নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবীর পথে পথে আমি একা অনভিজ্ঞ এক নাবিক।

মারুফ তারেক

পৃথিবীর পথে পথে আমি একা অনভিজ্ঞ এক নাবিক।

মারুফ তারেক › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি নৈতিক আন্দোলন এবং এর যৌক্তিকতা। (কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে)

১০ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১১:৪৩


সামগ্রিকভাবে সমগ্র পৃথিবীর জন্য কল্যাণকর বিষয়সমূহকেও নৈতিকতা হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়। সমষ্টিগতভাবে দেশ ও জাতির কল্যাণে যে আন্দোলণ, তাকে আমরা একটি নৈতিক জাতীয় আন্দোলন বলতে পারি। ঐতিহাসিক এবং তত্ত্বগতভাবে এই আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা এই আন্দোলন ব্যতীত মানব সভ্যতা এবং সংস্কৃতি তার পরবর্তী ধাপে উন্নীত হতে পারে না। সেই সদূর রেনেসা যুগ, ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলন, আর আমাদের বায়ান্ন, একাত্তর। প্রত্যেকটি আন্দোলন ছিল নৈতিক এবং এই আন্দোলনগুলো অর্জিত হয়েছিল মহান ত্যাগের বিনিময়ে। ২০১৫ সালের ভ্যাটবিরোধী মুভমেন্ট এবং ২০১৮ সালের কোটাবিরোধী আন্দোলন, দু'টি আন্দোলনই হচ্ছে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের প্রতিবাদ।তাই একজন মানুষ হিসেবে এই আন্দোলনে অংগ্রহণ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
প্রসঙ্গ যখন কোটা, আমরা সহজভাবে একটি কথা মেনে নিই, প্রত্যেকটি দেশেই বিভিন্ন চাকুরীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি চালু রয়েছে এবং চালু থাকা উচিত। কোটা পদ্ধতি হলো এমন এক পদ্ধতি যার মাধ্যমে সমাজের অনগ্রসর পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠী অংশ্রগ্রহণ নিশ্চিত হয়। কিন্তু, এমন এক আজব দেশে আমরা বাস করি যেখানে সংবিধানে আইন (উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ সংবিধানে উল্লেখিত ৫৭ ধারার কথা বলা যেতে পারে।) করে মানুষের কথা বলার অধিকার হরণ করা হয়।
১৯৭২ সালে ২০ শতাংশ মেধা, ৪০ শতাংশ জেলা, ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা আর ১০ শতাংশ যুদ্ধবিধ্বস্ত নারী কোটা ছিল। ১৯৭৬ সালে তা পরিবর্তন করে মেধা ৪০ শতাংশ আর জেলা কোটা ২০ শতাংশ করা হয়। ১৯৮৫-তে মেধা ৪৫ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা ৫ শতাংশ করা হয়।
জেলা কোটার যে যৌক্তিকতা ছিল ৭২ সালে তার যৌক্তিকতা ফুরিয়েছে। তখন ১৯ জেলার জন্য যে হিসেবে তা বর্তমান জেলাগুলোর জন্যসংখ্যা অনুযায়ী সমর্থনযোগ্য নয়।
১৯৭৭ সালে তৎকালীন পে ও সার্ভিস কমিশনের একজন সদস্য বাদে সবাই সরকারি নিয়োগে কোটাব্যবস্থার বিরোধিতা করেন। কোটার পক্ষে অবস্থা নেওয়া এম এম জামান প্রচলিত কোটাগুলো প্রথম ১০ বছর বহাল রেখে ১৯৮৭ সাল থেকে পরবর্তী ১০ বছরে ধীরে ধীরে কমিয়ে দশম বছরে তা বিলুপ্ত করার পক্ষে মত দেন। এই বিষয় আর সামনে আসেনি, এই উপস্থাপন ফাইলের নিচে আটকা পড়ে যায়। কিন্তু আশ্চর্যজনক বিষয়, ১৯৯৭ সালে এই কোটাব্যবস্থাকে আরো সম্প্রসারিত করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কোটার আওতাভুক্ত করা হয়।এরপর তো মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের জন্যও কোটা বরাদ্দ দেয়া শুরু হল। সাথে শুরু হল কোটা বানিজ্য! হু হু করে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বেড়েই চলেছে! (হাসির ইমো হবে :D )
তবে একটি বিষয় যৌতিক ছিল, ২০১২ সালে প্রতিবন্ধীদের জন্য ১% কোটা বরাদ্দ করা।
যাইহোক,চাকুরীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পূরণ না হলে সেই শূন্যস্থান নিয়ে চলছে কোটা বাণিজ্য। যে-ই এই চলমান ব্যবস্থার বিরোধিতা করবে সে-ই হয়ে যাবে রাজাকার, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী! কতোটাদিন এই চেতনা বিক্রি করে খাবেন? চেতনা বিক্রি করতে করতে আপনারা যে পচে গেছেন। দুঃখজনক বিষয় হলো আমাদের একজন মন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে গালি দেন। দয়া করে আমাদের সংসদের পবিত্রতা রক্ষা করবেন।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, যারা কোটা সংস্কারের পক্ষে আন্দোলন করে, তারা রাজাকারের বাচ্চা! এই উক্তি আর কত বিক্রি করবেন, ঝোলা খালি হয়ে গেছে।যে হামলা করলেন, টিয়ারশেল ছুঁড়লেন, বুলেট ফায়ার করে নিজেদের ইতিহাসকে আরো কলঙ্কিত করলেন। অথচ আপনারা ভালো করেই জানেন ছাত্রছাত্রীদের দাবায় রাখতে পারবেন না, দাবায় রাখা যায় না।আপনারা চড়াও হয়েছেন, আমরা ক্রুদ্ধ হয়েছি। যখন ২০১৫ সালে আমাদের উপর আঘাত এসেছে, ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের উপর গুলি চলেছে, আমরা ক্রুদ্ধ হয়েছি। আমরা রাজপথে নেমেছি। এই সংগ্রাম একটি মহান নৈতিক সংগ্রাম। এই সংগ্রাম কেবল আকাশের রক্তিম সূর্যকে চিনে। যে ছাত্রছাত্রীরা আজ একত্রিত হয়েছে, যে বন্ধনে আজ সকলে আবদ্ধ আমরা, কী করে ভাবলেন পালিত সন্ত্রাসবাহিনী আর পুলিশের দ্বারা সে বন্ধনকে ভেঙ্গে ফেলবেন?

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ৭:১৪

কাওসার চৌধুরী বলেছেন: ১৯৮৬-৮৭ সালের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রণীত তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ২ হাজার ৪৫৮ জন। ১৯৯৭-২০০১ সালে সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়ায় ১ লক্ষ ৮৬ হাজার ৭৯০ জন! ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত আরেকদফা তা বেড়ে দাঁড়ায় ২ লক্ষ ১০ হাজার ৪৮১ জনে!! বিগত দশ-বারো বছরে সংখ্যটি যে আরো বেড়েছে তাতে কোন সন্দেহ নেই!!!

এই হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার বেহাল দশা।

হিসাব করলে দেখা যায় দেশের মাত্র.......... ০.১১% ভাগ (শুণ্য দশমিক এগার) !!! ......... (মোট জনসংখ্যার ১% এর নয়ভাগের এক ভাগ...........!!!! সত্যি বিষ্ময়কর) মানুষের জন্য সরকারি চাকরিতে ৩০% কোটা সংরক্ষিত!!!!!

এটা কোন যুক্তি বলে কোন লেভেলের বিশেষজ্ঞরা করেছেন জানি না। যারা করেছেন তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা উচিৎ।

চরম বৈষম্যমূলক এ কোটা প্রথা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী বলে আমি মনে করি। মুক্তিযোদ্ধারা একাত্তরে তাঁদের সন্তান ও নাতিপুতিদের অধিকার আদায়ের জন্য যুদ্ধ করেননি। তাদের সংগ্রাম আর আত্মত্যাগ ছিল সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির জন্য, পাকিস্তানীদের বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে। সরকারি চাকরিতে বাঙালিদের সম অধিকার নিশ্চিত করার জন্য।

কোটা পদ্ধতির সুবিধা নিয়ে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধারা জাতির মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাচ্ছে। সরকার প্রতিমাসে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারকে যে সম্মানী দেন তার একটি বড় অংশ ভূয়াদের পেটে যায়।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩৯

মারুফ তারেক বলেছেন: আশা করছি সব ঠিক হবে, অন্তত চেষ্টা করা হবে।

২| ১১ ই এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:২৩

রাজীব নুর বলেছেন: কোটা সংস্কার আন্দোলন কি সরকার পতনের আন্দোলন? মনে হচ্ছে এই আন্দোলনের দাবিদাওয়া মেনে নিলে আর এই সরকারই থাকতে পারবে না ক্ষমতায়, বিষয়টা কি এমন? নাকি অনেকের রুটি-রোজগারে টান পড়বে? কী জানি, জীবনেও হালুয়া খাইনি, চাইওনি, কোটা ছিল না আমার জন্য।

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৩৯

মারুফ তারেক বলেছেন: প্রতিটি ছোট আন্দোলনেই বৃহত্তর সংগ্রামের বীজ থাকে, অপেক্ষা শুধু সময়ের।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.