নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিশীরঙিনীর সাথে রাত্রি যাপন।
এমনটা মাঝে মাঝে হয়েছে আমার। কতদিন যে আমি বারবার নিশীকন্যাদের নিকট গিয়েছি, তারপর নিজেকে আত্নসমর্পণ করেছি। ওরাও বশ্যতা স্বীকার করেছে, তবে আমার টাকার নিকট, পেটের ক্ষুধার নিকট, বেঁচে থাকবার তীব্র আকাঙ্ক্ষার নিকট। কমলাপুর, কড়াইল, বনানী আমি ঘুরে বেড়য়েছি।
সেবার গিয়েছি চাঁদপুর, ষোল সতের বছরের মেয়ে। ঢুলু ঢুলু পেট দেখে মনে হল মেয়েটির পেটে বাচ্চা। কার বাচ্চা? আমার মত কারো হবে হয়তো। নিতান্ত বিচ্ছিন্নবোধ করেছি সেদিন। আমার এইসব চিন্তা করে কোন লাভ নেই, অপরাধবোধের চিন্তা থাকতে নেই।
বাসায় ফিরে দু'পেগ মদ খেয়েছি, তারপর ভুলে গেছি।
প্রথমবারে কথা, যেভাবে নারীদের মাংস চাওয়ার প্রবৃত্তি, নরম শরীরের পরশ পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা গড়ে উঠতে শুরু করল আমারঃ
তখন স্কুলে ক্লাস এইটের ছাত্র আমি। এভাবে শুরু হবে বুঝি। ক্লাসের সামাজিক বিজ্ঞানের ম্যাডামকে স্বপ্নে দেখলাম। কী বিচ্ছিরি অবস্থা, বান্ধুপ্রতিম বড় ভাই কামাল বুঝিলে বলল, ওসব কিছু নয়রে বোকা, সবারই হয়। খালেক মাঝির মেয়েকে দেখিসনি, ওরা তো ওই সমরের ব্যাটার সাথে কিসব করেছে পর্যন্ত। সে পর্যন্ত পরিবারসহ সমরকে বাপ-দাদা ভিটে ছাড়াতে হল। হিন্দু মানুষ, কি আর করবে?
উত্তরপাড়ার মাদ্রাসায় চাকুরী করত, নতুন হাফেজী পাশ করেছে। কি সব কেলেঙ্কারি, রতনের কাকার মেয়েটার তো মরা মরা অবস্থা। শেষ পর্যন্ত লোকটাকে আচ্ছা ধোলাই দিয়ে জেলে পাঠানো হল। আর ওসব তো সবারই হয়, আমারও হয়। কী বলে লোকে জানিস, স্বপ্ন দোষ। আজমন ফকীরের কাছ থেকে বড়ি এনে দেবনে। ভাল হয়ে যাবি।
কিন্তু কামাল ভাই জানতে চাইল না ম্যাডামের সাথে আমার কি হয়েছিল।
মনে আছে পাশের পাড়ার শিউলি, সেকি কান্না করেছিল। আমি বলেছিলাম প্রথমবারের পরেই ঠিক হয়ে যাবে। শিউলি হয়ত সেই প্রথমবারের কথা আজও মনে করে।
কলেজে যখন উঠলাম, তখন থেকেই আমার পাড়ায় যাওয়ার স্বভাব। মানিককে সাথে প্রথম যাওয়া। তারপর থেকে আর থামেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম, বুঝলাম এই পতিতাবৃত্তি নিয়ে কত তর্কবিতর্ক। আর মানুষের যৌনতা, সেটাকে নিয়ে তো দর্শন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নাম ফ্রয়েডীয় দর্শন। ফ্রয়েড সুন্দরভাবে মানুষের যৌনতার গতিপ্রকৃতি, যৌন নির্যাতন ও মানুষের মনে এর বিরূপ বিস্তারের বর্ননা করেছেন।
পিকাসো নামের জগত বিখ্যাত চিত্রশিল্পী যৌনতা নিয়ে ছবি এঁকেছেন। অবশ্য ওসব নিয়ে আমার তেমন কিছু যায় আসে না। যৌনতার নিয়মে যৌনতা আসে, তাকে নিবারণ করাই কাজ। যেমনটা আমাদের সমাজবিজ্ঞানের ম্যাডাম আমার দ্বারা করেছিলেন।
তখন আমার কোন যৌনজ্ঞান ছিল না, ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম। সারা জীবন সেই ভয় দূর করবার চেষ্টা করে গেছি। এক নারী থেকে অন্য নারীর সঙ্গ নিয়েছি। পতিতাদের বুকে মুখ গুঁজে আশ্রয় খুঁজেছি। কিন্তু আশ্চর্য বিষয় কেউ আমাকে আশ্রয় দিতে পারেনি। মানিক বলেছিল, আজ নয় কাল ঠিক মজা পাবি। শুধু শরীরে কী আর সব হয়?
রত্না, মাজেদা, শিউলির কথা মনে হয় আমার। আমার কাছে তাদেরকে ব্যর্থ মনে হয়। তারা কেউ আমাকে আশ্রয় দিতে পারেনি। আমার নিজেকে মনে হয় নিঃস্ব। সারাদিনের অফিসের ক্লান্তি শেষে আমি আবার আশ্রয় খুঁজি। একটি রাষ্ট্র কথা, একটি সমাজের কথা, ষোল বছরের মেয়ে শিউলির কথা, আমার কথা মনে হয়। যারা আশ্রিত হয়নি, যাদেরকে কেউ আশ্রয় দিতে পারেনি।
আমার কাছে রোজিনা, শেফালীরা নগ্ন হয়ে আসে, আমি তাদের চোখের দিকে তাকাই। কী এক ভয় তাদেরকে গ্রাস করেছে; বেদনা, ক্রোধ অথবা বেঁচে থাকবার অঙ্গীকার। আমি আসলে ঠিক জানিনা।
তবুও কিন্তু ভাসমান পতিতার সংখ্যা বাড়ছে। সংসদ ভবন, চন্দ্রিমা উদ্যান, বুড়িগঙ্গার তীরে, গুলশান-বনানীর রাস্তায় অভিজাত পোশাকে রোজিনারা মিস রোজিনা নাম ধারণ করছে।
এই পতিতাবৃত্তি তো আর আজকের না, সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগেও নারীরা শিকারের বিনিময়ে পুরুষদের সাথে মিলিত হতো। ব্যবলীনে তো একজন রতিদেবী ছিলেন পর্যন্ত, মাইলিত্তা। সেখানে মাইলিত্তা দেবীর মন্দিরে নারীরা পুরুষদের সাথে মিলিত হতো, যেমন আমাদের ভারতবর্ষে দেবদাসীরা মিলিত হতো পুরোহিতদের সাথে।
শুনেছি ঢাকা শহরে এখন নাকি পুরুষেরাও দেহ বিক্রি করতে শুরু করেছে। আমাদের সময় হলে খারাপ হতো না, মাঝে মাঝে কিছু টাকাও বেঁচে যেত। হা হা হা।
আমার সময় হয়েছে, আপনাদের কাজ আপনারা করতে থাকুন। শুধুমাত্র কাগজের লেখায় কী আর মানুষ পাল্টায়?
আমি কিছুক্ষণ ঝিমুলাম। একজন যৌনবিকারগ্রস্তের স্বীকারোক্তি" শিরোনামে আগামীকাল পত্রিকায় ছাপা হবে বিবরণ। আমি লেখব, লোকে খাবে। আমি টাকা পাবো। সমাজ পরিবর্তন অথবা অপরিবর্তনে আমার কিছু যায় আসে না। কিন্তু এই লোকটিকে যৌনবিকারগ্রস্ত লেখতে আমার কেমন যেন ইতস্তত বোধ করছে।
কিন্তু কী আসে যায় তাতে?
২| ২৩ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ৯:৫৪
রাজীব নুর বলেছেন: সহজ সরল সীকারোক্তি।
৩| ০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৩৪
অনল চৌধুরী বলেছেন: যেমনটা আমাদের সমাজবিজ্ঞানের ম্যাডাম আমার দ্বারা করেছিলেন। -বিস্তারত বলবেন?
এ্যামেরিকায়া এই অপরাধে বহু শিক্ষিকা কারাগারে অাছে।
শুনেছি ঢাকা শহরে এখন নাকি পুরুষেরাও দেহ বিক্রি করতে শুরু করেছে। আমাদের সময় হলে খারাপ হতো না, মাঝে মাঝে কিছু টাকাও বেঁচে যেত। হা হা হা। আছে।-ধনী অার চালাক মহিলারা বহু অাগে থেকেই পরিচিত-অপরিচিত তরুণদের এইসব কাজে ব্যবহার করে আসছে।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে জুলাই, ২০১৮ রাত ১২:১১
এখওয়ানআখী বলেছেন: এমন অবস্থা সবার মধ্যেই কমবেশি বিদ্যমান। সত্য চিরকালই সত্য