অর্থের কাছে, পুঁজিবাদের কাছে কতোটা জটিলভাবে জিম্মি হয়ে পড়েছে।

বৈধ অবৈধ পতিতাবৃত্তির পরিবেশ সৃষ্টি এবং লালন করছে আধুনিক পুঁজিবাদী রাষ্ট্রসমূহ। যৌনাচার এবং পর্নোগ্রাফিক চিত্র সমূহের সন্ধান প্রাচীনকালের প্যাপিরাস পাতায় অঙ্কিত চিত্রের মধ্যে পাওয়া গেলেও এর সবচেয়ে বড় নিদর্শন পম্পেই নগরীর আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে উন্মোচিত হয়। একসময় পর্নোগ্রাফি সমগ্র পৃথিবীব্যাপী নিষিদ্ধ ছিল। প্রথম পর্ণোগ্রাফিক রচনা হচ্ছে ব্রিটিশ লেখকের Fanny Hill বইটি। এই বই লেখার জন্য অবশ্য কারাভোগ করতে হয়েছিল লেখককে। Obscene Publications Act 1857 এর দ্বারা পর্নোগ্রাফিকে নিষিদ্ধ করা হয় যুক্তরাজ্য এবং আয়ারল্যান্ডে। Comstock Act এর দ্বারা ১৮৭৩ সালে পর্ণোগ্রাফিকে যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ করা হয়। প্রথম পর্ণোগ্রাফিক শর্টফিল্ম Le Coucher de la Mariée ১৮৯৬ সালে প্রকাশিত হয়। আর প্রথম দেশ হিসেবে পর্ণোগ্রাফিকে ১৯৬৯ সালে সেন্সরশীপ প্রদান করে ডেনমার্ক, যা আস্তে আস্তে যা সমগ্র পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে; আর এর মূল কারন হচ্ছে অর্থ। যুক্তরাষ্ট্রে পর্ণ ইন্ডাস্ট্রির পরিমাণ হল ১০-১২ বিলিয়ন ডলার। আর ২০০৬ সালে গোটা বিশ্বের পর্ণো ইন্ডাস্ট্রির রেভিনিউ ছিল ৯৭ বিলিয়ন ডলার। শুধুমাত্র নারী নয়, পুরুষেরাও দেহ বিক্রি করছে। প্রতিটি ভিডিওর জন্য অর্থ পাচ্ছে। মানুষ পরিণত হচ্ছে আধুনিক দাসে। বাংলাদেশেও বিভিন্ন জায়গায় পতিতাবৃত্তির বৈধতা আছে, যদিও অবৈধ এবং ভাসমান পতিতার সংখ্যাই বেশী। একজন মানুষকে আমরা আর মানুষ হিসেবে দেখতে পারছি না, একজন মানুষ শুধুমাত্র একটি মাংসপিণ্ডে পরিণত হয়েছে। মুনাফালোভীরা দানব হয়ে উঠেছে। আমরা ঠিক করতে পারছি আমাদের ছেলেমেয়েদের স্বাভাবিক যৌন ভবিষ্যৎ। অথচ কারা এই অমানবিকতার পক্ষে সাফাই গায়? কারা একজন মানুষকে শুধুমাত্র একটি মাংসপিণ্ডে পরিণত হবার কথা বলে? বলুন তো পর্ণ ভিডিও দেখার পর একজন মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির কেমন পরিবর্তন হয়? এই আধুনিক পুঁজিবাদ, মুনাফালোভী ব্যবসায়ী গোষ্ঠী সকল মানবিকতার বালাইকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে অর্থকে ঈশ্বরে পরিণত করেছে। রাষ্ট্র একজন নারীকে দেখছে না, কখনও কখনও তাকে পতিতা হতে বাধ্য করছে। বাংলাদেশে যে কয়েক লক্ষ পতিতা আছে তাদেরকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। অথচ পতিতাদের অধিকার নিয়ে লেখালেখি, সেমিনার, আলোচনা হয়েছে বা হচ্ছে প্রচুর।
এই যে পুঁজিবাদের অশ্লীল আয়োজন, এই আয়োজনকে রুখে দিয়েছিল সোভিয়েতের সমাজতন্ত্র। এই অমানবিক যৌন দাসত্ব থেকে নারীকে মুক্তি দিয়েছিল। সেদিন একজন মানুষ, মানুষ হিসেবে বাঁচবার অধিকার পেয়েছিল; অথচ আমরা আজও কতোটা দূরে!

তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া।

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৫৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


বাংগালীরা জাতীয়তাবাদের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন; জেনারেল জিয়া আমাদেরকে "গলাকাটা ক্যাপিটেলিজমে" নিয়ে গেছেন।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০৭

মারুফ তারেক বলেছেন: একসময় বাংলাদেশে বাকশাল কায়েম হয়েছি। কিন্তু তখন প্রসেস এবং স্বচ্ছতার অভাব ছিল। ওই সময় নব্য চাটার দলের উদ্ভব না হলে আজকে আর আমাদের এই দিন দেখতে হতো না। শেখ মুজিবুর রহমানও সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈনিক ব্যবস্থা চেয়েছিলেন। কিন্তু তার নিজের কিছু ভুল এবং গৃহীত পদক্ষেপের কারণে আর তা হয়ে উঠেনি।

২| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:০৭

অনল চৌধুরী বলেছেন: নিয়ন্ত্রণহীণ পূজিবাদের কাছে বিবেক,নৈতিকতা,মানবিকতা বলে কিছু নাই।আছে শুধু সীমাহীন অর্থ-সম্পদ লোভ,লুটপাট অার ভোগ।
সোভিয়েত ইউনিয়নসহ পূর্ব ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রসমুহের ৭৫ বছরের ইতিহাসে পতিতাবৃত্তির কোন অস্তিত্ত্ব ছিলো না।কারণ তারা পতিতাদের না,পতিতাদের দালালদের বিরুদ্ধে শাস্তির আইন করেছিলো।
অার বাংলাদেশে সবচেয়ে বড়ো অাকারে ও অায়োজনে এই দালালী করছে সংস্কৃতিজগতের নিয়ন্ত্রকরা,যাদের বিরুদ্ধে কথা বলাও অপরাধ !!!!
বাংলাদেশে পতিতাবৃত্তি সম্পর্কেকে অাছে বিচিত্র অাইন।গরীব পরিবারের মেয়েরা অভাবের কারণে সাধারণ হোটেলে এই ব্যবসা করতে গেলে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।।
অথচ ৫ তারা হোটেল ও অভিজাত এলাকার রেষ্টহাউসগুলিতে এই ব্যবসা চলে পুলিশেরই প্রহরায়।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:১৯

মারুফ তারেক বলেছেন: এমন একটা সময় যে, এই কথাগুলো বলবারও জায়গা নেই। কিছু বলতে গেলে উল্টো আক্রমণের শিকার হতে হয়। ব্যক্তিগত স্বার্থে সব লুটপাটের আয়োজন।

৩| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:২৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


লেখক বলেছেন, " একসময় বাংলাদেশে বাকশাল কায়েম হয়েছি। কিন্তু তখন প্রসেস এবং স্বচ্ছতার অভাব ছিল। ওই সময় নব্য চাটার দলের উদ্ভব না হলে আজকে আর আমাদের এই দিন দেখতে হতো না। শেখ মুজিবুর রহমানও সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈনিক ব্যবস্থা চেয়েছিলেন। কিন্তু তার নিজের কিছু ভুল এবং গৃহীত পদক্ষেপের কারণে আর তা হয়ে উঠেনি। "

-বুঝা যাচ্ছে যে, আপনি ক্যাপিটেলিজমই চান; আপনি একাই চান, অন্যরা ক্যাপিটেলিজমে থাকলে আপনার ভালো লাগে না।

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:২৯

মারুফ তারেক বলেছেন: আপনি এটা কী বললেন, তখন তো হরিলুট শুরু হয়েছিল। এটাকে মিথ্যা বলার কিছু নেই। একদিকে যেমন কোম্পানীগুলো জাতীয়করণ হচ্ছিল, অন্যদিক লুট হচ্ছিল। একটা ডিসঅর্ডার শুরু হয়েছিল দেশে।

৪| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:৪২

রবিনের প্রান "বাংলাদেশ" বলেছেন: ভাল বলেছেন

৫| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল সত্য কথা হলো পৃথিবীর শুরু থেকেই নারীদের অবস্থার খুব উন্নত হয় নাই।
এই আধুনিক যুগে এসেও একজন মাস্টার্স পাশ করা তরুনী মেয়ে একা কোনো অফিসে গিয়ে ইন্টারভিউ দিতে ভয় পায়। তার সাথে তার বাবা মা চাচা অথবা মামা শ্রেনীর কাউকে যেতে হয়।

৬| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: উন্নয়নের সাথে প্যারালালি ব্যাপক সাহিত্যকর্ম চলতেছে দেশে তা দেইখা জাতি আনন্দে ভাসতেছে। কাজের কাজ বটেক!

৭| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: রাজীব নুর বলেছেন: উন্নয়নের সাথে প্যারালালি ব্যাপক সাহিত্যকর্ম চলতেছে দেশে তা দেইখা জাতি আনন্দে ভাসতেছে। কাজের কাজ বটেক!

ভুলে এই মন্তব্যটা করেছি। দুঃখিত।
মুছে দিবেন।

৮| ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:০০

একাল-সেকাল বলেছেন: লাস ভেগাস হল ৫৭০ খৃষ্টাব্ধের পূর্ববর্তী আরব সমাজের আধুনিক ছায়ারুপ বিশেষ। সে সময় মেয়েদের সামাজিক ব্যবস্থা যা ছিল আজকের লাস ভেগাসেও তা-ই! পরিবর্তন শুধুমাত্র পুঁজিবাদের অনুপ্রবেশ।

৯| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ৩:৩৭

অনল চৌধুরী বলেছেন: অনেক অারব দেশে বেলি ড্যান্স নিয়মিত হয়।
সুন্দরী প্রতিযোগিতাও হয় ২০০৭ সালে থেকে।
কোথায় ধর্মভয়?

১০| ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:২৭

সনেট কবি বলেছেন: কিছুটা পড়লাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.